– আর কত কাদবি এভাবে …! দেখ তোর কান্না টা আমার একদম সহ্য হচ্ছে না পিল্জ থাম এবার নয়তো ..! (রবি)
– নয় তো কি ..? কি করবি তুই (আনু)
– চলে যাবো আর কখনো তোর সামনে আসবো না (রবি)
– হ্যা এখন তো যাবিই ..? নতুন জিএফ পাইসোস ত তাই আর আমার কথা মনে পড়ে না (আনু)
– এক থাপ্পরে সব কয়টা দাত ফালায় দিমু বলে দিলাম ..? আমি আবার কবে জিএফ‌ পাইলাম ।
প্রেম করলি তুই ..? কথা বলা বন্ধ করে দিলি তুই ..? ছেকা খাওয়ার পর আমার কথা মনে পরতেই আমাকে ডেকে আনলি তুই‌…? আর সব দোষ আমার উপর চাপাস . ..?(রবি)
– চুপ থাক (আনু)
– কেন চুপ থাকবো সেদিন কি বলেছিলি মনে আছে ..!
আমার সাথে কথা বললে নাকি তোর বিএফ এর কষ্ট হয় । তাই তোর বিএফের যাতে কষ্ট না হয় সেই জন্য আ‌মার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলি । এমনকি আমার নাম্বার টাও ব্লাকলিস্টে ফেলে দিলি । আর আজ এত দিন পর তোর বিএফ যখন তোকে ধোকা দিলো তখন আমার কথা মনে পরলো (রবি)
– প্লিজ দস্ত আর বলিস না আর সহ্য করতে পারছি না (আনু)
বলেই আনু জোরে জোরে কাদতে লাগলো ।
কি ঝামেলায় পরলাম রে বাবা । এত কাদছে তবুও চোখের পানি শেষ হওয়ার নাম নাই ।
কি করি এখন । এই তার ছিড়া মেয়েটাকে নিয়েই‌ আমার যত জ্বালা । দূর আর ভালো লাগছে না ইচ্ছে করছে দৌড়ে পালিয়ে যাই
এদিকে আনু এক নাগারে কেদেই‌ চলেছে । কেউ দেখে ফেললে আমার আর রক্ষে নেই । ভাববে কি না কি করে ফেলেছি । কিন্ত কি করবো তাও বুজতে পারছি না ।
আশে পাশে অনেক জুটি বসে আড্ডা দিচ্ছে । কয়েকজন এদিক দিয়ে যাবার সময় আড়চোখে তাকিয়ে কি যেনো বিড় বিড় করে বলে ছিলো ।
এই মেয়ে আজকে আমাকে গণ পিটানি খাওয়ার জন্য ডেকে এনেছে ।
যে করেই হোক ওর কান্না থামাতে হবে ।
তাই আনু কে একটু লোভ দেখাই দেখি কাজ হয় কিনা ।
আড় চোখে তাকিয়ে একটু খোচা দিয়ে বললাম
– এই আনু আয় তোকে চকলেট আর ফুচকা খাওয়াবো ..? খাবি ..!(রবি)
– সত্যি খাওয়াবি (আনু)
অশ্রু ভেজা নয়নে যখন কথা টা বলে আমার দিকে তাকালো তখন আমার বুকের ভেতর ধুক করে কেপে উঠলো ।
চোখ টা লাল বর্ন ধারন করেছে । চোখ বেয়ে ঝড়ে পড়া নোনা জলের ঝর্নাগুলো মিশে একাকার হয়ে গেছে চোখের ওই কাজল এর সাথে ।
চোখ ঢলতে ঢলতে কাজল গুলো এলোমেলো করে ফেলছে । তাই নিজে থেকে হাত বাড়িয়ে
ওর গাল বেয়ে পড়া চোখের পানি গুলো মুছে দিয়ে আবার চোখের কাজল টাও ঠিক করে দিলাম।
আর ও আমার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে । হয়তো মনে মনে কিছু ভাবছে । যা বুজার সাধ্যি আমার নেই ।
কারন ও অনেকটাই বদলে গেছে । আর এই বদলে যাওয়ার পিছনে সব থেকে বড় অবদান ওর বফ এর ।
যাই হোক ও আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো এক নজরে ..! চোখ গুলো এত মায়াবি যে ডুবে মরে যেতে ইচ্ছে করে তাই ওকে দমক দিয়ে বললাম
– কিরে কি দেখছিস (রবি)
ওর হুশ ফিরলো আর সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিলো আর বলল
– কিছু না (আনু)
– আচ্ছা চল যাই আগে কোনটা খাবি বল (রবি)
– ফুচকা আগে খাবো (আনু)
– ঠিক আছে খাওয়াবো .? কিন্ত আমার একটা শর্ত আছে মানতে হবে
– কি শর্ত (আনু)
– আর কখনো এভাবে কাদবি না । একদম ভালো দেখায় না তোকে । এত সুন্দর মায়াবি চোখে অশ্রু টা বেমানান । আর অশ্রু টার রিন পরিশোধ করার কারো ক্ষমতা নেই ।
একটা কথা মনে রাখবি আনু
– প্রকৃতি সব সময় বেস্ট জিনিস টাকে বেছে নেয় ।
যেমন একটা স্ত্রী হায়না প্রকৃতি থেকে সব থেকে শক্তশালি হায়না কে বেছে নিবে । কারন শক্তিশালি হায়না টা তার রক্ষা করতে পারবে । যা একটা দুর্বল হায়না পারবে না । ঠিক তেমন একটি পুরুষ হায়না প্রকৃতি থেকে সব থেকে সুন্দর আর আর্কষনীয় হায়না টাকে বেছে নেবে । এটাই প্রকৃতির নিয়ম ।
সবাই বেস্ট টাই বেছে নিবে ।
তোর ভালোবাসার মানুষ টাও হয়তো তার বেস্ট কাউকে পেয়ে গেছে । তাই তো তোকে ছেড়ে চলে গেছে ।
আর তুই কিনা শুধু শুধু ওর মিথ্যা ভালোবাসার জন্য কাদছিস এভাবে ।
তোর ওই ধোকাবাজ বিএফ কি পারবে তোর অশ্রু সমতুল্য ভালোবাসা তুলে দিতে তোর হাতে ।
কখনো ই পারবে না কেনো জানিস । কারন সে তোকে কখনো ভালোবাসেনি । যদি ভালোবাসতো তাহলে তোর নয়ন বেয়ে অশ্রু ঝড়ার আগে ওর মনে আঘাত লাগতো । হাজার টা চেষ্টা করতো তোর অশ্রুর ভরা আখিতে খুশির ছাপ আনার জন্য । কিন্ত সে তা করেনি । সে তোর হাত ছেড়ে অন্য হাত বেছে নিয়েছে । কারন তার ভালোবাসা টা মিথ্যা ছিলো ।
– হু ঠিকিই বলেছিস আর কখনো কাদবো না ওই প্রতারক টার জন্য (আনু)
– সত্যি ..? (রবি)
– হমম সত্যি এখন চল খিদে লেগে গেছে কাদতে কাদতে ফুচকা খাওয়া বেশি করে .? (আনু)
– হিহিহি কাদতে কাদতে ক্ষিদে লাগে হা হা হা এই প্রথম তোর কাছ থেকে শুনলাম (রবি)😂
– কুত্তা তোকে কিন্ত …(আনু)
– হইসে থাক আর কিছু বলতে হবে চল এবার (রবি)
বসা থেকে দুজনে উঠে হাটা শুরু করলাম ।
এতক্ষন দুজনে পার্কের এক কোনে বসে কথা গুলো বললাম ।
এতক্ষনে বুজতেই‌ পারছেন ওর ব্রেকআপ হইসে ।
এতে অবশ্য আমি সব থেকে বেশি খুশি হয়েছি । কারন ও‌ যে ছেলেটাকে ভালোবাসতো সে ছেলেটা আমার এক ছোট ভাই এর বন্ধু হয় । যতটুকু জানি ছেলেটা একটা প্লে বয় ।
যখন ছেলেটা জানতে পারলো আমি ওর বেস্ট ফ্রেন্ড । তখন ও‌ আনুকে নিজের কথার জালে ফাসিয়ে আমাদের মাজে দেয়াল তৈরি করে তুলেছিলো । কারন ও ভালো করেই জানতো ওর প্রেমে সব থেকে বড় বাধা আমি । তাই আগে আমাকে সাইড করছিলো ।
এতে আমি অবশ্য কিছু মনে করিনি । কারন আমার বিশ্বাস ছিলো আনু একদিন ঠিকি ফিরে আসবে আমার কাছে ।
এই যা কত কথা বললাম পরিচয় টাই দেওয়া হলো না । চলেন যেতে যেতে পরিচয় টা দেই ।
আমি আলোক আহমেদ রবি । সেকেন্ড ইয়ার পাস করে আর পড়ালেখা করিনি ছেড়ে দিসি। সত্যি বলতে পড়ালেখা আমার ভালো লাগতো না এই বেপার টা পরিবার জানতো তাই তারাও আর চাপ দেয়নি পড়ার জন্য । বাবা মায়ের এক মাত্র ছেলে আমি । খুব আদরের । মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলে বাবা মা কোনোদিন আমার কোনো ইচ্ছে অপূর্ন রাখেনি।
আর এতক্ষন যার সাথে কথা বললাম । সে হচ্ছে আনিকা । সবাই আনু বলেই ডাকে ইন্টারে পড়ে এবার ।
বাবা মায়ের আদরের একমাত্র মেয়ে । বলতে গেলে বড়লোক বাবার রাজ কন্যা । খুব জিদ্দি আর রাগি মেয়ে যখন যা বলে তাই করে । ওর সাথে পরিচয়টা আমার ফেসবুকেই হয়েছিলো । সেখান থেকে আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড হই ।
পরিচয় দিতে দিতে দুজনে একটা ফুচকার দোকানের সামনে এসে পড়লা‌ম ।
তারপর ভেতরেই‌ গিয়েই খেলাম আরেক জটকা ।
আনুর বর্তমান এক্স বিএফ সেখানেই আরেকটা মেয়ের সাথে বসে ফুচকা খাওয়াচ্ছিলো দুজন দুজনকে ।
আনু তা দেখে রাগে কটমট করতে লাগলো।
পরিস্থিতি আয়্যতে আনার জন্য আমি আনুর হাত ধরে বললাম।
– চল এখান থেকে যাই (রবি)
– কেনো ওকে ভয় পাস নাকি (আনু)
– দুর ওর মতো পিচ্ছিকে আমি ভয় পাবো কেন আমি তো তোর রাগ দেখে ভয় পাচ্ছি না জানি কখন কি করে বসবি আল্লাহ জানে (রবি)
– দাড়া তুই এখানে দেখ কি করি (আনু)
আনু আমার হাত ছাড়িয়ে হাটতে হাটতে ছেলেটার সামনে গিয়ে দাড়ালো ।
ছেলেটা ওকে দেখেই দাড়িয়ে গেলো ।
ছেলেটার মুখে টেনশনের ছাপ আর আনুর মুখে রাগের ছাপ
ছেলেটা আনুকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই
আনু ঠাসসসসসস… করে একটা চড় বসিয়ে দিলো
চড় টা এত জোরেই মারছে যে আশেপাশের সব কাপল রাই ওদের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলো ।
আর আমি দুর থেকে দাড়িয়ে মজা নিচ্ছিলাম।
ছেলেটা চড় খেয়ে গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলো নির্বাক মূর্তির মতো ।
ছেলেটার সাথে থাকা মেয়েটা উঠে দাড়িয়ে রেগে আনু কে বলল
– এই মেয়ে তোমার সাহস তো কম না আমার সামনে আমার বফ এর গায়ে হাত তুলো ।(মেয়েটি)
– হা হা হা কি এই লম্পট টা তোমার বফ । খোজ নিয়ে দেখো আরো কত মেয়েকে তোমার আর আমার মতো নিজের প্রেমের ফাদে ফেলে গেম খেলে তাদের সাথে (আনু)😠
মাজখান থেকে ছেলেটা আনু কে বাধা দেওয়া জন্য বলছে
– আনু কি বলছো তুমি এসব ……(ছেলেটা)
– ঠাসসসসসসস ….‌ শুয়োয়ের বাচ্চা খরবদার যদি আরেক বার আমার নাম তোর ওই মুখে উচ্চারন করিস তাহলে জুটা দিয়ে পিটিয়ে গাল লাল করে ছাড়বো বলে দিলাম। (আনু)
ছেলেটা পর পর দুইটা থাপ্পর খাওয়ার পর মান সম্মান এর আর কি বাকি থাকে হালায় তাও ওখানেই দাড়িয়ে আছে ।
এবার দেখছি ওর নতুন গার্লফ্রেন্ড কে বলছে
– দেখো তুমি বিশ্বাস করো ও যা বলছে সব মিথ্যা (ছেলেটা)
আনু এবার আরো রেগে গেলো ।
কসিয়ে মারলো আরেকটা চড়
সবাই বিনা পয়সায় এইরকম ধামাকা সিন উপভোগ করছে ।
আনু রেগে গিয়ে বলল
– কুত্তার বাচ্চা আমাকে মিথাবাদি বলস তোর সাহস তো কম না (আনু)
মাজখান থেকে মেয়েটা বলল
– তুমি যে মিথ্যা বলছো না তার প্রমান কি (মেয়েটা)
তারপর আনু ওর মোবাইল থেকে মেয়েটা কিজানি দেখালো ।
তার পর মেয়েটাও অনেক টা রেগে গেলো ।
ছেলেটার সামনে গিয়ে ওই মেয়েটাও
– ঠাসসসসসসসসস
একটা চড় বসিয়ে দিলো ।
– আহা আজকে দেখি ছেলেটার চড় খেয়েই পেট ভরে গেলো ।
মেয়েটা রেগে ছেলেটাকে বলল
– তোর মতো একটা লম্পট এর সাথে কথা বলছি এটা ভাবতেও আমার ঘৃনা হচ্ছে ।
নেক্সট টাইম যদি আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করিস তাহলে তোর আর রক্ষে থাকবে না বলে দিলাম ।
এটা বলেই মেয়েটা চলে গেলো ।
আর আনু সেখানে দাড়িয়ে হেসে হেসে ছেলেটাকে বলতে লাগলো
– তোর জিবনে এখন সব থেকে বড় শর্ত্রু আমি ।
দেখি তুই কি করে আর কোনপ মেয়ের সাথে প্রেম করিস
তারপর আনু ও সেখান থেকে চলে আসচ্ছিলো ।
আর ছেলেটা সেখানে দাড়িয়ে রইলো । চোখ গুলো চড়ের আঘাতে লাল হয়ে গেছে ।
হঠাৎ আনু আমার সামনে এলো ।
আমি ওকে দেখে হাসচ্ছিলাম ।
– ঠাসসসসস (আনু)
আমাকে একটা বসিয়ে দিলপ
চড় খেয়ে আমি গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম ।
– কিরে কুত্তি আমায় মারলি কেন (রবি)
– কুত্তা আমার সাথে না গিয়ে এখানে ভিতুর মতো দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসচ্ছিস লজ্জা করে না তোর
(আনু)
– তাই বলে এভাবে চড় মারবি …! ব্যথা পাইছি তো(রবি)
– ওলে আমার চুনালে দেখি কোথায় ব্যথা পাইছো (আনু)
– হুর সর সামনে আসবি না ..! না হলদ আরেকটা খেতে হবে (রবি)
– ওই তুই ফুচকা খাওয়া বি না (আনু)
– না ../ (রবি)
– কি …! কি বললি তুই (আনু)
– কই কি বলছি …/ বললাম চল খাবি না দেরি হয়ে যাচ্ছে তো (রবি)
(বাপরে বেচে গেছি না হলে আরেকটা পড়তো )
হেতের হাত এমনেতে অনেক নরম কিন্ত চড়টা জোরেই লাগছে । মনে হয় ডিম মুরগি বেশি খায় এমন কইরা কেউ কাউরে মারে নাকি !
হঠাৎ আনু বলল
– কোথায় যাবো (আনু)
– কেনো অন্য কোথাও (রবি)
– না এখানেই খাবো (আনু)
– সত্যি (রবি)
– হ্যা চল (আনু)
তারপর দুজনে একটা টেবিলে গিয়ে বসলাম । অনেকে আমাদের দুজন কে আড়চোখে তাকিয়ে দেখছে ।
ফুচকা ওর্ডার দিলাম । আমি এক প্লেটের বেশি খেতে পারলাম না । আর রাক্ষসিটা একাই তিন প্লেট খাইয়া নিলো ।
রাক্ষসি একটা
বিড় বিড় করে বললাম ওর দিকে তাকিয়ে
ও কি জানি আন্দাজ করে বলল
– কিরে কিছু বললি নাকি (আনু)
– কই কিছু বলি নাই তো .! (রবি)
– তাই ভালো (আনু)
– আচ্ছা মেডাম আর কয় প্লেট খাবেন । (রবি)
– কেনো আরো খাওয়াবি (আনু)
– খেতে পারলে খাওয়াবো (রবি)
(রাক্ষসির বাচ্চা আর খাইস না পকেটের টাকা নাই আর রাক্ষসের মতো গিলতেই আসোস খালি)(মনে মনে)
– না থাক অন্য একদিন খাবো আজকে পেট ভরে গেছে (আনু)
– উফফ যাক বাবা বাচলাম (বিড়বিড় করে )
– কিছু বললি (আনু).
– কই না তো (রবি)
– মনে হলো কিছু বললি (আনু)
– দুর কিছু বলি নাই চল এবার (রবি)
– আচ্ছা (আনু)
তারপর দুজনে উঠলাম ।ফুচকার বিল ই হইসে 200 টাকা কেমন ডা লাগে ।
ফুচকার বিল দেওয়ার সময় কেমন জানি টাকার প্রতি একটা মায়া লাগছিলো ।
হাত খরচের টাকা গুলো এক মূহুতেই শেষ
কি আর করার ….?
তারপর দুজনে হাটা শুরু করলাম।
রাস্তার ফুটপাট ধরে হাটছি আর দুজনে কথা বলছি ।
হঠাৎ করেই আনু আমার হাত ধরে টেনে
একটা দেওয়ালের চিপায় গেলো ।
আমি তো থ মেরে গেলাম । অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম ।
চোখ গুলোতে কেমন আতঙ্কের ছাপ দেখাযাচ্ছে
কিছু দেখে চমকে গিয়েছে নাকি ….?

দুজনে রাস্তার ফুটপাত ধরে হাটছি এখন ।
আনু শুধু একাই কথা বলছে । আর আমি শুধু তালে তাল মিলাচ্ছি আর ওর দিকে তাকিয়ে রয়েছি ।
জানি না ওর চেহারায় কি মায়া আছে । শুধু তাকিয়ে থাকতেই মন চায় ।
একমাত্র আনুই আমার ভালো মন্দ সব বুজে । কখন মন খারাপ থাকে কখন মন ভালো থাকে সব কিছুই বুজে মেয়েটা ।
বলতে গেলে আমার অনূভুতি সম্পকে ওর যতটুকু জ্ঞান আছে তা আর কারো মধ্যে নেই ।
ওর মতো বেস্ট ফ্রেন্ড পাওয়া সত্যি ভাগ্যের বেপার । যার একটা বেস্ট ফেন্ড থাকে । তার একটা আলাদা ভালোবাসার জগৎ থাকে । সেই জগৎ এ সব থাকে কিন্ত ঘৃনা অবহেলা আর অবিশ্বাস থাকে না ।
যা আর পাচটা রিলেশনে থাকে । তাই তো আজ পর্যন্ত কাউকে মনে ধরে নাই ।
কথা বলতে বলতে দুজনে হাটচ্ছিলাম ।
হঠাৎ আনুর কি হলো বুজলাম না ।
হাত ধরে হেচকা টান মেরে । একটা দেওয়ালের চিপায় এসে লুকালো । দেওয়াল টা অনেক চিপা । দুজনে কোনো মতোন লুকিয়ে আছি । কিন্ত কেনো তা বুজতে পারছি না ।
হঠাৎ কি হলো । চিপায় আনলো কেন । আনুর চেহারায় কেমন একটা আতঙ্গের ছাপ দেখা যাচ্ছে । মাথা বেয়ে ঘাম ঝড়ছে ওর । চোখ গুলিয়ে বার বার এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখচ্ছে ।
আনু ঝোরে ঝোরে নিশ্বাস এর শব্দ পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে।
আমি কিছুটা অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছি ।
ফিস ফিস করে ওকে জিজ্ঞেস করলাম।
– কিরে কি হয়েছে এমন করছিস কেনো ।(রবি)
– চুপ (আনু)
– কেনো (রবি)
– এমনি চুপ (আনু)
– ওকে (রবি)
তারপর আর কিছু বললাম না চুপ করে রইলাম।
কিন্ত ওর ব্যবহার আমাকে অবাক করছে । কি হয়েছে বুজতে পারছি না ।
হঠাৎ করে আনু একটু জোরে নিশ্বাস ছেড়ে বলল
– চল এখন (আনু)
তারপর দুজনে ওই চিপা গলি থেকে বের হলাম।
সে এখনো আমার হাত শক্ত করে ধরে আছে । এটাই আমার সব থেকে বেশি ভালো লাগছে ।
আমি আনুকে জিজ্ঞেস করলাম ।
– কিরে হঠাৎ এমন করলি যে (রবি)
– আরে গাধা আব্বুর গাড়ি এখান দিয়ে যাচ্ছিলো যদি দেখে থাকে তাহলে আর রক্ষে নেই । তাই সেফটির জন্য ওই চিপায় লুকাইছি । (আনু)
– তাতে কি হইসে আঙ্কেল তো আমাকে ভালো মতই চিনে । (রবি)
– দুর গাধা কলেজ বাদ দিয়ে তোর সাথে ঘুরতাসি জানলে আমাকে ঘরে বেধে রাখবো । (আনু)
– ওও তাই বল (রবি)
– হ্যা এখন আমাকে চকলেট কিনে দিবি চল (আনু)
– কি এত খাইলি তাও পেট ভরে নাই (রবি)
– এই তুই আমাকে খাওয়ার খোটা দিস । যা তোর চকলেট খামু না (আনু)
আনু আমার হাত ছেড়ে সামনের দিকে হাটা শুরু করলো । দেখলেন তো শুধু শুধু রেগে গেলো । তার ছিড়া মাইয়া । না গিয়ে রাগ ভাঙাই আগে ।
আর দাড়িয়ে না থেকেদৌড়ে গিয়ে হাত ধরে বললাম
– কিরে আমাকে রেখেই চলে যাচ্ছিস (রবি)
– তো কি করবো তুই নিজে থেকে খাইয়ে এখন খোটা দেস  কুত্তা যা তোর সাথে আড়ি (আনু)
– যাক বাবা আমি আবার কখন খোটা দিলাম। (রবি)
– এই তো এখন (আনু)
– আচ্ছা সরি এই দেখ কান ধরলাম আর কখনো বলবো না এবার চল চকলেট কিনে দিব (রবি)
– আবার খোটা দিবি না তো (আনু)
– দিলে তারপর বলিস (রবি)
– আচ্ছা তাহলে ঠিক আছে চল (আনু)
(আসলেই তার ছিড়া পাগলি)(মনে মনে)
বাচ্চাদের মতো সব সময় জিদ ধরে বসে থাকে ।
তারপর দুজনে হাটতে হাটতে একটা দোকানের সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
চকলেটের অনেক আইটেম সাজানো রয়েছে
তাই ওকে জিজ্ঞেস করলাম।
– কিরে কোনটা নিবি (রবি)
– তোর যেটা ভালো লাগে দে (আনু)
– তুই খাবি তুই বল না (রবি)
– না তুই পছন্দ করে কিনে দে (আনু).
– ধুর পছন্দ করতে বলছি তোকে (রবি)
– এই তুই আমাকে দমক দিলি কেন (আনু)
– কই দমক দিলাম (রবি)
– এই তো এখন দিলি । তুই খায়িয়ে আমাকে খোটা দিস আবার এখন দমক ও দিচ্ছিস ।
যা আজকের পর আর ও তোর থেকে কিছুই খাবো না হু (আনু)
– না খেলেই ভালো (রবি ) (বিড়বিড়)
– কি বললি (আনু)
– কই কিছু না তো .. আচ্ছা ওয়েট আমি পছন্ন করে কিনে দিচ্ছি ‌এত রাগ দেখাতে হবে না (রবি)
– হু (আনু)
তারপর দুইটা কিটক্যাট কিনে দিলাম ।
সে ওগুলো পেয়ে তো মহা খুশি ।
হাতে দিতেই বলেই উঠলো
-ওয়াও দস্ত তুই খুব ভালো রে উমমমমা (আনু)
– ওমা এ দেখি জড়িয়ে ধরে গালে পাপ্পি দিয়ে বসলো
আমি একটু লজ্জাবোধ করলাম ।
ভাগ্যিস দোকানের আশে পাশে তেমন লোক নেই ।
থাকলে এতক্ষনে মান সম্মান প্লাস্টিক হয়ে যেতো ।
আমি কিছু বললাম না সেখান থেকে সোজা হাটা শুরু করলাম ।
দেখলাম আনু চকলেট দুইটা একসাথে মনের সুখে খাচ্ছে ।
রাক্ষসি একটা একাই গিলতাসে আমারে একটু হাধেও না । (মনে মনে)
দেখতে দেখতে প্রায় দুপুর হয়ে গেলো ।
আমি আনুকে বাড়িতে পৌছে দিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসলা‌ম ।
ঘরে এসেই প্রথমেই ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ।
বার বার শুধু আনুর দেওয়া পাপ্পি টার কথাই মাথা ঘুরছিলো ।
কিভাবে পাগলি টা রাস্তার মাজে কিস দিয়ে বসলো ।
আসলেই একটা পাগল । মেয়েটার মন টা খুব ভালো একটু অভিমানি । কিন্ত বুজিয়ে বললে ওর থেকে ভালো মেয়ে আর একটাও খুজে পাবে না ।
ওর কথা মনে পড়তেই ঠোটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো ।
মেয়েটার কাছাকাছি থাকলেই ওর মায়ায় যে কেউ পড়তে বাধ্য ।
ওর চোখে এক অদ্ভুত জাদু আছে । খুব বেশিখন তাকিয়ে থাকতে পারি না ।
আবার না দেখেও থাকতে পারি না ।
অনেক দিন ওর সাথে কথা বলতে পারি নাই শুধু মাত্র ওই ছেলেটার জন্য ।
অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। মিস করেছি প্রত্যেক টা সময় ।
সব সময় ওর সাথে কথা বলার জন্য মনটা ছটফট করতো ।
কিন্ত ও যোগাযোগ করার কোনো সুযোগ রাখেনি ।
নাম্বার টাও ব্লাক লিস্ট করে রেখেছিলো ।
যেদিন ও আমাকে ফেসবুক থেকে বল্ক দিলো ।‌
সেদিন মন থেকে দোয়া করেছিলাম।
আর বলেছিলাম
– যদি তুই আমার সাথে কথা না বলে হাসি খুশি থাকতে পারিস । তাহলে আমি সারাজিবন তোর সাথে কথা না বলে থাকতে পারবো ।
কারন প্রিয়জনের সুখেই তো আমার সুখ ।
তাই আমি ও যোগাযোগ করার চেষ্টা করি নাই ।
কিন্ত হঠাৎ করে আজ সকালে আমার বাসায় এসে উঠলো ।
আমার আব্বু আম্মু ও ওকে চিনে । সেই ক্ষেত্রে তারা কিছু মনে করে নি ।
বিছানায় ঘুমিয়ে ছিলাম । চুল ধরে টেনে তুলছিলো ।
চোখ খুলে ওকে দেখার পর এত খুশি হয়েছিলাম । যে আমি মুখ ফুটে কিছু বলতে পর্যন্ত পারছিলাম না ।
তাড়াহুড়ু করে রেডি হয়ে ওর সাথে বেরিয়ে পড়ি নাস্তাও করতে ভুলে গেছিলাম এত খুশি হয়ে ছিলাম।
তারপর থেকে কি কি হলো দেখলেন ই তো ।
যাই হোক ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে এসে আনু কে কল দিলাম ।
কিন্ত কল রিসিভ করলো না হয়তো ঘুমাইতাসে । ডিসর্টাব করা ঠিক হবে না ঘুমাক একটু মন টাও হাল্কা হবে ।
আমি খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম । তারপর আমার ঘরে এসে শুয়ে শুয়ে মোবাইলে গেম খেলছিলাম ।
হঠাৎ করে আনুর ফোন এলো ।
খুশি মনে ফোনটা রিসিব করলাম ।
– হেলো আনু (রবি)
– এ্যা এ্যা এ্যা  দসসসস্ত (আনু)
হঠাৎ আনুর কান্নার শব্দ শুনে অবাক হলাম ।
ওর কান্নার শব্দ শুনে ভেতরে কেমন মোচড় দিয়ে উঠলো ।
তাই আর দেরি না করে জিজ্ঞেস করলাম
– কিরে কি হইসে কাদচ্ছিস কেনো(রবি)
– এ্যা এ্যা এ্যা দস্তা আমাকে মারছে (আনু)
কথাটা শুনেই ফিক করে হেসে দিলাম । এই প্রথম ওর মুখে শুনলাম ওরে কেউ মারসে
আমি হেসে হেসে একটু ঢং দেখিয়ে বললাম
______ কি কার এত বড় সাহস আমার আনুর গায়ে হাত তুলে নাম বল শুধু দেখ তার কি হাল করি (রবি)
_______আম্মু মারছে আর আব্বু বকা দিছে (আনু)
______ ওও আঙ্কেল আন্টি এরকম করছে (রবি)
______হমমমমম !!! (আনু)
______ দুর বোকা মেয়ে মা বাবা বকলে বা মারলে কাদতে নেই । এটা তাদের ভালোবাসা । বুজলি (রবি)
______কিন্ত আমাকে অনেক বকাও দিসে তোর লাইগা কুত্তা (আনু)
______ কি আমার লাইগা (রবি)
কথাটা শুনেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্তা হলো
______ হ্যা তোর লাইগাই তো । আজকে কলেজ না গিয়া তোর লগে ঘুরছি এই লাইগা মারছে আম্মু (আনু)
______ ভালো করছে আমি কি বলেছিলাম আমার সাথে ঘুরতে যেতে । কলেজ গেলে তো মার ও খেতি না আর বকাও শুনতে হতো না (রবি)
______ তুই ও আমার আব্বুর মতো খালি জ্ঞান দেছ । (আনু)
_____ ওই আমি আবার কি জ্ঞান দিলাম (রবি)
_____ কিছুনা (আনু)
_____ আচ্ছা আর কাদিস না এমনি সব ঠিক হয়ে যাবে (রবি)
_____ হু  (আনু)
______ লা্ন্স করেছিস (রবি)
______ হ্যা তুই খেয়েছিস (আনু)
_____ হ্যা (রবি)
_____ আচ্ছা শোন আজকে বিকালে আমার সাথে দেখা করবি (আনু)
_____ কেন (রবি)
_____ এমনি কথা আছে (আনু)
_____ ফোনে বল (রবি)
_____ সব কথা ফোনে বলা যায়না আর সব কথা ফোনে বলে বোঝানো যায়না বুজেছিস বুদ্ধু (আনু)
_____আচ্ছা কোথায় আসবো (রবি)
_____ নদীর পাশে পার্ক টায় দেখা করবো (আনু)
_____ আচ্ছা আসভো (রবি)
তারপর আরো অনেকক্ষন কথা বললাম ।
মেয়েটার সাথে কথা বললে কেনো জানি না সব মন খারাপ দুর হয়ে যায় ।
ওর সাথে কথা বলা শুরু করলে কথা বলা শেষ ই হয়না ।
আমাদের ফেসবুক চেটিং ও এমন দিন গেছে যে সকাল থেকে শুরু করে রাত ফুরিয়ে ভোর হয়ে যায় তবুও কথা বলা শেষ হয়না । এই চ্যাটিং করতে করতেই আমি ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পরেছি ।
কিন্ত সেটা ওকে জানাই নি । যদি বন্ধুত্বের মাজে ফাটল ধরে তাই ।
আজ অনেক দিন পর আনুর সাথে মন খুলে কথা বললাম । মন টা হালকা হয়ে গেলো ।
এতদিন আমার মাজে সব সময় একটা শূন্যতা কাজ করতো । কিন্ত আজ এমন মনে হচ্ছে না ।
কথা বলতে বলতে বিকাল হয়ে গেলো ।
এখন রেডি হচ্ছি । সকাল বেলা রেডি হওয়ার টাইম পাইনাই । কিন্ত এখন আনুর পছন্দমতো রেডি হবো ।
ওর দেওয়া শার্ট টাই পরবো । ঠিক ঠাক মতো রেডি হলাম । এখন ওর সাথে দেখা করতে যাবো জানি না আনু কেনো ডেকেছে ।
এটাও জানি না আনু কিরকম করে সেজে আজবে । ওকে সব থেকে বেশি সুন্দর লাগে । বোরকা পড়লে । আমি ওর জন্মদিনে একটা বোরকা গিফট করেছিলাম । কালো রং এর । কিন্ত ডিজাইন টা সুন্দর ছিলো । ওর ও খুব ভালো লেগেছিলো ।
আনু কি আমার দেওয়া বোরকা টাই পরে আসভে । কিজানি পড়তেও‌পারে । যাই হোক আর কিছু না ভেবে রেডি হয়ে বেড়িয়ে পরলাম ।
বাসা থেকে বের হতেই‌ খেলাম একটা ঝটকা ।
একটা গাড়ি বাড়ির গেটের সামনে এসে থামলো ।
গাড়িটা চেনা চেনা লাগছে ..?
মনে হচ্ছে আগে কোথাও যেনো দেখেছি ..!
কিন্ত কোথায় দেখেছি তা মনে পড়ছে না !
হঠাৎ গাড়ি থেকে আনুর বাবা নেমে এলেন ।
ওনাকে দেখে তো আমার কলিজায় পানি নেই
কি করবো বুজতে পারছি না । এই‌ প্রথম আনুর বাবা আমাদের বাড়িতে আসলো ।
কিন্ত কেনো আসলো তাও‌বুজতে পারছি না ..?
তাহলে কি আজকে ওর সাথে ঘুরছি বলে আব্বুর কাছে নালিশ দিতে আসলো নাকি ।….
আজকে তো আবার আনুকেও বকা দিসে …!
আল্লাহ রক্ষা করো তুমি ।
মনে মনে আল্লাহ কে ডাকতে লাগলাম ।
আঙ্গেল আমার সামনে আসার পর ওনাকে প্রথমেই সালাম দিলাম।
ওনি সালামের জবাব দিলেন । ওনাকে দেখে মনে হচ্ছে খুব খুশিতে আছে ।
কিন্ত তাহলে তো এখানে আসার কথা না ।
হঠাৎ …..
ভাবনার দেশে ছেদ করে আঙ্গেল আমাকে জিজ্ঞেস করলেন ।
_____ কোথায়ও যাচ্ছো নাকি (আঙ্গেল )
_____ না মানে আঙ্গেল একটু বাইরে যাচ্ছিলাম আরকি (রবি)
_____ তোমার আব্বু আম্মু ভেতরে আছে (আঙ্গেল )
যা শেষ রক্ষা আর হলো না । ভয়ে মাথা বেয়ে ঘাম ঝড়তে লাগলো ।
ভয়ে ভয়ে জবাব দিলাম।
_______হ্যা আঙ্গেল আছে ওনারা ভেতরে কিন্ত কেন আঙ্গেল ..?(রবি)
________ সেটা ওনাদেরকেই বলবো তুমি যাও ঘুরে আসো (আঙ্গেল )
_______আচ্ছা ! (রবি)
তারপর ওনি ভেতরে চলে গেলেন।
আমি আর দাড়ালাম না ভয়ে দিলাম দৌড়
যদি সত্যি বিচার দিতে আসে তাইলে এখন প্যাদানি খেতে হবে এর থেকে ভালো রাতে একেবারেই কেলানি টা খাই ।
তাই আর দেরি করি নাই দিসি দৌড় । এখন রাস্তা দিয়ে হাটছি । যা হবার হবে দেখে নিবো পরে । কিন্ত আমার পাজি বেস্টির লাইগা কিছু কিনে নিয়ে যেতে হবে । না হলে গাল ফুলিয়ে বসে থাকবে ।
রাস্তার পাশে একটা ফুলের দোকান থেকে কয়েকটা গোলাপ কিনলাম ওর জন্য । কারন গোলাপ ফুল ওর খুব প্রিয় ।
তারপর রাস্তা দিয়ে খুশি মনে হাটছি । আর ভাবছি ফুল গুলো দিলে কতই না খুশি হবে সে । ওর ওই হাসি মাখা মুখ টাই সব সময় দেখতে ইচ্ছে করে ।
হাটতে হাটতে অবশেষে পৌছে গেলাম । সেই পার্কে।
কিন্ত কখনো কল্পনাও করতে পারি নাই । আনু আমাকে এই জন্য ডেকেছে ।
সেখানে পৌছে দেখি আনুর সাথে আরেকটা ছেলে হাত ধরে হাটা হাটি করছে দুজনে ।
বুকটা ধুক করে কেপে উঠলো
ঘৃনা হচ্ছিলো নাকি কষ্ট হচ্ছিলো বুজতে পারছিলাম না । চোখের কোনা দিয়ে ফোটা ফোটা নোনা জল গড়িয়ে পরছিলো ।
না আর এখানে থাকা যাবে না । থাকলে হয়তো নিজেকে সামাল দিতে পারবো না ।
কেদেই ফেলবো ।
তাই আর দেরি না করে ওকে কিছু না বলেই দুর থেকেই এক নজর দেখে চলে এলাম সেখান থেকে ।
খুব কষ্ট হচ্ছে । আনু তাহলে এর জন্য ডেকেছিলো । আনুর মনে কি আমার জন্য কোনো ফিলিংস নেই

দোকান থেকে ফুল গুলো কিনে । খুশি মনে হেটে হেটে যাচ্ছি আনুর কাছে ।
আর ভাবছি .! ফুলগুলো পাগলির হাতে দিলে কতই না খুশি হবে ।
আমি .ওর .ওই হাসি মাখা মুখ খানা দেখার জন্য সব কিছুই করতে রাজি ।
খুব ইচ্ছে করে এই ফুল দিয়ে আমার মনের মধ্যে চেপে রাখা অনুভুতি গুলোকে প্রকাশ করে দেই ।
বলে দেই আনু কে আমি তাকে ভালোবাসি ।
কিন্ত কিছু একটা পিছুটান আমাকে বাধা দিচ্ছে ।
হয়তো বন্ধুত্ব ভেঙে যাবার ভয়টা বাধা দিচ্ছে আমাকে ।
এই ভয়টাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সত্যি হয়ে থাকে ।
অনেক দেখেছি এমন বেস্ট ফ্রেন্ড যদি বেস্ট ফ্রেন্ড কে প্রপজ করে তাহলে তাদের বন্ধুত্বের সম্পকটাও আর আগের মতো থাকে না ।
ধীরে ধীরে দুরুত্ব বেড়ে যায় । এর প্রভাব টা শুধু একজনের উপরেই পড়ে ।
হয়তো ছেলে নয় তো মেয়ে ।
ঠিক একি ভয় আমি পাচ্ছি ।
যদি সম্পর্ক টা সারাজিবনের জন্য ভেঙে যায় তাহলে নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবো না ।
আরো বিভিন্ন কথা ভাবতে ভাবতে অবশেষে পৌছে গেলাম পার্ক এ ।
কিন্ত এমন একটা দৃশ্য দেখতে পারবো জানলে আমি কখনো এখানে আসতাম না ।
আনুর সাথে অন্যে একটা ছেলে হাত ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।
এক সাথে দুজনে হাটচ্ছে । এটা দেখেই বুকের ভেতর কেমন ধুক করে কেপে উঠলো ।
বুকের বা দিকে চিন চিন ব্যথা অনুভব করতে পারছিলাম । .
সেই যায়গা টায় যাকে বসিয়েছি সেই এই ভাবে আঘাত দিবে কখনো ভাবতে পারি নি ।
না ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছি না আর ।
খুব কষ্ট হচ্ছে ।
হয়তো বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকলে নিজেকে সামলাতে পারবো না ।
কেদেই ফেলবো ।
আনু তুই আমার সাথে এরকম টা করতে পারলি । আগে যদি জানতাম আনু । তুই অন্যে একটা ছেলের সাথে মিট করানোর জন্য ডেকেছিস । তাহলে কোনোদিন ও আসতাম না রে । (মনে মনে)
বাহ দুজন কে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে । দূর থেকে খুব ভালো মানিয়েছে । দেখেই বোজা যায় ।
আনুকেও খুব খুশি দেখাচ্ছে । ছেলেটার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে আর হাটচ্ছে ।
খুব সুন্দর মানিয়েছে ।
দোয়া করি আনু তোর এই হাসি টা যেনো কখনো না হারায় ।
আমি হারিয়ে যাবো আনু যাতে কাদলেও আর দেখতে পারবি না ।
তোর জন্য সব সময় দোয়া করবো আনু । তুই খুব ভালো থাকবি । আনু চলে যাচ্ছি । (মনে মনে)
চোখ বেয়ে ঝড় ঝড়ে করে অশ্রু ঝড়তে লাগলো ।
না এখানে থেকে যত ওদের দেখবো । তত বেশি কষ্ট হবে ।
কষ্ট বুক তো এমনিতেই ফেটে যাচ্ছে । না আর এখানে এক মূহুর্ত থাকবো না ।
চলে এলাম সেখান থেকে । দুর থেকে আনুকে এক নজর দেখে চলে এলাম।
সত্যি কি আনুর মনে আমার জন্য কোনো ফিলিংস নেই ।
কোনোদিন কি ও‌ আমার অনূভুতির কথা বুজবে না ।
হয়তো বুজবে না আর । হয়তো ওর মনে আমার জন্য এমন কোনো ফিলিংস নেই ।
যাক ভালো থাকুক সে । সে ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকবো ।
রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে চলে যাচ্ছি । যত পা এগোচ্ছি ততো ইচ্ছে করছে দৌড়ে ছোটে যাই আনুর কাছে ।
কিন্ত এমন টা করার আমার কোনো অধিকার নেই ।
চোখ দিয়ে এখনো অশ্রু ঝড়ে পড়ছে ।
চোখের জল টাও খুব বেহায়া সামান্য অবহেলায় ঝড় ঝড় করে বেরিয়ে পড়ে । কারো বাধ মানে না ।
ভাবছি আর কখনো আনুর সামনে আসবো না ।
এখান থেকে কিছুদিনের জন্য চলে যাবো তাহলে আনু আমাকে ভুলে যাবে হয়তো ।
আমি ও‌ চাই সে আমাকে ভুলে ভালো থাকুক ।
ওর থেকে দূরে যাবো এটা ভেবেই খুব কষ্ট হচ্ছে আমার ।
কিন্ত যত কষ্ট হোক ওর ভালোর জন্য ওর থেকে দূরে সরে থাকতেই হবে আমাকে ।
রাস্তা দিয়ে হাটচ্ছিলাম ।
হঠাৎ করে ফোনটা বেজে উঠলো ।
ভাবলাম হয়তো আনু ফোন দিছে ।
খুশি হলাম ।
চোখের পানি মুছে মোবাইল টা বের করে দেখি আম্মুর নাম্বার ।
আনু ফোন দেয়নি । হয়তো আমার আসার কথা ভুলে গেছে ।
ওই ছেলেটার সাথেই হয়তো খুব ভালো আছে ।
আর বেশি কিছু না ভেবে আম্মুর কলটা রিসিভ করলাম।
_____ হ্যালো আম্মু (রবি)
_____ কোথায় তুই (আম্মু)
_____ এই তো বাইরে আছি (রবি)
_____ বাসায় আয় এখুন্নি । আনুর বাবা তোর সাথে কথা বলতে চায় (আম্মু)
তারপর ফোনটা কেটে দিলো । চিন্তায় পরে গেলাম । আঙ্গেল হয়তো আম্মু আব্বুকে নালিশ করে দিয়েছে ।
এখন হয়তো আমাকে আনুর থেকে দূরে সরে থাকার জন্য বলবে ।
যাই বলুক সরি বলে দিবো । আর বলে দিবো ওনার মেয়ের সাথে আর কোনোদিন মিশবো না ।
এমনিতেই ঠিক করেই ফেলেছি আর কোনোদিন আনুর সামনে আসবো না । তাহলে আর কথা না হলেই কি ‌‌! আসে যায়
আর কিছু না ভেবে হাটা শুরু করলাম ।
পুরো রাস্তায় মাথায় শুধু আনুর চিন্তা ঘুর পাক খাচ্ছিলো
কতই না হাসি খুশি দেখাচ্ছিলো মেয়েটাকে ।
কিন্ত আমি কত বড় স্টুপিড দেখছেন ..!! মেয়েটা অন্যে কারো সাথে হাসি খুশি আছে সেটা একদম সহ্য করতে পারছি না ।
খুব হিংসে হয় । গা ঝলে যায় । ওর পাশে কাউকে সহস্য করতে পারি না ।
আনু আমি খুব খারাপ রে আমি তোর পাশে অন্য কাউকে সহ্য করতে পারি না রে ।
তুই অন্যের সাথে হেসে কথা বললেও আমার হিংসে হয় ।
পারলে তোর এই হিংসুটে বন্ধুটাকে ক্ষমা করে দিস (মনে মনে)
অবশেষে এই সব ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে এলাম ।
চোখের পানি মুছে । একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম। তবুও পুরোপুরি পেরে উঠলাম না ।
মিথ্যে হাসির ছাপ মুখে এনে ভেতরে ডুকলাম।
ভেতরে ডুকেই দেখি আনুর বাবা , আর আমার আব্বু আম্মু তিনজনে সোফায় বসে কথা বলছে ।
কি বলছে তা জানি না ।
আমি ভয়ে ভয়ে মাথা নিচু করে সবার সামনে গিয়ে দাড়ালাম ।
বুজতে পারছিলামনা কি বলবো তাই চুপ করে ছিলাম ।
হঠাৎ আনুর আব্বু বসা থেকে উঠে এলো আমার সামনে ।
তারপর বলল
____ তোমার সাথে আমার একটু আলাদা কথা আছে (আঙ্গেল )
____ জি বলুন (রবি)
আমি ভাবতে লাগলাম কি এমন কথা যে সবার সামনে বলা যাবে না । হয়তো সাবধান করবেন ।
মা বাবার সামনে সাবধান করলে । ওনাদের ও মানসম্মান এ আঘাত লাগবে ভেবে আলাদা কথা বলতে চাচ্ছে হয়তো ।
তাই আমি আর আঙ্গেল দুজনে আমাদের বারান্দায় গেলাম ।
তারপর আমি বললাম
___ জি আঙ্গেল বলুন কি বলবেন (রবি)
___ তুমি তো আমাকে ভালো করেই চিনো । আজকে তোমাকে কিছু কথা বলবো । তোমার মা বাবা কেউ বলেছি । ওনারা সম্মতি দিয়েছে এখন বাকিটা তোমার হাতে । (আঙ্গেল )
___ জি বলুন (রবি)
___ শোনো তুমি আমার মেয়ে আনিকাকে খুব ভালো মতোই চিনো জানো । ওর অনুভুতি সম্পকে তোমার থেকে ভালো আর কেউ জানে না বুজে না । এমন কি আমি বাবা হয়ে বুজিনা আমার মেয়েটা কেমন । কখন কি চায় । আনু তা নিজেও জানে না । ওর মন আর মাথা দুটোই আলাদা ভাবে ।
কিন্ত তুমি ওর সব ধ্যান ধারনা সম্পকে অবগত আছো । ওর ভালো মন্দ সব কিছু তুমি । বুজো । তোমার থেকে ভালো আমার মেয়েটাকে কেউ বুজে না ।
আমি ব্যবসায়ীক মানুষ । ব্যবসার কাজর এদেশ ওদেশ ঘুরে বেড়াতে হয় । তার মধ্যে কিছুদিন আগে আমার হার্টের রোগ ধরা পরেছে । এই বেপারে আমার স্ত্রী বা আনু কিছুই জানে না । যেকোনো সময় আমি মারা যেতে পারি ।
আর আমি মারা গেলে । আমার এই পাগলি মেয়েটাকে ওর আম্মু একা সামলাতে পারবে না ।
তাই আমি সিধান্ত নিয়েছি । আমি মারা যাবার আগে আমার মেয়েকে এমন একজনের হাতে তুলে দিতে চাই । যে তাকে ভালোবাসবে । ওর সব পাগলামি সহ্য করতে পারবে ।
হয়তো তুমি ছাড়া অন্য কেউ ওর পাগলামি গুলা সহ্য করতে পারবে না ।
কারন বন্ধু ছাড়া বন্ধুর পাগলামি কেউ সহ্য করতে পারে না ।
একটা ভালো বন্ধুই হতে পারে জিবনের সেরা এবং বেস্ট জিবন সঙ্গী তাই আ‌মি আর তোমার ফ্যামিলি মিলে সিধান্ত নিয়েছি ।
আনু আর তোমার চার হাত এক করে দিবো ।
আমি মারা যাওয়ার আগে আমার মেয়েকে সুখি দেখে যেতে চাই ।
আর তুমি ছাড়া কেউ পারবে না আমার পাগলি মেয়েটাকে সুখি করতে । তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে করো বাবা পিল্জ । (আঙ্কেল )
আঙ্গেল এর কথা শুনে আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্তা হলো ।
এইসব কি বলছে । আনু তো অন্য কাউকে ভালোবাসে ।
আমাকে কি বিয়ে করতে রাজি হবে কখনো ।
ওনার কথা শুনে আমি হাসবো না কাদবো কিছুই বুজতে পারছি না ।
আমি কিছুক্ষন ভেবে চিন্তে বললাম ।
___ এটা অসম্ভব আংকেল ….? আনু অন্য কাউকে ভালোবাসে । ও কখনো রাজি হবে না এই বিয়েতে । আমি বলি কি আংকেল ও যাকে ভালোবাসে । তার সাথে আনুর বিয়ে দিয়ে দিন । দেখবেন ও‌সুখি থাকবে । আর আপনার ও‌চিন্তা থাকবে না কোনো !
আর আমি চাইনা আনুর মনের বিরুদ্ধেগিয়ে ওকে বিয়ে করতে । এটা আমি কোনোদিন পারবো না ।সরি ‌…….!

___ এটা অসম্ভব আংকেল ….? আনু অন্য কাউকে ভালোবাসে । ও কখনো রাজি হবে না এই বিয়েতে । আমি বলি কি আংকেল ও যাকে ভালোবাসে । তার সাথে আনুর বিয়ে দিয়ে দিন । দেখবেন ও‌সুখি থাকবে । আর আপনার ও‌চিন্তা থাকবে না কোনো !
আর আমি চাইনা আনুর মনের বিরুদ্ধেগিয়ে ওকে বিয়ে করতে । এটা আমি কোনোদিন পারবো না ।সরি ‌. (রবি)
___ আরে এমন কিছু না ! আমার মেয়েকে আমি ভালো মতো জানি ! ওর মধ্যে এখন একটা আবেগ কাজ করছে । আর এটা মর্ডান যুগ । সবাই কম বেশি এইরকম ফালতু রিলেশন করে থাকে । তুমি তো আনু কে ভালো করেই জানো ।
ও যে ছেলের সাথেই কথা বলে তাকে বিএফ ভেবে নেয়। আর বাকি সবার থেকে আনু একদম আলাদা তা তুমি ভালো করেই জানো । (আঙ্গেল)
___ হমমম তা ঠিকিই বলেছেন কিন্ত ..! (রবি)
চিন্তা পড়ে গেলাম । কি বলবো এখন ভেবে পাচ্ছি না । আমি আনুকে ভালোবাসি সেটা আমি জানি । আনু তো জানে না ।
ওকে যদি ওর ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে আমার সাথে বিয়ে দেওয়া হয় । তাহলে সে কখনো আমাকে ক্ষমা করবে না । সারাজিবন ওর কাছে অপরাধী হয়ে থাকবো ।
এমন কি সংসার জিবনেই কখনো সুখি হতে পারবে না ।
ভাবনার দেশে ছেদ করে আঙ্গেল বলল
____ আর কোনো কিন্ত শুনতে চাইনা বাবা ..! তুমি রাজি কিনা সেটা বলো । বাকিটা আমি দেখে নিবো (আঙ্গেল)
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে ভেবে চিন্তে বললাম
___ আব্বু আম্মু যদি রাজি থাকে তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই আঙ্গেল (রবি)
কথাটা শুনেই আঙ্গেল এর চেহারায় এক রাজ্য জয়ের খুশি দেখতে পারলাম ।
খুব খুশি দেখাচ্ছে ওনাকে ।
ওনি আমার হাত ধরে বলল
___ এবার হয়তো আমি শান্তিতে মরতে পারবো ..! কারন আমার মেয়েকে এমন একজনের হাতে তুলে দিয়ে যাচ্ছি যে ছাড়া আমার মেয়েকে কেউ সামলাতে পারবে না । (আঙ্গেল)
___ এসব কি বলছেন আঙ্গেল এমন কিছু হবে না .! আর আঙ্গেল আমার একটা ইচ্ছে ছিলো যদি কিছু মনে না করেন তাহলে বলতে পারি (রবি)
___ হ্যা নিশ্চয় বলো কি ইচ্ছে তোমার (আঙ্গেল)
___ আনুর পরিক্ষা টা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিয়ের বেপারে আপনি আনুকে কিছু বলবেন না । সম্পূন গোপন রাখবেন কথাটা (রবি)
___ ঠিক আছে তোমার কথাই রইলো । বাকি টা আমি তোমার আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে পাকা করে রাখবো (আঙ্গেল)
___ যেমন আপনার ইচ্ছে (রবি)
তারপর আঙ্গেল খুশি মনে চলে গেলেন । আর আমি বারান্দায় দাড়িয়ে ভাবতে লাগলাম।
আনুর পরিক্ষার এখনো প্রায় অনেক দেড়ি আছে ।
তত দিন যেভাবে পারি ওর মনে আমার জন্য ভালোবাসা জাগাতে হবে ।
কিন্ত কি করে ..? সেটাই ভেবে পাচ্ছিনা ।
অনেক গল্পে বইয়ে আরো অনেকের কাছে শুনেছিলাম কাউকে যদি ভালোবাসা দিয়ে কাছে টানতে না পারো । তাহলে অবহেলা করে দেখো।
যদি তার মনে তোমার জন্য সামান্যতম ফিলিংস থাকে । তাহলে সে তোমার অবহেলাটা লক্ষ্য করভে । এবং সে তোমার কাছে জানতে চাইবে । কেনো এমন করছো ।
তখন নিজেকে শান্ত রেখে বুদ্ধি খাটিয়ে আর একটু অবহেলা বাড়াতে হবে ।
এতে যদি সে কষ্ট পায় । তাহলে ভেবে নিও তার মনে তোমার জন্য ভালোবাসা আছে বা তৈরি হচ্ছে । কারন যেখানে অনূভুতি বা ভালোবাসা নেই । সেখানে অবহেলা করার কোনো মানে নেই ।
তাই আমি ও ঠিক করলাম আমি‌ ও তাই করবো ।
যে করেই হোক ওকে একটু অবহেলার কষ্ট টা বুজাতে হবে ।
অবহেলা দিয়ে ওকে কাছে টানতে হবে ।
জানি এতে আমার ও কষ্ট হবে । তবুও নিজেকে সামলে নিতে পারবো ।
হঠাৎ ভাবনার দেশ থেকে ফিরে এলাম ।
আম্মু আব্বু আমার পেছনে দাড়িয়ে আছে ।
আব্বু বলল
___ যাক এত দিন পর তোকে টাইট করার জন্য একটা মেয়ে পাওয়া গেলো তাহলে (আব্বু)
মাজখান থেকে আম্মু বলে উঠলো
___ তুমি চুপ থাকো তো সব সময় খালি ইয়ার্কি।
একবার ভেবে দেখোছো আমার ছেলে কত ভালো ! তাই তো আনুর বাবা নিজে এসেছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে (আম্মু)
ওনাদের কথা শুনে মনে হলো ওনারাই সব থেকে বেশি খুশি হয়েছেন । কারন ওনারা আনুকে খুব ভালো মতই চেনে । তার ছিড়া মেয়ে । আমাকে টাইট করার জন্য একাই যটেষ্ট।
আম্মু আমাকে জিজ্ঞেস করলো
___ তুই কি সত্যি এই বিয়েতে রাজি ..! নাকি আমাদের মান রাখতে বাধ্য হলি (আম্মু)
___ আম্মু কি বলছো তুমি এইসব । তোমরাই তো আমার সব । আজ পর্যন্ত কোনো দিন তোমাদের কথার অবাধ্য হয়েছি কি ..! তবে আজ কেনো তোমাদের অবাধ্য হবো । তোমরা যদি এই বিয়েতে মত না দিতে আমি কখনোই রাজি হতাম না (রবি)
___ এই তো লক্ষী ছেলের মতো কথা .! (আম্মু)(মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন)
তারপর ওনারা যে যার মতো চলে গেলেন । আর আমি সেখানে দাড়িয়ে ভাবতে লাগলাম আনুর কথা।
কিছুতেই সেই দৃশ্য টা ভুলতে পারছি না । কিভাবে আনু ছেলেটার সাথে হাত ধরে হেটে হেটে খুশি মনে কথা বলছিলো ।
সেটা ভাবতেই কেমন একটা বুকের মধ্যে কষ্ট অনূভব হচ্ছিলো ।
হঠাৎ করে পকেটে রাখা ফোনটা বেজে । উঠলো । সাথে সাথে ফোনটা বের করে দেখি আনুর নাম্বার । হয়তো ছেলেটা এতক্ষনে চলে গেছে । সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায় ।
তাই তো আমার কথা মনে পড়ছে । এই জন্য কল দিয়েছে ।
রিং হতে হতে কলটা কেটে গেলো ।
ঠিক করলাম ওর কল টাও ধরবো না ।
আবার কল আসলো । ঠিক আগের মতোই ইগনোর করলাম ।
সাইলেন্ট করে ফোনটা পকেটে রেখে দিলাম।
মাগরিবের আযানের পর পর হালকা নাস্তা করে মোবাইল টা ওফ করে চার্জ এ লাগিয়ে দিয়ে শুয়ে পরলাম।
আনুর কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমের দেশে হারিয়ে পরলাম বুজতেই । পারি নাই ।
ঘুম ভাঙলো প্রায় ভোর 5 টায় ।
মোবাইল টা হাতে নিয়ে ওন করলাম ।
ওন করতেই আমার মাথায় হাত ।
প্রায় অনেক গুলো কল আর মেসেজ এসেছে ।
মেসেজ এ লেখা ছিলো
– কুত্তা
বান্ধর
গরু গাধা
তুই আমার সাথে দেখা করতে আসলি না কেন ।
২য় মেসেজ
ওই কুত্তা ফোন ধর না হলে কিন্ত তোকে কাচা খেয়ে ফেলবো । বলে দিলাম ।
দেখ রবি আমার কিন্ত এবার সত্যি রাগ হচ্ছে । কল ধরচ্ছিস না কেন । পিল্জ কল ধর একবার ।
৩য় মেসেজ ।
কুত্তা , বিলাই সজারু গন্ডার তুই ফোন ওফ‌করে রেখেছিস । তোর কি হাল করি দেখিস । দাড়া সকালে তোকে বাসায় গিয়ে কান ধরে টেনে আনবো (আনু)
ব্লা ব্লা ব্লা আরো কত কিছু বলে বোজানো যাবে না ।
বুজতে পারলাম কুত্তি সকালে আমার ঘরে আসবে । আর আমি জানি কখন ও‌আমার বাসায় আসে ।
তাই আমি ও‌ তৈরি আছি ওর সাথে লুকোচুরি খেলার জন্য । এবার বুজবি আনু । কষ্ট কাকে বলে ।
দেখতে দেখতে প্রায় সাতটা বেজে গেলো । সাড়ে সাতটায় আনু আমার বাসায় আসবে জানি । কারন এমন সময় ও‌ কলেজ যায় ।
আর যাবার সময় ই‌ আমার ঘরে আসবে তা আমি জানি ।
এর মাজে আমি ও‌খেয়ে দেয়ে রেডি হয়ে বসে আছি ।
ঠিক সাত টা বিশে আমি ঘর থেকে বেড়িয়ে পরলাম। এখন আম্মু আব্বু ওনাদের ঘরেই আছে । মেইন গেট টা চাপিয়ে দিয়ে চলে আসলাম।
বাড়ির পিছনে বাগানে এখন দাড়িয়ে আছি ।
গেইট দিয়ে যদি আনু ডুকে তাহলে আমি এখান থেকে স্পষ্ট দেখতে পারবো।
ঠিক কিছুক্ষন পরেই দেখি আনু বাসার মধ্যে ডুকেছে । আমি একটু পিছনে সরে দাড়ালাম যাতে আমাকে না দেখতে পায় ।
। কিন্ত আশ্চর্য হলাম কারন আনু হয়তো আজকেও কলেজ জয়েন করবে না ।
কারন সে কলেজ ড্রেস পরেনি । কিন্ত নীল রঙের যে জামা টা পরেছে সেটাতে আনুকে সেই মানিয়েছে । অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে ওকে । চুল গুলো খোলা রেখেছে । বাতাসের তালে তালে রেশমি কালো চুল গুলো বার বার এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে । আর আনু তার হাত দিয়ে বার বার তা ঠিক করছে । চোখে দেখি কাজল একেছে । এমনিতেই মায়ায় বড়া চোখ দুটি । তার উপর কাজল লেপ্টে দিয়ে আমাকে পাগল করতে এসেচ্ছি চুন্নিটা ।
মাজে মাজে মনে হয় পৃথিবীর সমস্ত মায়া ওর এই চোখের মধ্যেই আবদ্ধ হয়ে রয়েছে ।
যেদিকে তাকালে মায়ার আগুনে ঝলচ্ছে যাওয়ার সম্ভববনা আছে ।
কুত্তি কি যে মায়ায় ফেললি আমাকে । তোকে ভুলে থাকতে পারি না । পারি না তোর উপর অভিমান করে থাকতে ।
কত শত কবিতা লেখি তোর ওই চোখের দিকে তাকিয়ে । তা বলে বোজাতে পারবো না ।
আসলে পৃথিবীতে যারা সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষের সন্ধান পায় । তারাই যানে একমাত্র তাদের কাছে তাদের ভালোবাসার মানুষটা কত টা সুন্দর ।
যদি একটি পরিকেও ওই মানুষটার সামনে বসিয়ে দেওয়া হয় তবুও পরির থেকে ভালোবাসার মানুষটাকেই বেশি সুন্দর মনে হবে ।
কেনো জানেন । ভালোবাসা ।
ভালোবাসা এমন একটি মায়া । যার মায়ায় পড়ে গেলে কোনোদিন তা কাটিয়ে উঠতে পারবেন না ।
অনেকেই বলে ভালোবাসা একদিন ভুলে যাবো সময়ের ব্যস্ততার সাথে ।
আমি বলি । যদি সত্যি ভালোবাসা থাকে । তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত তা হৃদয়ে গেতে থাকবে ।
হয়তো ব্যস্ততা কিছুটা সময় ভুলিয়ে রাখবে । কিন্ত দিন শেষে আধার ঘনিয়ে এলেই । রাতের আধারে ভেসে উঠবে । ভালোবাসার মানুষটার ছবি ।
এটাই বাস্তব ।
গল্পে আসা যাক ।
আনু ভেতরে চলে গেলো । জানি কাউকে পাবে না । হয়তো নিরাশ হয়ে ফিরবে । কারন আম্মু আব্বু এখন ঘুমাচ্ছে ।
আমি বাইরে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলাম। কখন আনু বেড়িয়ে আসবে । আবার তার মায়াবি মুখখানা দেখতে পারবো । মন টা ভিষন ছটফট করছে ।
একটু পর দেখি আনু বেড়িয়ে এলো ।
চোখে মুখে বিরক্তরি ছাপ + রাগ ও উঠেছে ওর দেখেই । বোজা যাচ্ছে ।
পরে দেখলাম আনু তার মোবাইল টা পার্স থেকে বের করলো ।
এখন হয়তো আমাকে কল দিবে ।
ঠিক যেমন ভাবা তেমন ই কাজ ।
আনু সাথে সাথে কল দিলো । মোবাইলটা সাইলেন্ট করা ছিলো । কেপে উঠলেই বুজতে পারলাম ।
মোবাইল টা বের করে হাতে নিলাম।
আনু বাইরে দাড়িয়েই কল দিতে লাগলো ।
প্রায় দশ বারের মতো কল দিলো । তারপর দেখলাম । আনু মন খারাপ করে চলে যেতে লাগলো ! 😞
আমি মনে মনে বললাম ।
__ আমাকে ক্ষমা করে দিস রে আনু এছাড়া আমার কোনো উপায় ছিলো না তোকে কাছে পাওয়ার ! (রবি)😥
আমি একনজরে তাকিয়ে ছিলাম । আনুর চলে যাওয়ার দিকে ।
কিছুদূর হেটে গিয়েই আনু একটা রিকশা উঠে বসলো ।
হয়তো এখন বাড়িতে চলে যাবে ।
মেয়েটা খুব অভিমানি । খুব কষ্ট পেয়েছে হয়তো আমার এই ব্যবহারে ।
কিন্ত আমার কিছু করার নেই । ওর মনে যে আমাকে যায়গায় করে নিতে হবে ।
হয়তো আগে থেকেই ওর মনে অনেকটা জায়গায় করে নিতে পেরেছি ।
কিন্ত ওকে সেই জায়গায় টা দেখিয়ে দিতে হবে ।
যাই হোক আমি ও চলে গেলাম । বাসা থেকে বেরিয়ে মাঠে ।
অনেক বন্ধুরা খেলা ধুলা করছে । দেখলাম ।
তারা সবাই ফুটবল খেলছে ।
তারপর আমি ও তাদের সাথে খেলায় মেতে উঠলাম।
খেলতে খেলতে সকাল ফুরিয়ে দুপুর 2 টা বেজে গেছে ।
বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে । বাসায় চলে আসলাম ।
তারপর ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম।
ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি 4 টা বেজে গেছে ।
তার উপর আবার আমার প্রচন্ড রকম ভাবে ঘুম পাচ্ছে । .
এখন যদি গা হেলান দিয়ে শুয়ে থাকি তাহলে ঘুমের দেশে বিচরন করতে বাধ্য হবো ।
একমাত্র ঘুমের কাছে পৃথিবীর সব থেকে শক্তিশালী মানুষ ও পরাজয় মানতে বাধ্য ।
আর আমি ত কমন মেন
যাই হোক আর ঘুমালাম না । কারন যদি গাধী টা আবার আসে । তাহলে আর আমার রক্ষে নেই ।
একবার ধরতে পারলে কাচা খেয়ে ফেলবে ।
যা রাগী মেয়ে । যদি হাতের সামনে পায় থাপ্পরায়া গালের বারোটা বাজায় দিবেনে ।
তাই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বাইরে চলে গেলাম ।
সেখানে রাস্তায় এক বন্ধুর সাথে দেখা হলো ।
সঙ্গে ছিলো বন্ধুর জিএফ ।
হাজার বারন করা সত্তে তারা দুজনে মিলে আমাকে জোর করে তাদের সাথে নিয়ে গেলো ।
অনেক হাটা হাটি করলাম।
ফুচকা খেলাম তিন জনে মিলে । অনেক কথা হলো । মেয়েটা খুবই ভালো । আচার ব্যবহার ও খুব সুন্দর বন্ধুর সাথে ভালোই মানিয়েছে ।
মেয়েটার নাম মারিয়া । যেমন নাম তেমন কাম । বক বক বেশি করে ।
ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো ।
এর মাজখানে আনুর আরো কয়েকটা কল পর মেসেজ এসেছিলো ।
আমি ইগনোর করেছি সেগুলো ।
বন্ধুদের বিদায় দিয়ে আমি চলে এলাম । দিঘির পাড়ে ।
এখান থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার দৃশ্যটা দেখতে খুব সুন্দর লাগে ।
মন খারাপ থাকলে এখানে এসে বসে থাকি ।
এখন ও তাই করিছি । সূর্য অস্ত যাওয়া দেখছি ।
কিভাবে সূর্য টা পশ্চিমাকাশে ডলে পরছে ।
খুব সুন্দর দেখাচ্ছে । পুরো স্বপ্নের মতো ।
হঠাৎ করেই মনে হলো ।
কেউ একজন আমার কাধে হাত রেখেছে ।
চিন্তা পড়ে গেলাম । এখন আবার কে এলো ।
ভাবনা চিন্তা ছেদ করে পেছন ফিরিয়ে তাকাতেই চমকে উঠলাম । । ভয়ে বুক ধর ধর করে কাপতে লাগলো ।
কারন পেছনে আর কেউ না তার ছেড়া মেয়ে মানে আনু দাড়িয়ে ছিলো ।
চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না । চোখ দুটো কেমন রেগে লাল হয়ে আছে ।
হায় আল্লাহ বাচাও মোরে (মনে মনে)
আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম । মুখ ফিরিয়ে নিলাম আনুর দিক থেকে ।
এটা আনু লক্ষ্য করলো ।
সে ও কিছু না বলে আমার পাশে বসে পড়লো ।
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল
__ ওই আমার দিকে তাকা (আনু)
কথাটা শুনেই বুকের ভেতর হাতুরি বাড়ি খেলতে লাগলো । না তাকিয়ে থেকে পারছিলাম না । কিন্ত ওর কথায় কোনো সারা দিচ্ছিলাম না দেখে ।
সে এবার আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলল
___ ওই কুত্তা তাকা বলছি (আনু)
তারপর আমি ফিরে তাকালাম ওর দিকে
আর ও রাগি স্বরে বলল
___ কোথায় ছিলি সারাদিন (আনু)
___ কোথাও না (রবি)
___ কি হয়েছে তোর আমার সাথে গতকাল দেখা করার কথা বলে আসলিনা যে (আনু)
___ এমনি আসিনি (রবি)
___ কাল থেকে কল দিয়ে যাচ্ছি কতবার একটি বার ও রিসিব করলি না মেসেজ দিলাম রিপ্লেও দিলি না ..! কি হয়েছে বলনা (আনু)
এবার একটু রাগ দেখিয়ে বললাম
___ ধ্যাত কিছু না বললাম না (রবি)
বলেই উঠে চলে আসতে লাগলাম ।
ঠিক তখনি আনু পেছন থেকে আমার হাত ধরে ফেলল
কান্না কাতর কন্ঠে বলতে লাগলো
___ এমন করছিস কেনো (আনু)
আমি আমার মন কে আরো কঠোর করলাম
তারপর বললাম
___ হাত ছাড় (রবি)
___ না ছাড়বো না বল আগে কি হয়েছে আমার সাথে এমন করছিস কেনো (আনু)
আর কিছু না বলে এক ঝটকায় আনুর থেকে হাত ছাড়িয়ে ওখান থেকে সোজা হেটে চলে আসতে লাগলাম ।
আড় চোখে তাকিয়ে দেখি আনুর আমার চলে আসার দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছে ।
কি ভাবছে তা জানি না ।
হঠাৎ ……………??

আমি কিছু না বলে যখন উঠে চলে আসচ্ছিলাম।
ঠিক তখনি আনু পেছন থেকে হাত ধরে ফেলল ।
আর কান্না কাতর বলল
—- কিরে এমন করছিস কেনো আমার সাথে বলনা (আনু)
আমি কিছু না বলে আরেকটু কঠোর হওয়ার চেষ্টা করতে লাগলাম ।
—- হাত ছাড় (রবি)
—- না ছাড়বো না ..! কি হয়েছে বল আমাকে । কেনো এমন বিহিব করছিস আমার সাথে .! (আনু)
আমি কিছু না বলে এক ঝটকায় । হাত ছাড়িয়ে নিলাম।
চোখে রাগি লুক এনে ওর দিকে তাকাতেই ও খানিকটা চমকে গেলো ।
হয়তো আমার এমন লুক বা ব্যবহার কোনোটাই কখনো আশা করে নাই।
তারপর আমি কিছু না বলে সেখান থেকে চলে আসতে লাগলাম।
আড় চোখে পেছন মুখ তাকিয়ে দেখি ।
আনু আমার চলে যাওয়ার দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে ।
ওর চোখের কোনো অশ্রু জমে যাচ্ছে ।
তা আমি বেশ বুজতে পারছি ।
আমার নিজের ও খারাপ লাগছে । ওর থেকে বেশি আমার কষ্ট হচ্ছে এখন ।
ওর দিকে আরেক বার পেছন ফেরে তাকাতেই চমকে উঠলাম ।
আনু দৌড়ে আসচ্ছে আমার দিকে ।
আমি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছিলাম।
সে এবার দৌড়ে এসে আমার হাত ধরে ।
পেছন মুখে হেচকা টান মারলো ।
এতে আমি খানিকটা পিছু সরে যাই ।
যার ফলে আমি আর আনু মুখোমুখী হয়ে যাই ।
আনুর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি ।
লাল হয়ে রয়েছে । হয়তো রাগে ।
আনু এবার আমার শার্টের কলার ধরে বলল
— ওই কি হয়েছে সত্যি করে বল ..! না হলে কিন্ত এখানে পুতে রেখে দিয়ে যাবো । (আনু)😠
আমি নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বললাম
— কিছুনা (রবি)
আনুর দিকে তাকিয়ে দেখি ও রাগে কট মট করছে ।😮
হঠাৎ করে
—– ঠাসসসস ……! (আনু)😠
হঠাৎ করে আনু আমাকে খুব জোরে চড় মেরে বসলো ।
বুজতে পারলাম । বেশি রাগিয়ে দিসি ।
চড় টা ভিষন লেগেছে ।
আনু আবার শার্টের কলার টেনে বলল
—- বলবি কিনা (আনু)😠
আমি ও আর সহ্য করতে পারলাম না ।
আনুর হাত কলার থেকে এক ঝটকায় সরিয়ে দিয়ে বললাম ..?
—- আজকের পর আমার সাথে কোনো কথা বলবি না …! তুই তোর মতো ভালো থাক । আমার কাছে আসার চেষ্টা করবি না বলে দিলাম (রবি)(রাগি লুক নিয়ে)
কথাটা শুনে মনে হয় আনু অনেক বড় একটা আঘাত পেলো ।
ও অসহায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো ।
চোখের কোনে দিয়ে নোনা জল গুলো উকি দিতে লাগলো ।
চোখের জলে ছলছল করতে লাগলো মায়াবী চোখ দুটি ।
নিজেকে কোনো মতন সামলে নিয়ে । চলে আসলাম। সেখান থেকে আর কিছু না বলে ।
আনু সেখানে দাড়িয়ে থেকে অসহায়ের মত তাকিয়ে ছিলো ।
কি হচ্ছে ..!
হয়তো এটা সে এখনো বুজে উঠতে পারছে না ।
আমি মনে মনে ঠিক করলাম ।
ঠিক ততটাই আঘাত করবো তোকে যতটা আঘাত করলে তুই আরো কাছে আসার চেষ্টা করবি..?
জানতে চাইবি কেনো এভাবে নির্মম ব্যবহার করছি ।
অবশেষে এক রাশ কষ্ট বুকে বাসায় এসে পড়লাম।
এসেই প্রথমে হাত মুখ ধুয়ে বিছানায় বসে বসে । আনুর কথা চিন্তা করতে লাগলাম।
আনু হয়তো এখন বাসায় চলে গেছে ..?
আচ্ছা পাগলি টা কি খুব কাদচ্ছে ..?
ওকে কি এই ভাবে কষ্ট দেওয়া ঠিক হচ্ছে..?.
পরে আবার কোনো উল্টা পাল্টা কিছু করবে না তো ..? ভরসা নেই যেকোনো সময় .. যেকোনো কিছু করতে পারে ..?
এখন আনু আমার কথা ভাবচ্ছে ..?
হয়তো আমার কথা ভেবে আমাকে ঘৃনা করছে ..?
কিন্ত আমি জানি আনু আবার আমার সাথে দেখা করার চেষ্টা করবে ..!
তাই যে করেই হোক ওর থেকে একটু দূরে সরে থাকতে হবে ।
রাতের খাবার খেয়ে দেয়ে ..! আনুর কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুজতে পারি নাই ।
সকালে কেনো জানি একটা অদ্ভুত জিনিস অনূভব করলাম।
এমন মনে হলো যেনো আমার মাথায় কেউ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ।
আর কিছু না ভেবে । ঘুম কে পরাজিতে করে ..! যখন চোখ খুললাম।
তখন বুকটা ধুক করে কেপে উঠলো । 😱
কারন আমার মাথার পাশে আনু বসে ছিলো।
আমি ওকে দেখিয়ে লাফিয়ে উঠলাম ।
নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে চেয়েও পারলাম না ।
তবুও রাগ দেখিয়ে বললাম 😠
— কিরে তুই এখানে কি করছিস…! তাও আবার সকাল সকাল …! যা বাসায় যা..! (রবি)😠
এই কথাটা শুনে আনুর হাসি ভরা মুখটা মূহুর্তেই ফেকাসে হয়ে গেলো ..!
কান্না ভেজা কন্ঠে বলতে লাগলো
—- জানি না আমি কি এমন অপরাধ করেছি যার কারনে তুই এরকম করছিস যদি কোনো ভুল করে থাকি পিল্জ আমাকে ক্ষমা করে দে …! তবুও আমার সাথে এমন করিস না পিল্জ । আমার খুব কষ্ট হচ্ছে (আনু)😭
—- তাতে আমার কি যা এখান থেকে (রবি) 😦
কিছুই ভেবে পাচ্ছি না কি বলবো…? বা কি বলা উচিৎ …!
আনু এবার কেদেই দিলো …!
আর কাদতে কাদতে বলল ..!
—- আমি কাল থেকে কিছু খায়নি (আনু)😭
কথাটা শুনেই মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো । এটা কি করছে সে । এই জন্য ওর চোখ মুখ কেমন শুকনো শুকনো দেখাচ্ছে।
আমার চোখের কোনে জল জমে গেলো ।
আনুর দেখে ফেলার আগেই চোখের জল মুছে ফেললাম ।
—- তো তাতে আমার ..! যা বাসায় গিয়ে নে ..!(রবি)😞
—- হমমম ঠিকিই বলেছিস তোর তাতে কি ..!
আমি মরি বা বাচি তোর তো কিছু আসে যায় না (আনু)
এটা বলেই আনু কাদতে কাদতে চলে গেলো ।
নিজের ওপর ই ঘৃনা হচ্ছে এখন …!
কি করছি আমি এটা …!
এমন করতে থাকলে তো । ও অসুস্থ হয়ে পড়বে ।
আনু চলে গেলো ।
আমি বিছানা থেকে উঠে জানলার দাড়ে গিয়ে দাড়ালাম ।
দেখলাম আনু চোখের পানি মুছতে মুছতে চলে গেলো । 😥
হয়তো বেশিই কষ্ট দিয়ে ফেলেছি ।
নিজের অজান্তেই এত টা নিষ্টুর কি করে হতে পারলাম আমি …!😰
জানলার সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে চোখের পানি ঝড়াতে লাগলাম।
চোখের পানি আর আটকে রাখার সাধ্যি হয়ে উঠলো না আমার ।‌
প্রিয় মানুষটাকে এতটা কষ্ট দিতে কিভাবে পারছি আমি ..!
হয়তো আনু এখন আমাকে ঘৃনা করবে ..!
হঠাৎ করে
পেছন থেকে আম্মুর গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম ।
খানিকটা চমকে উঠলাম ।
হকচকিয়ে চোখের পানি মুছে ফেললাম।
যাতে আম্মু কিছু বুজতে না পারে ।
আম্মু আমার সামনে এসে বলতে লাগলো
— কিরে কি হয়েছে …! তোর আর আনুর মধ্যে ..!
মেয়েটা এভাবে কাদতে কাদতে চলে গেলো কেনো ..?(আম্মু)
— ও কিছু না আম্মু এমনি (রবি)
— কিছু না মানে…! কিছু না হলে কি কেউ এভাবে কাদে ..! সত্যি করে বল কি হয়েছে । (আম্মু)
— ও কিছু না আম্মু একটু রাগ করেছে আমার উপর তাই আর কি ..!(রবি)
— দেখ রাগ করুক আর যাই করুক ..! ওকে এভাবে কাদানো মোটেও শোভা পায়না ।
এতে কতটা কষ্ট পেয়েছে মেয়েটা বুজতে পারছিস (আম্মু)
— হমমম পরে সুধরে নিবো (রবি)
— থাক তোকে আর পাকামো করতে হবে না ..!আজকে আনুকে দুপুরে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসভি ..! দুপুরে ও আমাদের এখানে খাবে (আম্মু)
— কেনো (রবি)
— কেনো মানে ..! সেই কবে মেয়েটা আমার হাতে বিরিয়ানী খেতে চেয়েছিলো ..! এখনো খাওয়াতে পারি নি ..! তাই ঠিক করেছি আজকে রান্না করবো ..! ওকে ঠিক সময় মতো নিয়ে আসবি (আম্মু)
— আমি পারবো না আনতে (রবি)
কথাটা বলাই হয়তো ভুল হয়েছে ।আম্মু এবার রেগে বলল ..!
— ওকে না আনলে তোর ও আজকে খাওয়া বন্ধ বলে দিলাম (আম্মু)
এটা বলেই আম্মু চলে গেলো ।
আর আমি বোকার মতো দাড়িয়ে রইলাম।
আর ভাবতে লাগলাম ।
— এখনো বিয়েই হলো না তার আগের আনুর প্রতি এতো টান ..! বিয়ের পর তো আমাকে কেউ চিনবেই না দেখছি ..? (রবি)
ভাবতে লাগলাম এখন আনুকে কি করে রাজি করাই ।
ওকে যেভাবে কষ্ট দিয়েছি । মনে হয়না আসবে আমার কথায় ।
তবুও চেষ্টা করতে হবে না হলে আমার খাওয়া বন্ধ ।
দেখতে দেখতে অবশেষে দুপুর হয়ে গেলো ।
এখন আমি আনুর বাড়ির গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি । কিন্ত ভেতরে ডোকার সাহস পাচ্ছি না ।
কোন মুখ নিয়ে ডুকবো ভেতরে ..!
হঠাৎ মাথায় বুদ্ধি এলো । ফোন দিয়ে দেখি কি বলে ।
কল দিলাম আনুকে ।
ওমা এক বার রিং হওয়ার আগেই ধরে ফেললো ।
খুব অবাক হলাম । তবুও হ্যালো বললাম কোনো মতন ।
গলা দিয়ে কথাই বের হচ্ছিলো না ।
কিন্ত ওপাশ থেকে আনু কোনো কথা বলছে না । বুজতে পারলাম । পাগলি টা খুব অভিমান করে বসে আছে ।
হয়তো আমার ফোনের অপেক্ষায় ছিলো ।
তাইতো একবার রিং হতেই ধরে ফেললো ।
নিরবতা ভেঙে আমি বললাম ..!
— আনু তোর বাসার গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি (রবি).
— কেন (আনু)
— নিচে আয় বলছি (রবি)
— পারবো না (আনু)
— আয় না পিল্জ (রবি)
টু টু করে কলটা কেটে গেলো ।
বুজলাম হয়তো ও আসবে না ।
তবুও কিছুক্ষন দাড়ালাম ।
পড়ে দেখলাম । আনু বাসা থেকে বেড় হচ্ছে ।
কালো একটা জামা পড়েছে । দুধে আলতা গায়ের রঙে কালো রঙের ছাপা ছাপা জামাতে আনুকে যা মানিয়েছে না ..! বলে বোজাতে পারবো না ।
তারপর উপর পাগলি টা সব সময় চুল গুলো খোলা রাখে । আর চোখে কাজল টা আজকে নেই ।
কিন্ত রেশমি কালো চুল গুলো । হাটার সময় এলোমেলো ভাবে হাওয়ায় দোল খাচ্ছিলো । তা দেখে আমি রিতীমতো মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে ।
আনুর সাথে আমার চোখাচুখি হতেই । আমি কিছুটা ঘাবড়ে যাই । চোখ সরিয়ে নেই ।
তারপর আনু আমার সামনে এসে বলল
— কি হয়েছে বল (আনু)
— খেয়েছিস (রবি)
— তোর জেনে লাভ কি (আনু)
— এভাবে বলছিস কেন (রবি)
— কিভাবে বলবো (আনু)
— বলনা খেয়েছিস কিনা (রবি)
— না খায়নি ..! কেন খাওয়াবি নাকি (আনু)
— হ্যা চল (রবি)
— কোথায় (আনু)
— আমার বাসায় (রবি)
— কেন একবার তাড়িয়ে দিয়ে মন ভরে নি (আনু)
— আম্মু তোর জন্য রান্না করেছে .! বলেছে তোকে নিয়ে যেতে (রবি).
— যাবো না (আনু)
— কেন (রবি)
— আমার ইচ্ছা (আনু).
— পিল্জ (রবি)
— এক শর্তে যেতে পারি (আনু)
— কি (রবি)
— কেনো আমার সাথে এমন করেছিস সেটা বলতে হবে আর আমাকে তুই তোর আব্বু আম্মুর সামনে নিজ হাতে তুলে খায়িয়ে দিবি তাহলে(আনু)
— কিহহ্ ….! না এটা কখনো পারবো না ..! (রবি)
— তাহলে আমি ও যাবো বায় হু (,আনু)
আনু মুখ ঘুরিয়ে চলে যেতে লাগলো ।
আর আমি সাথে সাথে ওর হাত ধরে ফেললাম।
হাত ধরাতে আনু কিছু মনে করেনি আমি জানি ।
ওর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এতক্ষনে গাল লাল থাকতো । বাকিটা আর বললাম না ।
তারপর অনেক ভেবে চিন্তে বললাম ।
— আচ্ছা চল তোর শর্তে আমি রাজি (রবি)
— হমমম চল (আনু)
কি আর করার বাধ্য হয়ে রাজি হতে হলো ।
না হলে আমার আর খাবার জুটবে না । এখন ভাবছি আম্মু আব্বুর সামনে ওকে কিভাবে তুলে খায়িয়ে দিবো ।
সেইটা না হয় বাসা গেলে দেখা যাবে ।
আর কিছু না ভেবে একটা রিকশা দাড় করালাম।
তারপর আমি আর আনু দুজনেই চড়ে বসলাম ।
আনু রিকশা ওয়ালাকে বলল ।
হুট তুলে দিতে…!
আমি ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম কথা শুনে ।
তারপর আর কি রিকশা চলতে শুরু করলো ।
দুজনের মাজেই নিরবতা ।
যেই আমি আনুর সাথে এক মূহুর্ত কথা না বলে থাকতে পারতাম না ।
এখন এতটা কাছাকাছি থেকেও কথা বলতে পারছি না ।
হঠাৎ আনু আমার হাত ধরে ফেলল
তারপর আমার কাধে মাথা রাখলো ।
কিন্ত কোনো কথা বললো না ।
আমি ও কোনো কথা বাড়ালাম না ।
চুপ করে রইলাম।
অবশেষে বাসায় পৌছোলাম।
তারপর বাড়া মিটিয়ে বাসার ভিতরে গেলাম।
বাসায় যেতেই দেখি আনু আর আম্মু দুজনে কি সুন্দর গপ্প মারা শুরু করে দিসে
আমারে দেহি কেউ চিনেই না ।
যাক গে হঠাৎ আম্মু আনুকে জিজ্ঞেস করলো ।
— কিরে মা সকালে এভাবে কেদে কেদে চলে গেলি যে …! কিছু হয়েছে আমাকে খুলে বল ..!
এই বাদর টা তোকে কিছু বলেছে (আম্মু)
আব্বু ও তখন টেবিলে বসা ছিলো ।কথা টা শুনে তো আমার কলিজায় পানি নেই ।
না জানি এখন সব বলে দিবে কুত্তি টা । আব্বুকেও দেখলাম আমার দিকে কেমন আড়চোখে তাকিয়ে দেখছে বার বার
হঠাৎ করেই আনু বলল
— আন্টি জানেন আপনার ছেলে আমাকে চড় মেরেছে (আনু)
কথাটা শুনেই কাশি উঠে গেলো । কাশতে কাশতে সামনে রাখা পানির গ্লাস এর পানিটা পুরোটা এক ডোকে খেয়ে নিলাম।
তারপর দেখি আম্মু আব্বু দুজনেই আমার দিকে রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে ।
আব্বু হঠাৎ করেই ঝাড়ি মেরে বলল ..!
— কিরে হতকছোড়া ওকে মেরেছিস কেনো(আব্বু)
— না আব্বু আমি ওকে মারি নাই ও মিথ্যা বলছে …উল্টো ও আমাকে… (রবি)
বলার আগেই মাঝখান থেকে কুত্তিটা আবার বলে উঠলো
— না আঙ্গেল ও মিথ্যা বলছে । জানেন কালকে আমাকে গালে খুব ঝোড়ে থাপ্পর মেরেছে (আনু)
(চুপ হয়ে রয়েছি)
মাঝখান থেকে আম্মু রাগিস্বরে বলল ।
— কি তুই আমার আনু মাকে চড় মেরেছিস তোর সাহস তো কম না ..! এখুন্নি সরি বল বলছি(আম্মু)😠
(আনু)
— কি আর করার অবশেষে বাধ্য হয়ে সরি বলতে হলো !😠
যেখানে আমার কোনো দোশ নেই তবুও সরি বললাম
কুত্তি টা আবার বলল ….!
— না আন্টি শুধু সরি বললে হবে না … এটার জন্য আমি ওকে বলেছি নিজ হাতে তুলে খায়িয়ে দিতে হবে তাও আপনাদের সামনে ..!(আনু)
— (মান সম্মানের বারোটা বাজায় দিলি কুত্তি)(মনে মনে)
আব্বু আম্মু দুজনেই আনুর কথা শুনে হেসে উঠলো ।
তারপর তারা বলল
—- হ্যা একদম উচিত শিক্ষা দিয়োছ (দুজনেই)
তারপর আম্মু আমাদের দুজন কে একসাথে বসিয়ে দিলো । খাবার বেড়ে দিয়ে বলল।
—- নে এবার ওকে খায়িয়ে দে (আম্মু)
(আনু)
— কুত্তি—😠(রবি) (মনে মনে )
তারপর আর কি বাধ্য হয়ে খায়িয়ে দিতে হলো ।
খুব সরম করছিলো কিন্ত কিছু করার নেই
আনু খুব মজা করেই সব টা খেয়ে নিলো .!!
খাওয়া দাওয়া শেষে আমি আর আনু বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম ।
আব্বু আম্মু ওনাদের ঘরে শুয়ে আছেন ।
হঠাৎ করেই
আনু আমার হাত ধরে টানতে টানতে ছাদের দিকে নিয়ে যেতে লাগলো ।
কিছু না বলেই ।
আমিও কোনো কথা বলছিলাম না ।
শুধু কি হচ্ছিলো দেখছিলাম।
অবশেষে ছাদে পৌছে গেলাম ।
ছাদের গেটে খিল দিয়ে আনু আমাকে ধাক্কা মেরে দেওয়ালের সাথে ঠেকিয়ে দিলো
তারপর ধীরে ধীরে আমার কাছে আসতে লাগলো । আমার মাজে উত্তেজনা কাজ করছে ..!
কি হচ্ছে কিছুই বুজতে পারছি না ..!
হঠাৎ আনু আমার খুব কাছে চলে আসলো
আনুর চোখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না ।
কেমন একটা রোমানটিক ভাব দেখা যাচ্ছে । বুজতে পারছিলাম না কি করতে চলেছে পাগলি টা
হুট করে আনু আমার শার্টের কলার ধরে
—– ঠাসসসসসসস (আনু)
– (রবি)

আমি আর আনু দুজনে বারান্দায় দাড়িয়ে নিরবতা পালন করছিলাম ।
হঠাৎ কিছু না বলে আমার হাত ধরে বসলো ।
আমি বেশ কিছুটা অবাক হলাম। চোখাচোখি হতেই চোখ নামিয়ে নিলাম।
আনু কিছু না বলে আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো ।
কি হলো হঠাৎ কিছুই বুজতে পারলাম না ।
তারপর দেখি আনু আমাকে ছাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে ।
আমি ও কিছু না বলে ওর সাথে যেতে লাগলাম।
কিছু বলছিলাম না । শুধু ওর মতো চলতে লাগলাম।
অবশেষে আমি আর আনু দুজনেই ছাদে চলে আসলাম।
সে হঠাৎ করে ছাদের খিল দিয়ে দিলো । যাতে কেউ হঠাৎ করে না আসতে পারে ।
তারপর দেখি আনু আমার সামনে আসচ্ছে ।
ওর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি । কেমন একটা
রোমানটিক ভাব দেখা যাচ্ছে ।
হঠাৎ আনু আমাকে ধাক্কা দিয়ে দেওয়ালের সাথে মিশিয়ে ফেললো ।
কি বলবো বুজতে পারছিলাম না ।
আমার মাজে একটা উত্তেজনা কাজ করছে ।
নিজেকে সামাল দিতেও কষ্ট হচ্ছিলো ।
আনুর চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি ।
কেমন একটা মায়া মায়া ভাব উপলদ্ধি করতে পারছিলাম ।
হঠাৎ আনু আমার আরো কাছে আসতে লাগলো ।
আমি ভয়ে চোখ দুটি হালকা বন্ধ করে ফেললাম।
— ঠাসসসস (আনু)😠
হঠাৎ করেই কেমন একটা বেথ্যা অনুভব করলাম । আর একটা চড়ের শব্দ শুনতে পারলাম ।
তারপর যখন গালে ব্যথা অনুভব করলাম।
তখন আর বুজতে বাকি রইলো না যে আনুই আমাকে চড় মেরেছে
আমি গালে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম ।
— কিরে মারলি কেন (রবি)😥
— কি হয়েছে তোর আমার সাথে দুদিন ধরে ঠিক মতো কথা বলছিস না এড়িয়ে এড়িয়ে যাচ্ছিস ..! কেনো এমন করছিস বলবি তো (আনু)😠
— তাই বলে এই ভাবে চড় মারবি(রবি)😤
— বেশি কথা বললে আরো খাবি(আনু)
আমি কিছু না বলে আনু কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম।
আনু আবার আমাকে ধাক্কা দিয়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলো 😳
আর চোখ গুলো বড় বড় করে বলল
— কই যাস ..! আমার প্রশ্নের জবাব দিয়ে যা (আনু)😬
— জানি না আমি সর সামনে থেকে (রবি)😑
— না .! আজকে তোকে বলতেই হবে (আনু)
— তোর কথা শুনতে আমি বাধ্য নই (রবি)😒
— কিন্ত তুই প্রমিজ করেছিস আমাকে ..! এখন বলতেই হবে তোকে (আনু)
— দেখ আমার ভালো লাগছে না যা তো (রবি).
— না যাবো না আগে তোকে বলতেই হবে (আনু)
আমার মাথা গরম হয়ে গেলো ..! বার বার এক কথা শুনে শুনে ।
রাগের মাথায় আনুকে
— ঠাসসসস (রবি)
করে একটা চড় মারলাম।
হয়তো খুব জোরেই লেগেছে ।
আনু কিছুটা মাথা নত করে গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে রইলো ।
এটা আমি কি করলাম। 😭 যেই আনুকে আমি কখনো স্বপ্নেও আঘাত করার কথা ভাবতে পারি নি । আর আজ সেই আনুকে আমি নিজ হাতে চড় মারতে পারলাম। 😭(মনে মনে)
আনু আমার দিকে মুখ তুলে তাকাতেই দেখি ওর চোখে পানি ।
কেমন ছল ছল করছিলো চোখ দুটি ।
মনে হলো এখুন্নি বৃষ্টি নামবে ।
কিন্ত বৃষ্টি আর হলো না
উল্টো সে আমায় আরেকটা বসিয়ে দিলো 😭
আর বলতে লাগলো
— কুত্তা বান্দর তুই আমায় মারলি …! তুই জানিস আজ পযন্ত আমার বাবা মা ও কোনোদিন আমার গায়ে একটা ফুলের টোকা পযন্ত লাগতে দেয়নি আর সেই তুই ….(আনু)😠
— সরি আসলে না বুজে মেরে দিসি (রবি)😥
— এর জন্য তোকে অনেক বড় শাস্তি পেতে হবে ..! (আনু)
— কি শাস্তি আবার ..! শুনি (রবি)
— এবার যদি আমার কথা না শুনিস তাহলে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিবো বলে দিলাম(আনু)😒
— আচ্ছা শুনবো বল (রবি)
— সেদিন আমার সাথে দেখা করলি না কেন (আনু)
— কেন দেখা করবো তোর সাথে বিএফ তো ছিলো আর আমি কাবাবে হাড্ডি হতে একদম পছন্দ করি না (রবি)
— ওও এই বেপার …!
— কুত্তা তুই কি জানিস নাকি ও আমার বিএফ নাকি অন্য কিছু (আনু)😠
— যেভাবে হাত ধরে হাটচ্ছিলি দেখলে বুজা যায় কি লাগে ..? (রবি)
— একটা মারমু …! উল্টাপাল্টা কথা বললে .!
ওই ছেলে টা আমার বান্ধবীর বিএফ ছিলো আমি হঠা ৎ হাটতে হাটতে ইটায় বাড়ি খেয়ে পায়ে ব্যথা পেয়েছিলাম । তাই ও আমার হাত ধরে হাটতে সাহায্য করে ছিলো (আনু)😠
আমার মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বের হলো না । তাহলে কি আমি আনুকে বুলে বুজে এতদিন কষ্ট দিলাম ।
এটা আমি কিভাবে করলাম ।
ইশস যদি তখন ই একবার দেখা করতাম তাহলে আর এত কিছু করতে হতো না । 😥
তাই আর কিছু না ভেবে আনুর একটু কাছে গিয়ে বললাম
— সরি রে বুজতে পারিনি ..! আমার ই ভুল হয়েছে ..! মাফ করে দে পিল্জ ..! এই দেখ কান ধরলাম (রবি)🙉 ( কান ধরেছি)
— হু তোর সাথে আড়ি (আনু)😒
— কেন সরি বললাম তো (রবি)
— শুধু সরি তে বললে হবে না অন্য কিছু করতে হবে (আনু)😒
— আচ্ছা বল করবো (রবি)
— সত্যি করবি তো নাকি …! (আনু)
— হমমম করবো …! (রবি)
— আচ্ছা তাহলে সামনে আয় কানে কানে বলবো ..! (আনু)😳
— কানে কানে কেন ! এমনি বল…!(রবি)
( কি এমন কথা যে কানে কানে বলতে হবে)
— না আমি কানে কানেই বলবো (আনু)
— কেনো (রবি)
— এমনি তুই কাছে আয় (আনু)
তারপর ওর কাছে গেলাম । আর হুট করে আমার কলার টা ধরে আমাকে আরো কাছে টেনে নিলো ।
এখন সে আমাকে পুরোপুরিভাবে জড়িয়ে ধরেছে।
আমার মাজে কেমন একটা অনূভুতি জাগচ্ছিলো।
ইচ্ছে করছিলো ওকে বুকে জড়িয়ে নেই ।
কিন্ত তা করলাম না । কিছু একটা বাধা দিলো ।
আনু এখন কিছু না বলে এক ধ্যানে আমাকে জড়িয়ে ধরে রয়েছে । হঠৎ কি হলো পাগলিটার এভাবে কিছু না বলে জড়িয়ে ধরে আছে কেনো বুজতে পারছি না ।
আমি ও ওর নেশায় ধীরে ধীরে তলিয়ে যাচ্ছিলাম।
কি করবো বুজতে পারছিলাম না ।
আনু কে জিজ্ঞেস করলাম ..!
— কিরে কি বলবি বল (রবি)
কথাটা শুনেই আনুর ঘোর কেটে গেলো । তাকে ও দেখেই বুজতে পারলাম । ও কিছু একটা ধ্যানের মধ্যে ডুবে ছিলো ।
তারপর আমার কানের কাছে মুখ ধীরে ধীরে এগেতো লাগলো।
ওর গরম নিশ্বাস আমার গালের উপর পরছিলো ।
হারিয়ে যাচ্ছিলাম ওর ভালোবাসায় ।
আনু আমাকে যেভাবে জড়িয়ে ধরে রয়েছে । ওকে ছাড়াতেও মন চাইছে না ।
হুট করে আনু আমার কানের এসে যা বলল
তা শুনার জন্য আমি একদম ই প্রস্তুত ছিলাম ।
কথাটা শুনেই যেনো আমার মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা হলো ।
আমি নিজের কান কে পর্যন্ত বিশ্বাস করতে পারছিলাম না এটা আমি কি শুনলাম।
সত্যি কি এটাই শুনেছি । নাকি কোথাও বুল হচ্ছে । আনু এটা কিভাবে বলতে পারলে।
আমি আনুর দিকে অবাক নয়নে তাকাতেই
আনু আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ।
আর মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছিলো ।
আমি আনুকে জিজ্ঞেস করলাম ..?
— এই কি বললি তুই পিল্জ আবার বল (রবি)
আনু আমার বুকে মুখ লুকিয়ে বলল
— ইশশ আমার লজ্জা করে না বুজি (আনু)
— দেখ ন্যাকামো করবি না বল বলছি (রবি)
— কি আমি ন্যাকামো করি (আনু)
— দেখ বলবি না হলে চলে যাবো (রবি)
— কই যাবি আমি তোকে যেতে দিলে তো (আনু)
— আচ্ছা যাবো না আবার বল .!(রবি)
— কি বলবো (আনু)
—- এখুন্নি যেটা কানে কানে বললি (রবি)
— মনে নাই ভুলে গেছি ..! (আনু)
— সর তুই আমি চলে যাই (রবি)
— এই না ..! বলছি তো (আনু)
— হমম‌ বলল ..!(রবি)
— আমি বলেছি আমি আপনার বাচ্চার মা হতে চাই (আনু)
— কিহ্ বলছিস এসব (রবি)(অবাক হয়ে)
ততক্ষনে আনু আমার বুকে মুখ লুকিয়ে নিয়েছে ।
আমি আনুর কাছ থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিলাম।
আর বললাম…!
— কি বলছিস এসব পাগল হয়েছিস নাকি (রবি)
— হ্যা হয়েছি ..! আমি আপনার ভালোবাসায় পাগল হয়েছি । আমি আপনাকে ভালোবাসি ..! আপনাকে বিয়ে করতে চাই । আপনাকে আমার স্বামী রূপে পেতে চাই । আপনার সাথে সংসার করতে চাই । আপনার বাচ্চার মা হতে চাই ।
আর আমাকে এখন থেকে তুই তাই করে ডাকবেন না কারন আমি আপনার হবুও স্ত্রী হই ।
বুজেসেন মিষ্টার উঠ্বি হাজবেন্ড (আনু)
কথা গুলো এক নাগাড়ে বলে আনু চুপ মেরে গেলো । আর আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পরলো।
কি বলল এইসব । শুনেই তো কান জিম ধরে গেছে । বুকের ভেতর ধুকপুকানি কয়েকশো গুন বেড়ে গেলো । এখনো নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না । এগুলো কি সত্যি আনু বলেছে । নাকি অন্য কেউ ।
হঠাৎ করে আনু বলল ..!
— হ্যালো মিষ্টার হাজবেন্ড কি ভাবছেন ..!(আনু)
আমার ধ্যান ভাঙলো ওর কথা শুনে ।
তারপে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টায় মেতে উঠলাম।
আর বললাম …!
— কি বলছিস এসব পাগলের মতো ।আমি তোর বেষ্টফ্রেন্ড…?(রবি)
— ঠাসসস …(আনু)
কথাটা শুনেই আরেকটা চড় বসিয়ে দিয়ে বলল..
— কিছুদিন পর তোর সাথে আমার বিয়ে ..আর এখন বলছিস বেস্টফ্রেন্ড..থাপ্পড় দিয়া সব দাত ফালায় দিমু কুত্তা ..! বউ বলে ডাকবি বলে দিলাম না হলে বিয়ের পর তোর ভাত বন্ধ (আনু)
😨😨 (চুপ মেরে গেলাম।)
আর ভাবতে লাগলাম। মেয়েটা বিয়ের আগেই আমার জিবনটা থাপ্পড়াইতে থাপ্পড়াইতে তেজপাতা বানায় দিলো । না জানি বিয়ের পর কি হাল করবে আল্লায় জানে ।
কিন্ত ও কিভাবে জানলো । ওর সাথে আমার বিয়ে । তাহলে কি আঙ্গেল ওকে সব কিছু বলে দিছে ।
আর কিছু না ভেবে.! ভাবনার দেশে ছেদ করে জিজ্ঞেস করলাম।
— তুইই কিভাবে জানলি যে তোর সাথে আমার বিয়ে হবে । (রবি)
—- আমি সব জানি হু (আনু)
—- কি জানিস বল আমাকে ..!(রবি)
—- আমি জানি তুই আমাকে ভালোবাসিস আর সেটা অনেক আগে থেকেই জানি ।
আর তোর সাথে আব্বু আমার বিয়ে ঠিক করেছে সেটাও আমি জানি ..!(,আনু)
—- কিহ্ কিভাবে জানলি তুই ! আঙ্গেল বলেছে তোকে (রবি)
—- জিনা আব্বু আমাকে কিছু বলেনি ..। আব্বু যখন তোদের এখান থেকে বাসায় যায় । তখন আমি আমার রুমের দরজা খুলে বসে ছিলাম পড়ার টেবিলে । তখন আম্মু বসার রুমে বসে বসে টিভি দেখছিলেন ।
আব্বু যখন দরজায় বেল বাজায় তখন আমি উঠে যাই দরজা খোলার জন্য কিন্ত আমার আগেই আম্মু দরজা খুলে দিয়েছিলো ।
তাই আর আমি কষ্ট করে দরজা খুলতে যায়নি ।
কিন্ত তখন আমি দরজার সামনে দাড়িয়ে ছিলাম।
পর্দার আড়ালে । যাতে আব্বু আম্মু না দেখতে পায় ।
আব্বু প্রথমেই এসে আম্মু কে বলল তোর আর আমার বিয়ের কথাটা বলল ।
কথাটা শোনার পর বিশ্বাস কর । দুনিয়ার সব খুশি আমার ভেতর এসে জড়ো হলো ।
এত খুশি হয়েছি যে বলে বুজাতে পারবো না ।
আমি তো রিতীমতো ঘরের দরজা লাগিয়ে নাচা শুরু করে দিয়েছিলাম।
কারন আমার জিবনসঙ্গী সেই মানুষটাই হচ্ছে । যে আমার সব পাগলামি গুলো সহ্য করে আমাকে হাসাতে জানে ।
আমার হাজার টা ভুলেও আমাকে কিছু না বলে সান্তনা দেয় ।
আমার সব অনূভূতি যেই মানুষটা বুজে তার সাথে আমার বিয়ে হতে যাচ্ছে এটা আমার ভাগ্যের বেপার ।
কিন্ত হঠাৎ করেই তুই আমাকে অনেক বেশি অবহেলা করেছিলি । কেনো তা আমি জানতাম না । যদি জানতাম আমি তুই ওই ছেলেটার হাত ধরার জন্য এত টা কষ্ট পাবি । তাহলে কখনোই আমি ছেলেটার হাত ধরতাম না । পিল্জ তুই আমাকে মাফ করে দে । আমি আর কখনো তোর কোনো কথার অবাধ্য হবো না । তবুও আমাকে আর অবহেলা করিস না আমি সইতে পারছি না বিশ্বাস কর । (আনু)(কাদতে কাদতে )
আনুর চোখে বেয়ে অশ্রু জড়তে লাগলো ।
আমি ওর কথা গুলো মন দিয়ে শুনলাম।
কিন্ত ওর কান্না করা দেখে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ।
আমি আর নিজেকে সামলাতে পারলাম না ।
আনুকে জড়িয়ে নিলাম। বুকের সাথে ।
আনু এখনো ছোট বাচ্চাদের মতো কান্না করেই যাচ্ছে।
ওর কান্না করা দেখে আমার চোখে পানি চলে এসেছে ।
এটা খুশির পানি । এখন নিজেকে সব থেকে বেশি সুখি মানুষ মনে হচ্ছে । কারন আমার বুকে আমার ভালোবাসার মানুষটি মুখ লুকিয়ে কাদচ্ছে ।
কয়জনের এমন ভালোবাসার মানুষ জোটে । যে নাকি ভালোবাসার মানুষের বুকে কাদতে জানে ।
চোখের জল আর নীরবতা কখনো মিথ্যা বলেনা ।
যে মানুষটি নীরবতায় থেকে হাজার টা কথা না বলে একটি কথায় হাজার কথার মানে বুজাতে জানে । সেই কথাটা সত্যি হয়ে থাকে ।
আর যে মানুষটা অশ্রুজলে চোখ ভিজিয়ে হাজার টা কথা বলবে সেটাও সত্যি ।
আর এখানে তো আমার পাগলিটা কান্না করতে করতে শেষ ।
আমি আনুকে বুকে জড়িয়ে বলতে লাগলাম ।
— এইযে হইসে তো আর কাদতে হবে না (রবি)
— হু (আনু)
আমি আনুর থুতুনি ধরে মুখ টা তুলে প্রথমে ওর চোখের পানি মুছে দিলাম।
আর বললাম …
— আমাকে ভালোবাসিস ..! (রবি)
— হু অনেক ভালোবাসি …! ভালোবাসবো আর ভালোবেসে যাবো সারাজিবন …!আর কখনো আমি আপনার কথার অবাধ্য হবো না । আপনি যা বলবেন তাই করবো আমি ! তার বিনিময়ে আমি শুধু আপনার ভালোবাসাটুকু চাই .! আর কিছুনা (আনু)
— এই তুই তো কোনো ভুল করিস নি তাহলে ক্ষমা কেন চাইছিস ..! ভুল তো আমার হয়েছে । সেদিন যদি তোর সাথে একবার দেখা করতাম তাহলে আর তোকে এত কষ্ট পেতে হতো না । পারলে তুই আমাকে ক্ষমা করে দে …! (রবি)
আনু এবার কিছুটা মুচকি হেসে আমাকে বলল..
— এভাবে বলবা না … ! স্ত্রীর কাছে স্বামি কখনো ক্ষমা চায়না । এতে পাপ হয় ..! (আনু)
পাগলিটা ভালোবেসে তুমি তুমি করে বলতে শুরু করেছে ।
তাই আ‌মি ওর সাথে তাই মিলিয়ে বললাম
— খুব বেশি কষ্ট পাইছো তাইনা (রবি)
— হু কিন্ত এখন সব ঠিক হয়ে গেছে কারন এখন তুমি আমাকে তোমার বুকের মাজে ঠাই দিয়েছে তাই । এভাবে আমাকে সারাজিবন জড়িয়ে ধরে রাখলে আমি সব কষ্ট ভুলে যাবো ..! কি জড়িয়ে ধরে রাখবে তো এইভাবে … (আনু)
আমি আর কোনো কথা না বলে আনুর কপালে ছোট করে একটা চুমু দিলাম।
ও কিছুটা লজ্জা পেয়ে আমার বুকে মুখ লুকিয়ে নিলো ।
আর আমাকে জড়িয়ে ধরে রইলো ! আমি ও তাকে পরম যত্নে আমার বুকের সাথে মিশিয়ে নিলাম । আনু চোখ বন্ধ করে রয়েছে ।
চারিপাশে বাতাস বইছে । মনে হচ্ছে কোনো স্বপ্নের দেশে রয়েছি ।
সময় টা যদি এখানেই থমকে যেতো তাহলে কতই না ভালো হতো । দুজনেই এখন চুপ করর রয়েছি।
দুজনের মনের মাজে ভালোবাসার জোয়ার বয়ে চলেছে ।