—না।তোমার ছেলেটাকে নিয়ে আমি আর পারি না।(বাবা)
—কেন কি করেছে আবার?(মা)
—তুমি জানো না তোমার ছেলে কি করেছে?
(রেগে গিয়ে)
—বাবা,আমার আদরের দেবরটা কি করেছে?(ভাবী)
—সব হয়েছে তোমাদের দুই জনের দোষে।আজকে আমার ওর জন্য বাহিরে যেতেও লজ্জা করে। (মেজাজ খিটখিট করে)
—কেন কি করেছে আহমেদ বলবে তো?
—কি করে সেইটা বলতেও আমার লজ্জা করে।
—আরে বল ত কি করেছে?
—সবাই পয়লা বৈশাখের দিনে গালফ্রেন্ড নিয়ে বাহিরে ঘুরতে যায় তার তোমার শয়তান ছেলে জয়কে মেয়েদের মতো সাজিয়ে জয়ের সাথে ঘুরছে।একটু আগে দেখে আসলাম।
—তুমি এইসব কি বলছ?
—আমি ঠিকই বলছি।বিশ্বাস না হলে তোমার আদরের ছেলেকে জিজ্ঞেস কর।
—আচ্ছা।
.
একটু পরেই আমি লাফাতে লাফাতে ঘরে প্রবেশ করলাম।
.
—এই যে এসে পরেছে তোমার বাদর ছেলে।ওকেই এখন জিজ্ঞেস কর।(বাবা)
—আহমেদ।(মা)
—হ্যাঁ,মা।বল।(আমি)
—তুই নাকি আজকে জয়কে মেয়ে সাজিয়ে ওর সাথে সারাদিন ঘুরেছিস?
—কে বলেছে?
—তোর বাবা দেখেছে।এখন বল ঘুরেছিস কি না?
—হ্যাঁ।ঘুরেছি।
—কেন?
—কি করব বলো?ঘুরার মতো গালফ্রেন্ড নাই তাই ওকেই মেয়েদের মতো সাজিয়েছি। (মজা করে)
—তা থাকবে কেন?তোর মতো বাদরের সাথে কোন মেয়ে প্রেম করবে?অকরমার ঠেকি।এখন পর্যন্ত একটাও প্রেম করতে পারিস নাই। (বাবা মুখ ভেঙ্গিয়ে)
—দেখ বাবা,তুমি আমার সামর্থ নিয়ে কথা বলবে না।আমি ইচ্ছে করলে একমাসের মধ্যে গালফ্রেন্ড যোগার করতে পারি।
—তুই জীবনে পারবি না।
—মা,দেখছ বাবা হয়ে ছেলেকে প্রেম করার বুদ্ধি দেয়।
—তোর বাবা ত ঠিকই বলেছে।তুই শুধু পড়ালেখা আর বাদরামী ছাড়া আর কি পারিস?পারলে একটা প্রেম করে দেখা।
—মা তুমিও?
—মা ত ঠিকই বলেছে।(ভাইয়া)
—আচ্ছা।যাও এক মাসের মধ্যে একটা মেয়ের সাথে প্রেম করে দেখাব।
—পারলে দেখা।(বাবা)
—যদি পারি তাহলে আমাকে কি দিবে?
—তুই যদি একমাসের মধ্যে কোন মেয়ের সাথে প্রেম করতে পারিস তাহলে আমি তোকে সেই মেয়েটির সাথে বিয়ে দিয়ে দিব।
—এতে আমার লাভ কি?এতে ত তোমাদের লাভ।
—আমাদের লাভ কিভাবে?
—তোমরা আরও একটা ছেলের বউ পেয়ে যাবে।
—তাহলে তুই কি চাস?
—সেইটা পরে ভেবে বলব।আর একটা কথা।
—কি?
—প্রেম করার জন্য যখন যা যা চাইব আমাকে তখন তা তা দিতে হবে।
—আচ্ছা দিব।
—হয়েছে এখন সবাই খেতে আস।(ভাবী)
—হ্যাঁ,ভাবী খেতে দাও।তারপর আমি এদের সবাইকে দেখিয়ে দিব আমিও প্রেম করতে পারি।
—হ্যাঁ।দেখিয়ে দাও সবাইকে।আমি তোমার পাশে আছি। (নীলা ভাবী)
—কত প্রেম করতে পার সেইটা সামনের একমাসে প্রমাণ কর।এখন খাওয়ায় মন দাও।
.
এরপর সবাই মিলে খাওয়া শেষ করে যার যার রুমে চলে গেলাম।
.
—ওর সাথে কি এমনটা করা ঠিক হলো?(ভাবী)
—হ্যাঁ।ঠিক হয়েছে।(ভাইয়া)
—আমার কিন্তুু তা মনে হয় না ঠিক হয়েছে।
—কেন?
—ও যেভাবে বলল ওর কথা শুনে ত মনে হলো অর্দ্র বিষয়টা সিরিয়াসলি নিয়ে নিয়েছে।
—তাহলে ত আরও ভালো।
—ভালো কেন?
—কারণ আহমেদএখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে উঠেছে।ওর বয়সে আমি ত তোমার সাথে প্রেম করে তোমাকে বিয়েও করে ফেলেছিলাম।কিন্তুু আহমেদ এখনও একটা প্রেমও করতে পারল না।
—তা ত ঠিকই বলেছ।তবুও এমনটা করা কি ঠিক হয়েছে?
—হ্যাঁ।এখন সব চিন্তা বাদ দিয়ে ঘুম আস।না জানি আহমেদ চ্যালেঞ্জ পূরণ করার জন্য কালকে থেকে আবার কোন ফাজলামি শুরু করে।
—হ্যাঁ।ঠিক বলেছ।
.
আমি নিজের মনে মনে ভাবতে লাগলাম যেভাবেই হোক না কেন আমার এই একমাসের মধ্যে একটা গার্লফ্রেন্ড যোগাড় করতেই হবে।
.
তখন ত বাবাকে জিদ করে বলে দিলাম একমাসের মধ্যে প্রেম করব।কিন্তুু প্রেমটা কিভাবে করব?আমি ত আগে কখনও কারো সাথে প্রেম করি নি।
.
পেয়েছি জয়কে জিজ্ঞেস করতে হবে।জয় ত শ্রেয়াকে ভালবাসে।তাহলে জয় নিশ্চয়ই বলতে পারব আমি কিভাবে প্রেম শুরু করব।
.
জয়কে জিজ্ঞেস করলেই ভালো হবে।এখন তাহলে ঘুমিয়ে পরি।কালকে জয়কে জিজ্ঞেস করে নিবো।
.
সকালকে ভার্সিটিতে জয়ের সাথে বসে রয়েছি।
.
—দোস্ত একটা সমস্যাই পরে গিয়েছি।(আমি)
—কি সমস্যা?(জয়)
—আর বলিস না।কালকে তোকে মেয়ে সাজিয়ে তোর সাথে ঘুরেছি আর সেইটা বাবা দেখে ফেলেছে।
—তারপর?
—তারপর আর কি বাড়িতে গিয়ে বলে দিয়েছে।আর বাবা আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছে আমি যদি একমাসের মধ্যে একটা গার্লফ্রেন্ড যোগাড় করতে পারি তাহলে আমি যা চাইব আমাকে তাই দিব।
—কি বলিস?(অবাক হয়ে)
—হ্যাঁ।
—তোর মা,ভাইয়া কিছু বলে নাই?
—তারাও বাবার সাথে মিলে গেছে।
—তোর কপাল অনেক ভাল রে।
—কেন?
—তোকে তোর পরিবারের সবাই বলতাছে কোন মেয়ের সাথে প্রেম করতে আর আমি যে শ্রেয়ার সাথে এতদিন ধরে সম্পর্কে করতাছি সেইটা আমার বাবা জানতে পারলে আমাকে বাড়ি থেকেই বের করে দিবে।
—আরে রাখ তোর কথা।এখন একটা বুদ্ধি দে কিভাবে একটা মেয়ে পটাবো ।
—আরে বোকা মেয়ে পটানের কি দরকার।
—তাহলে কি করব?
—আমার গার্লফ্রেন্ড শ্রেয়াকে নিয়ে বলে দে এইটা,তোর গালফ্রেন্ড তাহলেই ত সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
—আরে না।এতে আরও সমস্যা বাড়বে।
—কিভাবে?
—বাবা বলেছে আমি যে মেয়ের সাথে প্রেম করব সেই মেয়ের সাথেই আমার বিয়ে দিয়ে দিবে।
—তাহলে দোস্ত শ্রেয়াকে তোর গার্লফ্রেন্ড হিসেবে নাটক করতে দিতে পারব না।আমি শ্রেয়াকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
—আরে রাখ তোর নাটক।এখন একটা বুদ্ধি দে।
—তুই এক কাজ করতে পারিস।
—কি?
—আমাদের ভার্সিটির কোন মেয়েকে পছন্দ করে তার সাথে প্রেম করতে পারিস।
—হ্যাঁ।তাই ভাল।কালকে থেকে তাহলে দেখব কোন মেয়ে পছন্দ হয়।
—আচ্ছা।আমিও তোর সাথে আছি।
.
রাতে…
.
—কি কোন মেয়েকে কি পছন্দ হয়েছে?(বাবা)
—একদিনেই কি মেয়ে পছন্দ হয় নাকি?(আমি)
—তোর দ্বারা কিছুই হবে না আমি সেইটা ভাল করেই জানি।
—কালকেই আমি কোন মেয়েকে পছন্দ করে তোমাকে দেখিয়ে দিব।
—কত পারিস আমিও দেখব।(মা)
—ঐ শুন।(বাবা)
—কি?(আমি)
—যে মেয়ের সাথে প্রেম করবি তার ছবি তুলে নিয়ে আসবি।
—কেন?
—আমরা সবাই দেখব।যদি আমাদের পছন্দ হয় তাহলেই তুই ঐ মেয়ের সাথে প্রেম করতে পারবি নাহলে না।
—প্রেম করব আমি তোমাদের পছন্দ আর না পছন্দ দিয়ে আমি কি করব?
—কি করবি মানে?মেয়ে যদি দেখতে খারাপ হয় আর পরে যদি সেই মেয়ের সাথে তোর বিয়ে দেই তাহলে আমাদের পরিবারের মানসম্মান থাকবে?
—মানসম্মান থাকবে কি না আমি জানি নাকি?
—না না।আগে ছবি তুলে আনবি তারপরে আমাদের যদি পছন্দ হয় তাহলেই প্রেম করতে পারবি।
—অর্দ্র,বাবা ত ঠিকই বলেছে।(ভাবী)
—ভাবী,তুমিও বাবার সাথে মিলে গেলে?
—আমি ত সব সময় তোমার পক্ষেই।কিন্তুু বাবা কথাটা ঠিকই বলেছে তাই বললাম।
—ঠিক আছে।তাহলে আনব।
.
পরেরদিন ভার্সিটিতে জয়ের জন্য অপেক্ষা করছি।একটু পর জয় আসল।
.
—কিরে এত দেরি হলো কেন?
—সকালকে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে।চল এখন তোর জন্য মেয়ে পছন্দ করি।(জয়)
—আরও একটা সমস্যা হয়ে গেছে।
—আবার কি হয়েছে?
—বাবা বলেছে যার সাথে প্রেম করব তার ছবি আগে বাড়ির সবাইকে দেখাতে হবে।সবার যদি পছন্দ হয় তাহলেই আমি সেই মেয়েটির সাথে প্রেম করতে পারব।
—তাহলে এখন কি করতে হবে?
—এক কাজ করি চল।
—কি কাজ?
—আমাদের ভার্সিটির সব থেকে সুন্দর সুন্দর মেয়েদের একটা একটা করে ছবি তুলে আনি।
—তারপর?
—তারপর আমি ছবি গুলি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দেখাব।যাকে পছন্দ হবে তাহলে সেই মেয়ের সাথেই প্রেম করব।
—আচ্ছা।চল।
.
দুই জনে দুই দিকে গেলাম ছবি তোলতে।কিছু সময় পর সবার ছবি তুলে আগের জায়গায় আসলাম।কিন্তুু কারো শরীরেই আগের মতো শক্তি নেই।হাহাহ
.
কারণ মেয়েদের না বলে ছবি তুললে যা হয় আর কি।ভার্সিটির ছোট বড় ভাইয়েরা দিয়েছে দুই জনকে মাইর।অবশেষে রাতে খাবার টেবিলে।
.
—কি ছোট নবাব শুনলাম ভার্সিটিতে মেয়েদের ছবি তুলতে গিয়ে শরীরের হাড়-গুড় সব ভেঙ্গে এসেছ।(বাবা)
—হ্যাঁ।(আমি)
—তাহলে কি চ্যালেঞ্জটা বাদ দিয়ে দিবে?
—না।আমি চ্যালেঞ্জ পূরণ করেই ছাড়ব।
—তা ছবি এনেছিস নাকি?(ভাইয়া)
—হ্যাঁ।
—কোথায়?(ভাবী)
—ফোনে
—দেখা তাহলে।(মা)
—আগে খেয়ে নেই তারপর দেখাব।
—আচ্ছা।
.
খাওয়া শেষ করে তাদের সবাইকে ছবি দেখাতে বসলাম।কিন্তুু তারা এত সুন্দর মেয়ে গুলিকে এইভাবে রিজেক্ট করবে আমি ভাবতেও পারি নাই।
.
একটা একটা ছবি দেখে আর বলে এর চোখ ভাল না,এর নাক ভাল না,এর ঠোঁট ভাল না,এর চেহারা ভাল না।অন্তত আমার আর জয়ের উপর যে মাইর গিয়েছে তার কথা চিন্তা করে ত একজনকে ভাল বলতে পারত।
.
কিন্তুু না তাদের কাউকেই পছন্দ হলো না।সবাই ছবি দেখে যার যার ঘরে চলে গেল।বাবা আমাকে বলে গেল অন্য কোন মেয়েকে পছন্দ করতে।আমি এখন কি করব।না কালকে আবার জয়ের সাথে কথা বলতে হবে।জয়ই কোন ভাল বুদ্ধি দিতে পারবে।
বড্ড প্যারায় আছি কেনো যে চ্যালেঞ্জটা নিতে গেলাম🙄🙄

—কিরে তোর বাড়ির সবার কোন মেয়ে পছন্দ হয়েছে?(জয়)
—না রে।এত সুন্দর সুন্দর মেয়ে গুলি কাউকেই পছন্দ হলো না।কত শখ ছিল এত সুন্দর সুন্দর মেয়ে থেকে যেকোনো একটার সাথে প্রেম করব।তার আর হলো না।(আমি)
—আরে রাখ তোর প্রেম।কালকে তোর জন্য এত মাইর খেলাম সব বৃথা গেল।এখন আগে ট্রিট দে তারপর বাকি কিছু দেখব।
—কি রে কি হয়েছে?(রাজু)
—আর বলিস না। আহমেদের পরিবারের সবাই নাকি অকে চ্যালেঞ্জ করেছে একমাসের মধ্যে কোন একটা মেয়ের সাথে প্রেম করতে হবে।
—তারপর?(রাফি)
—তারপর কি কালকে আমাদের ভার্সিটির সব সুন্দর সুন্দর মেয়েদের ছবি তুলে নিয়ে গেছে বাড়িতে তাদের নাকি কোন মেয়েই পছন্দ হয় নাই।
—তোরা যে মেয়েদের ছবি তুললি তোদের কেউ মাইর দেয় নাই?
—তা আর বলতে।কালকে ওর জন্য কত মাইর খেয়েছে তোদের বলে বুঝাতে পারব না।
—আরে রাখ তোদের কথা।আজকের মধ্যেই প্রেম করার মতো কোন একটা মেয়ে খুঁজতে হবে।এরপরে ত আবার মেয়েটাকে পটাতেও অনেক সময় লেগে যাবে।পরে তাহলে সময়ই পাব না।
—তাহলে এখন কি করতে হবে বল।আমরা সব বন্ধুরা মিলে করে দেই।
—আগে একটা ভাল মেয়ে খুঁজে দে।তারপর বাকি কাজ করা যাবে।
—আচ্ছা।তাহলে আমাদের সবার গার্লফ্রেন্ড গুলির যত বান্ধুবী আছে তাদের সবার ছবি দেই তোকে।তুই বাড়িতে গিয়ে দেখ কাউকে তোর পরিবারের পছন্দ হয় নাকি?
—আচ্ছা।তাহলে দে।
.
কি আর করার আজকেও ২০০+ মেয়ের ছবি নিয়ে বাড়িতে গেলাম।রাতে খাওয়ার পর টিভি দেখচ্ছি তখন বাবা-মা,ভাইয়া-ভাবী আমার কাছে আসল।
.
—কি ছোট নবাব কোন মেয়েকে পছন্দ হয়েছে নাকি?(বাবা)
—আমার পছন্দ দিয়ে কি হবে?পছন্দ ত তোমাদের হতে হবে।তাছাড়া ত আর তোমরা আমাকে কারো সাথে প্রেম করতে দিবে না।(আমি)
—তাও ঠিক।আজকে কোন মেয়ের ছবি তুলে এনেছিস?নাকি বাবা যে চ্যালেঞ্জ দিয়েছিল সেইটার কাছে হার মেনে নিবি?(ভাইয়া)
—আমি ত তাড়াতাড়ি হার মানব না।
—তাহলে কি ছবি নিয়ে এসেছ?(ভাবী)
—হ্যাঁ।
—দে দেখি।কাউকে পছন্দ হয় কি না?(বাবা)
—এই নাও।
—আজকে ছবি তুলতে গিয়ে কারো মাইর খেয়েছিস নাকি হাহাহহ?(মা)
—না।
—তাহলে এত মেয়েদের ছবি পেলি কোথা থেকে?
—আরে এইসব আমার সব বন্ধুদের গার্লফ্রেন্ডের বান্ধুবীদের ছবি।
—দেখছিস তোর সব বন্ধুদেরও গার্লফ্রেন্ড আছো।
আর তোর কোন গার্লফ্রেন্ড নাই।তোকে দিয়ে কিছু হবে না।
—ধূরর তুমি বসে বসে ছবি দেখ।কোন মেয়ে পছন্দ হলে বল।
.
অতঃপর তারা সবারই ছবি দেখতে ব্যস্ত হয়ে পরল।কিন্তুু আজকেও তারা একটা একটা মেয়ের ছবি দেখছে আর একটা একটা দোষ বলে মেয়েটিকে বাদ করে দিচ্ছে।
.
—না।একটি মেয়েও সুন্দর না।(ভাইয়া)
—আমি ত আগেই জানতাম ঐ যদি কোন মেয়েকে পছন্দ করে তাহলে এমনই অসুন্দর মেয়েকে পছন্দ করবে।(বাবা)
—এতই যখন জানো তাহলে তোমরাই একটা মেয়েকে পছন্দ করে দাও না।(আমি)
—এখন ত দেখছি তোর প্রেম করার জন্য আমাদেরই মেয়ে খুঁজতে বের হতে হবে।
—হ্যাঁ।তোমরাই খুঁজ।যত্তসব।
.
আমি চলে আসলাম সেখান থেকে।মুড টাই নষ্ট করে দিল।দূর যতসব।এখন একটু ঘুম আসি।সকালকে নাস্তার টেবিলে…
.
—আজকে নিয়ে ত তিনদিন চলছে।(বাবা)
—তাহলে আমি কি করব?(আমি)
—তিনদিন চলে গেল আর এখনও প্রেম করার জন্য একটা মেয়ে খুঁজে বের করতে পারলি না।আবার ঐ একমাসের মধ্যে কোন মেয়ের সাথে প্রেম করে দেখাবে।(ভাইয়া)
—আমি ত কত মেয়ের ছবিই দেখালাম তোমরাই ত সব গুলিকে রিজেক্ট করে দিলে।তাহলে আমি প্রেম করব কি করে?
—তুই অসুন্দর অসুন্দর মেয়েকে পছন্দ করবি আর পরে সেই মেয়েকে আমাদের ঘরের বউ বানালে লোকে কি বলবে?(মা)
—লোকে কি বলবে সেইটা আমি জানি নাকি?
—এত কথা বাদ দিয়ে পারলে আজকের মধ্যেই প্রেম করার মতো একটা মেয়ে খুঁজে বের করিস।নাহলে তোর আর চ্যালেঞ্জ জিততে হবে না।
—হ্যাঁ হ্যাঁ।আজকের মধ্যেই একটা মেয়ে খুঁজে বের করিয়ে দেখাব।
—আগে বের করে দেখা তারপর কথা বলিস।
.
সকাল বেলা সকালেই দিল মেজাজটা খারাপ করে।না আজকে ভার্সিটিতে গিয়ে একটা মেয়ে খুঁজে বের করতেই হবে।অনেক হয়েছে।
.
ভার্সিটিতে….
.
—কিরে মেয়ে গুলির মধ্যে থেকে তোর পরিবারে কাউকে পছন্দ হয়েছে?(জয়)
—আরে না।(আমি)
—তাহলে এখন কি করা যায়?(রাজু)
—আমি কিছু জানি না।তোরা আজকের মধ্যেই একটা সুন্দরী মেয়ে খুঁজে বের কর।(আমি)
—আচ্ছা।একটু ভাবতে দে।
—যত খুশি তত ভাব।কিন্তুু আজকের মধ্যেই একটা সুন্দর মেয়ে খুঁজে বের করে দে।
—আমরা এত মেয়ের ছবি তুললাম কিন্তুু একটা মেয়ের কথা ত ভুলেই গিয়েছে। (রাফি)
—কার কথা?
—আরে ঐ যে ওর কথা।
—আরে শালা ভাব বাদ দিয়ে বল কার কথা?
—আরে পরী ।
—কি তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে?
—কেন?
—কেন মানে? তোর কোন দিক দিয়ে মেয়ে মনে হয়।সব সময় ছেলেদের মতো শর্ট-প্যান্ট পরে থাকে।তাছাড়া পরী আহমেদের ১ বছরের সিনিয়র।
—তাই বলে কি পরী মেয়ে না?
—আমি ওরে মেয়ে মনে করি না।তাছাড়া ওকে আমার বাড়ির মানুষ দেখলে এমনিই অপছন্দ করে দিবে।
—আরে বেটা পরীকে পছন্দ করে ফেল এমনিতেই পরী তোকে ভালবাসেতাই আর কষ্ট করে তোকে পরীকে পটাতেও হবে না।
—যদি বাবার দেওয়া বাজি হেরেও যাই তাহলেও আমি পরীকে কোনদিন ভালবাস না।
—কেন ভালবাসবি না?(পরী)(পিছন থেকে)
.
আমি ওদের সাথে কথাই এতটাই মগ্ন ছিলাম যে কে কথাটা জিজ্ঞেস করল আমি খেয়াল করি নি।
.
—ভালোবাসব বললেই ভালোবাসা হয় না।ভালোবাসা মন থেকে আসে আর পরীকে দেখলেই ত আমি বমি আসে ভালোবাসা না।
—কেন আর অন্য মেয়েদের দেখলে বুঝি ভালোবাসা আসে? (পরী)
—হ্যাঁ।পরীকে দেখলে বমি আসে কারণ ঐ যে ছেলেদের মতো শর্ট-প্যান্ট পরে এইগুলি দেখলে কারোই মন থেকে বমি ছাড়া আর কিছু আসবে না।দেখত ভার্সিটিতে ত আরও মেয়ে আছে।এরা কত সুন্দর মেয়েদের পোশাক পরে এসেছে আর পরী কি আবিজাবি পরে আসে।তাছাড়া মিশু আমার সিনিয়র আমার বুড়ো হওয়ার আগেই মিশু বুড়ি হয়ে যাবে। (আমি)
—তবে রে। (পরী)
—জয় একটা কথা বলত সেই কখন থেকে তোর কন্ঠটা মেয়েদের মতো শুনা যাচ্ছে কেন?
—আমি ত এত সময় ধরে তোর সাথে কথা বলি নাই
—তাহলে কে বলেছে?
—তুই পিছনে তাকিয়ে নিজেই দেখে নে। (পরী)
—কে আছে পিছনে?
—তুই দেখে নে।আমি পিছনে তাকালাম
—পরী ত ত ত তুমি?
—হ্যাঁ।আমি।
—কখন আসলে?
—যখন থেকে তুই আমার সম্পর্কে ওদের বলছিলি।
—এর মানে তুমি সব শুনে ফেলেছো?
—হ্যাঁ।
—আজকে আমার জীবনটা গেল রে।(আস্তে আস্তে)
—বিরবির করে কি বললি?
—না না।কিছু না।
—আমাকে দেখলে তোর বমি আসে তাই না?একটু আমার কাছে আস।আমাকে দেখলে তোর বমি আসে কি করে আমিও দেখি।(আমার কাছে আসতে আসতে)
—আরে আপনি আমার কাছে কষ্ট করে আসতে যাবি কেন?এর থেকে ভাল আমিই আপনার কাছে আসি।
—ঠিক আছে আসো।
.
আমি বসা থেকে উঠে দিলাম এক দৌঁড়।কারণ পরী
যদি এখন আমাকে তার সামনে পায় তাহলে আজকে আমাকে মেরেই ফেলবে।
.
এমনিতেই খুব রাগি একটা মেয়ে।জাতে আবার বরিশাইল্লা আমাকে যে-দিন থেকে প্রপোজ করেছে সেইদিন থেকে আমার জীবনটা তেজপাতা বানিয়ে দিয়েছে।আমার জীবনের সব সুখ কেড়ে নিয়েছে।
আমাকে নাকি ওর ভার্সিটির প্রথম দিন থেকেই ভালো লাগত।আমি ওর সাথে তেমন কথা বলতাম না।কারণ পরী সবসময় ছেলেদের মতো শার্ট-প্যান্ট পরে থাকত।
.
তারপর একদিন আমি ভার্সিটির বটগাছের নিচে বসে রয়েছি হঠাৎ কোথা থেকে এসে জানি আমার সব বন্ধু বান্ধুবীর সামনে আমাকে প্রপোজ করে বসল।
.
আমি ত সেইদিন অনেক অবাক হয়েছিলাম।তারপর কোন মতো সময় চাওয়ার নাম করে এতদিন দূরে রেখেছি।কিন্তুু আজকে ত সব শুনে ফেলেছে।
.
আজকে আমাকে সামনে পেলে হয়ত মেরেই ফেলব।কোন মতো ক্লাস করে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।কিছুদূর আসার পর হঠাৎ করে নামল বৃষ্টি।
.
আমি ত সম্পূর্ণ ভিজে গেলাম।হঠাৎ করে পরী কোথা থেকে জানি এসে আমার মাথায় ছাতা ধরল।অবশ্য পরীদের বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে তাই আমাকে বৃষ্টি ভিজতে দেখতে পেয়ে হয়তোবা ছাতাটা ধরল।
.
অবশেষে পরী আমাকে আমাদের বাড়ির কাছে নিয়ে আসল।দুইজন এক ছাতাতে আসায় দুইজনই অনেকটা ভিজে গিয়েছি।তাই না চাওয়া সত্যেও পরীকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে আসলাম।আজকে আমার কপালে কি আছে কে জানে।

বাড়িতে এসে বেল বাজালাম।ভাবী এসে দরজা খুলে দিল।দরজা খুলে আমার সাথে একটা মেয়ে দেখে ভাবী ত অবাক।
মা বারবার জিজ্ঞেস করচ্ছে কে এসেছে ভাবী কিছুই বলছে না।
.
অবশেষে মা আসল কে এসেছে সেইটা দেখার জন্য।মা আমার সাথে একটা মেয়ে দেখে মাও অনেকটা অবাক হলো।তার থেকে আমি বেশি অবাক হলাম কারণ মা কান্না করে দিয়েছে।
.
—তুই এইটা কি করে করতে পারলি?(মা)(কান্না করে)
—আমি আবার কি করলাম?(আমি)
—তুই যে এইটা করতে পারবি আমরা কখনই ভাবি নাই।
—হ্যাঁ,মা একদম ঠিক বলেছে।দেবর জী তুমি এইটা কি করে করতে পারলে?(ভাবী)
—আরে বাবা আগে ত বল আমি কি করেছি?
—তোর বাবা তোকে কোন মেয়ের সাথে প্রেম করতে বলেছিল।আর তুই কিনা শেষ পর্যন্ত এইটা করলি।(কান্না করে)
—এত ভাব না করে আগে বল আমি কি করেছি?
—তোর বাবা তোকে প্রেম করতে বলছিল আর তুই একবারে বিয়ে করেই বাড়িতে চলে আসলি?
—বিয়ে???কিসের বিয়ে?কাকেই বা বিয়ে করলাম?(অবাক হয়ে)
—এই যে এই বিয়েটিকে।(পরীর দিকে ইশারা করে)
—তোমার কি মাথা নষ্ট হয়েছে?ওকে বিয়ে করা দূরের কথা ওর সাথে ত আমি প্রেমই করব না।
.
কথাটা বলার পর পরীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম পরীর মুখটা জানি কেমন শুকিয়ে গেল।মার কথা শুনে যার মুখে হাসি ছিল আমার কথাটা শুনে হঠাৎ করেই শুকিয়ে গেল।
.
—তাহলে এই মেয়ে তোর বউ না?
—না।
—আজকে তাহলে এমন কি হলো একটা মেয়েকে একবারে বাড়িতেই নিয়ে আসলি?
—আসার সময় দুইজনেই বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিলাম।যাতে ওর আবার আমার জন্য জ্বর বা ঠান্ডা না লাগে তাই নিয়ে এসেছি।
—অহ।বউমা মেয়েটিকে তোমার ঘরে নিয়ে গিয়ে ওকে একটা শাড়ি পরতে দাও।
—আচ্ছা মা।
.
ভাবী পরীকে নিয়ে গেল।আমিও আমার রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে খাবার খেতে চলে আসলাম।
ভাবীর রুমে….
.
— শাড়িটা পরে নাও।(ভাবী)পরীকেএকটা শাড়ি এগিয়ে দিয়ে)
—…….(নিশ্চুপ)
—কি হলো নাও।
—আমি শাড়ি পড়তে পারি না।(পরী মাথা নিচু করে)
—তাহলে বাড়িতে কি পরে থাকো?
—শর্ট-প্যান্টই।
—তোমাকে তোমার মা-বাবা বকে না?
—বকে।কিন্তুু আমার যা ইচ্ছে করে আমি তাই করি।
—অহ।আস আমি তোমাকে শাড়ি পরিয়ে দেই।
—আচ্ছা।ভাবী মিশুকে শাড়ি পরিয়ে দিল
—দেখ ত তোমাকে এখন কত সুন্দর লাগছে।(ভাবী)
—আসলেই ত।আগে ত আমাকে এত সুন্দর কখন লাগে নি।(পরী আয়নায় নিজেকে দেখে)
—এখন নিচে চল।
—আচ্ছা।
.
ভাবী পরীকে নিচে নিয়ে আসল।আমি বসে বসে টিভি দেখছিলাম।কারণ মা আমাকে এখনও খাবার দেয় নি।পরী যখন নিচে আসল তখন হঠাৎ করেই আমার চোখ পরীর দিকে পরল।
.আমি পরীকে দেখে ত একদম বোবা হয়ে গেলাম।কেন জানি আমার মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হচ্ছে না।মনে হচ্ছে আমি কোন পারীদের রাজ্জ থেকে নেমে আসা পরিকে দেখছি।
আমার চোখকেই আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না পরী কখনও এতটা সুন্দর হতে পারে?কেন জানি হঠাৎ করে পরীর সাথে প্রেম করতে ইচ্ছে হচ্ছে।
.
—কি দেবর জ্বি কি দেখছো?(ভাবী)
—পরি।(আমি)
—মানে?
—কিছু না।(নিজের মধ্য ফিরে এসে)
—বুঝতে পেরেছি।
—কি বুঝলে?
—সেইটা তোমাকে ত বলা যাবে না।
—তাহলে কাকে বলবে?
—রাত হতে দাও তাহলেই বুঝবা।
—আচ্ছা।
—তোমরা সবাই খেতে আস।(মা)
—আচ্ছা আসছি।পরী চল আমাদের সাথে খেতে যাবে।
—না না।বৃষ্টি কমে গেছে আমি এখন বাড়িতে চলে যাই।(পরী)
—আগে আমাদের সাথে খাবে তারপর আহমেদ তোমাকে তোমার বাড়িতে দিয়ে আসবে।
—না না তা হয় না।
—কেন?
—বাড়িতে সবাই চিন্তা করবে।
—কিছু হবে না।তুমি আস।
—মা-ভাবী এত করে বলচ্ছে যখন খেয়েই যাও।(আমি)
—আচ্ছা।
.
তারপর সবাই মিলে খেতে বসলাম। খাওয়ার সময় আমার একটা বদ অভ্যাস আছে আর সেইটা হলো মোবাইলে গান শুনা আজকেও তাই করলাম।
.
—ঐ গান বন্ধ কর।(পরী)
—কেন?(আমি)
—খাওয়ার সময় গান শুনতে হয় না।
—কিন্তুু আমি শুনি।
—তুই গান বন্ধ করবি নাকি না?(রাগি কন্ঠে)(চোখ দুইটি বড় বড় করে)
—আচ্ছা বাবা।করছি।(গান বন্ধ করে দিলাম)
—দেখেছ বউমা যে ছেলেকে আমরা এতদিন বলে যে কাজটি করাতে পারি নি তা আজকে এই মেয়ে করিয়ে দিল।(মা)
—হ্যাঁ,মা তাই তো দেখছি।(ভাবী)
—তা মা তোমার নাম কি?
—পরী ।দুঃখিত আপনার ছেলেকে আমার এমন করে বলা উচিত হয় নি।আসলে আমার না হঠাৎ করে রাগ উঠে যায় তাই বলে ফেলেছি।
—না না ওর জন্য এইটাই ঠিক হয়েছে।
.
তারপর তারা আরও কিছু কথা বলল।খাওয়া শেষ করে কিছু সময় বিশ্রাম নিলাম।
.
—আমি তাহলে আজকে আসি।(পরী)
—মাঝে মাঝে আমাদের বাড়িতে এসো।(মা)
—আচ্ছা।
—আহমেদ ওকে ওর বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আস।
.
কি আর করার মা বলেছে তাই আমিও চলে গেলাম পরীকে নামিয়ে দিয়ে আসতে।অবশ্য এতে আমারই লাভ।কারণ আমি আরও কিছু সময় পরীকে শাড়ি পরা অবস্থায় দেখতে পারব।
.
পরীকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে গেলাম।রাতে বাড়িতে আসলাম বাড়ি এসে দেখি বাবা আর ভাইয়াও বাড়িতে চলে এসেছে।
.
—কি নবাবজাদা শুনলাম বাড়িতে নাকি কোন মেয়েকে নিয়ে এসেছিলে?(বাবা)
—বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল তাই নিয়ে এসেছিলাম।(আমি)
—মেয়েটিকে কিন্তুু আমাদের সবার পছন্দ হয়েছে আর তোমাকে এই মেয়ের সাথেই প্রেম করতে হবে।
—তুমি ওকে কোথায় দেখলে?
—তোমার ভাবী ছবি তুলে রেখেছিল।
—ভাবী তুমিও না।
—কি করব বল মেয়েটিকে আমাদের পছন্দ হয়েছিল।তাই তোমার ভাইয়া আর বাবাকে ছবি দেখানোর জন্য একটা তুলে রেখেছিলাম।
—এইসব বাদ তোকে কিন্তুু এই মেয়েকেই আমাদের ঘরের বউ করে আনতে হবে।(মা)
—কিন্তুু ঐ ত শর্ট-প্যান্ট ছাড়া আর কিছুই পরে না।
—তাহলে ওকে ঐগুলি পরতে বলবি না।
—আমি পারব না।
—তাহলে কালকে আবার আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসিস।
—আমি আনতে পারব না।
—ভেবে দেখ।এই মেয়ের সাথে যদি প্রেম না করিস তাহলে কিন্তুু বাজি হেরে যাবি।
—আচ্ছা বাবা।কালকে ওকে নিয়ে আসব।
—এই ত এইবার লাইনে এসেছে।
.
অতঃপর রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে শুয়ে পরীর কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পরলাম।পরেরদিন ভার্সিটিতে…
.
—কালকে তোকে তোর বাবা কিছু বলে নি?(জয়)
—কেন কিছু বলবে?(আমি)
—এই যে কালকে কোন মেয়ের ছবি নিয়ে গেলি না তাই।
—কিন্তুু তাদের ত একটা মেয়ে পছন্দ হয়েছে আর আমাকে বলেছে তার সাথেই প্রেম করতে।
—কাকে?(রাজু)
—পরীকে।
—ওকে আবার তোর বাড়ির মানুষ কখন দেখল?
—কালকে ওকে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলাম তখনই দেখেছে।
—কেন নিয়ে গিয়েছিলি?
—(তারপর ওদের সব কথা বললাম)
—মামা তুই ত ফেসে গেলি

—হ্যাঁ,এখন একটা বুদ্ধি দে।কিভাবে পরীকে এইসব পরা থেকে আটকানো যায়।
—তুই একবার ওকে বলে দেখ ঐ হয়ত তোর কথা শুনতেও পারে

—আমার মনে হয় না শুনবে।
—কেন?
—যে মেয়ে নিজের মা-বাবার কথা শুনে না সে আমার কথা শুনবে এইটা বিশ্বাস করা যায় না।
—তা অবশ্য ঠিক।
—এখন কি করা যায় একটা বুদ্ধি দে।
—দাঁড়া একটু ভাবতে দে।
—আচ্ছা ভাব।
—তোমরা কি ভাবছো?(পরী)(হঠাৎ এসে)
—কিছু না।(আমি)
—ওহ।এই নাও ভাবীর শাড়ি।আমার দিকে একটা ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে
—আমি নিতে পারব না।
—কেন?
—কালকে তুমি পরে গিয়েছ তাই আজকে তুমিই গিয়ে শাড়ি দিয়ে আস।
—তুমি নিয়ে গেলেই ত হয়।শুধু শুধু আমি আবার তোমাদের বাড়িতে যাব কেন?
—তুমি না চাইলেও তোমাকে আমাদের বাড়িতে আজকে যেতে হবে।
—কেন?
—কারণ মা আর ভাবী তোমাকে আমাদের বাড়িতে আজকেও যেতে বলেছে।
—আচ্ছা তাহলে আমি নিজেই গিয়ে শাড়িটা দিয়ে আসব।
—তাই ভাল।
—তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিল।
—কি?
—তুমি কি আমাকে কখনই ভালবাসবে না?(করুন কন্ঠে)
—ভাবতে পারি কিন্তুু আমার একটা শর্ত আছে।
—কি শর্ত?
—তুমি আর কখনও এই শার্ট-প্যান্ট পরতে পারবা না।
—তাহলে আমি কি পরব?
—বাকি মেয়েরা যা পরে তাই তুমিও তাই পরবে।
—তুমি ত জানো আমি ঐগুলি পরতে পারি না।
—আমি এইসব কিছু জানি না।তুমি যদি আমার শর্তে রাজি থাক তাহলে আমাকে কালকে জানিও নাহলে….
—নাহলে কি?
—নাহলে আমি অন্য কোন ভালো মেয়েকে দেখে তার সাথেই প্রেম করব।
—আচ্ছা কালকে বলব তাহলে।
—কালকে উওর না পেলে আর আমার কাছে এসে অযথা ভালোবাসি ভালোবাসি বলো না।
—আচ্ছা।
—এখন তুমি যেতে পার।
—ঠিক আছে।
.
পরী মাথা নিচু করে চলে গেল।আমি অন্য কাউকে ভালোবাসব বলেছি দেখে হয়ত কষ্ট পেয়েছে।
পরীকে যখন বললাম তখন মনে হচ্ছিল পরী এখনই কান্না করে দিবে।
.
—কিরে তুই না বললি তুইও পরীকে ভালোবেসে ফেলেছিস?(জয়)
—হ্যাঁ।(আমি)
—তাহলে এখন আবার ওকে বললি কেন ঐ যদি বাকি মেয়েদের মতো পোশাক না পরে তাহলে অন্য কাউকে ভালোবাসবি।
—দেখ যদি পরী আমাকে সত্যি ভালবাসে থাকে তাহলে কালকে থেকে এইসব পোশাক আর কখনই পরবে না আর আমিও ওকে আমার করে করে সারাজীবনের জন্য পাব আর যদি ঐ এইসব পোশাক না ছাড়তে পারে তাহলে ত আর আমার কিছু করার নাই।
—তুই ত জানিস সব মেয়ে এক হয় না।একেক জন একেক ধরনের হয়।পরী যদি সবার মতো না হতে পারে তাহলে এতে ত ওর কোন দোষ নাই।
—আমি ত পরীকে সবার মতো হতে বলছি না।আমি শুধু চাচ্ছি পরীকে খারাপ দিক গুলি ছাড়ানোর।
—ঠিক আছে।কালকে পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখ কি হয়।
—হ্যাঁ।তাই করতে হবে।
অন্যদিকে
.
পরী ক্লাসে গিয়ে চিন্তা করতে লাগল আমার মা আর ভাবী আজকে পরীকে ডাকল কেন?কালকে আমাকে খাওয়ার সময় এমন হঠাৎ করে আহমেদ কে বকা দেওয়ার জন্য ত আবার কিছু বলবে না তো
.
—কিরে কি ভাবচ্ছিস?(প্রিয়া)
—কিছু না।(পরী)
—আমি জানি তুই কিছু একটা ভাবছিস।এখন বল কি ভাবছিস?
—আর বলিস না।কালকে আহমেদের বাড়িতে গিয়েছিলাম তখন ওর মা আর ভাবী আমাকে সেখানেই খেতে বলে।
—এতে চিন্তা করার কি আছে?
—যখন খাচ্ছিলাম তখন হঠাৎ করে সবার সামনে আহমেদ কে একটু বকে দিয়েছিলাম আর ও একটু আগে বলল আজকে নাকি ওনারা আমাকে আবার ডেকেছে।
—চিন্তা করিস না।আগে সেখানে গিয়ে দেখ তারা কি বলে।
—আচ্ছা।

তারপর ক্লাস করতে লাগলাম।ক্লাস শেষ হওয়ার পর যখন আমি বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম তখন পরী আমাকে পিছনে থেকে ডাক দিল।
.
—আহমেদ (পরী)
—হ্যাঁ,বলো।(আমি)
—তুমি এখন বাড়িতে যাবে?
—হ্যাঁ,কেন?
—চল তাহলে একসাথে যাই।
—আচ্ছা চল।
—আমাকে তোমার মা আর ভাবী ডেকেছে কেন?
—আমি ত জানি না।
—আচ্ছা কালকে যে তোমাকে আমি খাওয়ার সময় বকা দিলাম তার জন্য কি তারা আমাকে আজকে ডাকছে?
—আরে না।
—তাহলে?
—কেন ডাকছে এইটা জানি না।কিন্তুু এইটুকু জানি সেই বকা দেওয়ার জন্য ডাকেনি।
—অহ।
—একটা কথা বলার ছিল।
—কি?
—যদি আমার দেওয়া শর্তে রাজি থাক তাহলে কালকে আর এইসব পরে ভার্সিটিতে এসো না।
—আচ্ছা।
.
তারপর দুইজনে কথা বলতে বলতে আমাদের বাড়িতে চলে আসলাম।বাড়িতে এসে বেল বাজালাম।ভাবী দরজা খুলে দিল।
.
—পরীকে নিয়ে এসেছ?(ভাবী)
—হ্যাঁ।(আমি)
—কোথায়?
—এই যে।
.
পরী আমার পিছে থেকে বের হল। পরীকে বুঝা যাচ্ছে পরী অনেকটা ভয় পেয়ে আছে।
.
—তোমরা দুই জনেই ঘরের ভিতরে আস।
.
আমরা ঘরের ভিতরে গেলাম।ঘরের ভিতরে গিয়ে ত আমি নিজেই অনেক অবাক হয়ে গিয়েছি।কারণ ঘরের ভিতরে আমার মা-বাবা ভাইয়া আর সাথে পরীর মা-বাবাও বসে রয়েছে।
পরী সবাইকে দেখে বিশেষ করে আমার বাবা আর পরীর মা-বাবাকে দেখে আরও বেশি ভয়ে পেয়ে আমার পিছনে গিয়ে লুকাল।
.
—তুমি ভয় পেয়েও না।(আমার বাবা)
—কালকে তুমি আহমেদ কে বকেছ তার জন্য তোমাকে আর তোমার মা-বাবাকে আমরা ডাকি নি।(আমার মা)
—তাহলে আজকে আবার কেন ডেকেছেন?
—আগে তোমরা দুইজন বসো তারপর বলছি।আমরা বসলাম
—দেখেন বিয়াই আমি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কথা বলতে পছন্দ করিনা না।তাই সরাসরি বলছি আমাদের আপনার মেয়েকে পছন্দ হয়েছে।(বাবা)
—আমাদেরও আপনার ছেলেকে পছন্দ হয়েছে।( পরীর বাবা)
—কিন্তুু একটা সমস্যা আছে।(মা)
—কি সমস্যা?(পরীর মা)
—পরীর এই শার্ট-প্যান্ট পরা আমাদের পছন্দ না।আপনারা যদি ওকে এইসব আর না পরতে বলতেন তাহলে ভাল হতো।
—আমরা ত ওকে প্রতিদিনই এইসব পরতে না করি।কিন্তুু পরী আমাদের কথা শুনে না।
–আপনার ওকে একটু বলে দেখেন আপনাদের কথা শুনে নাকি না।
—কি মা তুমি কি আমাদের সবার জন্য এইসব কাপড় পরা বন্ধ করতে পারবে না?
—হ্যাঁ,পারব।
—তাহলে কালকে থেকে আর এইসব কাপড় পরো না।
—আচ্ছা।
—এখন তোমরা এখান থেকে যেতে পার।
— আহমেদ তুই পরীকে ছাদটা ঘুরিয়ে নিয়ে আয়।
—আচ্ছা।
.
আমি পরীকে নিয়ে চলে আসলাম ছাদে আর বাকিরা কথা বলতে লাগল।আমার এখনও বিশ্বাস হচ্ছে না আমার সাথে এইসব কি হচ্ছে।
.
—তুই সব আগের থেকেই জানতি?(পরী)(কিছুটা রাগে)
—না।(আমি)
—আমাকে মিথ্যা বলবি না।আমি জানি তুই সব আগের থেকেই জানতি।
—বিশ্বাস কর।আমি কিছুই জানতাম না।
—আমি জানি সব তোর বুদ্ধি তুই আমাকে সবার সামনে অপদস্ত করার জন্য আমাকে আর আমার মা-বাবাকে এখানে ডেকে এনেছিস।
—আমি তোকে অপদস্ত করব কেন?তুই আমার কে?
—আমি তোর কেউ না?
—না।
—শালা নিচে তোর সাথে আমার বিয়ের কথা হচ্ছে আর এখনই বলস আমি তোর কেউ না।কত বড় সাহস তোর।(আমার কলার ধরে)
—এখন মাএ বিয়ের কথা হচ্ছে।বিয়ে ত হয়ে যায় নি।বেশি বাড়াবাড়ি করবি ত তোকে বিয়েই করব না।
—আমাকে বিয়ে করবি না কাকে বিয়ে করবি?
—কেন?আমাদের ভার্সিটতে কত সুন্দর সুন্দর মেয়ে আছে।তাদের মধ্যে থেকে কাউকে বিয়ে করব।
—কি কি বললি তুই??সাহস থাকলে পারলে আবার বল ত।
.
আমাকে ধাক্কা দিয়ে প্রায় ছাদ থেকে ফেলেই দিল।যদি পরী আমাকে ছেড়ে দেয় তাহলে আমি নিশ্চিত ছাদ থেকে পরে যাব।
.
—এই এই আমি ত পরে যাব।
—না না।তুই জানি কি বলছিলি আবার বল একটু শুনি।
—না না।আমি ত কিছুই বলছিলাম না।
—তুই কাকে জানি বিয়ে করবি বলছিলি?
—আমি ত তোকেই বিয়ে করব।আমার সামনে এত সুন্দর মেয়ে থাকতে আমি অন্য কাউকে বিয়ে করব কেন?
—কথাটা জানি মনে থাকে।
—এখন ত আমাকে উপরে তুল।
—হ্যাঁ।তুলছি।(আমাকে উপরে উঠাল)
—পরীএকটা কথা বলি?
—হ্যাঁ,বল।
—আমাদের বিয়ে হয়ে গেলেও কিন্তুু আমি আমাদের ভার্সিটির সব থেকে সুন্দর মেয়েটার সাথে প্রেম করব।
—কি বললি তুই??
.
আমাকে আর পায় কে?আমি এক দৌড়ে ছাদ থেকে নিচে চলে আসলাম।পরীওআমাকে মারার জন্য আমার পিছে পিছে ছুটে আসচ্ছে।
.
ছুটে ছুটে নিচে আসতেই সামনে পরল ভাবী।ভাবীকে দেখে আমি দাঁড়িয়ে গেলাম।আমার পিছু পিছু পরীও এসে দাঁড়িয়ে গেল।
.
—কি হলো তোমরা দৌঁড়াচ্ছ কেন?(ভাবী)
—দেখ না ভাবী।তোমার দেবর কি বলছে( পরী)
—কি বলছে আহমেদ তোমাকে??
–বলছে আমাদের বিয়ের পরে নাকি ঐ আবার আমাদের ভার্সিটির সব থেকে সুন্দর মেয়ের সাথে প্রেম করবে।(কান্নার ভাব করে)
—দেবর জি এইসব কি?
—ভাবী আমি ত ফাজলামি করে বলেছি।আমি
—দেখত তোমার জন্য মেয়েটি কান্না করে দিল।
—এমন ছিচকাদুনেকে আমি বিয়ে করতে পারব না।
—দেখছ ভাবী তোমার সামনে আমাকে ছিচকাদুনেকে বলছে।
— আহমেদ এটা কিন্তুু ঠিক না।পরীর কাছে ক্ষমা চাও।
—আমি পারব না।
—আমি বলচ্ছি না পরীর কাছে ক্ষমা চাও।
—আচ্ছা বাবা।সরি।
—আমি কি তোর বাবা হই?
—না।
—তাহলে বললি কেন?
—এইটা ত কথার কথা।
—আমি জানি না।আবার বল।
—আমি পারব না।
—হয়েছে হয়েছে।এখন নিচে চল সবাই তোমাদের ডাকচ্ছে।
—আচ্ছা চল।
.
তারপর আমরা নিচে আসলাম নিচে এসে সবার সাথে কথা বলে সবাই একই সাথে খেতে বসলাম।সবার খাওয়া শেষ হওয়ার পর তারা কিছু কথা বলল।
.
তারপর পরী আর পরীর মা-বাবা চলে গেল।তারা চলে যাওয়ার পর আমি বোকার মতো বসে রয়েছি।আমার মাথায় এখনও ডুকছে না কিভাবে কি হলো?
.–কি দেবর জ্বি কি ভাবছো?(ভাবী)
—এইটাই ভাবছি আজকে আমার সাথে এইগুলি কি হল?(আমি)
—এতে ভাবার কি আছে?আজকে তোমার বিয়ে ঠিক হল।
—কিন্তুু এক সকালে এতকিছু কিভাবে সম্ভব?
—এইগুলি ত এক সকালে হয় নি।
—তাহলে?
—এইসব অনেক দিন আগেই প্ল্যান করা ছিল।
—কে করেছে?
—আমি।(বাবা)
—কিভাবে?
—পরীর বাবা আর আমি ছোট বেলা থেকেই বন্ধু ছিলাম।সেই বন্ধুত্বকে আজকে একটা সম্পর্কে গড়ে তুললাম।
—তুমি ত এর আগে কখন বলো নি তুমি পরীর বাবাকে চিনতে আর তাদের বাড়িতেও কখনও যাও নি।এমন কি তারাও আমাদের বাড়িতে কখনই আসে নি।
—কারণ তারা এখানে ছিল না কিছুদিন আগেই এই শহরে এসেছে।
—অহ।তার মানে প্রেম করার জন্য আমার সাথে বাজি ধরা তোমার প্ল্যানের একটা অংশ ছিল?
—হ্যাঁ,আমি আমি একদিন তোর ছবি পরীর বাবাকে দেখিয়েছিলাম আর যখন পরীর মা আর বাবা পরীর ফোনে তোর ছবি দেখল তখনই আমরা সবাই মিলে এই বুদ্ধিটা করি।
—তার মানে এতদিন ধরে তোমরা আমাকে বোকা বানাচ্ছিলে?
—হ্যাঁ।(সবাই একসাথে)
—আগে ত তুই আমাদের বোকা বানাতি আজকে তোকে আমরা বোকা বানালাম।(মা)
—এখন বুঝ বোকা হলে কেমন লাগে।(ভাইয়া)
—হ্যাঁ,বুঝছি।
.
কি আর করার আমি আমার ঘরে চলে আসলাম।ঘরে এসে একটা ঘুম দিলামএক ঘুমে বিকাল।বিকালে ঘুম থেকে উঠে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে রাতে বাড়িতে চলে আসলাম।পরের দিন….
.
—এই তোমার ফোনটা দাও।(পরী)
—কেন?(আমি)
—দিতে বলেছি দিবাএত প্রশ্ন করো কেন?
—আমি মোবাইল দিব না।
—কিছুদিন পর আমাদের বিয়ে হবে আর আজকেই তুমি আমার কথা শুনছো না।
—না শুনব না।
—বেশি বাড়াবাড়ি করলে শুশুর মশাইকে ফোন করে বলে দিব তুমি আমাকে ভার্সিটির সবার সামনে বকেছ।
—আমি তোমাকে কখন বকলাম?
—তুমি আমাকে বক নাই এইটা আমি আর তুমি জানি তোমার বাবা ত আর জানে না।
—তাই বলে হবু বরের নামে এত বড় মিথ্যা কথা বলতে পারবে?
—আমি সব পারি।এখন বেশি কথা না বলে মোবাইল দাও।
.
কি আর করার বাধ্য হয়ে মোবাইলটা দিতেই হল।কিছুসময় মোবাইল টিপে আমার মোবাইল আমাকে দিয়ে দিল।আমি মোবাইল নিয়ে দেখি আমার মোবাইলে আর কোন মেয়ের নাম্বার নেই।
.
এমনকি ফেসবুক থেকে সব মেয়েকে আনফ্রেন্ড নাহলে ব্লক করে দিয়েছে।
.
—তুমি এইটা কি করলে?(আমি)
—কি করেছি?(পরী)
—তুমি আমার মোবাইল থেকে সব মেয়ের নাম্বার ডিলিট দিলে কেন?
—আমার মন চাইল।
—তোমার মন যা চাইবে তাই করবে নাকি?
—হ্যাঁ।
—তুমি এইটা ঠিক করলে না।
—কেন?সারারাত যাতে মেয়েদের সাথে কথা বলতে পার সেইজন্য তোমার মোবাইলে মেয়েদের নাম্বার রেখেছিলে নাকি?
—হ্যাঁ,আমি সারারাত কথা বলি নাহলে সারাদিন কথা বলি তাতে তোমার কি? (পরীকে রাগাতে বললাম)
—আমার কি মানে তুমি আমার হবু বর।তুমি শুধু এখন থেকে আমার সাথেই কথা বলবে।যদি কখনও আমি তোমাকে কোন মেয়ের দিকে তাকাতে দেখছি তাহলে….
—তাহলে কি?
—তাহলে আমি তোমার চোখ তুলে নিব।
—তুমি কি গুন্ডি নাকি?
—মনে কর তাই।
.
কি আর করার আছেএর থেকে বেশি কিছু বললে এর পরে আমাকে সবার সামনে মাইরই দিতে পারে।যে মেয়ে ওকে দিয়ে কোন বিশ্বাস নেই।
.
এইভাবেই আমার সুখি জীবন জাহান্নাম হয়ে গেল আর আমি শুধু বসে বসে দেখতে লাগলাম।কিছুদিন পর আমার সাথে পরীর বিয়ে হয়ে গেল।
.
পরীর সাথে বিয়ের পর পরী আমাকে আগের থেকে আরও অনেক বেশি ভালোবাসে।
যে পরী নিজে শাড়ি পরতে পারত না সে আজকে পুরো একটা সংসার সামলায়।আচ্ছা বিয়ের পর কি মেয়েরা এভাবেই পাল্টে যায়???
.
এমন কি আমাদের বাড়ির সব কাজ ভাবী ও পরী মিলেই করে। পরী আর আমি এখনও আমাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছি।
.
মাঝে মাঝে যখন পরীকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় তখন পরীকে রাগানোর জন্য আমি অন্য মেয়েদের দিকে তাকাই।কারণ কথায় আছে যে ভালোবাসার মধ্যে রাগ অভিমান না থাকলে নাকি ভালোবাসাই হয় না।