।।
আজকে সকালে যখন কলেজের গেট দিয়ে ঢুকতে যাবো ঠিক তখনি একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে দু হাত পিছে চলে যায়। আর মেয়েটা ধপাস করে পরে যায়।
মেয়ে: ঠাসসসস। দেখে চলতে পারিস না যত্ত সব কানার দল।
আমি তো অবাক। ধাক্কা খাবার জন্যও কী চর মারতে হবে। এটা কোথাকার নিয়ম।
আমি: তবে আপনিও তো কানা।
মেয়ে: কী আমি কানা(রেগে)
আমি: না না কানা হবেন কেনো। আপনি তো কানি
মেয়ে: ঠাসসসস। তোর এতো বড় সাহস তুই আমাকে কানি বলিস। দেখ তোর কী হাল করি।
আমি: কী করবেন হুমমম। দোস তো আমার একার না। আপনারো আছে। আপনিও তো দেখে বের হতে পারতেন।
মেয়ে: কী?? নিজে ইচ্ছে করে ধাক্কা দিয়ে এখন আমাকে দোস দিচ্ছিস। সত্যিই আজ তোর কপালে খারাপ কিছু আছে।
আমি: ওকে দেখা যাবে।।
মেয়েটা রেগে বাইরে চলে গেলো। আর আমি কলেজ ক্যাম্পাসে আমার হারামি বন্ধু গুলোকে খুজছি। শালারা যে কই আছে কে জানে।
ওই একাকটা হারামিরা বসে আড্ডা দিচ্ছে ক্যাম্পাসের এক কোনে।
আমি: ওই শালারা আজ কলেজের প্রথম দিন আর আমাকে না ডেকে নিজেরাই চলে এসেছিস।
মহন: আরে মামা রাগিস কেনো। তুই তো এসেগেছিস। না আসলে এক কথা।
আমি: রাখ তোদের এক কথা সাইড দে বসি।
মহন: হুমমম বস।
আমি তাদের মাঝে বসে গেলাম।
আকাশ: মামা তোর তোবরার এই অবস্থা ক্যান রে।
আমি: কী অবস্থারে হুমম।
মহন: এই তো তোর মুখে মনে হচ্ছে কেউ আদর করে দিয়েছে।
আমি: ধুর হারামিরা আমাকে আদর করবে(এখন না লুকালে পচাবে সবাই)
মহন: না মামা এটা কিন্তু মানতে পারলাম না। আমি সম্পূর্ণ দেখতে পাচ্ছি কেউ তোর গালে হাতের ছাপ দিয়ে দিয়েছে।
আমি: আরে না। এমনি রোদের তাপে হয়তো এমন লাগছে।
রকি: শান্ত ভাই তুমি কী আমাদের বোকা পাইছো। সত্যিটা বলো।
আমি: ঠিক আছে শোন।।(সব কিছু বললাম তাদের)
মহন: কী প্রথম দিনেই হুমকি। তাও আবার আমাদের নিজের কলেজে।
আমি: হুমমম রে দোস্ত।
রকি: তুমি একটু মেয়েটাকে দেখাতে পারবে।
আমি: বাহিরে গেছে এলে দেখাচ্ছি।
মহন: ওকে।
তারপর তাদের সাথে আড্ডা দিতে লাগলাম।
পরিচয়টা দিয়ে দেই।।
হাই আমি শান্ত। বাবা মার বাধ্যগত সন্তান।
বাধ্যগত না অবাধ্যগতম সন্তান বললে ভালো হবে। মা বাবা আমাকে যেটা বলে আমি তার উল্টটা করি। আর আমরা তিন ভাই আমিই ছোট। ছোট হিসেবে যেমন হবার কথা আমি তার থেকেও 2 ধাপ এগিয়ে।
আর মহন রকি আকাশ এরা হলো আমার জানে জিগার দোস্ত। সব কয়টা হারামি।
মেয়েটার পরিচয় এথনও পাইনি তাই কিছু বলতে পারছিনা।
তো বন্ধুদের সাথে বসে ফোনে লুডু কিং খেলতে লাগলাম।
সবাই ইচ্ছে মতো খাচ্ছি। বুঝলাম এই গেম খেলতে লাগলে আমাদের সারা দিন লাগবে তাই লেখা বাদ দিলাম।
খেলা বাদ দিয়ে গেটের দিকে তাকাতেই দেখি সেই মেয়েটা আসছে।
আমি: দোস্ত ওই মেয়েটা।
মহন: কোনটা রে।
আমি: ওই তো ওইটা(হাত দিয়ে দেখিয়ে দিলাম)
মহন: বলিস কী।
আমি: কেনো।
মহন: দোস্ত মেয়েটার নাম মিম। সিরাম জেদি আর বদ মেজাজি। সব ছেলেদের দৌড়ের ওপর রাখে। কেউ যদি ওকে রাগাই তবে ওর রাগ না মেটা পযন্ত তাকে ছাড়ে না।
আমি: তুই চিনলি কী করে।
মহন: আমরা তো একই সাথে হাই স্কুল লাইফ শেষ করেছি।(আমি এক স্কুলে আর ওরা আরেক স্কুলে পরতো) আর ওর বাপ আমাদের থানার ওছি।
আমি: নাম কী ওর আব্বুর।
মহন: তুই চিনিস ওনাকে। নাম লিটন।
আমি: ওহহ লিটন চাচ্চুর মেয়ে।
মহন: হুমমম।
আমি: ওকে দেখা যাবে কেমন বদ মেজাজি মেয়ে। তবে লিটন চাচ্চু তো অনেক ভালো মানুষ।
মহন: হুমমম। মেয়েটা তার উল্ট।
আমি: দেখেই বুঝেছি।
এবার মিম আমাদের সামনে দিয়ে যাবার সময় আমার দিকে একবার রাগি চোখে তাকিয়ে ক্লাসে চলে গেলো।
মেয়েটার নাম মিম। আমাদের সাথেই পরে।
দেখা যাক আগে কী হয়।
।।
আমরা সবাই ক্লাসে চলে আসলাম।
ক্লাসে যাবার কিছুক্ষন পরেই স্যারের আগমন।
স্যার: আজ তো তোমাদের ক্লাস হবে না আজ শুধু পরিচয় নেবো।
সবাই এক সাথে: ওকে স্যার
স্যার: আগে মেয়েরা পরিচয় দাও।
মেয়েরা পরিচয় দেওয়া শেষ করে এবার আমাদের ছেলেদের পালা।
পরিচয় প্রথম বেন্চ থেকে নেওয়া হচ্ছে ার আমরা বন্ধুরা লাস্ট বেন্চে।
তো সবার শেষে আমি।
আমি পরিচয় দেবার আগেই স্যার বলতো।
স্যার: শান্ত তুই দাড়া তোর পরিচয় আমি দিচ্ছি।।
স্যার: এটা হলো হারামির গড ফারাদ। নাম না শান্ত কিন্তু সম্পূর্ণ অশান্ত। ঠিক তার বন্ধুরাও এমনি।
আমি যে ওদের স্যার তাও আমার সাথে হারামি গিরি করে ওরা। এদের বাসা আর আমার বাসা এক জায়গায়।
এর বেশি কিছু বললে আমার অবস্থা খারাপ করে ছারবে তাই আর কিছু বলবো না।
আমি: শশুর মশাই আজকেই আপনার মেয়েকে বিচার দেবো যে আপনি সবার সামনে আমাকে ছোট করেছেন।
স্যার: না না এটা করিস না। তবে বাড়ি গেলে আমার অবস্থা খারাপ করে ছারবে জান্নাত।
আমি: এটা আগে ভাবার দরকার ছিলো।
মহন: তো আমরা আপনার কোন বাড়া ভাত ছায় দিলাম যে আমাদের বাঁশ দিলেন।
স্যার: তোরা থাম একটাও কথা বলবি না।
আমি: ঠিক আছে একটা গান বলেন।
স্যার: কী আমি গান বলবো।
আমি: না বললে আপনার জন্য জান্নাত একাই যথেষ্ট।
স্যার: ঠিক আছে। কিন্তু এটা কিন্তু রিতিমত টরচার করা হলো।
আমি: আপনি শুরু করেন।
স্যার গান শুরু করে দিলেন।
আহা কী গান। ওখান কন্ঠে গান শুনলে কোকিল পাখি মনে হয় লজ্জায় মরে যাবে। কুত্তার তেড়ে আসবে।
স্যারের গান শুনে রিতিমত ক্লাস রুমে হাসির েকটা রুল পরে গেলো।
আমি: থাম আর গান বলা লাগবে না।
মিম সামনে বসে আছে। আমার দিকে কেমন রাগি চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে।
মনে হয় আমার ওপর সকালের অপমানের প্রতিশোধ নিতে চায়।
আমি সেদিকে মন না দিয়ে স্যারের অবস্থা দেখতে থাকলাম।
স্যারের মেয়ের নাম জান্নাত। বয়স 6 েবার ক্লাস 2 এ পরে। আমাকে সব সময় প্যারা দেই। যেমনটা ঘরের বউ রা দেই। আর আমাকে যদি স্যার কিছু বলে তবে পরে স্যারের খবর করে ছাড়ে।
এই হলো জান্নাত আমার আর স্যারের ভয়ের ওষধ।।
কিন্তু মহনের বলা কথা টা মনে হতে কেমন যেনো লাগছে।
মিম নাকি তার অপমানের যে কোনো প্রতিশোধ নিতে পারে।
তাই আমাকে সাবধান থাকতে হবে।

।।
মিম যা পারে করে নিক। আমিও কম পারি না। সাধারণ একটু ধাক্কার কারণে যে মেয়ে এতোটা রেগে যায় তার মনে কোনো দয়া থাকতে পারে না।।
।।
ক্যাম্পাসের বাইরে।।
মিম কিছু ছেলের সাথে দাড়িয়ে আছে দেখতে কেমন যেনো গুন্ডা টাইপের।
মিম তাদের আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে আর কী যেনো বলছে।
মহন: দোস্ত মিম তোর সাথে খারাপ কিছু করতে পারে।
আমি: মানে।
মহন: দেখছিস না মিম কাদের সাথে কথা বলছে।
আমি: হুমমম কিছু লোকের সাথে।
মহন: তারা সব গুলো গুন্ড। ওদের কাজ মানুষকে মারা।
আমি: জানি।
মহন: জানিস মানে।
আমি: পরে বুঝবি।
কিছুক্ষন পরে সেই লোক গুলো আমার সামনে আসলো।
তাদের মাঝ থেকে একজন উঠে বললো।
ছেলেটা: তোমার নাম শান্ত।
আমি: হুমমম কেনো।
ছেলেটা:তোর এতো সাহস দিলো কে যে তুই কমিশনারের মেয়েকে অপমান করিস।
আমি: সাহস যেটা আমার বুকে থাকে। আর শোনো আমি তোমরা এখন চলে যাও তা না হলে তোমাদের অবস্থা ভালো হবে না
ছেলেটা: কী তোর এত বড় সাহস আমাদের হুমকি দিস। তুই জানিস আমি কে।
আমি: নয়ন কে চেনো।
ছেলেটা: নয়ন(অবাক হয়ে) কোন নয়ন।
আমি: তোমাদের বস।
ছেলেটা: তুই আমাদের বস কে চিনলি কী করে।
আমি: তোমাদের বস কে গিয়ে আমার নাম টা বলবে।
ছেলেটা: কেনো
আমি: সেটা তোমাদের বসের থেকে জেনে নিও।
ছেলেটা: বস তোমার কে হয়।
আমি: এতো কিছু বলার মুড আমার নাই। আর তোমার ফোনটা দাও।
ছেলেটা: কেনো।
আমি: দাও তো।
ছেলেটা: হুমমম।
তার থেকে ফোনটা নিয়ে আমার একটা ছবি তুলে তাকে দিয়ে বললাম।
আমি’ আমার পিক টা নয়ন কে দেখাবে। তবেই বুঝতে পারবে।
ছেলে গুলো কিছু না বলে চলে গেলো।
মিম: কি হলো তোমরা তাকে না মেরে চলে াসলে কেনো।
ছেলেটা: কারণ সে আমাদের বস কে চেনে।
মিম: তাতে কী।
ছেলেটা: আমাদের বস কে শুধু কাছের মানুষই চেনে।
মিম: আমি তোমাদের টাকা দিয়েছি ওকে মারা জন্য
ছেলেটা: এই নাও তোমার টাকা। বাই।
ছেলে গুলো চলে গেলো
মিম: শান্ত গুন্ডা গুলোর লিডার কে চিনলো কী করে। সেও কী কোনো গুন্ডা।(মনে মনে)
এদিকে …
মহন: দোস্ত তুই নয়ন ভাইকে চিনলি কী করে।
আমি: নয়ন আমার বন্ধু।
মহন: কী? কিন্তু কী ভাবে।
আমি: সেটা অনেক বড় কাহীনি। তোদের শুনতে হবে না।
মহন: কিন্তু তুই ছেলে গুলোকে চিনলি কী করে।
আমি: নয়নের সাথেই একদিন দেখে ছিলাম।
মহন: ওহহহহ
তারপর আমরা সবাই আড্ডা দিতে লাগলাম।
পরের দিন ক্যাম্পাসে একাই বসে আছি মহন রকি আকাশ তারা কেউ এখনও আসে নী।
হঠাৎ করেই কয়েটা লোক পিছন থেকে আমাকে মারতে থাকে।
আমাকে মাটিতে ফেলে অনেক ক্ষন মারে।
তাদের মার খেয়ে এক সময় আমি ঙ্গান হারিয়ে ফেলে।
যখন আমার ঙ্গান ফেরে তখন আমি নিজেকে হাসপাতালে আবিষ্কার করি।
আমার পাশে মহন রকি আকাশ আর নয়ন বসে আছে।
আমি: আরে নয়ন তুই এখানে।
নয়ন: তোর পিক যখন আমার চেলার কাছে দেখি তখন তুই কথাই সেটা জানতে চাইলে ওরা বলে তুই আমাদের কলেজেই পরিস। কিন্তু ততক্ষনে কলেজ ছুটি হয়ে গেছিলো তাই আশা হয়নি। কিন্তু আজ যখন তোকে দেখতে কলেজে আসি তখনি দেখি কয়েক জন ছেলে তোকে মারছে।
আমি: ওহহহ। তা তুই কী এখন লেখা পরা করিস নাকি বাদ।
নয়ন: আমিও এই কলেজেই পরি। কিন্তু একদিনো কলেজে আসি নাই।
আমি: তাহলে তো খুব ভালোই হলো।
নয়ন: হুমমম।
আসলে নয়নের বাবা একজন রাজনীতিবিদ। তার বাবার অনেক দাপট। নয়ন যদি কাউকে মারে তবে তাকে বলার মতো কেউ নেই। কিন্তু সে এখন আমার বন্ধু।
নয়ন: তোকে ছেলে গুলো মারলো কেনো জানিস।
আমি: সেটা বাদ দে। কাল থেকে কলেজে আসিস সব বুঝতে পারবি।
নয়ন: তুই যখন এখানে তবে তো আসতেই হবে।
আমি: হুমমম।
যখন ছেলে গুলো আমাকে মারে তখনি বুঝতে পারি এরা মিমের ভারা করা লোক।
আমি সেদিনি হাসপাতাল থেকে রিলিজ হয়ে বাসায় চলে আসি।
আব্বু: শান্ত তোমার কী হয়েছে হাত আর কপালে ব্যান্ডেজ কেনো।
আমি: আব্বু হঠাৎ করেই একটা কারের সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে গিয়ে লেগেছে।
আব্বু: দেখে চলতে পারো না।
তারপর শুরু হয়ে গেলে আম্মু ও ভাইয়াদের প্রশ্ন ও ঙ্গান দেওয়া।
সবাইকে কোনো মতো ম্যানেজ করে আমার রুমে চলে আসি।
আমি: মিম এটা তুমি ভালো করো নি। এর ফল তুমি পাবে। তুমি তো আমাকে চেনো না।(মনে মনে)
এখন মিমের ওপর আমার অনেক রাগ হচ্ছে। আমার মাথাই এখন একটাই চিন্তা এর পতিশোধ চাই আমার।।
পরের দিন…..
ক্যাম্পাসে
মিম: এতো মার খাবার পরেও তুই আজ কলেজে এসেছিস।
আমি তো মনে করেছি তুই একমাস আর উঠে দারাতে পারবি না।
আমি:(মুখে শুধু এক চিলতে হাসি)
মিম: ওই তুই হাসছিস কেনো।
আমি:( েখনো হাসি মুখে)
মিম: দেখ আমার কিন্তু রাগ হচ্ছে তোর হাসি দেখে।
আমি এবার মিমের চুল ধরে েকটা লিপ কিছ করি।
আমি: এবার দেখি তুই কতো রাগতে পারিস।
মিম: তোর এতো বড় সাহস তুই সবার সামনে আমাকে কিছ করলি।
আমি: কেনো ভালো লেগেছে নাকি।
মিম: তোর অবস্থা আরো খারাপ হবে মনে রাখিস।
আমি’ ঠিক আছে মনে রাখলাম দেখি তুই কী করতে পারিস।
মিম রেগে চলে গেলো।
মহন: দোস্ত তুই এটা ঠিক করলি না।
আমি: বাদ দে তো।
মহন: হুমমম।
নয়ন: দোস্ত মেয়েটা কেরে।
আমি: এর জন্যই তো কাল আমি হাসপাতালে ছিলাম।
নয়ন: মানে।
আমি: (আগের সব ঘটনা খুলে বললাম) কিছু বুঝলি।
নয়ন: হুমমম। কিন্তু দোস্ত তোর সাথে মানাবে ভালো।
আমি’ পাগল নাকি। এটা কোনো মেয়ে হলো।
নয়ন: তোর মতোই রাগি। তবে তুই রাগ চেক দিতে পারিস ও পারে না।
আমি: সবার থেকে তুই আমাকে আলাদা ভাবে জানিস। তাই তোকে কিছু বলবো না।
মহন: নয়ন ভাইয়া আমরা এতোদিনে শান্তকে ফুল চিনলাম না আর আপনি তাকে চিনে গেলেন।
আমি: ভাইয়া নয় াজ থেকে নয়ন ও তোদের বন্ধু।
মহন: ওকে।
আবার কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে ক্লাসে চলে াসলাম।
কিন্তু মিম এখনও আসে নি।
আমার একটা পরিচয় আছে যেটা মহন রকি আকাশ আর নয়ন ছাড়া কেউ যানে না।
আর একজন আছে সেটা হচ্ছে আমাদের আমিরুল স্যার মানে আমার কাক্কু।
তবে স্যারকে বলে দিয়েছি আমার পরিচয় যেনো কেউ না পাই।
আসলে আমার বাবা একজন বিজনেস ম্যান যাকে এক নামে সবাই চেনে।
সব কিছু এখন বলার সময় নেই।
কিছুক্ষন পরে মিম ক্লাস রুমে প্রবেশ করলো।
তিনটা ক্লাস শেষ।
এমন সময় মিম যে এমন কিছু করবে আমি কখনও ভাবি নাই।

।।
মিম: স্যার আজকে একজন আমাকে বাজে অফার করেছে।(মিমের কথা শুনে আমরা সবাই অবাক। কারণ কারো সাহস নাই মিম কে খারাপ কথা বলার। কিন্তু কে সেই ছেলে)
স্যার: কী?? কে সে।
মিম: স্যার শান্ত(মিমের কথা শুনে আমি হা করে আছি। বলে কী মেয়ে)
স্যার: এখানে শান্ত কে।
মিম: ওই যে শেষ বেন্চে বসে আছে।
স্যার: কেনো ওঠো দেখি(রেগে)
আমি: জ্বী স্যার আমি।
স্যার: তুমি কলেজে কী মেয়েদের সাথে ডেটিং করতে এসেছে।
আমি: না স্যার। আর আমি মিমকে এসব কিছু বলি নাই।
স্যার: তবে কী মিম মিথ্যা বলছে।
আমি: হ্যাঁ স্যার মিম মিথ্যা বলছে।
স্যার: চুপ করো বেয়াদব ছেলে। একটা মেয়ে তার ইজ্জত নিয়ে কখনও মিথ্যা বলে(রেগে)
আমি: না স্যার কিন্তু (পুরটা শেষ না করতে দিয়ে)
স্যার: থাক আর মিথ্যা বলতে হবে না। তুমি আমার সাথে হেড স্যারের রুমে চলে। মা মিম তুমিও চলো।(মিমকে উদ্দেশ্য করে)
সাথে সাথে মিম ন্যাকা কান্না করতে করতে বেড়িয়ে গেলো।
স্যার: কী হলো কথা কানে যায় না(আরো রেগে)
তারপর আমি স্যারের পিছে পিছে হেড স্যারের রুমে গেলাম।
স্যার: স্যার এই বেয়াদব ছেলেটা মিম কে খারাপ অফার করেছে।
হেড স্যার: তোমার মাথা ঠিক আছে রাজিব। কাকে কী বলছো।(হেড স্যার আমাকে ভালো করেই চেনেন)
স্যার: কেনে স্যার আমি এই বেয়াদব ছেলেকে বলছি।
স্যার: যেটা বলেছো সেটা আর দ্বিতীয় বার বলবে না।
স্যার: কিন্তু
হেড স্যার: কোনো কথা নেই তুমি এখন যাও।
স্যার: ঠিক আছে স্যার।
স্যার চলে গেলো।
এতোক্ষন মিম হেড স্যারের কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো।
হেডস্যার: মিম স্যার যেটা বললো সেটা কী ঠিক।
মিম: জ্বী স্যার।(ন্যাকা কান্না)
হেডস্যার: ঠিক আছে আমি দেখছি তুমি যাও।
মিম স্যারের কথা চলে আসলো। াসার সময় মিম আমাকে বলে গেলো
মিম: এবার বুঝবি কেমন লাগে।
আমি শুধু হাসলাম। কিছুই বললাম না।
স্যার: শান্ত তোমার ওপর আমার ফুল বিশ্বাস আছে তুমি এমন কিছু করতে পারো না। কী হয়েছে বলবে।
আমি:(আগের সব ঘটনা স্যার কে বললাম) তার পতিশোধ নিতেই মিম এমন করেছে স্যার।
স্যার: আমি বুঝতে পেরেছি। মিম অনেক রাগি তাই ওকে কেউ কিছু বললে তার ক্ষতি ও করবেই।
আমি: ও তো আগে এমন ছিলো না স্যার।
স্যার: হুমমম। ছিলো না কিন্তু এখন হয়েছে। সেটা তোমার কারণেই।
আমি: আমার কারণে মানে।
স্যার: সেটা তুমি খুব ভালো করেই যানো।
আমি: আপনি
আগের কথা বলতে চাচ্ছেন স্যার।
স্যার: হ্যাঁ।
আমি: ওহহহ
আমার আর মিমের একটা অতিত আছে সেটা পরে বলবো।
স্যার: তুমি তোমার পরিচয় মিমকে দিচ্ছ না কেনো।
আমি: স্যার আমি আগের কথা গুলো এখনও ভূলি নাই।
স্যার: সেটা আর মনে রেখো না।
আমি: দেখা যাবে। ওকে আমি তবে আসি স্যার।
স্যার: ঠিক আছে যাও।
আমি হেড স্যারের রুম থেকে চলে আসি ক্যাম্পাসে।
ক্যাম্পাসে বসে আছি আমি মহন রকি আকাশ আর নয়ন…
নয়ন: দোস্ত মিম তোর নামে এমন করলো কেনো।
আমি: আগের দিনের পতিশোধ নিলো।
নয়ন: হেড স্যার তো তোকে কিছু বলবে না আমি জানি।
আমি: সেটা না জানার কী আছে। তোরা আমাকে যতটা জানিস হেড স্যারও আমাকে ততটাই জানে।
মহন: দোস্ত এখানে আসার পর মিম নামের একটা মেয়ের কথা বলতি যার থেকে তুই পতিশোধ নিতে চাস।
আমি: হুমমম এটাই সেই মিম।
মহন-রকি-নয়ন-আকাশ: কী??
আমি: হুমমম।
রকি: আগে বলিস নাই কেনো।
আমি: ভেবেছিলাম প্রতিশোধ নিয়ে তারপর বলবো।
আকাশ: কিন্তু তুই যে সেদিন মিম কে না চিনে ধাক্কা খেলি।
আমি: না আমি এখানে আসার আগেই মিমের সব খবর জেনে রাখি। আর সেই দিনের ধাক্কাটাও আমি ইচ্ছে করে দেই যাতে মিমের সাথে আমার শত্রুরা হয়।
মহন: তুই তবে আগে থেকেই জানতি মিম খুব রাগি।
আমি: আমার বুদ্ধি হবার পর থেকেই মিমকে জানে।
মহন: তোদের শত্রুতা কী ভাবে শুরু হয়েছে। যে এতোটা কাছে থেকেও আজ তোরা দুরে।
আমি: ভালোবাসার কারণেই মিমের সাথে আমার শত্রুতা শুরু।
নয়ন: কী। শালা তার মানে তুই মিমকে ভালোবাসিস।
আমি: বাসি না বাসতাম।
নয়ন: তবে এতো প্রপোজ পাবার পরেও প্রেম করিস নাই কেনো।
আমি: এমনি এই প্যারা আমার ভালো লাগতো না তাই।
আকাশ: এসব বাদ দে আমরা তোর অতিতটা শুনতে চায়
আমি: 1-5 পযন্ত তো আমার সাথে তোদের সাথে কেটেছে। তবে না জানার কী আছে।
রকি: তোর সম্পকে যানি কিন্তু তোর আর মিমের সম্পকে কিছুই জানি না।
আমি: বলবো তবে কাল। কাল ক্যাম্পাস মাঠে আড্ডা দিতে দিতে বলবো।
সবাই এক সাথে: ওকে
আমি: ওকে চল ক্লাসে যায়।

।।
নায়িকার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। মিম থেকে বর্ষা।
।।
পরের দিন কলেজ ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাথে বসে আছি।

মহন: দোস্ত তোর আর বর্ষার ঘটনা টা এবার বল।
আমি: আমি তুই রকি আকাশ আমরা সবাই এক সাথেই প্রাইমারিতে লেখা পড়া করতাম।
মহন: হুমম করতাম। তো
আমি: আমি শুধু স্কুল এর সময় টুকু তোদের সাথে কাটাতাম
মহন: হুমমম।
আমি: কিন্তু বাকি সময় টা আমার কাটতো বর্ষার সাথে।
মহন: কী।
আমি: হুমম।
আমার আব্বু আর বর্ষার আব্বু যেমন বন্ধু ছিলো আমি আর বর্ষাও তেমন বন্ধু ছিলাম।
সেই সময়টা আমি বর্ষাকে ছাড়া কিছুই বুঝতাম না। বর্ষাও আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝতো না।
আমি আর বর্ষা সব সময় এক সাথে থাকতাম। শুধু ক্লাসের সময় টুকু বাদে। কারণ বর্ষ পড়তো অন্য স্কুলে।
আমাদের দুই পরিবারের সবাই আমাদের দুজনকে খুব ভালোবাসতো। কিন্তু তখন আমার কিনবা বর্ষার কারোরি ভালোবাসা সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিলোনা।
আমার আর বর্ষার কারোরি কোনো বিষয় নিয়ে ঝড়গা হতো না। কারণ দুজনারই পছন্দ ছিলো এক রকম। বর্ষা যেটা পছন্দ করতো আমারো সেটা পছন্দ হতো। আমি সব সময় বর্ষার ইচ্ছে কে বড় করে দেখতাম। নিজে কোনো ইচ্ছে করতাম না।
যদি বর্ষা কখনও অসুস্থ হয়ে থাকতো তবে সবার থেকে বেশি টেনশন আমার হতো। কেনো হতো সেই সময় টাতে বুঝে উঠতে পারতাম না। কারণ ভালো মন্দ বোঝার মতো বুদ্ধি আমাদের কারো রি ছিলো না।
।।
আমাদের দুজনার মিল দেখে সবাই বলতো বড় হলো শান্ত আর বর্ষার বিয়ে দেবো।
কিন্তু বিয়ে কী সেটাও বুঝতাম না।
তাই আমি আর বর্ষা দুজনেই বলতাম
আমরা বিয়ে করবো। সবাই হেসে বলতো
হ্যাঁ বিয়ে দেবো তো তোমরা আগে বড় হও।
কিন্তু আমরা বলতাম না। আমরা এখনি বিয়ে করবো।
আমাদের পাগলামো দেখে সবাই খুব হাসতো। কেনো হাসতো তাও জানতাম না।
।।
এভাবেই কেটে যাই 4 বছর।
এই চার বছরে তোরা হয়তো অনেকটাই পরিবর্তন দেখতিস আমার মাঝে। স্কুলে এসেও আমি কেমন অন্য মনস্ক হয়ে যেতাম।
আসলে আমি সেই সময়টা বর্ষাকে নিয়ে ভাবতাম। যদিও কেনো ভাবি সেটা জানতাম না তবে ভাবতে ভালো লাগতো।
কিন্তু সব ভালো লাগা শেষ হয়ে যায় বর্ষার এক কথাতে।
ঘটনাটা ছিলো p.s.c ফাইনাল পরিক্ষার পরের…
বর্ষার পছন্দের একটা টেডিবিয়ার ছিলো।
যেটা সে হারিয়ে ফেলে।
তখন কিছুটা বোঝতাম আমরা।
কিন্তু সমস্যাটা হয় সেখানেই।
আমারও একটা টেডিবিয়ার ছিলো যেটা দেখতে একদম বর্ষার মতো।
এর আগে আমি কখনও বেড় করতাম না।
কিন্তু বর্ষারটা হাড়িয়ে গেছে শুনে আমি আমার টা দিতেই সেখানে যাই। কিন্তু বর্ষা অন্য কিছু করে বসে।
বর্ষা আমার হাতে টেডিবিয়ার টা দেখে ভাবে ওটা ওর টেডিবিয়ার।
তাই সে সবার সামনে আমাকে বলে।
বর্ষা: ওই দেখো আমার টেডিবিয়ার।
আমি: এটা তোর না। এটা আমার টেডি বিয়ার।
বর্ষা: না। তুই আমারটা চুড়ি করে বলছিস এটা তোর।
আমি: আমি কেনো চুরি করতে যাবো।
আর তাছাড়া আমি কখনও তোর কিছু নেই।
বর্ষা: চুপ কর তুই। তুই চোর। আমার টা চুরি করে বলসিস এটা তোর। দে আমার টেডি দে।
।।
বর্ষা আমার হাত থেকে টেডিটা কেরে নেই।
বর্ষা: তুই আর কখনও আমার বাড়িতে আসবি না।
আমি: কিন্তু বর্ষা
বর্ষা জানি না কী বুঝে আমাকে চর মেরে বসে। সেদিন বর্ষার ওপর আমারো অনেক রাগ হয়েছিলো।
।।
সেদিন আমি বর্ষাদের বাসা থেকে বেড়িয়ে আসি। সেদিনের পর থেকে আমি আর কখনও বর্ষাদের ওখানে যেতাম না।
বর্ষাও আসতো না। কিন্তু কেনো জানি বর্ষার নাম টা মনে হলেও আমার খুব রাগ লাগতো।
।।
তারপর আমি মামাদের এখানে চলে আসি।
আর সেখানেই স্টাডি করি। কিন্তু তবুও আমার রাগ কমতো না।
যখনই সেই ঘটনা মনে হতো তখনই আমার একটা কথাই মনে হতো।
এর প্রতিশোধ চাই।
প্রতিশোধ।
।।
তাই সেখানে লেখাপড়া শেষ করে এখানে চলে আসি।
শুধু প্রতিশোধ নেবার জন্য। আমি চুরি না করতেও আমাকে চোর বলার প্রতিশোধ নেবার জন্য এখানে আসা আমার।

আমার কথা শেষ করে দেখি সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
আমি: কীরে কী হলো তোদের।
রকি: এই ছোট একটা বিষয় নিয়ে তুই এত বড় কিছু ভেবেছিস।
আমি: এটা তোরা ছোটো কিছু ভাবছিস। কিন্তু ওর কারণেই আমি 5 বছর বাইরে ছিলাম।
মহন: ওর কারণে কেনো।
আমি: রাগটা ছিলো বেশি তো তাই
মহন: ওটা তো ও না বুঝে করেছে।
আমি: এবার আমি বুঝে করবো।।
।।
হঠাৎ গেটের দিকে তাকিয়ে দেখি বর্ষা গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে ধুকছে।।

।।
বর্ষাকে কলেজ গেট দিয়ে ঢুকতে দেখলাম।
আমি: তোরা থাক আমি আসছি।
মহন: হুমমম যা।
এবার আমি সেখান থেকে সোজা বর্ষার সামনে।
আমি: বর্ষা
বর্ষা: আবার তুই। কাল তোকে হেডস্যার কিছু বললো না কেনো সেটাই বুঝলাম না।
তাই তোর ওপর আমার অনেক রাগ রয়েছে। আমার সামনে থেকে সর নয়তো খারাপ কিছু হতে পারে।
আমি: সরি
বর্ষা: কেনো(অবাক হয়ে)
আমি: আসলে আমরা তো এক সাথেই পড়ি তাই বললাম অযথা নিজেদের মাঝে রাগ করে লাভ কী। তাই সরি বললাম।
বর্ষা: হ্যাঁ সেটা ঠিক বলেছিস।
(বর্ষা এমনি দোস জারি হোক কেউ যদি তাকে সরি বলে তো সব ঠিক)
আমি: আমরা তো এক সাথেই পড়ি
বর্ষা: তো
আমি: আমরা কী বন্ধু হতে পারি না।
বর্ষা: ওকে আজ থেকে আমরা বন্ধু(হাত বাড়িয়ে)
আমি: থ্যাংক(হাত মিলিয়ে)
বর্ষা: বন্ধুদের মাঝে নো থ্যাংক নো সরি।
আমি: হুমমম।
বর্ষা: চল ক্লাসে যায়
আমি: তুমি যাও। আমি আসছি
বর্ষা: বন্ধুত্বের মাঝে তুমি কীসের। সব সময় তুই ওকে।
আমি: ওকে।
মেয়েটা মনের দিক দিয়ে ভালো। তবে ছেলেদের কাছে খারাপ। কেউ যদি তাকে প্রপোজ করেতো তার 24 টা আর কেউ যদি তার পিছে ঘুরে তার 12 টা বাজিয়ে ছাড়বে। কিন্তু কখনও তাকে কোনো মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করতে দেখা যায় নাই। শুধু ছেলেদের বেলায় এটম বোম।
।।
আমি বর্ষার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসতেই।
হারামি বন্ধু গুলো ঘিরে ধরে।
নয়ন: কীরে তুই বর্ষার সাথে হাত মিলালী কেনো।
আমি: বন্ধুত্ব করলাম।
মহন: কী?? তোর প্রতিশোধ
আমি: সেটা তো এবার নেবো বন্ধু হয়ে। তার আগে আমি ওর ভালো বন্ধু হয়ে তো উঠি।
এর পর থেকে বর্ষার সাথেই আমার বেশি সময় কাটে। বর্ষা যেখানেই যায় আমাকে সাথে করে নিয়ে যায়। সব কাজের আগে আমাকেই ডাকবে। আর বড় কথা হলো এখন আর বর্ষা কাউকে রাগ দেখায় না।
ছোট কালে যেমন ছিলো ঠিক তেমন হয়ে গেছে।
এই কয়েক দিনে মনে হচ্ছে আমি আবার সেই ছোট কালটাতে ফিরে এসেছি। আমার সাথে আছে আমার সেই আগের খেলার সাথি। আমার পাশে আছে আমার সেই প্রিয় মানুষটা যার সাথে আমার সব সময় কেটেছে। আমার পাশে আছে আমার ভালোবাসার মানুষ। যাকে আমি ভালোবাসি ছোট কাল থেকে।
হ্যাঁ আমি বর্ষাকে ছোট কাল থেকেই ভালোবাসি। সেটা আমি মামাদের ওখানে থেকেই বুঝেছি। ওখানে গিয়ে সব থেকে বেশি মনে পড়তো বর্ষাকেই। কারণ একটা মাত্রই খেলার সাথি ছিলো আমার। আর সেই খেলার সাথিটাই হয়ে গেছে আমার ভালোবাসার মানুষ।
সেটা আমি এই কয়েকটা দিনে বেশি বুঝতে পারছি।
জানি না কেনো। আমি যখনই বর্ষার পাশে থাকি তখনই মনে হয় তাকে বলি আমি তোমাকে ভালোবাসি।
কিন্তু কেনো মনে হয় জানি না।
আর আমি তো এতোদিন পরে এসেছি প্রতিশোধ নিতে। তবে আমার এমনটা মনে হয় কেনো।
।।
এখন বর্ষাও আমাকে ছাড়া কিছু বুঝে না।
সব সময় আমাতেই মেতে রয়। সব কিছুতেই যেনো আমার দখল। তবে সেটা ভালোবাসার মানুষ হিসেবে নয় বন্ধু হিসেবে সেটাও আমি বুঝতে পারে।
এমনি এক ছুটির দিনে বর্ষা আমাকে ফোন করে বলে।
বর্ষা: হ্যালো শান্ত
আমি: হুমম বল
বর্ষা: একটু নদির ধারে আসতে পারবি
আমি: কেনো বলতো।
বর্ষা: একজনের কথা মনে পরাতে না আমার খুব একলা লাগছে।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে আসছি।
।।
আচ্ছা বর্ষা কী কাউকে ভালোবাসে।
কাউকে ভালো না বাসলে কারো কথা মনে হওয়াতে তো একা লাগার কথা নয়।
।।
ওকে আগে যায় তারপর দেখা যাবে।
এবার আমি সোজা বর্ষার সামনে।
এখন বিকেল রোদেরও কোনো তাপ নেয়।
এই সময়টা ভালোই লাগছে
আমি: বর্ষা তোর কী হয়েছে বলতো। আমি সেই কখন এসেছি। কিন্তু তুই কোনো কথাই বলছিস না।
বর্ষা: জানিস আজো আমাকে আমার সেই ভূলটা তাড়া করে বেড়ায়।
আমি: ভূল কিসের ভূল।
বর্ষা: শান্ত নামের আমার একটা খেলার সাথি ছিলো। সব সময় আমার সাথেই থাকতো। তবে আমি ছোট বেলায় না বুঝে তাকে অনেক কিছু বলি। তারপর আমার জীবন থেকে আমার বেস্ট ফেন্ড নামক আনন্দটা হারিয়ে গেছে।
আমি: শান্তকে তুই ভালোবাসিস
বর্ষা: হুমমম।
আমি: শান্তোর বাবা মার কাছে থেকেও তো শান্ত সম্পর্কে জানতে পারিস।
বর্ষা: জানার চেষ্টা করেছি কিন্তু শান্ত সবাই কে মানে করে দিয়েছে।
আমি: দেখিস শান্তকে তুই একদিন পাবিই।
বর্ষা: আর পাবো নারে… জানিস আমি এখনও না রাতে ঠিক ভাবে ঘুমাতে পারি না।
ঘুমাতে গেলেই শান্ত স্বপ্নে চলে আসে। কিন্তু সে তার মুখ দেখায় না।
আমি: আরে পাগলি কাঁদিস না। দেখবি সব ঠিক হবে।
বর্ষা: কিছু ঠিক হবে নারে। শান্ত আমাকে কখনও ক্ষমা করবে নারে।(এবার আমাকে কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরে।)
আমি বর্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে শান্তনা দিতে থাকি।।
তবে যখন জানলাম বর্ষা আমাকে ভালোবাসে তখন থেকেই কেনো জেনো প্রতিশোধ নেবার কথাটা মোন থেকে হারিয়ে গেলো। আর ভালোবাসা টা উদয় হলো।

।।
বর্ষা: আমার একটা ছোট ভূলের জন্য যে আমি শান্ত কে হারাবো কখনও ভাবিনী।
আমি: তুই কী কখনও শান্তর মা বাবার কাছ থেকে শান্তর খবর জানতে চাসনি।
বর্ষা: হুমম চেয়েছি। কিন্তু শান্ত মানা করে দিয়েছে। তাই উনারা দেন নাই।
আমি: শান্ত যদি ফিরে এসে তোকে না মানে আর অন্য কাউকে ভালোবেসে ফেলে।
বর্ষা: তবুও আমি শান্তকে আমার করার চেষ্টা করবো।
আমি: শান্ত তবুও যদি না মানে।
বর্ষা: তবে এভাবেই বাকি জীবনটা পার করে দেবো।
আমি: যদি কেও তোকে ভালোবেসে ফেলে তবে।
বর্ষা: তাকে বলে দেবো আমার জীবনে অন্য কেউ আছে।
আমি: যদি সে তোকে নিজের করার চেষ্টা করে তবে।
বর্ষা: পারবে না।
আমি: কেনো
বর্ষা: আমি শান্তর ছাড়া আর কারো নয়।
আমি: ওকে দেখা যাবে
বর্ষা: মানে
আমি: কিছু না। চল বাসায় যাবি।
বর্ষা: হুমম চল।
তারপর বর্ষাকে ওর বাসায় পৌছে দিয়ে আমি আমার বাসায় চলে আসি।
বাসায় আসার পর….
মা: কোথায় ছিলি তুই।
আমি: তোমার বৌমার সাথে।
মা: কে বর্ষা
আমি: হুমম
মা: তুই না বলেছিলি বর্ষাকে তুই বিয়ে করবি না।
আমি: এখনতো মেনে নিয়েছি।
মা: হুমম। জানিস মেয়েটা না তোর যাবার পর আমার কাছে এসে অনেক কাদতো।
আমি: তাই। তা কী বলতো ও
মা: ও বলতো
বর্ষা: মা বলোনা তোমার ছেলে কোথায় আছে। আমি ওর কাছে একবার ক্ষমা চেতে চায়।
আমি: বা ভালো তো। তো বলো নি কেনো।
মা: তুই তো মানা করেছিলি আর বলেছিলি ওকে তোর ঠিকানা দিলে তুই ওখান থেকে চলে যাবি আর আসবি না সেই ভয়ে।
আমি: ভালো করেছে। এখনও যদি আসে তবে সেটাই করবে।
মা: তুই না মেনে নিয়েছিস।
আমি: মা তুমিও না। ওকে তো একটু দেখতে হবে
মা: কী দেখবি
আমি: আমাকে কতোটা ভালোবাসে সেটাই।
মা: তোর যেটা ভালো লাগে কর। তবে মেয়েটাকে আর কষ্ট দিস না।
আমি: হুমমম।
এবার মায়ের কাছে থেকে সোজা আমার রুমে চলে আসি।
এসে ভাবতে থাকি সেই দিন গুলোর কথা।
সেই সময়টা যে সময়টাতে যখন আমি বর্ষার জন্য চকলেট আনতে ভূলে গেলে বর্ষা মূখ গুমরা করে থাকতো আমার সাথে কথা বলতো না।
একদিন যদি ওকে আমি খেলার জন্য না ডাকতাম তবে সে আর আমাকে ডাকতো না।
মুখ গুমরা করে বসে থাকতে। আর কাদতোও খুব।
তবে ওর রাগটাও আমাকেই ভাঙ্গাতে তে হতো।
ওর রাগ ভাঙ্গানোর একটা মাত্র উপায় ছিলো সেটা হলো ওর ফেভারিট চকলেট।
ও সব থেকে বেশি পছন্দ করতো চকলেট।
আমার এখনও মনে আছে
একদিন আমি স্কুল থেকে এসে ওর কাছে যায়। সাথে সাথে বলে
বর্ষা: ওই আমার চকলেট কই
আমি: সরি রে আজ আনতে মনে নেয়।
বর্ষা: তোর সাথে আর। চকলেট না এনে দিলে তোর সাথে আর কথা বলবো না।
।।
তারপর আমাকে আবার গিয়ে আনতে হতো।
আমিও মাঝে মাঝে চকলেট এনে আমার পকেটে রেখে বলতাম আনতে ভূলে গেছি।
আর তাতেই পিচ্ছিটা আমার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিতো।
আবার যখন আমি পকেট থেকে চকলেট বের করে দিতাম তখন ও কতো খুশি হতো তা আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না।
।।
এসব কথা ভাবছিলাম আর মনে মনে হাসছিলাম।।
এবার আমি ঠিক করলাম কাল থেকে ওকে আমি নতুন করে আমার প্রেমে ফেলার চেষ্টা করবো দেখে সে রাজি হয় নাকি।
যদি রাজি হয় তবে তো সে আমারি আর যদি রাজি না হয় তবুও তো সে আমারি।
এটা তো একি বিষয় হলো তাই না।
আমি একাই না হয় দুজন হয়ে ওর সাথে প্রেম করবো।
একজন কে জানবে আর আমাকে বন্ধু ভাববে সে ভাবে।।
তো আমার মনের মধ্যে যেটা চলছে আমি কাল থেকে সেটাই করবো।
আপাতত একটু ঘুমাই কাল থেকে হাতে অনেক কাজ আছে।
আজকের মতো ঘুমিয়ে যায়।
পরের দিন কলেজে আমি বর্ষার সামনে হাজির…

।।
পরের দিন….
কলেজে গিয়ে সোজা বর্ষার সামনে গিয়ে দাড়ায়।
বর্ষা: কীরে এভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো। আর তোর হাতে কী।
আমি: কই কী।
বর্ষা: তো হাত সামনে আন। পিছে কেনো।
আমি: আরে কিছু না।
বর্ষা: হাত সামনে আন বলছি।
আমি: হুমমম
এবার আমার হাত সামনে নিয়ে আসে।
আমার হাতে ছিলো একটা টেডিবিয়ার।
সেই টেডিবিয়ার টা যেটার কারণে বর্ষা আমাকে ছোট বেলায় ভূল বুঝেছিলো।
বর্ষা অবাক হয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
আমি: কীরে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো। নে ধর
বর্ষা: তুই কে
আমি: আরে কী বলিস এগুলো। আমি শান্ত। মাত্র এক রাতে আমাকে ভূলে গেলি।
বর্ষা: তুই শান্ত বুঝলাম। কিন্তু কোন শান্ত সেটা বল।
আমি: পাগল হলি নাকি আমি তোর বন্ধু শান্ত। তোর ভালোবাসার মানুষটা নয়।
বর্ষা: তবে তুই জানলি কী করে এটা আমার পছন্দ।
আমি: ভালোবাসলে অনেক কিছুই জানা যাই।(ছোট করে)
বর্ষা: কী বললি
আমি: বললাম যে বন্ধু হয়ে অনেক কিছুই জানা যাই। এবার কথা বাদ দিয়ে এটা ধর।(টেডিটা আগে বাড়িয়ে)
এবার বর্ষা আমার হাত থেকে টেডিটা নেই।
বর্ষা: আর কিছু বলবি
আমি: হুমমম নে
বর্ষা: চকলেট(অবাক হয়ে)
আমি: হুমমম
বর্ষা: এবার জানলি কী করে যে আমি চকলেট অনেক পছন্দ করতাম।
আমি: করতিস মানে। এখন করিস না।
বর্ষা: না। শান্ত চলে যাবার পর আর কখনও চকলেট খাই নি।
আমি: কেনো নিজের টাকা খরচ হবে বলে।
বর্ষা: ওই আমাকে কী তোর ফইন্নি মনে হয়।
আমি: তা মনে হবে কেনো। আর তা ছাড়া আবার নতুন করে খাওয়া ধর। আজ থেকে প্রতিদিন আমি তোকে চকলেট দেবো।
বর্ষা: আমি তোর দেওয়া কোনো কিছু নেবো না।
আমি: তো শান্তর থেকে নিতিস কোনো।
বর্ষা: তুই জানলি কী করে যে শান্ত আমাকে যা দিতো আমি তাই নিতাম।
আমি: এমনি বললাম(এবার তো আমি শেষ)
বর্ষা: সত্যি করে বল তুই কে।(আমার শাটের কলার ধরে)
আমি: আরে কী করছিস। আমি তোর বন্ধু শান্ত।
বর্ষা: আমার বিশ্বাস হয় না।
আমি: বিশ্বাস না হলে কী করার আছে।
বর্ষা: আমার মনে হচ্ছে তুই আমার হাড়িয়ে যাওয়া শান্ত।
আমি: পাগলি হলি নাকি। আমি তোর বন্ধু শান্ত। ভাবলাম তোকে একটু খুশি রাখতে হবে তাই এগুলো আনা।
বর্ষা: ওহহহ। সরি দোস্ত। আসলে
আমি: থাক আর কিছু বলতে হবে না।
সেদিন টেডি আর চকলেট নিয়ে বর্ষা বাসায় চলে যাই। একটাও ক্লাস করে না।
বর্ষা কেনো বাসায় চলে যায় সেটা আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছি।
রাতে আমি বর্ষাকে ফোন দিয়ে কথা বলি কিছুক্ষণ।
আমি: কীরে বাসায় চলে গেলি কেনো আমাকে না বলে
বর্ষা: এমনি ভালো লাগছিলো না তাই
আমি: কী বলিস আমাকে বলতে পারতি।
বর্ষা: না তেমন কিছু না।
আমি: তবে কিছুটা কী
বর্ষা: আসলে শান্তকে খুব মনে পরছিলো তাই বাসায় চলে আসি।
আমি: সরি রে। আমার জন্য তোর মন খারাপ হয়েছে।
বর্ষা: আরে না ঠিক আছে। আর বন্ধুত্বের মাঝে সরি কীসের হুমম।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে। বাই ভালো থাকবি
বর্ষা: হুমম তুইও।
।। বর্ষার সাথে কিছুক্ষন কথা বলে খেতে চলে আসে।
আমি আব্বু আম্মু ভাইয়া ভাবিদের সাথে খেয়ে আমার রুমে চলে আসি।
আমি আমার রুমে এসেই আমার আরেক ফোন দিয়ে বর্ষাকে ফোন দেই।
যেই নাম্বারটা বর্ষা জানে না।
বর্ষা কে ফোন দেয় কিন্তু ধরে না।
হয়তো অপরিচিত নাম্বার দেখেই ধরেনী।
আমিও কিছুক্ষন ট্রাই করি। এক সময় বর্ষা ফোন ধরে।
আমি: কেমন আছো(কন্ঠটা কিছুটা চেন্জ করে)
বর্ষা: আপনি কে বলছেন আর এতোবার আমাকে ফোন কেনো দিচ্ছেন।
আমি: আমাকে মাত্র 6 বছরের মধ্যে ভূলে গেলে।
বর্ষা: মানে(অবাক হয়ে) কে আপনি
আমি: আমি শান্ত
বর্ষা: শান্ত কোন শান্ত(অবাক)
আমি: নিজের ছোট বেলার খেলার সাথিকেই ভূলে গেছো।
বর্ষা: শান্ত তুই(আমাকে চিনতে পেরে)
আমি: হুমমম তা মনে পরেছে।
বর্ষা: এতোদিন পর আমাকে মনে পরলো তোর।(কেদে কেদে)
আমি: আসলে মনে তো পরেই কিন্তু কী করবো বল রাগটা যে একটু বেশিই ছিলো।
বর্ষা: এখনো রেগে আছিস আমার ওপর।
আমি: না। আর শোনলাম তুই নাকি মায়ের কাছে থেকে আমার এড্রেস নিতে চাস।
বর্ষা: হুমম কিন্তু তুই মানা করাতে আন্টি আমাকে তোর ঠিকানা দেননী।
আমি: তুমি কী আমাকে ভালোবেসে ছেলেছো
বর্ষা: হুমম অনেক।
আমি: আমাকে ভূলে যাও।
বর্ষা: কেনো(অবাক হয়ে কাঁন্না ভেজা কন্ঠে)
আমি: আসলে এখানে এসে আমি একজন কে ভালোবেসে ফেলেছি আর আমি তাকেই বিয়ে করতে চায়।
বর্ষা: ওহহ আচ্ছা ভালো থাকবি।
আমি: বর্ষা শোনো।
বর্ষা: হুমম বলল(কেদে)
আমি: আমি আশা করছি তুমি তোমার কোনো ক্ষতি করবে না। আমার কসম
বর্ষা: হুমম
বলেই বর্ষা ফোন কেটে দেয়।
আজ মনে হয় পাগলিটাকে একটু বেশি কষ্ট দিয়ে ফেললাম। ব্যাপার না সব ঠিক করে নেবো।
পরের দিন কলেজে গিয়ে দেখি বর্ষা কলেজে আসেনী।
বর্ষা না থাকাতে আমারো কলেজে করতে ইচ্ছে করছে না। তাই আমিও বাসায় চলে আসি।।
এভাবেই কেটে যায় 3 টা দিন।
এই তিন দিনে বর্ষা কলেজে আসে না। আর ফোনটাও অফ করে রেখেছে।
এবার বর্ষাকে নিয়ে আমার একটু চিন্তা হয়। কিছু হয়নী আবার।
তাই আমি আজকেই বর্ষার বাসার দিকে রওনা দেই।

।।।
আজ তিন দিন বর্ষা কলেজে না আসার কারণে আমি নিজেই বর্ষার বাসায় চলে যায়।
আমি বর্ষার বাসায় এসে বর্ষার বাসার কলিং বেজ বাজায়।
দরজা খোলে বর্ষার মা।
আন্টি: শান্ত তুমি এই সময়(এর আগেও বর্ষার সাথে এসেছি তাই উনি আমাকে চেনেন)
আমি: জ্বী আন্টি বর্ষা গত তিন দিন ধরে কলেজে যাচ্ছে না তাই দেখতে এলাও। ও ঠিক আছে তো।
আন্টি: জানিনা বাবা ওর কী হয়েছে আজ গত তিন দিন ধরে কিছু খাচ্ছেও না আর বাইরেও বের হচ্ছে না।
।।
এবার বুঝলাম আসল কাহিনী কী।
আমি: আন্টি আমি কী এবার বর্ষার রুমে যেতে পারি।
আন্টি: হুমম বাবা যাও।
বর্ষার বাবা মা সবাই আমাকে বর্ষার বন্ধু হিসেবেই জানেন। তাই বন্ধু হিসেবেই যেতে দিলেন। যদি জানতেন আমিই সেই শান্ত তবে জামাই বরণ করতেন।
।।
এবার আমি সোজা বর্ষার রুমে চলে আসি।
আমি: শোনলাম কেউ নাকি না খেয়ে আছেন।
বর্ষা: আরে শান্ত তুই। তা কখন এলি।(সোয়া থেকে বসে)
আমি: এই মাত্র এলাম। তা নিজের কী হাল করেছিস। কেমন হেরে গেছিস চোখের নিচে কালিও জমিয়ে ফেলেছিস।কী হয়েছে তোর
বর্ষা: কিছু না
আমি: বর্ষা তুই ভালো করেই জানিস তোর মন খারাপ থাকলে সেটা আমি ভালোকরেই বুঝতে পারি। এবার বল কী হয়েছে।
বর্ষা এবার আমাকে জড়িয়ে ধরে কেদে কেদে বলতে থাকে।
বর্ষা: জানিস গত তিন দিন আগে যখন তোর সাথে কথা বললাম তার কিছুক্ষণ পরে আমাকে শান্ত ফোন দেয়।
আমি: আরে এটা তো ভালো কথা তবে তুই কাদছিস কেনো।(আমি তো সবি জানি রে পাগলি)
বর্ষা: শান্ত ফোন করে বলে যে ও নাকি আমাকে ভালোবাসে না। ও অন্য কাউকে ভালোবাসে।
আমি: আমিও তো তোকে ভালোবাসি
বর্ষা: কী
আমি: হ্যাঁ সত্যি বলছি আমি তোকে ভালোবাসি। জানি তুই আমাকে নয় ওই শান্তকে ভালোবাসি। তবুও আজ তোকে বলছি সত্যিই খুব ভালোবাসি তোকে।
বর্ষা: দেখ শান্ত তোর সাথে আমার ভালো বন্ধুত্ব হয় কারণ আমি যখনি তোর সাথে থাকি তখনি মনে হয় আমি আমার হারিয়ে ফেলা শান্তর সাথে আছি। তোর মধ্যেই আমি শান্তকে পাই। কিন্তু কোথায় যেনো শান্তটা হারিয়ে যায়
আমি: আমার মাঝেই যদি তুই শান্তকে পাস তবে আমাকে কেনো শান্ত ভেবে ভালোবাসতে পারবি না।
বর্ষা: দেখ শান্ত তুই আমার ভালোবন্ধু এই কথা বলে আমাকে রাগাবি না। তা না হলে আমাদের বন্ধুত্ব আমি এখানেই শেষ করে দেবো।
আমি: আচ্ছা তোকে কিছুই করা লাগবে না।
বর্ষা অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে নেয়।
আমি: ঠিক আছে ভালো থাকিস বাই।
বর্ষা আর কিছুই বলে না। আমিও বর্ষার বাসা থেকে বেড়িয়ে আছি।
।।
সত্যি বলতে কী আমিও বর্ষাকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি। বর্ষার বাসায় গিয়ে বর্ষার অবস্থা দেখে নিজেই অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি। তাই ওকে আর কষ্ট পেতে দেবো না।
এরপর আমি সোজা বাসায় চলে আসি।
আমি রাতে আবার সেই শান্ত হয়ে বর্ষাকে ফোন দেই।
আমি: কেমন আছো
বর্ষা: হুমমম ভালো। তুমি(ভাঙ্গা গলায়। আবার তুমিও বলছে)
আমি: ভালো না
বর্ষা: কেনো কী হয়েছে তোমার(অস্থির হয়ে)
আমি: তুমি নাকি ৩দিন যাবত কিছু খাচ্ছও না আবার কলেজেও যাচ্ছ না।
বর্ষা: তোমাকে কে বললো
আমি: যাকে ভালোবাসি তার খবর কী আমি খারবো না।
বর্ষা: মানে
আমি: আমি তোমাকে ভালোবাসি
বর্ষা: তবে সেই মেয়েটা।
আমি: সেই মেয়েটাই তুমি। সত্যি বলতে কী আমি তোমার থেকে দুরে এসেই তোমার ভালোবাসা বুঝতে পেরেছি।
বর্ষা: তবে সেদিন আমাকে মিথ্যে কেনো বললে।
আমি: দেখতে চেয়েছিলাম তুমি কী বলো।
বর্ষা: তুমি না অনেক খারাপ। শুধু আমাকে কষ্ট দাও।
আমি: আর কষ্ট দেবো না। এবার যাও আগে খেয়ে আসো। তারপর কথা হবে বাই।
বর্ষা: ঠিক আছে।
সেদিন রাতে বর্ষার সাথে অনেক কথা হয়।।
পরের দিন বর্ষা কলেজে আসে কিন্তু শান্তকে কোথাও খুজে পাই না।
বর্ষার জীবনটা জেনো কেমন হয়ে গেছে কলেজ সময়ে শান্তকে ছাড়া যেনো বর্ষার সময়ই কাটে না।
বর্ষা শান্তে সাড়া কলেজ খুঝে কিন্তু শান্তকে কোথাও পাইনা।
বর্ষা ভেবেছিলো আজ শান্তে তার আর শান্তোর কাল রাতের কথা গুলো বলবে কিন্তু শান্তই তো কলেজে আসছে না।
শান্তকে ফোন দেই কিন্তু শান্তোর ফোনও বন্ধ বলে।
এখন বর্ষার খুব খারাপ লাগছে।
বর্ষা ভাবছে কালকের কথাতে শান্ত এমন করছে নাতো।।
।।
এদিকে আমি গভির ঘুমে ডুবে রয়েছি। কাল অনেক রাত পযন্ত বর্ষার সাথে কথা বলেছি। আর কথা শেষ করে গেম খেলে শেষ রাতে ঘুমিয়েছি। তাই আজ আর কলেজে যেতে পারি নাই। গেমস খেলতে খেলতে ফোনের চার্জও শেষ। ফোন চার্জে না দিয়েই ঘুমিয়ে গেছি।।
।।
তারপর টানা তিন দিন কলেজে যায় না আমি। কোনো কাজ ছিলো না।
শুধু সাড়া রাত বর্ষার সাথে কথা বলা আর গেমস খেলা ছাড়া।
।।
এই দিন দিন বর্ষা কলেজে গিয়ে শান্তকে অনেক খুজেছে এবং ফোনেও ট্রাই করেছে কিন্তু কোথাও পাই নাই।
কারণ রাতে আমি নতুন সিম অন রেখে আগের সিমটা বন্ধ করে রেখে দিয়েছি।
।।
এই তিন দিন বর্ষা আমাকে কোথাও না পেয়ে মন খারাপ করে বসে আসে আর ভাবছে।
বর্ষা: আমি তো শান্তোর বাসাও চিনি না। আর শান্ত বন্ধু গুলো বলছে জানে না।
এখন আমি কী করি।
এখন তো আমি আমার ভালোবাসার মানুষকে পেয়ে আমার ভালো বন্ধুকে হারিয়ে ফেলছি।
এসব কথা ভেবেই বর্ষা মন খারাপ করে বসে আছে।
।।।
আজ বিকেলে আমি আমার আব্বু আম্মু ও ভাবিদের পাটাই বর্ষাদের ওখানে আমাদের বিয়ের কথা বলতে।
বর্ষার আর শান্তোর বিয়ে হবে বলে তো বর্ষা অনেক খুশি।
বর্ষা: মা(আমার মাকে) শান্তোর একটা ছবি দাও না অনেক দিন দেখি না ওকে।
মা: এখন নয় একবারে বিয়ের দিন দেখো।
বর্ষা: হুমমম।
।।
আজ আমার আর বর্ষার বিয়ে। আমি আজ বর্ষাদের েখানে বর সেজে এসেছি আর বর্ষা বউ সেজে তার রুমে বসে আছে।
বিয়ে পরানোর সময় বর্ষা অনেক বার আমার চেহারা দেখতে চেষ্টা করেছে কিন্তু রোমাল মুখের ওপর থাকার কারণে দেখতে পাই না।
।।
শেষ মেষ আমার আর বর্ষার বিয়ে হয়ে যায়।
একদিক দিয়ে বর্ষা অনেক খুশি। অন্য দিক দিকে মনে একটু কষ্টও পেয়েছে।
কারণ তার বেষ্ট ফেন্ড শান্তই তো তার বিয়েতে আসে নি।
বর্ষা এখন মন খারাপ করে বাসর ঘরে বসে আছে। আর শান্তোর আসার অপেক্ষা করছে।
কিছুক্ষণ পর আমি রুমে ঢুকি। মুখে সেই আগের মতোই রোমাল।
আমি রুমে ঢুকেছে সেটা বুঝতে পেরে বর্ষা এসে আমার পা ছুয়ে সালাম করে খাটে গিয় বসে।(আপনারা কী ভাবছেন আমি তাকে ছালাম করতে না দিয়ে বুকে টেনে নিয়ে বলবো তোমার যায়গা ওখানে নয় বুকে। না তা করবো না। তাকে সালাম করতে দেবো। কারণ স্বামির পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেস্ত।)
আমি: তোমার মন খারাপ কেনো।
বর্ষা: আজ আমার বিয়েতে আমার বেস্ট ফেন্ডই আসেনি।
আমি: তোমার বেস্টুই তো তোমাকে বিয়ে করলো।
বর্ষা: মানে
আমি: আমার দিকে তাকাও(মুখ থেকে রোমাল সরিয়ে নিয়ে)
বর্ষা: তুই
আমি: তুই কী কথা স্বামিকে কেউ তুই করে বলে।
বর্ষা: তারমানে তুই দুই শান্ত একাই।
আমি: হুমমম।
বর্ষা: তবে রে।
আমি: থামো থামো থামো। ঝড়গা পরো করো আগে চলো নফল নামাজ আদায় করে নেই।
বর্ষা: হুমমম
তারপর দু রাকাত নফ আদায় করে এসেই বর্ষা ঝাপিয়ে পরে আমার ওপর।
বর্ষা: অনেক কষ্ট দিয়েছো এবার কে বাচাবে
আমি: আমি বাঁচতে চাইলে তো কেউ বাচাবে আমি তো তোমার ভালোবাসায় মরতে চায়।
বর্ষা: মরবা না আরো আয়ু বারবে। আসো কাছে আসো।
আমি: হুমমম আসলাম
বর্ষা: আরো কাছে আসো।
।।