নিল-অইইইইই নিরব(জোরে ডাক দিল)
আমি-কি হইছে বল ডাকলি কেন?
নিল>ক্লাস আছে তো কিছুক্ষন পর ক্লাসে যাবি না।
আমি>ক্লাসেই যাচ্ছিলাম।
নিল>ভালোই চল তবে।
আমি>হুম চল

ক্লাস চলতেছে এইদিকে স্যার পড়াচ্ছিলেন তখন নিল ফিসফিসিয়ে বলতেছে
নিল-ওই আজকে ক্লাসটা কিন্তু নতুন নতুন লাগছে
আমি-কেন রে??
নিল-ওই দিকে দেখ
আমি দেখলাম কিন্তু বুঝতে পারলাম না
আমি-কি ওই দিকে
নিল-আরে ভাই দেখ আজকে একটা নতুন মেয়ে ক্লাসে আসছে কি সুন্দর মেয়েটা উফফফ যদি আমি লাবণ্যর সাথে প্রেম না করতাম তবে এই মেয়েরে পটাইতাম কিন্তু মামা তুই তো প্রেম করতে পারিস

আমক-চুপ কর এখন স্যার কি পড়াচ্ছে তা বুঝতে দে
নিল-আরে ভাই একটা তো প্রেম কর ভাই
আমি-আহা চুপ কর ( কথাটা জোরে বের হয়ে গেল)

তখন স্যার একটা লেকচার দিতেছিল কিন্তু আমি কথাটা বলাতে স্যার মনে করলো আমি তাকে বলছি
স্যার-তন্ময় মহাশয় একটু দাড়াবেন দয়া করে
আমি-জি স্যার বলেন(ভয়ে)
স্যার-মনে হচ্ছে আমি তেমন পড়াতে পাড়ি না তাই আপনি আমাকে চুপ করতে বললেন?
আমি-স্যার আসলে আমি আপনাকে বলি নি
স্যার-চুপ বেয়াদব মুখে মুখে তর্ক করা হচ্ছে। ক্লাসে সবাই শুনেছে কি হয়েছে এখানে। যাও বের হয়ে যাও ক্লাস হতে

কোন উপায় না পেয়ে বের হয়ে আসলাম। এইদিকে প্রচণ্ড রাগ হচ্ছিল নিলটার উপর সব সময় ফাইযলামি করে ও আর মাঝখানে হতে ফেসে যাই
এইসব ভাবতে ভাবতে ক্লাস শেষ হয়ে গেল তখন নিল আসলো
নিল-হাহাহা দোস্ত সরি রে
আমি-সালা একদম হাসবি না তোর জন্য প্রত্যেকবার ফেসে যেতে হয় গত বার তোর জন্যই…..(রেগে)
নিল-হয়েছে থাম থাম।
আমি-সালা কি থামবো,তোর জন্য স্যার আমাকে কি ভাবলো।
নিল-আমার জন্য এইসব হয়েছে আমি ঠিক করে দিচ্ছি।আয় আমার সাথে
আমি-আমি যাবো না (রেগেই)
নিল-আসবি নাকি তোরে মাইর লাগামু

বলেই টানতে টানতে ঐ স্যারের সামনে নিয়ে গেল যে স্যারের সাথে কিছুক্ষন আগে যা ঘটলো

নিল-স্যার কিছু কথা ছিল একটু সময় হবে।
সকালের ঐ মেয়েটা যার কথা নিল বলছিল সে স্যারের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল
স্যার-হুম।কিন্তু এই বেয়াদবটা এইখানে কি করছে?
নিল-সকালের বেপারটা নিয়ে কথা বলার ছিল
স্যার-এখন ওর হয়ে সাফাই গাইতে আসছো
নিল-তেমন কোন কিছু না।কিন্তু স্যার এউ বেপারটা নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে। যদি একটু শুনতেন
স্যার-তোমাদের কোন কথা শুনতে চাই না আমি তোমরা আসতে পারো
নিল-স্যার প্লিজ
স্যার-তো…..(বাকিটা বলতে পারলো না)
মেয়ে-আহা বাবা ওরা কি বলছে একটু শুন না দেখ কি বলছে
স্যার-কিন্তু
মেয়ে-কোন কিন্তু না একবার শুনলে দোস কি।
স্যার-ঠিকাছে কি বলবা বল(নিলের দিকে তাকিয়ে)
নিল-আসলে স্যার সকালে যখন আপনি ক্লাস নিতে ছিলেন তখন আমি তন্ময়কে অনেক জালাতন করতেছিলাম তাই এক পর্যায়ে ও বিরক্ত হয়ে জোরে আমাকে চুপ করতে বলে।কিন্তু আপনি ভেবেছেন আপনাকে বলছে কিন্তু সেটা আসলে আপনাকে বলা হয়নি
স্যার-হাহাহা তাই বল। তাই জন্য ভাবি তন্ময়ের মত ভদ্র ছেলে এমন কেন করলো।পরের বার হতে কথা বললে আসতে আসতে বলবে….মনে থাকে যেন
নিল এবং আমি-জি স্যার
বলে চলে আসতেছিলাম তখন ওই মেয়েটা স্যারের কাছে হতে বিদায় নিয়ে আমাদের সাথে আসতেছিল।
আমি-আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিব।আজকে আপনি না থাকলে স্যার তো কথাই শুনতো না আর ভুল বুঝতো(মেয়েটির দিকে তাকিয়ে)
মেয়ে-আরে কোন ব্যাপার না
আমি-…(মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি মুগ্ধ নয়নে এবং ভাবছিলাম যে কি করে মানুষ এত্তত্তত্ত সুন্দর হয়)
মেয়ে-এএএএএইইই যে মি. কি হল কথা বলছেন না কেন?কি ভাবছেন
আমি-না মানে কিছু না।তা আপনার নামটা কি?
মেয়ে-ইরিন,আপনি
আমি-আমি,তন্ময়
ইরিন-সুন্দর নাম
আমি-ধন্যবাদ,তা স্যার কি আপনার বাবা?
ইরিন-হ্যা,ঠিকাছে আজকে যাওয়া যাক কাল দেখা হবে

বলে ইরিন চলে গেল আমিও বাসায় চলে আসলাম বাসায় এসে ভাবতে লাগলাম এত দিন প্রেম করেনি ভালোই করেছি কিন্তু এখন এই ইরিনের সাথে প্রেম করতে হবে।এও সুন্দর একটা পরিকে সারাজীবন না পেলে আফসোস করতে হবে….😜
পরেরদিন ভার্সিটিতে গেলাম গিয়ে দেখি ইরিন কিছু মেয়েদের সাথে কথা বলছে তাই ভাবলাম একটু ইম্প্রেশ করি গিয়ে।

আমি-হাই সবাই কেমন আছো(ইরিনের দিকে তাকিয়ে)
একটা মেয়ে-ভালো আছে সবাই কিন্তু আপনি এই মেয়েদের মাঝে হঠাৎ আর্বিভাব হলেন কেন?কারনটা কি?
আমি-…….(ইরিনকে দেখেই অন্য জগতে চলে গেলাম তাই ওর দিকে তাকিয়েই আছি)
মেয়েটা-এই যে মি. কি হল চুপ কেন
আমি-…….(ইরিনের দিকে তাকিয়েই)
কোন জবাব দিচ্ছি না তাই মেয়েটা আমাকে একটা চিমটি দিল
আমি-আউচ্চচ্চচ কি কি কি হল?
সব মেয়ে হেসে-কিছু না পিপড়া কামড় দিছে হয়ত?
আমি-ওও
মেয়ে-তা ইরিনের দিকে হা করে তাকিয়ে আছেন কেন?
আমি-আসলে এত সব পেত্নির ভিতরে এই পরির মতো মেয়ে বসে আছে তাই তাকিয়ে ছিলাম।
সব মেয়ে-কি বললেন আপনি?(রেগে)

আমি কিছু না বলে দৌড় দিলাম কারন এখন এখানে থাকলে এই সব মেয়ের গণধোলাই খেতে হবে।দৌড় দেওয়ার সময় একবার পিছনে তাকালাম দেখলাম সব মেয়ে রাগে জলছে কিন্তু ইরিন মুচকি মুচকি হাসতেছে।

দৌড়ে ক্লাসে চলে আসলাম কিছুক্ষন পরে ক্লাস শুরু হবে তাই ইরিন ও মেয়েগুলো ক্লাসে ঢুকলো। মেয়েগুলো আমাকে দেখা মাত্র রাগি লুকে তাকালো মনে হয় চিবিয়ে খাবে

এরপর ক্লাস চলতেছে কিন্তু আমার সেদিকে কোন খেয়াল নেই আমি ইরিন নামক মায়াবতী পরিটার দিকে তাকিয়ে আছি কিন্তু

স্যার-তন্ময়
আমি-….(ইরিনের দিকে তাকিয়ে)
স্যার-তন্ময়
আমি-….(ইরিনের দিকে তাকিয়ে)
স্যার-তন্ময়য়য়(জোরে বললো)
আমি-কি হল এই এই জি স্যার(অপ্রস্তুত ভাবে)
আমার অবস্থা দেখে ক্লাসের সবাই হেসে উঠলো সাথে ইরিনও
স্যার-shut up (জোরে)

সবাই চুপ করে গেল

স্যার-তা কোন জগতে ছিলেন মহাশয় আপানকে সেই তখন হতে ডাকতেছিলাম
আমি- স্যার এই জগতেই তো ছিলাম(ফাইযলামি)
স্যার-চুপ ফাযিল,ক্লাসের সবাই দেখেছে তুমি মেয়েদের দিকে তাকিয়ে ছিলে
get out from my class(হুংকার করে)

আমি কিছু না বলে ক্লাস হতে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি চাপলো তাই ক্লাসে বেরিয়ে যাওয়ার আগে

আমি-স্যার একটা কথা বলার ছিল
স্যার-কি(রেগে)
আমি-আসলে আপনার একটা ভুল হয়ে গেছে
স্যার-কি(ভ্রু কুচকে)
আমি-স্যার তখন যে বললেন আমি মেয়েদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম সেটা আসলে ভুল বলছেন
স্যার-মানে?
আমি-আসলে আমি মেয়েদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম না।আমি ইরিন নামের মেয়েটার দিকে তাকিয়ে ছিলাম

বলেই ক্লাস হতে দৌড়ে চলে আসলাম। চলে আসার সময় ইরিনের দিকে তাকিয়ে দেখলাম ইরিন অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

ক্লাস হতে বের হয়ে এক জায়গায় বসে অপেক্ষা করতে থাকলাম যে কখন ক্লাস শেষ হয়। কিছুক্ষন পর ক্লাস শেষ হল। দেখলাম ইরিন ও মেয়েগুলো একসাথে বের হচ্ছে তাই আমি দেরি না করে ইরিনের সামনে গেলাম

আমি-ইরিন এত পেত্নিদের সাথে ঘুরাফেরা না করে আমার সাথে ঘুরাফেরা করলেই তো হয়
সব মেয়ে-ওই তুমি কি বললা আমাদের(রেগে)
আমি-পেত্নি বলেছি
ইরিন-এই মি. তুমি আমার বান্ধবিদের এটা বললা কেন?(কিছুটা রেগে)
আমি-আমার কাছে তো তুমি বাদে সব মেয়েকে পেত্নির মত লাগছে। গত কালকে তোমাকে দেখার পর তোমার প্রেমে পরে গেছি।
ইরিন-মানে (অবাক হয়ে)

আমি কিছু না বলে ওর হাতের মোবাইলটা কেড়ে নিলাম

ইরিন-কি হচ্ছেটা কি আমার মোবাইল নিলেন কেন মোবাইল দেন বলছি
আমি-এই নাও কাজ হয়ে গেছে
ইরিন-মানে
আমি-তোমার নাম্বারটা নিলাম আর আমার নাম্বারটা সেভ করে দিছি রাতে কথা হবে bye

রাতে কল দিলাম ইরিনকে

ইরিন-হ্যালো কে বলছেন
আমি-এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে
ইরিন-ও আপনি
আমি-হুম আমি
ইরিন-কেন ফোন দিয়েছেন
আমি-কি কর
ইরিন-কিছু না
আমি-রাতে খেয়েছো
ইরিন-জি আর কিছু
আমি- তেমন কিছু না কিন্তু……

ফোনটা কেটে দিল
আমি ভাবলাম এটা কি হল কোন রিয়েকশন নেই,তারপর ওকে আর কল না দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম

পরেরদিন ভার্সিটিতে গিয়ে ইরিনকে খুজতে শুরু করলাম দেখি ও বান্ধবিদের সাথে কথা বলছে
আমি-কি কর
ইরিনের বান্ধবিরা-ও এখন কথা বলছে তুমি আমাদের পাশে বসো গো
আমি ভাবছি আজকে সব মেয়ে রেগে না গিয়ে এমন করছে কেন?কিছু তো একটা প্লেন আছে এখন হতে কেটে পড়ায় ভালো

বান্ধবিরা-কি ভাবছো
আমি-কিছু না,আজকে আমি যাই
বান্দবিরা-এই না না এইখানে থাকো
আমি তো বলেই দৌড়,পিছনে ঘুরে দেখলাম ওর বান্ধবিরা রঙিন বেলুন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,বুঝতে বাকি রইলো না আজকে আমার সাথে কি হত
কিছুটা দূরে গিয়ে

আমি-হা হা হা এত সহজ না আমাকে ফাদে ফেলা

ওর বান্ধবিরা রেগে লাল মরিচ

আমি বলেই ক্লাসে চলে গেলাম,ক্লাস শুরু হলো দেখলাম ইরিন ওর বান্ধবিরা আমার পিছনের বেঞ্চে বসেছে,এটা দেখে ভয় করছিল না জানি আজকে কি হয়

যা ভাবলাম তাই হল স্যার যখন অন্যদিকে তাকাচ্ছে তখন ওর বান্ধবিরা আমাকে কলম দিয়ে খোচা+স্কেল দিয়ে বাড়ি দিচ্ছে
আমার অবস্থা করুন
এক সময় কে যেন জোরে কলমের খোচা দিল

আমি-আউউউউউউউ(জোরে)
স্যার-তন্ময় জোরে আওয়াজ করলে কেন
আমি-স্যার ক্লাসে অনেক মশা কামড় দেওয়াতে..(মিথ্যা)
স্যার-ঠিকাছে বসো আর যেন না হয়

মিথ্যা বললাম কারন ক্লাসের কেউ যদি জানে মেয়েদের হাতে মার খাচ্ছি ইজ্জতের ফালুদা হয়ে যাবে

কিছুক্ষন পর ক্লাস শেষ হল ইরিন ও বান্ধবিরা চলে যাচ্ছে

আমি-এটা কি হল
ওর বান্ধবিরা-কি হল আবার
আমি-এর প্রতিশোধ আমি নিবোই
বান্ধবিরা-দেখা যাবে

এরপর সবাই চলে গেলাম

পরের দিন ভার্সিটিতে

আমি-তোমরা কই যাও গো
বান্ধবিরা-তোমার নানুর বাড়ি
আমি-তাই নাকি আমার নানুকে পছন্দ হইছে নাকি বিয়ে করবা
ইরিন-তোমার এত ভাবতে হবে না
আমি-ওলে লে আমার বাবুতা
ইরিন-একদম নেকামি করবা না(রেগে)
আমি-এটা নাও(গোলাপ এগিয়ে)
ইরিন-আমি নিব না

ওর হাতে দিলাম হাতে দেওয়া মাত্র ছুড়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না

আমি-জানতাম তুমি গোলাপটা ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করবে তাই এতে ঘাম লাগিয়ে রেখেছি
ইরিন-ইইই(রাগে)
আমি-এখন বাবু আমি গেলাম

বলেই চলে আসলাম

এইরকম আরও রোমান্টিক গল্প আমার টাইমলাইনে দেওয়া আছে পড়ে নিতে পারে

এভাবেই আমাদের দিন কেটে যেতে লাগলো এবং আমি ওকে আগের চাইতে বেশি করে ভালোবেসে ফেলেছি
আমার পাগলামিও বেরে যাচ্ছে প্রতিদিন

একদিন ভার্সিটিতে আমি আর নিল বসে আছি। কিছুক্ষন পর দেখলাম ইরিন আর ওর বান্ধবিগুলো আসতেছে

তাই দৌড়ে ওদের সামনে যাচ্ছি কিন্তু ইরিনের সামনে যেতে কিসের সাথে যেন হোচট খেয়ে ইরিনের উপর গিয়ে পড়লাম।ইরিন এবং আমি মাটিতে পড়ে আছি। এইদিকে ঐখানে যারা ছিল সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল।ইরিন খুব ইতস্তত বোধ করতেছিল

তাই আমি তাড়াতাড়ি উঠে পড়লাম

আমি-এই এই এই এই আমি সরি আসলে আমি ইচ্ছা করে করিনি
ইরিন-ঠাসসসসসসসসসস
ইরিনের বান্ধবি গুলো অবাক হয়ে গেল আমি চুপ করে ছিলাম
ইরিন-তোর মতো ছেলেরা মেয়ে দেখলেই গায়ে পড়ে।এত দিন তোর অনেক জালাতন সহ্য করেছি।এত দিন ভাবতাম তুই একটা ভালো ছেলে আর আজকে প্রমান করে দিলি তুই কত নিচ।আমাকে ডিস্টার্ব করবি না আর বলে দিলাম।
আমি-……(চুপ)

কথাগুলো বলে চলে গেল ইরিন আমি দাঁড়িয়ে রইলাম আর সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে

নিল-দোস্ত চল এখান হতে
আমাকে টানতে টানতে অন্য জায়গায় নিয়ে গেল নিল।
নিল-দোস্ত ইরিন এটা ঠিক করে নাই রে তুই তো ইচ্ছে করে তো পড়িস নি এটা ওর বুঝা উচিত ছিল
আমি-….(কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে)
নিল-দোস্ত মেয়েটাকে উচিত শিক্ষা দেয়া দরকার
আমি-না থাক দরকার নেই।
নিল-কেন?যেই মেয়ে তোর সাথে এমন করলো তুই কিচ্ছু বলবি না
আমি-না রে,সব ভুল হয়তো আমারই। বাদ দে আমি যাই এখন রে তুই থাক

বলে চলে আসলাম বাসায়

মা-কিরে এত তাড়াতাড়ি চলে আসলি কেন?
আমি-এমনি ভালো লাগছিল না তাই
মা-কি রে তোকে এমন দেখাচ্ছে কেন?
আমি-কিছু না মা
মা-কিছু তো একটা হয়েছে বল আমাকে বাবা?
আমি- না মা কিছু হয় নি?
মা-ত…..

বাকি কথা না শুনেই আমি চলে আসলাম এসেই নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে দিলাম

তারপর ভাবতে শুরু করলাম
আমি তো ইচ্ছা করে দেই নি তবেও ইরিন আমার সাথে এমনটা কেন করলো।এর জন্য তো ওকে আমি সরি বলছিলাম। এইদিকে ও তো তখন আরও বললো আমি নাকি ওকে ডিস্টার্ব করি। যদি আমাকে ভালোবাসতো তবে এই কথা বলতে পারতো না আর আমাকেও চড় দিত না এত লোকের সামনে। ও হয়তো আমাকে ভালোবাসে না তাই এমনটা করলো।যাই হোক ও যা বলছে তাই করবো ওকে আর ডিস্টার্ব করবো না।এতে ও খুশি থাকলেই আমিও খুশি

এভাবেই সেই দিনটা পার করলাম
পরেরদিন ভার্সিটিতে গেলাম দেখলাম ইরিন ওর বান্ধবিদের সাথে কথা বলছে
তখন আমার গতকালকের কথা মনে পড়ে গেল যে ওকে যেন আমি আর ডির্স্টাব না করি তাই ওকে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম
কিন্তু কিছুদূর যেতে ওর একটা বান্ধবি সবাইকে বলছে আমি শুনতে পেলাম

ইলা-দোস্ত এটা কি হল আজকে তন্ময় আমাদের পাশ কাটিয়ে চলে গেল আর ইরিনের সাথেও কোন কথা বলল না
আরেক বান্ধবি-বুঝলাম না হয়তো গতকালকের ইরিনের ওই ব্যবহারে হয়তো অনেক কষ্ট পাইছে ছেলেটা
ইরিন-আরে রাখ তোদের কষ্ট এমন ছেলেদের কষ্ট জানা আছে,এরা শুধু মেয়েদের কিছুদিন ডির্স্টাব করে শিক্ষা দিলে সব ভুলে গিয়ে অন্যদের পিছে যায়

এই কথা শুনে খুব কষ্ট লাগলো তাই তাড়াতাড়ি ঐখান হতে চলে আসলাম।সেইদিন আর ক্লাস করলাম না

একটা নির্জন জায়গায় গিয়ে ভাবতে শুরু করলাম।মেয়েরা কি এমন হয় ছেলেদের মন বুঝে না

ইরিন কি করে এইসব বলতে পারলো আমাকে।নাহ এটা মেনে নেওয়া যায় না ও আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলেছে ওকে এর জবাব দিব

তখনি ইরিনের বান্ধবি ইলা কোথায় হতে যেন আসলো

আমি-কি ব্যাপার এইখানে আপনি
ইলা-কিছু কথা ছিল তোমার সাথে
আমি-কি বলেন
ইলা-তন্ময় আমি জানি তুমি ইরিনকে খুব ভালোবাসো আর তোমার চোখে তা প্রকাশ পায় কিন্তু ইরিন তা না বুঝেই এসব করে ফেলেছে
আমি-হুম
ইলা-ও যদি বুঝতো তবে এমন করতো না ওর হয়ে আমি সরি বলছি
আমি-ছি ছি কি বলছেন দোষ তো আমারই আপনি সরি বপছেন কেন
ইলা-যাই হোক ইরিনের পিছে আর ঘুরো না ও হয়তো আর তোমাকে ভালবাসবে না
আমি-হুম কিন্তু ওকে একটা জবাব দিতে চাই আপনি কি আমার হেল্প করবেন
ইলা-কিন্তু এটা ঠিক হবে না আপনার জন্য আমার ফ্রেন্ডকে আমি অপমানিত করতে পারবো না
আমি-আরে না ওকে direct কিছু বলবো না শুধু আমার কাজের মাধ্যমে ভালবাসা কি এটা বুঝিয়ে দিব তখন এমনিতেই ও বুঝে যাবে
ইলা-ঠিকাছে দেখি পারি কিনা করতে
আমি-শুনেন তবে…(সব প্লেন বুঝিয়ে দিলাম)
ইলা-এটা করা যায় এতে ও কষ্ট পাবে কিনা জানি না পেতেও পারে কিন্তু এখন আমার বিবেক বলছে আপনাকে হেল্প করতে তাই আমি রাজি
আমি-ও হে আপনি কিন্তু এইসব ওকে বলবেন না।আমাকে সব খবর দিবেন কি হয় না হয়
ইলা-ঠিকাছে
আমি-এখন যাই আমি
ইলা-ঠিকাছে

পরেরদিন ভার্সিটিতে

আমি ও মায়া একসাথে হাত ধরে ঘুরছি।কিছুক্ষন পর দেখলাম ইরিন আর ওর বান্ধবিরা বসে আছে তাই ওর সামনে দিয়ে যাচ্ছি। মায়াটা কে সেটা পরে বলব, এইদিকে ইরিন অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিল,

আমি-মায়া জানো কিছু মানুষ আছে যারা ভালোবাসা বুঝে না,ভালোবাসা কি তাদের কাছে সেইগুলো ডির্স্টাব মনে হয়(ইরিনকে শুনিয়ে শুনিয়ে)
মায়া-এমন মানুষদের ভালোবাসা কোন অধিকারি নাই যারা অন্যকে এইসব বলে
আমি-হ্যা ঠিক বলছো
মায়া-তা এখন চল ওইদিকে যাই

বলে চলে যাচ্ছি তখন ইরিনের দিকে তাকালাম তখন ইরিন রাগে ফুসছে

ইরিন যেখানে বসে ছিল তার কিছু দূরে বসলাম তারপর শুনিয়ে শুনিয়ে আবার বলা শুরু করি

আমি-জানো মায়া কিছু মেয়ে আছে যারা মানুষকে অপমান করতে পারে
মায়া-ঠিক বলছো

এইসব শুনে ইরিন রাগে গজ গজ করতে করতে আমাদের সামনে আসলো

ইরিন-এই এইসব কি হচ্ছে
আমি-কিছু না তো
ইরিন-আমাকে শুনিয়ে শুনিয়ে এইসব বলছো কেন
আমি-আমার মুখ দিয়ে যা ইচ্ছা বলি তাতে আপনার কি আর আপনাকে কি আমরা বলতে গেছি আজব।নিজে মনে করে এখন বক বক করতেছে।আমাদের মত আমরা কথা বলতেছি।আপনি যদি মনে করেন আপনাকে বলছি সেটা আপনার ব্যাপার।

ইরিন এইটা শুনে কিছু বলতে পারলো না।রাগে গজ গজ করতে করতে চলে গেল।
মায়া-বেশি হয়ে যাচ্ছে না
আমি-না এইরকম ভাবে চলতে থাকো

ইরিন চলে যাওয়ার পর
আমি-তা মায়া এখন যাই পরে কথা হবে
মায়া-ঠিকাছে বাই
বলে চলে আসলাম
এভাবে আমাদের দিন কেটে যেতে লাগলো

মায়া আর আমি ইরিনের সামনে এমন করতাম যেন ইরিন রেগে যায়।ইরিন যেখানে থাকতো ওর সামনে দিয়ে হাত ধরে যেতাম,হাসাহাসি করতাম,একসাথে গল্প করতাম,আইসক্রিম,ফুসকা খেতাম।ইরিন সামনে থাকলে একে ওপরকে খাইয়ে দিতাম।

এইসব দেখে ইরিন প্রথম প্রথম খুব রেগে যেতে কিন্তু কিছুদিন যাবত লক্ষ করতেছি মায়ার হাত ধরে ঘুরলে এবং এইসব করলে ইরিন আর রেগে যায় না করুন চোখে চেয়ে থাকে।চোখ দেখলে মনে হয় এখনি কেদে দিবে। এইরকম কেন হচ্ছে আমি নিজেও বুঝতেছি না।এইদিকে আমি ইলার কাছ হতে ওর যাবতীয় খোজ খবর নিতেছি।

কিছুদিন পর ভার্সিটিতে মায়া আর আমি বসে গল্প করতেছি তখন
দেখলাম ইরিন কিছু দূরে বসে ওর বান্ধবিদের সাথে কথা বলছে তাই ভাবলাম আজকে ওকে রাগিয়ে দেই একটু

আমি-এই মায়া এত দূরে বস্র আছো কেন আরো কাছে আসো(ইরিনকে শুনিয়ে শুনিয়ে)
মায়া বুঝতে পেরে-এইটুকু দুরত্ব সহ্য হচ্ছে না

বলেই মায়া কাছে এসে বসলো কিন্তু
হঠাৎ কে যেন আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।তাই আমি পড়ে গেলাম।
তারপর উঠে দেখি ইরিন আমাকে ধাক্কা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর রাগে গজ গজ করতেছে
আমি-কি ব্যাপার এইসব কি ব্যবহার
ইরিন-ঠিক ব্যবহার
আমি-মানে
ইরিন-কিছু না
আমি-আমাকে ধাক্কা দিলেন কেন?
ইরিন-বেশ করেছি ধাক্কা দিয়েছি তুই এই মেয়ের পাশে বসেছিস কেন?
আমি-আমি যার পাশে বসি না কেন তাতে আপনার কি?
ইরিন-এই কিছুদিন আগে তো আমার পিছে ঘুরতি আর পাত্তা দেই নি বলে এখন অন্য মেয়ে?বাহ বাহ
আমি-হাহা পাত্তা নাকি অপমান করছেন?
ইরিন-…….(চুপ)
আমি-মায়া চল এইখান হতে চল অন্যদিকে গিয়ে বসি?
ইরিন-এই তন্ময় প্লিজ যেও না কিছু কথা আছে প্লিজ প্লিজ(কান্না করে দিয়ে)
আমি-আমার কোন কথা নেই আপনার সাথে?

মায়ার হাত ধরে চলে আসলাম কিন্তু ইরিন আমাকে ডাকতেছে কিন্তু তাতে কান দিলাম না
এবং মায়ার কাছ হতে বিদায় নিয়স বাসায় চলে আসলাম

বাসায় শুয়ে আছি তখনি ইলার ফোন
.
ইলা-কি মি. কি করছেন
আমি-কিছু না,তা কি মনে করে
ইলা-আসলে তোমাকে কিছু information দেওয়া দরকার ছিল
আমি-কি
ইলা-ইরিন তোমাকে হয়তো ভালোবেসে ফেলেছে।কারন আজকে তুমি যা করলে তারপর ও অনেক কেদেছে আর আমাকে বলছে তন্ময় ছাড়া নাকি ওর লাইফ একদম শুন্য।
আমি-হুম এটাই তো চেয়েছিলাম
ইলা-বেশি কষ্ট দিও না মেয়েটাকে পারলে কাছে টেনে নিও
আমি-ঠিকাছে

এরপর ফোন কেটে দিলাম, ভাবতে শুরু করলাম ইরিনকে আর কিছুদিন কষ্ট দিতে হবে

পরের দিন ভার্সিটিতে বসে আছি
আমি আর মায়া,
হঠাৎ করে ইরিন আসলো

ইরিন-এই তন্ময় এইদিকে আসো তো
আমি-যেতে পারবো না
ইরিন-তোমাকে আসতে বলেছি(রেগে)
আমি-যাব না বলছি না
ইরিন-ওই মেয়ে তুই তন্ময়ের পাশে বসে আছিস কেন?যা এইখান হতে(মায়াকে উদ্দেশ করে)
আমি-ও যাবে না এইখানে থাকবে

শুনে ইরিন চলে গেল তাই আমরা গল্প করতেছি

কিছুক্ষন পর আমার পিঠে কি যেন এসে পড়লো হাত দিয়ে দেখলাম ভিজে ভিজে লাগছে

আমি-মায়া দেখতো কি পড়েছে
মায়া-পিছে ঘুরে তাকালেই বুঝবে
আমি-মানে

পিছনে তাকালাম দেখলাম ইরিনের হাতে সেই দিনের মত আজকে রঙিন বেলুন।বুঝতে বাকি রইলো না কি পড়েছে আমার পিঠে

আমি-এই ইরিন এটা কি করলা
ইরিন-বেশ করেছি আবার যদি কোন মেয়ের সাথে কথা বা লুতুপুতু করো তবে এর চেয়ে বেশি শাস্তি পাবে বলে দিলাম(মুচকি মুচকি হাশতেছে)
আমি-এখন আমি ক্লাস করবো কেমনে মায়া(মায়াকে উদ্দেশ্য করে)
মায়া-বাসায় যাওয়া ছাড়া উপায় দেখছি না আজকে বাসা চলে যাও
ইরিন-ওই তুই আবার মেয়েদের সাথে কথা বলতেছিস,তাও আমার সামনে দাড়া তুই ঐখানে(রেগে)

বলেই তেড়ে আসতেছে

এটা দেখে আমি তো দৌড় কারন ওখানে থাকলে আমাকে খুন হতে হত

আমি দৌড়াচ্ছি আমার পিছে ইরিন দৌড়াচ্ছে কিন্তু আমার সাথে দৌড়ে না পেরে হাপিয়ে গেল

ইরিন-আজকে বেচে গেলা। কাল তোমার খবর আছে

তারপর বাসায় চলে আসলাম

বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে শুয়ে আছি আর ভাবছি কাল যে কি হয় আমার সাথে আল্লাহ ভালো জানে

পরেরদিন ভার্সিটিতে গেলাম
আমি আর নিল একসাথে বসে আছি তখন ইরিন আসলো
ইরিন-এই এইদিকে আসো তোমার সাথে কথা আছে
আমি-যেতে পারবো না আর আপনার কোন কথা শুনতে পারবো না এবংকি আমি বাধ্য নই
ইরিন-কি তুই যাবি না(রেগে)
আমি-না
বলা মাত্র ইরিন আমার কলারটা ধরে টানতে লাগলো
আমি-এই এই কি করছেন আপনি সবাই দেখছে
ইরিন-দেখুক আমার হবু জামাইয়ের কলার আমি ধরছি তাতে কার কি?
আমি-মানে
ইরিন-…….(চুপ)
আমি-ভালো হচ্ছে না কিন্তু ছাড়েন বলছি
কিন্তু ইরিন আমার কোন কথায় কান না দিয়ে টানতে টানতে পুকুর পারে নিয়ে আসলো

আমি-এইসব কি হল আপনি এমন করছেন কেন?
ইরিন-আগে বলো গতকালকে তোমাকে বললাম মেয়েদের সাথে কথা বললে কেন?
আমি-আমার ইচ্ছা বলেছি

ইরিন শুনা মাত্র চড় মারতে হাত তুললো কিন্তু মারলো না এইদিকে চোখ বন্ধ করে আমি তো চড় খাওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছি

ইরিন-না তোমাকে আজকে মারবো না।আগে প্রেম করি তারপর মজা বুঝাবো
আমি-প্রেম করবো না আপনার সাথে

বলে ক্লাসে চলে আসলাম
ক্লাসে বসে আছি

ইরিন-এই ওইদিকে চাপ আমি বসবো
আমি-এইখানে বসা যাবে না অন্য বেঞ্চে বসেন
ইরিন-আমি এইখানেই বসবো
আমি-না বসা যাবে না
তখনি স্যার আসলো ক্লাসে
স্যার সবাইকে বসতে বলল তাই সবাই বসে গেল কিন্তু
স্যার-কি ব্যাপার ইরিন তুমি দাঁড়িয়ে আছো কেন
ইরিন-দেখেন তো স্যার আমি এইখানে বসতে চাচ্ছি এই তন্ময় বসতে দিচ্ছে না
স্যার-কি ব্যাপার তন্ময় ওকে বসতে দাও

তারপর আর কি স্যারের কথা শুনে ওকে বসতে দিলাম
এইদিকে ক্লাস চলতেছে কিন্তু ইরিন আমার দিকে তাকিয়ে আছে
তাই আমি

আমি-কি ব্যাপ এমন করে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন কেন?
ইরিন-প্রেমে পড়ে গেছি তাই
আমি-স্যার দেখলে সমস্যা আছে সামনে তাকান বলছি
ইরিন-তাকাবো না।আমার চোখ দিয়ে যাকে খুশি তার দিকে তাকাবো তাতে স্যারের কি।চুপ করে থাকো নয় স্যার কথা বলতে দেখলে তোমাকে বের করে দিবে

তারপর কি আর করার আমি আমার মতো স্যার কি পড়াচ্ছে সেই দিকে তাকিয়ে আছি কিন্তু ইরিন আমার দিকেই তাকিয়ে আছে

কিছুক্ষন পর আমার হাতের উপর কিসের যেন স্পর্শ পেলাম

তাকিয়ে দেখি ইরিন আমার হাত ধরে রেখেছে

আমি-এইসব কি হচ্ছে হাত ধরেছেন কেন?
ইরিন-আমার future baby র বাবার হাত ধরেছি তাতে তোমার কি?
আমি-কি সব উল্টো পাল্টা বলছেন
ইরিন-আমি ঠিক বলছি,চুপচাপ থাকো নয় কিন্তু স্যারকে বলে দিব তুমি আমাকে ডির্স্টাব করতেছো

ইরিন যেভাবে বলল তাতে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম,কারন এই মেয়ে যেকোন সময় কাজ করে দিতে পারে তাই চুপচাপ করে বসে রইলাম।

কিছুক্ষন পর স্যার কিছু একটা বোর্ডে লিখতেছে ক্লাসের সবাই যে যার মতো খাতা নোট করে নিতে ব্যস্ত

হঠাৎ করে ইরিন আমার ক্লাসে তার গোলাপের পাপড়ির মতো ঠোট দুটো দিয়ে আমার গালে উম্মম্মম্মম্মাহ দিল

এটা দেওয়ার পর আমি তো সেই লেভের ৪৪০ ভোল্টের শক খেলাম

কারন এইটাই প্রথম কোন মেয়ে আমাকে টাচ করলো
এইদিকে আমি কিছু বলতে পারছি না মনে হচ্ছে অন্য এক জগতে চলে গেছি
ইরিন তো উম্মম্মাহ টা দিয়ে মাথা নিচু করে দিয়ে মুচকি মুচকি হাসতেছে
তারপর নিজেকে কোন মতে সামলে নিলাম

আমি-এইটা কি হল
ইরিন-কেন কি হয়েছে গো(ফাযলামি করে)
আমি-একদম ফাযলামি করবেন না
তখনি ঘন্টা বেজে উঠলো সবাই যে যার মতো চলে যাচ্ছে
ইরিন ও চলে যাচ্ছে তখন

ইরিন-সেইদিন যে তোমাকে রাগের মাথায় চড় মেরেছিলাম এটা সেটার জন্য
আমি-মানে
ইরিন-কিছু না হাদারাম
বলে একটা ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে চলে গেল
আমি তার বাসায় চলে আসলাম

এভাবেই আমাদের দিন চলতে থাকলো
আমি ইরিনকে খুব অবহেলা করি কারন ও বুঝতে যেন পারে যে অবহেলা, অপমান কি জিনিস
কিন্তু ওকে অবহেলা করলেও ও প্রতিদিন আমার খোজ খবর নিত।পাগলামি করতো আমাত কেয়ার নিত।এতে আমার খুব ভালো লাগতো কিন্তু ওকে বুঝতে দিতাম না।আসলে ওকে বুঝানোর চেষ্টা করতাম মানুষের সাথে ওমন করলে কেমন লাগে অপর মানুষটার

কিছুদিন পর একদিন ভার্সিটিতে আমি ইলার সাথে কথা বলতেছিলাম
তখন তা ইরিনের চোখে পড়লো তাই সে আমার কাছে এসে
ইরিন-এইসব কি হচ্ছেটা কি?
আমি-দেখছেন না কি হচ্ছে
ইরিন-তোমাকে না আমি না করছি এই মেয়ের সাথে কথা না বলতে
আমি-যান তো এইখান হতে আমি যা ইচ্ছে তা করবো তাতে আপনার কি
ইরিন কিছু না বলে আমার কলার ধরে টানতে শুরু করলো

এতে আমার খুব রাগ উঠে গেল তাই
আমি ওর হাতটা টান দিয়ে ওকে একটা ধাক্কা দিলাম

আমি-কি হচ্ছেটা কি?আমাকে কি পেয়েছেনটা কি?যখন খুশি যা করবেন আমার সাথে আমি তাই মেনে নিব অনেক হয়েছে অনেক আর না(রেগে)
ইরিন-……….(চুপ)
আমি-এত বেশি বুঝেন কেন?আপনি যখন আমাকে অপমান করছেন সেই দিন হতে আপনারর প্রতি আমার কোন ভালবাসা নেই।যখন দেখেছেন আমি আপনাকে পাত্তা দেই না সেই দিন হতে আমার পিছে লেগেছেন।এখন আপনাকে আমার একদম সহ্য হয় না।আপনাকে আমি ভালোবাসি না।এই মেয়েকে ভালোবাসি বুঝছেন।এইরকম নেকামি আমার সাথে আর করবেন না(রেগে)
ইরিন-…….(চুপ)

বলেই ইলাকে নিয়ে আমি চলে আসতেছি
তখনি

ইরিন-ঠিকাছে তুমি যেহেতু আমাকে সহ্য করতে পারো না।আর কোন দিন ভালোবাসার দাবি নিয়ে তোমার সামনে আসবো না।তুমি ওই মেয়ের সাথে খুশি থাকলেই আমি অনেক happy থাকবো।কিন্তু জেনে রেখো আমি তোমার জন্য সারা জীবন অপেক্ষা করবো।এবং তোমাকে ভালোবাসবো।(কান্না করতে করতে)

কথাগুলো শুনলাম কিন্তু কিছু না বলেই চলে আসলাম

সেইদিন আর ক্লাস করলাম না।কারন ইরিনের কান্না দেখে খুব খারাপ লাগলো সেই দিন বাসায় চলে আসলাম।

বাসায় এসে ভাবতে শুরু করলাম মেয়েটাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি আর কষ্ট দেওয়া যাবে না

খুব তাড়াতাড়ি ওকে আমার ভালবাসা বাহুডোরে আবদ্ধ করতে হবে।কিন্তু তার আগে এইরকম করে ওকে কিছু কষ্ট দেই তবে ভালোবাসা আরো গভীর হবে

পরের দিন ভার্সিটিতে গেলাম ইরিনকে খুজতে লাগলাম কিন্তু পরে জানতে পারলাম ও আজকে ভার্সিটিতে আসে নি

এভাবেই ৩ দিন গেল কিন্তু ইরিন ভার্সিটিতে আসেনি।

৩দিন পর দেখলাম ইরিন ভার্সিটিতে এসেছে।লক্ষ্য করলাম মেয়েটার চোখ লাল হয়ে আছে এবং চোখের নিচে কালো দাগ পরে গেছে
এটা দেখে খুব খারাপ লাগলো

এভাবে আরও কয়েকদিন কেটে গেল এর মাঝে ইরিন আমার সাথে কথা বলে নি।আমাকে দেখলে করুন চোখে চেয়ে থাকতো।ওর চোখ দেখে বুঝতে পারতাম ও চাচ্ছে এখনি যেন ওর কাছে ছুটে গিয়ে ওকে ভালোবাসি কথাটা বলি

কিন্তু আমি ওকে আমার ভালোবাসার কথা বলছিলাম না

কিছুদিন পর ভার্সিটির ক্লাস শেষে ইলার সাথে কথা বলছিলাম

তখন দেখলাম ইরিন আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছে।পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় লক্ষ্য করলাম ইরিনের চোখ দিয়ে টুপ করে দুই ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো।

এটা দেখে বুকের ভিতরে দুমরে মুচরে যাচ্ছিল।ভাবলাম অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি মেয়েটাকে।আজকেই ওকে কাছে টেনে নেই

তাই দেরি না করে দৌড়ে ইরিনের পিছন হতে ওর একটা হাত ধরে আটকে ফেললাম

ইরিন অন্যদিক মুখ করে তাকিয়ে আছে

আমি-এই মেম শুনেন

ইরিন আমার কন্ঠ বুঝতে পেরে

ইরিন-আমার হাত ধরেছেন কেন?হাত ছাড়েন বলছি
আমি-হাত তো ছাড়ার জন্য ধরিনি।

আমার দিকে ঘুরালাম,দেখি চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।একদম পিচ্চি মেয়েদের মত করে কান্না করতেছে

ইরিন-মানে(কান্না করতে করতে)
আমি-যা শুনেছেন ঠিক শুনেছেন
ইরিন-………..(চুপ)
আমি-সেইদিন যে বলেছিলাম আমি ইলাকে ভালোবাসি সব মিথ্যা ছিল।আসলে আপনি যেদিন আমাকে চড় মেরেছিলেন সে দিন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।আর নিজের ভালবাসার মানুষের কাছ হতে এমন ধরনের কষ্ট পেলে কেমন লাগে তা আপনাকে বুঝাতে এইসব প্লেন করেছিলাম।কিন্তু সত্যি বলতে আমি আপনাকে খুব ভালবাসি আর কাউকে না
ইরিন-……..(চুপ)
আমি-কি হল কিছু তো বলেন
ইরিন-ঠাসসসসসসসসসসসস(আমাকে চড় মারলো)
আমি-…….(চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি)
ইরিন ও চুপ করে দাড়িয়ে আছে

আমি মন খারাপ করে চলে যাচ্ছিলাম
কিন্তু তখনি ইরিন আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়লো এবং আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করলো
ইরিন-এখন আমাকে একা রেখে কোথায় যাচ্ছ
আমি-মানে?
ইরিন-হারামি আমি তোমাকে খুব ভালবাসি
আমি-তবে চড় মারলেন কেন
ইরিন-তুমি যখন ওই মেয়ের সাথে কথা বলতা,ঘুরাঘুরি করতা আমার খুব খারাপ লাগতো।সেইদিন যখন বললা তুমি ওকেই ভালোবাসো তখন খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।আর তোমাকে চড় মেরেছি বেশ করেছি আমাকে এত দিন কষ্ট দেওয়ার জন্য চড় মেরেছি।ভবিষ্যৎতে আরও মারবো যদি আমার সাথে বাদে অন্য মেয়ের কথা চিন্তাও করলে
আমি-ঠিকাছে ঠিকাছে আর এমন করবো না এবং কোন মেয়ের চিন্তাও মাথায় আনবো না।কিন্তু
ইরিন-কিন্তু কি
আমি-চড়টা মারাতে খুব ব্যাথা পেলাম তো(একটু বাচ্চাদের মত করে)
ইরিন তখন কানের কাছে ফিসফিস করে বলছে
ইরিন-পরে আদর করে সব পুশিয়ে দিব নি
আমি-তাই নাকি
.