আমি নাজমুল হক (জীবন)।মাস্টার্স শেষ করে চাকরি করছি।মাত্র দুইমাস হলো।
আজ আমার বিয়ে। বিয়ে করার কোনো ইচ্ছাই নেই।কিন্তু আব্বু আম্মু আর পিচ্ছি বোনের প্যারায় প্যারিত হয়ে বিয়ে করতে হচ্ছে।এইতো গত পরশুদিনের ঘটনা।সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি ১১টা বেঁজে গেছে।মেজাজ তো সেই লেভেল এ গরম হয়ে গেলো।অনেক কাঠ খরি পুড়িয়ে একটা ভালো চাকরি জোগাড় করেছি।মাত্র মাত্র হলো জয়েন করার।তাতেই যদি অফিস কামাই করি তাহলে কি আমাকে চাকরিতে রাখবে।আল্লাহ্ উডায় লও আমারে।আর পিচ্ছি ফাজিল বোনটাও ডাকে নি আমাকে।ধুর।
আমি: এই জান্নাত।(আমার বোনের নাম।ইন্টার পরীক্ষা দিবে এবার।কিন্তু এক নাম্বারের ফাঁকিবাজ। ক্লাস করে না তাই বাসায় থাকে।)কোথায় তুই পেত্নি??
সাথে সাথে হাজির কিছু না বলেই চুল ছিড়তে থাকলো।আমিই ওকে ঝাড়ি মারার জন্য ডাকলাম কিন্তু এখন ওরই রাগ ভাঙ্গাতে হবে।
আমি: এই পেত্নি করছিসটা কি।আমার চুলগুলো কি রাখবি না কি সব ছিড়ে ফেলবি..??
জান্নাত: কি বললি শয়তান ছেলে।আজকে আমি তোর সব চুল ছিড়বো।(রেগে গেলে তুই করে বলবে।)
আমি: ওহ সরি আমার বড় আপু।এবার ছাড় প্লিজ খুব ব্যাথা পাচ্ছি।
জান্নাত: আরো বলবি আমাকে পেত্নি..??
আমি: না তুমি তো আমার পরী আপু।জানো আপু তোমার জন্য ভাবি আনতেছি..??(মন ভালো করার জন্য মিথ্যা বললাম।)
জান্নাত: কিইই সত্তিইই।
আমি: হুম।
জান্নাত: ইয়াহু আমি ভাবি পাবো।আম্ম……
তার আগেই মুখ চেপে ধরেছি।যদি আম্মুকে বলে তো আজই বিয়ে দিয়ে দিবে।
আমি: প্লিজ আম্মুকে এখন বলিস না।এখন না বললে তোর জন্য গিফ্ট আনবো।
জান্নাত: সত্তি তো..?
আমি: হুম।
ওর সাথে কথা বাদ দিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাস্তার টেবিলে গিয়ে বসলাম।
আমি: আম্মু ও আম্মু কই তুমি..??
আম্মু: কি হলো এভাবে গরুর মতো চিল্লাচ্ছিস কেন..??
আমি: তুমি আমাকে আজকে ডাকো নি কেন সকালে..??
আম্মু: বিয়ে করে বউ আন তাহলে তোর বউ ডেকে দিবে।আমরা আর পারবো না।
আমি: আম্মু কি শুরু করলে এসব? কিছু খেতে দাও।
আম্মু: খাবার নাই।
আমি: মানে..??
আম্মু: রান্না হয় নি।তোর বউ আন তাহলে তারাতাড়ি রান্না হবে।
আমি কিছু না বলে চুপচাপ থাকলাম।আম্মু আরো কিছু মুল্যবান বক্তব্য দিয়ে চলে গেলেন।তারপর জান্নাতকে বললাম,,,
আমি: এই আপুরে ও আমার সোনা আপু প্লিজ কোনো খাবার আন রে।পেটে ইঁদুর দৌড়াচ্ছে।
জান্নাত: আচ্ছা ওয়েট।,,,, আম্মু ও আম্মু তোমার ছেলে বিয়ে করবে এখনই আমাকে বললো।
আমি: কি বললি পেত্নি দাড়া।
গিয়ে চুল টেনে দিলাম দৌড়।একদম বাসার বাইরে চলে আসলাম।কারন বাসায় থাকলে আমার চুল আস্ত থাকতো না।
সারাদিন ঘুরাঘুরির পর একেবারে রাতে বাসায় আসলাম।কলিং বেল বাজার সাথে সাথেই আম্মু বেশ খুশি মনে দরজা খুলে দিলো।বাসায় প্রবেশ করার পর,,,,
আব্বু: এই যে, আমার গুনধর ছেলে।কালকে অফিসে গিয়ে তিন দিনের ছুটি নিবেন।
আমি: কেন..??
আব্বু: তোমার নানুর বাসা যাবো।
আমি: ওকে।
আমার নানুর বাসা গ্রামে।তাই আমি যেতে খুব ভালোবাসি।তাই হ্যাঁ বলে দিলাম।
কিন্তু এরা যে আমাকে কুরবানি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছে সেটা মাত্র জানলাম।গাড়িতে বসে জান্নাত এর কাছ থেকে।মেয়ের নাম না কি (লিমা আক্তার লাকি) দেখতে কেমন জানি না। আপনাদের সাথে গল্প করতে করতে আমার বিয়েই হয়ে গেলো।বাসায় চলে আসলাম।আর মনের মাঝে হাজারো চিন্তু ঘুরতে থাকলো।বউ আমার কেমন হবে।সে কি আমাকে মেনে নেবে।আরে দুর আমই তো ওকে মেনে নেবো না।বাসার ছাদের উপড় দাড়িয়ে ভাবছিলাম।তখন ছোট প্যারা সরি বোন এসে কান টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে।
জান্নাত: রুমে বউ রেখে এখানে দাড়িয়ে থাকা হুম.??
আমি: উহু তুই কি একটুও শান্তি দিবি না আমাকে।
জান্নাত: চুপ বক বক করবি না।
ধুর এমন ভাবে বলছে যেন আমার বড় বোন।
অবশেষে বন্ধু বান্ধব প্যারা সবার জুরা জুড়িতে রুমের মধ্যে প্রবেশ করলাম।
দরজা লক করে দিলো বাহির থেকেই।আমি ভিতরেও লক করলাম।করার পর।
আমি: এহেম এহেম।আসসালামু আলাইকুম।
বউ: ওয়ালাইকুম সালাম।
আমি: আপনাকে আমার কিছু বলার ছিলো।
উঠে এসে ঠাসসসসস,,
লিমা: কি বলবি তুই হ্যাঁ।বলবি সরি।আপনাকে আমি বিয়ে করতে চাইনি ব্লা ব্লা।একটা কথা ভালো করে শুনে রাখ।তোকে বিয়ে করেছি আব্বু আম্মুর জন্য।তাই শ্বামির অধিকার ফলাতে আসবি না।
আমি: (বাপরে বাপ।কি চড়টাই না মারলো।আমি ভাবি একটা।কিন্তু হয়ে যাচ্ছে উল্টোটা ধুর।)মনে মনে।

লিমা: কি বলবি তুই হ্যাঁ।বলবি সরি।আপনাকে আমি বিয়ে করতে চাইনি ব্লা ব্লা।একটা কথা ভালো করে শুনে রাখ।তোকে বিয়ে করেছি আব্বু আম্মুর জন্য।তাই স্বামীর অধিকার ফলাতে আসবি না।
আমি: (বাপরে বাপ।কি চড়টাই না মারলো।আমি ভাবি একটা।কিন্তু হয়ে যাচ্ছে উল্টোটা ধুর।)মনে মনে।
আরে বাহ্ ভালোই তো।মনে মনে তো এরকমই বউ চেয়েছিলাম।দেখতে সুন্দর।মায়াবী চোখে কি মায়া যে গোধুলি আবীর মাখা।
লিমা: কি রে মনে মনে কি ভাবছিস..??
আমি: ক,ক, কই কিছু নাতো।
লিমা: ভালো, এখন আমি ঘুমাবো।
আমি: কিন্তু আজকে তো আমাদের বাসর রাত তাই না।
লিমা: তো কি করবো।দেখ আমি কিন্তু তোকে আগেই বলেছি যে স্বামীর অধিকার ফলাতে আসবি না।
আমি: কিন্তু তা তো হতে দিচ্ছি না।আজকে যেহেতু বাসর রাত।তাই বাসর তো করবোই আমি।
আমি আস্তে আস্তে ওর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।আর ও পেছনে যেতে থাকলো।
লিমা: দেখ ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
আমি: সেটা জানি না।
লিমা: আমি কিন্তু চিল্লাবো।
আমি: হাহা আমাদের ছাদের উপড় জ্বীন আছে।হুম।
লিমা: না না চিল্লাবো না।কিন্তু প্লিজ আমার কাছে আসবেন না।
তবুও যাচ্ছি এক সময় লিমা দেওয়ালের সাথে ধাঁক্কা খেলো।আর আমি ওকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলাম।ধরে ওকে যখনই কিচ করতে যাবো ঠিক তখনই।
ঠাসসসসসসসসস।
লিমা: কি ভেবেছিসটা কি হ্যাঁ।এতোক্ষণ ভালোয় ভালোয় বলছিলাম শুনলিনা তো।হুহ।
আমাকে ধাক্কা দিয়ে বাথরুমে গিয়ে।পোষাক চেঞ্জ করলো। আমি তো দেখে ডাবল ক্রাশ খাচ্ছি।ভাবতেই পারছি না যে আমার অমতে বিয়ে হলো কিন্তু তবুও মনের মত বউ পেলাম।বাহ্ আম্মু আর ছোট বোনটাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়।লিমার ভাবনায় ডুবে গেছি।কিন্তু হঠাৎ খাট থেকে পড়ে গেলাম।
আমি: আহ্।
লিমা মিটিমিটি হাসছে বুঝতে বাকি ও এই কাজ করেছে।
আমি: এসব কি করছো হ্যাঁ।পিচ্ছি একটা মেয়ে হয়ে তোমার বড় একজন ছেলের গায়ে হাত তুলছো।লজ্জা করে না।
লিমা: ওই একদম পিচ্ছি বলবেন।আমি মাস্টার্স শেষ করেছি।
ওরে বাচ।তাহলে তো আমার সমবয়সী। কিন্তু মেয়ে তো দেখতে পিচ্ছির মতো।
আমি: পিচ্ছি তো মনে হবেই।খাটো, ট্যাবলেট কোথাকার।আস্তে আস্তে বললাম।
লিমা: কি বললেন আপনি।আমি ট্যাবলেট।
আমি: আরে দুর।তুমি কেন ট্যাবলেট হতে যাবে।তুমি তো আমার মিষ্টি বউ।
লিমা: এইসব পাম মারা বন্ধ কর।
আমি: পাম মারলাম কখন..??
আমার দিকে একটা বালিশ ছুড়ে।
লিমা: এই নে বালিশ।আর সোফায় গিয়ে ঘুমাবি।
আমি: মানে আমার রুম।বিছানা আমার সবই আমার একদিন এসেই সব দখল।
লিমা: তোর হাতের বালিশটা দে।
আমি: কেন..??
লিমা: ওটাও এখন আমার দখলে আসবে যদি আরেকবার তর্ক করিস।
কি জ্বালায় পড়লাম রে বাবা।এমনি অমতে বিয়ে তারউপর প্যারা।কি করবো।ঘুমিয়ে পড় জীবন।তোরও একদিন সময় আসবে।জাস্ট অপেক্ষা কর।
ঘুমানোর চেষ্টা করতেছি।কিন্তু পারছি না।শুধু মনে মনে ভাবছি যখন লিমাকে খুব কাছে থেকে দেখলাম তখন কি মায়াবি মনে হয়েছিলো।কিন্তু ওর কাজ পুরোটাই উল্টো।কিন্তু এত মায়াবী একটা মেয়ের সাথে বিয়ে হবে আমার ভাবতেই অবাক লাগছে।
কিন্তু মন ভেঙ্গে গুড়ো গুড়ো হচ্ছে তখনই যখন ভাবছি বউ তো হেব্বি রাগী।যাইহোক কষ্ট করে হলেও মেনে নিতে হবে।
সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর দেখছি লিমা বিছানায় নেই।কোথায় গেল..??
বাথরুমেও নাই।তখনই দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করল মিঃ রাগী।
আমি: এত সকাল সকাল কোথায় গিয়েছিলে..?আমি তো চিন্তায় পড়ে তেছিলাম।
লিমা: আমার জন্য অত চিন্তা করতে হবে না।মা তোকে ডাকতেছে।
আমি: আচ্ছা আমি তো তোমার স্বামী।কিন্তু তুমি আমাকে তুই করে বলতেছো। এ্যাটলিস্ট তুমি না বলে আপনি করেও তো বলতে পারো।
লিমা: আচ্ছা ঠিক আছে।এখন যান।
ফ্রেশ হয়ে লিমাকে সাথে নিয়ে নিচে গেলাম।জান্নাত কি যেন হাতে নিয়ে দেখতেছে।
আমি: কি রে জান্নাত কি দেখতেছিস ওভাবে..??
জান্নাত: আমার বিয়ের কার্ড।
আমি: ওয়াও সত্তি বলছিস..??
জান্নাত: হুম।
আমি: ইয়াহু।অন্তত তোর হাত থেকে মনে হয় বেঁচে গেলাম।
জান্নাত: ভাইয়া আমি কি সত্তিই তোমাকে জ্বালাই..??(কেঁদে কেঁদে)
আমি: আরে কি বলিস এসব আর কাঁদছিস কেন।আমি তো মজা করলাম।
জান্নাত: আমি বুঝেছি ভাইয়া।আমার বিয়ে হলে তুমি খুশিই হবে।আর এগুলো কি জানো..? এগুলো তোমার হানিমুন যাওয়াার প্লেনের টিকেট।তোর অফিস থেকে সকালে দিয়ে গেছে।
আমার মুখের উপর টিকেটগুলো ছুড়ে ফেলে দিয়ে দৌড়ে রুমের দরজা দুম করে লাগিয়ে দিলো।
আম্মুু: এটা ঠিক করলি না।যা ওকে নিয়ে আয়।
যাই এখন বোনের রাগ ভাঙ্গাই।

জান্নাত এর রুমের দরজা খোলাই আছে।আস্তে আস্তে দরজা ঠেলে ঢুকলাম।দেখি আমার বোন গাল ফুলিয়ে বসে আছে।আমাকে দেখে একটু নড়ে চড়ে বসলো।
জান্নাত: তুই কেন আমার রুমে বের হ।বের হ বলছি।
আমি: আরে পাগলি রাগ করছিস কেন.? আমি তো তোর সাথে মজা করি।আচ্ছা শোন আমরা মানে তোর ভাবি আর আমি যখন হানিমুন থেকে ফিরে আসবো তখন তোর জন্য এতগুলা টেডি নিয়ে আসবো।
(জান্নাত টেডি খুব পছন্দ করে।)
জান্নাত: সত্তি তো..??
আমি: হুম সত্তি, সত্তি।এবার চল সবাই মিলে এক সাথে খেয়ে নেই।
সবাই মিলে খাচ্ছি।লিমার সামনেই বসলাম।খাচ্ছি আর মাঝে মাঝে পায় সুরসুরি দিচ্ছি।আর মনে মনে হাসছি।যদি লিমার লুকটা এই সময় ক্যামেরা বন্দি করতে পারতাম নিজেকে ধন্য মনে হত।বাট সেটা পারবো না।
তখনই আব্বু বললো,,,
আব্বু: জীবন।
আমি: হুম আব্বু।
আব্বু: আচ্ছা তুমি কি বউমা কে তার পরিবার বা তার সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করেছো..?
আমি: কই না তো কে.??
আব্বু: ও হচ্ছে তোমার অফিসের মালিকের মেয়ে।
আমি হতবাক।এই তো সেই মেয়ে।যে কিনা ঢং করে প্রতিদিনই অফিসে আসতো কি বিশ্রি পোষাক পরে ছিঁছিঁ। শেষ পর্যন্ত একটা ঢংগির সাথে বিয়ে হলো।
আমি: ওহ্ তাই তো বলি।অফিস থেকে প্লেনের টিকেট কেন দিয়ে যাবে।যে খবিশ মালিক।
লিমাকে রাগানোর জন্য বললাম।আব্বুও রেগে গেছে।তাই তাড়াতাড়ি খেয়ে রুমে এসে কাপড় গোছাতে লাগলাম।কারন আজকে তো লিমাদের বাসায় যেতে হবে।ওদের খাওয়ার ব্যাবস্থা অন্য কোথাও করেছে আব্বু।আমি ওই সব বিষয়ের উপর ইন্টারেস্টিং নই।তখনই লিমার আগমন।দুম করে দরজা লাগিয়ে কোমরে শাড়ি বাধতেছে।আমার তো হার্ট বের হয়ে আসতেছে।কোনো কথা বলে কিল, ঘুসি, মারতে থাকলো।আমি লিমাকে ধরে।
আমি: আরে আজব তো মেরে ফেলবে না কি।
লিমা: তোকে মেরেই ফেলবো।
আমি: আমি করেছিটা কি শুনি।
লিমা: এখন ন্যাকামি হচ্ছে তাই না।এই তো সাসহ কম না।তুই আবার আমাকে টাচ করেছিস।
তারপর দুটো চকলেট দিয়ে গেলো।ঠাস ঠাস করে খেলাম।কি আজব মার খাওয়ার জন্য ওকে ধরলাম আবার উল্টোবুঝে আরো খাইলাম।
লিমা ব্যালকনিতে গিয়ে আছে।হাল্কা বাতাসে ওর চুলগুলো উড়তেছে।ইচ্ছে করছে আলতো করে চুলে হাত বুলিয়ে দেই।কপালে আলতো চুুমু দিয়ে বলি ভালোবাসি।কিন্তু সেটা পারছি না।কারন ও তো এখন আমাকে সহ্যই করতে পারছে না।এক কাজ করি কফি তো শেয়ার করা যায়।
তাই জান্নাতকে কিছু ঘুষ দিয়ে দুটো কফি বানিয়ে নিলাম।আসলে জান্নাত অকর্মার ঢেকি হলেও কফিটা কিন্তু দাড়ুন বানায়।
আমি কফি নিয়ে লিমার পাশে দাড়ালাম।কফির মগটা এগিয়ে দিলাম।ও হাতে নিলো।নেওয়ার পর চুমুক দিতেই,,,
লিমা: ওয়াক থু।এসব কফি খাস তোরা ছিঁ ছিঁ।ছোটলোক কোথাকার।
এই বলে ও আমার দিকে কফির মগ ছুড়ে মারে।আমি হাত দিয়ে আটকাই যার ফলে গরম কফি হাতে পড়ে।আর সামান্য ফোসকা পড়ে যায়।কফির মগটা ফ্লোরে পড়ে যাওয়ার ফলে শব্দ হয় তখন দেখি জান্নাত ধরজায় নক করতেছে।তাই কোনো উপায় না পেয়ে আমার কফির মগটা লিমার হাতে দিলাম।আর অনেক রিকুয়েষ্ট করলাম অন্তত হাতে যেন ধরে থাকে,,,,,
জান্নাত: কিহলো ভাইয়া।তোমার রুমে কিসের শব্দ..?
আমি: আসলে আমার হাতে থেকে কফির মগ পড়ে যায়।আর হাতে কিছুটা ফোসকা পড়ে গেছে।
জান্নাত: কিইইই দেখি কই।
আমার হাত দেখে জান্নাত কেঁদে ফেলে।কারন ভালোভাবেই বড় বড় মাফের ফোসকা পড়ছে।খুব জ্বলছে।
জান্নাত: এই তোর সামান্য..?আর ভাবি কোথায়.?ভাবিইই ভাবিইই..?
আমি: ওকে ডাকার কি দরকার।আচ্ছা তুই আমাকে এখানে কিছু ওষুধ লাগিয়ে দে।
লিমা জান্নাতের ডাকে এসে পরেছে।আর এমন ভাব শুরু করলো যাতে উনি একেবারে আমার সুইট বউ, স্বামীর কোনো কষ্ট দেখলে উনি ঠিক থাকতে পারে না।যাই হোক অভিনয় হলেও তো একটু সেবাযত্ন পেলাম।তাতেই হবে।

লিমা জান্নাতের ডাকে এসে পরেছে।আর এমন ভাব শুরু করলো যাতে উনি একেবারে আমার সুইট বউ, স্বামীর কোনো কষ্ট দেখলে উনি ঠিক থাকতে পারে না।যাই হোক অভিনয় হলেও তো একটু সেবাযত্ন পেলাম।
জান্নাত রুম থেকে চলে যাওয়ার পর শুয়ে আছি।আর লিমা ওর কাপড় গোছাচ্ছে।ওদের বাসায় যাবে কিছুক্ষণপর।কিন্তু আমি তো যেতে পারবো না।পোড়া হাত নিয়ে ওখানে গেলে সমস্যা হবে।কারন ডান হাত পুড়ে গেছে কিছু খেতে পারবো না।লিমার কাপড় গোছানো শেষ হলে ও বাথরুমে যায় ফ্রেশ হতে।
তখন আম্মু রুমের দরজায় এসে ডাকে, দরজা খোলার পর রেডিও সেন্টার এর মতো বক বক শুরু।আমিও চুপ হয়ে আছি আমি জানি কিছুক্ষণ পর নিজে থেকেই স্টপ হয়ে যাবে।আম্মু থামার পর,,,,
আমি: আম্মু পানি এনে দেই।
আম্মু: তারমানে তোকে এতক্ষন ধরে যা বোঝালাম কিচ্ছু মাথায় ঢুকে নি..?
আমি: না মানে হ্যাঁ ঢুকেছে তো।
আম্মু: ওহ্ আচ্ছা শয়তান দাড়া,,,,
পিঠে কয়েকটা কিল ঘুসি মেরে খাওয়ার জন্য ডাকলো।খাওয়ার টেবিলে গেলাম।কিছুক্ষণ পর জান্নাত লিমাকে নিয়ে আসলো।
কিন্তু আমি তো খেতে পারবো না।
জান্নাত: আচ্ছা ভাইয়া।তোমি তো খেতে পারবা না।
আমি: তুই আছিস না।আমাকে খাইয়ে দিবি।
জান্নাত: হু আমি পারবো না।এখন তো আমার একটা কিউট ভাবি আছে।সেই ভাবিটাই তোকে খাইয়ে দেবে।
লিমা জান্নাত এর এ রকম কথা শুনে লজ্জায় রেগে গাল মুখ লাল করে ফেলেছে।আমার অবস্থা যে করবে আল্লাহ্ই জানে।
জান্নাত এর অনেক জুড়াজুড়িতে খাইয়ে দিতে রাজি হলো।আমারও বেশ লজ্জাবোধ হচ্ছে।কারন নতুন বউয়ের হাতে আম্মু আর বোনের সামনে খাচ্ছি।অবশ্য খুশিও লাগতেছে।
লিমা: আউউউউ,,
ওহ শিট।আপনাদের সাথে কথা বলতে গিয়ে আঙুলে কামর দিয়ে ফেলেছি।
আমি: সরি সরি।আসলে খেয়াল করি নাই।
লিমা রাগি লুক নিয়ে তাকালো।সামনে আম্মু আছে তাই ছোট্ট করে বললো ঠিক আছে।
জান্নাত দেখি মুচকি মুচকি হাসতেছে।
আমি: কি রে হাসিস কেন..??
জান্নাত: না এমনি।
আমি: ভালো।
আম্মু: আচ্ছা জীবন তুই কি যাবি লিমার সাথে..??
আমি: এই অবস্থায় কি ভাবে যাবো।তুমি একটু ম্যানেজ করো আম্মু।
আম্মু: আচ্ছা দেখছি।কিন্তু যদি ওরা না মানে??
আমি: তাহলে যাবো সমস্যা নেই।
আম্মু: আচ্ছা ঠিক আছে।
খাওয়া দাওয়া সেরে রুমে আসলাম।লিমার এখনও খাওয়া হয় নি।কারন ও আমাকে খাইয়ে এখন খাচ্ছে।
আমার যেসব যাবতীয় জিনিস দরকারর সেগুলো গুছিয়ে রাখলাম।আমি জানি আমাকে যেতেই হবে লিমাদের বাসায়।
বিছানায় শুয়ে আছি।লিমা আসলো।এসেই আমার টি-শার্ট এর কলার ধরে।
লিমা: বল হারামজাদা আমাকে তখন তুই ইচ্ছা করেই কামড়ে দিয়েছিস।
আমি: কিহ্ আমি তো মাংস ভেবে কামড় দিয়েছিলাম।
লিমা: ওহ আচ্ছা।মাংস তাই না।আচ্ছা একটু নিচু হও তো।
আমি: কেন.?
লিমা: যেটা বললাম সেটা করো না।
যেই নিচু হলাম, আর অমনি গালে দিয়েছে এক কামড়।
আমি: আহহহহহহহহহহহহহ
লিমা মুখ চেপে ধরে।
লিমা: চুপ।একদম চিল্লাবি তো গলায় কাঁমড়ে দিয়ে সব রক্ত চুষে খাবো।
আমি: 😮😮😮😮😮😮
লিমা: ওই হা করে কি দেখিস।মুখ বন্ধ কর।
জান্নাত বাইরে থেকে বললো লিমাদের বাসা থেকে লোক আসছে।খাওয়া শেষ করে এখানে আসছে নিয়ে যাওয়র জন্য।কোনো এক হোস্টেল এ আয়োজন করছিলো আব্বু।লিমা তো শুনে লাফাতে লাফাতে দৌড়।
ওনাদের কথা আমাকে এখান থেকে না নিয়ে যাবে না ওরা।বাধ্য হয়ে গেলাম।
গাড়ি চলতেছে আপন গতিতে।আর আমি আমার বউয়ের ভাবনায় মগ্ন।মেয়টা দেখতে একটা পিচ্ছির মতো।সবার সাথে কি সুন্দর করে কথা বলে কিন্তু আমার কাছে খিট খিটে মেজাজ নিয়ে আসে বুঝতে পারি না।আচ্ছা ওর কি বয়ফ্রেন্ড ছিলো।যার কারনে আমাকে দেখতে পারে না।ওকে তো জিজ্ঞেস করা হয় নি।আজকে জিজ্ঞেস করবো।আছেই তো।
লিমাদের বাসায় পৌছানোর পর।শশুড় মসাই দেখে তো খুব খুশি।সালাম দিলাম।
আমি: আসসালামু আলাইকুম স্যার।
লিমার বাবা: ওয়ালাইকুম সালাম। আরে ইয়াং ম্যান স্যার কেন বাবা বলো বাবা।(আসলে খুবই মিশুক।কিন্তু কাজে সামান্য ভুল হলে ওনার মেজাজ ঠিক থাকে না।উনি নিজেই আমার ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন চাকরিতে জয়েন করার সময়।সেই তখন থেকেই ইয়াং ম্যান বলে ডাকে।)
আমি: না মানে স্যার সরি বাবা।
বাবা: গুড।তোমার হাতে কি হলো..??
আমি: না মানে গরম কফি পড়ে সামান্য একটু ফোসকা পড়েছে আরকি।
বাবা: খুব খারাপ।এত কেয়ারলেস হলে চলবে।আমার মেয়েকে সামলাবে কি করে।
আমি: (যে ডাইনি একটা মেয়ে আমার ঘাড়ে ঝুলিয়ে দিছেন।আবার আদিক্ষেতা দেখরে বাচিই না। হুহ।)আপনার মেয়েই তো আমাকে দেখে আর আমি কি দেখবো ওকে।
বাবা: দেখতে হবে না।মেয়েটা কার হাহাহাহ।
আমি: (ধুর দাঁত ক্যালান ভালো করে।আপনি যেমন খবিশ আপনার মেয়েও একটা খাটাশ)
বাবা: হেই ইয়াং ম্যান সরি জামাই তুমি কি কিছু বললে..??
আমি: আরে না কই।
৫ থেকে ৬ বছর হবে একটা ছোট মেয়ে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে দুলাভাই বললো।
আমি: ছোট আপু তুমি কি লিমার ছোট বোন…?
পিচ্ছি: হুম।কেন আপনি জানেন না বুঝি।
আমি: হ্যাঁ জানি তো।তোমার নাম কী..??
পিচ্ছি: আমার নাম লামিয়া আক্তার জুঁই।সবাই আমাকে জুঁই বলে ডাকে।
আমি: বাহ্ সুন্দর নাম।তো তোমার আপু কোথায়..??
জুঁই: আপু তো রুমে আছে।আসুন নিয়ে যাই।
জুই ওর ছোট হাত দিয়ে আমার একটা আঙুল ধরে উপরে নিয়ে গেলো।ওইখানে ওর বান্ধুবিরা মিলে গল্প করছিলো।
আমাকে দেখে তো লিমা রেগে আগুন।

জুই ওর ছোট হাত দিয়ে আমার একটা আঙুল ধরে উপরে নিয়ে গেলো।ওইখানে লিমা ওর বান্ধুবিরা মিলে গল্প করছিলো।
আমাকে দেখে তো লিমা রেগে আগুন।
লিমার বান্ধবীরা: ওয়াও লিমা তোর হাসবেন্ড তো খুবই কিউট রে।আর তুই ওনাকে গালাগাল দিচ্ছিস।
লিমা: 😡😠😡😠
বান্ধবীরা: একটু পরিচয় করিয়ে দে না রে।
লিমা: তোদের ইচ্ছা হলে নিজেরাই পরিচিত হ।আমার এত ঢং ভালো লাগে না।
এরপর সবাই এক এক করে পরিচয় দিচ্ছে আর হ্যান্ডসেক করতেছে।আর অন্যদিকে লিমার মনে হয় জ্বলতেছে।আমিও বেশ মজাই পাচ্ছি লিমাকে রাগাতে।
লিমা: থামবি তোরা.? বের হ বলছি রুম থেকে বের হ।😠😠😠
ওর বান্ধবীরা সবাই চলে গেলো।আমি সোফায় বসে বসে হাসছিলাম।
লিমা: ওই তুই আবার বেহায়ার মতো হাসছিস কেন..??
জুঁই: ছিঁ আপু।এসব কেউ বলে।দেখ না দুলাভাই কত্ত কিউট।তুমি না থাকলে তো আমিই লাইন মারতাম।
এই বলে জুঁই আমার কোলে এসে বসলো তারপর খোঁচা খোঁচা দাড়িগুলো ধরার চেষ্টা করতেছে।কিন্তু পারতেছে না।
লিমা: পিচ্ছি মেয়ে।তোর যে কয়টা দাঁত গজিয়েছে সেগুলো ভেঙ্গে দেবো আজ।ছোট মুখে বড় কথা।
জুঁইকে যখনই মারতে যাবে তখনই আমি ওকে বাঁচিয়ে নেই।
আমি: আচ্ছা লিমা।আমি তোমার সাথে কিছু কথা বলতে চাই।সামান্য কিছু প্রশ্ন।
লিমা: How funny,, আমার কাছে প্রশ্ন।ওকে বল বল তারাতাড়ি বল।
আমি: আমার সাথে এ রকম ব্যাবহার করো কেন..??
লিমা: তোকে আমার পছন্দ নয়।
আমি: তোমার কি বয়ফ্রেন্ড ছিলো..??
লিমা: হুম সিওর।
আমি: তাহলে আমাকে কেন বিয়ে করলে।
লিমা: সেটা আগেই বলে দিয়েছি।
আমি: এটা আমার প্রশ্নের উত্তর নয়।
লিমা: আব্বু জোর করে বিয়ে দিছে।
আমি: তাহলে তোমার বয়ফ্রেন্ড এর সাথে পালালে না কেন..??
লিমা: সুজোগটা পাই নি।
আমি: কিন্তু তোমার আব্বু আম্মুকে বলো নাই কেন..?
লিমা: বলেছিলাম।ওকে পছন্দ করে নি কেউ।
আমি: কেন..??
লিমা: জানি না।আমাকে এত প্রশ্ন করবি না তো।
আমি: ওকে ফাইন।এখন আমার কাছে কি চাও..??
লিমা: সময়ই বলে দেবে কি চাই।
আমি: তখন হয়তো আমার সামর্থটা নাও থাকতে পারে।
লিমা: সামর্থ না থাকলেও দিতে হবে।
লিমা রুম থেকে বের হয়ে গেলো।সাথে আমার মনটাও খারাপ হয়ে গেলো।অন্যরা প্রেম করে ছ্যাঁকা খায় আর আমি বিয়ে করে ছ্যাঁকা খাওয়ার রাস্তায় ঘুরঘুর করছি।
আমি: আচ্ছা জুঁই.??
জুঁই: হুম ভাইয়া।
আমি: আচ্ছা তুমি কি তোমার আপুর সাথে কোনো ছেলেকে দেখেছো..?
জুঁই: তুমি কি রোহান এর কথা বলতেছো.?
আমি: রোহান কে আপু..??
জুঁই: ওইতো আপুকে ভালোবাসে।এ্যাঁ ওয়াক থু।কি বিশ্রি গন্ধ ওর গায়ে।
আমি: তুমি কিভাবে জানলে..??
জুঁই: আমাকে নিয়ে একদিন আপু রেস্টুরেন্ট এ গেছিলো।তাতে রোহান আমাকে কোলে নিয়েছিলো।আমি তো বমি করে দিছি।
আমি: হাহাহা গুড।
লিমার কাজিনরা আসলো।এবং একটা ভাবিও আসলো সবাই মিলে অনেক আড্ডা দিলাম।রাত হয়ে গেছে।অবশ্য আমার হাতে কি হয়েছে সেটা সবাই জিজ্ঞেস করেছিলো আমি বলেছি যে কফি পরছে তাই সামান্য একটু ফোসকা পরছে।
লিমা: চলো নিচে চলো সবাই।খেতে ডাকতেছে আম্মু।
সবাই নিচে আসলাম।আমি লিমার আম্মুকে বললাম,,,
আমি: আম্মু আসলে আমি আমার হাত তো পুরে গেছে।আর চামচ দিয়েও খাওয়ার অভ্যাস নাই।
আম্মু: হুম বুঝেছি বাবা আর বলা লাগবে না।,
,,,,লিমা
লিমা: হ্যাঁ আম্মু বলো কি বলবা…
আম্মু: জাবাই বাবাকে উপরে নিয়ে গিয়ে খাওয়ায় দে।ওর তো হাতে ক্ষত।
লিমা: পারবো না।
আম্মু: মেজাজটা গরম করিস না বাসায় আত্মিয় আছে।
লিমা: হুহ্ যাচ্ছি।জামাই এর জন্য দরদ উতলিয়ে পরছে।
আম্মু: মেজাজটা গরম করিস না বাসায় আত্মিয় আছে।
লিমা: হুহ্ যাচ্ছি।জামাই এর জন্য দরদ উতলিয়ে পরছে।
লিমা খাবার প্লেটে নিয়ে উপরের রুমে গেলো।আমি আস্তে আস্তে গেলাম।গিয়ে দেখি ওমা এ রাক্ষসী একটা গপ গপ করে আমার খাবার গুলো খেয়ে নিচ্ছে।
আমি: এই করছোটা কি শুনি।আমার খাবারগুলো তুমি খাচ্ছো..??
লিমা: চুপ একটা কথা বলবি না।আমার হাতে খাবে সখ কত।হুহ যত্তসব।যা বেশি কথা বলবি না।
আমি: তাহলে আমি কি রাতে না খেয়ে থাকবো না কি।আজোব তো।
লিমা: ওহ তাইতো আচ্ছা এদিকে আয়।
কাছে গেলাম,,,,,
লিমা: হা কর।
আমি: হা।
লিমা: এই নে খা।
আমি: ওয়াক থু।তুমি আমাকে হাড্ডি খাওয়ায় দিলে ছিঁ ছিঁ।
লিমা: হিহিহি বেশ করেছি।
আমি: ওহ আচ্ছা তাই।দাড়াও তোমার আম্মুকে বলে দিচ্ছি।
লিমা: এই এই শোন প্লিজ আম্মুকে বলো না।নইলে আমাকে আস্ত রাখবে না।
আমি: ওহ আচ্ছা তাই।তাহলে তো আরো আগে বলতে হয়।
লিমা: প্লিজ বলিয়েন না।আপনি যা বলবেন তাই শুনবো তবুও প্লিজ বলবেন না।
আমি: সত্তি তো।
লিমা: হুম।
আমি: প্রথম শর্ত: আমার সাথে ঘুমাতে হবে।পারবে কি..??
লিমা: অসম্ভব।
আমি: ওকে তাহলে আর কি করার।যাই শাশুড়ি আম্মাকে বলে দেই।
লিমা: এই নানা প্লিজ।আচ্ছা আমি আপনার শর্তে রাজি।
আমি: গুড গার্ল।২য় শর্ত।তোমার খাবারগুলো এখন এখানে নিয়ে আসবে এবং খাইয়ে দিবে ওকে।
লিমা: 😠😠😠😠😠😠😠
আমি:তোমার আম্মুর কাছে কি যাব।
লিমা: ধ্যাত বার বার আম্মু করস কেন।
আমি: যাও তাহলে নিয়ে এসো খাবার।
লিমা: হুহ্ যাচ্ছি।:
লিমা খাবার নিয়ে আসলো।আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে।আমি ইচ্ছা করেই আঙুলে কাঁমড়ে দিচ্ছি।তার বদলে মাইর খাচ্ছি।খাওয়া দাওয়া শেষ এবার ঘুমানোর পালা।
লিমা: তুই আমার সাথে ঘুমাতে পারবি না।
আমি: তুমি কিন্তু শর্ত ভেঙ্গে দিচ্ছো।
লিমা: তো তাতে কি।এই নে বালিশ।যা ওই সোফায় গিয়ে ঘুমা।
মেজাজটা খারাপ হবে না কার? ধুর ভাল্লাগে নাহ্।যাই সোফায় গিয়েই ঘুমিয়ে পড়ি।
সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর লিমার সাথে কোনো কথা বললাম না। ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে ব্রেকফাস্ট করলাম চামচ দিয়ে বাম হাতে খাচ্ছি।
তারপর লিমার কাজিনদের সাথে গল্প করে দুপুর হয়ে গেলো।আবার সবাই মিলে লান্স করলাম।
আমি বিকালে লিমা আম্মুকে বললাম,,,,
আমি: আচ্ছা আম্মু আমি আজকে বাসা যাব।
(লিমার) আম্মু: সে কি বাবা।আজকেই চলে যাবে..??
আমি: হুম আম্মু।
আম্মু: লিমা কি তোমাকে কিছু বলেছে.?
আমি: নাহ্ ও কেন বলতে যাবে।আর আমার হাতটা ডাক্তার দেখাতে হবে।
আচ্ছা: দেখছি।
কোনো রকম রাজি করালাম।লিমাকেও সঙ্গে পাঠিয়ে দিলো।
বাসায় আসার পর আমি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছনায় শুয়ে পরলাম।কিছুক্ষণ শুয়ে থাকার পর ভাবলাম যাই একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি।আর হাতটাও ডাক্তারকে দেখাবো।রুম থেকে বের হয় নিচে আসলাম।ড্রইং রুমে লিমা আর জান্নাত খুব সুন্দরভাবে গল্প করতেছে।কি মায়াবি মিষ্টি হাসি।
হঠাৎ জান্নাত আমাকে দেখে ফেলে।মুচকি মুচকি হাসতেছে।আমি ওকে দুর থেকে রাগ দেখিয়ে চলে আসলাম।
বাইরে এসে আমার এক বান্ধবী ফারিয়ার সাথে দেখা।
ফারিয়া: হাই জীবন।
আমি: হেলো।বাট তুই এখানে..??
ফারিয়া: আমার আপুর বাসায় আসছি।
আমি: আগে কো বলিস নি।হুম বুঝছি রে বুঝছি।
ফারিয়া: কি বুঝলি হুম.??মাত্র এক সপ্তাহ হলো বিয়ে হবার।
আমি: তোর বোনের বিয়ে হলো আর আমাকে দাওয়াত দিলি না।
ফারিয়া: কুত্তা তুই নিজেই বিয়ে করেছিস।আমাকে বলিস নি।আর আমার আপুর বিয়ে খাওয়ার সখ।
ও আমাকে মাইর শুরু করে দিলো।
হঠাৎ উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি লিমা আর জান্নাত আমার দিকে অগ্নি চক্ষু করে তাকিয়ে আছে।বুঝলাম না।জান্নাত তো ফারিয়াকে চিনে।তবুও কেন ওভাবে তাকিয়ে আছে।এসব ভেবে কাজ নেই।তাই ফারিয়াকে সঙ্গে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট এ গেলাম।সামান্য খেলাম।ডাক্তার এর কাছে গিয়ে আমার হাতটা পরিষ্কার করে নিলাম।সাথে কিছু ঔষধ দিলো।
ফারিয়াকে এগিয়ে দিয়ে বাসায় আসলাম।কলিং বেল চাপলাম।জান্নাত এসে দরজা খুলে দিলো।
জান্নাত: ভাইয়া তুমি কিন্তু এটা ঠিক করলে না।
আমি: কেন? আমি আবার কি করলাম।
জান্নাত: ফারিয়া আপুর সাথে ওভাবে কথা বলা দেখে ভাবি রাগ করেছে।
আমি: তাই? আচ্ছা ঠিক আছে দেখছি।
জান্নাত: হুহ্।
আমি: তোর আবার কি হলো..??
জান্নাত: তোমার কান্ড দেখলে রাগ উঠে যায় আমার।
আমি: কেন? তোর আবার কি হলো..??
জান্নাত: কিছু না যাও গিয়ে ভাবির রাগ ভঙ্গাও।
আমি: হু যাচ্ছি।
রুমে গিয়ে দেখি লিমা সত্তিই রেগে আছে।বাট রাগার তো কারন নেই আমার কাছে।লিমা তো আমাকে পছন্দ করে না।তাহলে রেগে যাবে কেন।তাহলে কি ও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে।না কি কিছুই তো বুঝতে পারছি না।

রুমে গিয়ে দেখি লিমা সত্তিই রেগে আছে।বাট রাগার তো কারন নেই আমার কাছে।লিমা তো আমাকে পছন্দ করে না।তাহলে রেগে যাবে কেন।তাহলে কি ও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে।না কি কিছুই তো বুঝতে পারছি না।
আমি: হ্যালো মিচ।এভাবে মুখ গোমড়া করে বসে আছেন কেন..??
লিমা: আমার ইচ্ছা তোর কি..??
আমি: ওকে ফাইন।আজকে রেডি হও।কালকে তো আবার আমাদের যেতে হবে যুক্তরাষ্ট্র।
লিমা: কেন..??
আমি: বোঝো নাই।
লিমা: নাহ্।
আমি: আমার শশুড়।মানে তোমার বাবা আমাদের এইখানে দেখতে চাচ্ছে না।হানিমুন এ পাঠিয়ে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।টিকেট দিয়ে গেছে।আর হোটেলও বুক করা শেষ।
লিমা: হোয়াট..??
আমি: জ্বি।চলো রেডি হও।কালকে ১১:০০ টায় ফ্লাইট।
লিমার অবস্থা খুবই খারাপ।কারন ওর অমতে বিয়ে।তার উপর আবার হানিমুন।যাইহোক আমার তো মজাই হচ্ছে।অন্তত ওইখানে গিয়ে একটু ইম্প্রেচ করার চেষ্টা করতে পারবো।আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি লিমা ওই রকম ভাবেই বসে আছে।
আমি: আচ্ছা তোমার কি কোনো সমস্যা..??
লিমা: কই না তো।
আমি: তাহলে এভাবে বসে আছো কেন..??
লিমা রাগ হয়ে কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক তখনই জান্নাত দরজায় এসে ডাকতে লাগলো।লিমার আব্বু আম্মু এসেছেন।তাই আমি লিমা জান্নাত নিচে আসলাম।সালাম দিয়ে ড্রয়িং রুমে নিয়ে গেলাম। ওনাদের আসার কারন হলো আমরা তো কালকে এক সপ্তাহের জন্য যাবো তাই ওনারা আমাদের বিদায় জানাতে এসেছেন।কিন্তু যন্ত্রণা হলো আমার শশুড় মশাইকে নিয়ে।
বাবা (শশুড়): হ্যালো ইয়াংম্যান।
আমি: হাই।
বাবা: কি হলো কথা বলতেছো না কেন..??
আমি: না মানে স্যার সরি বাবা আমার একটু কাজ আছে।
বাবা: আজকে সব কাজ বাদ।জাস্ট আজকে গল্পই হবে।হাহাহাহা
কি বিদঘুটে হাসি রে বাবা।মনে হচ্ছে বাংলা ফিল্ম এর ভিলেন।আমার তো খুবই অসস্তি লাগতেছে।এই ভিলেন শশুড় কিছু একটা বলতেছে।সেটা হোক হাসির কিংবা কাঁন্নার কিন্তু উনি হাহা হিহি করে হাসতেছেন।কেমনডা লাগে।
বিকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত শুধুই হা হু করে গেলাম।অন্যদিকে লিমা হানিমুনে যেতে চাচ্ছে না।ওর আম্মু বুঝিয়ে রাজি করেন।
রাতে ডিনার করার পর রুমে আসলাম।বিছানায় শুয়ে আছি লিমা আসলো।এসে কি যেন একটা বলতে গিয়েও পারছে না।
আমি: লিমা তোমার কি কোনো সমস্যা..?? কিছু বলবে আমাকে.??
লিমা: কিভাবে কথাটা নিবেন বুঝতে পারছি না।
আমি: তুমি নির্ভয়ে বলতে পারো কোনো সমস্যা নেই।
লিমা: আপনার সাথে হানিমুনে যাবো ঠিক আছে।কিন্তু আমার একটা শর্ত আছে।
আমি: শর্ত হাহা কিন্তু কেন..??
লিমা: কারন হলো আমি আপনাকে মন থেকে মেনে নিতে পারছি না।
আমি: আচ্ছা আগে তোমার শর্তটা বলো।
লিমা: ওখানে গিয়ে কোনো রকম অসভ্যতামি করতে পারবেন না।
আমি: তাহলে আর যেয়ে কি লাভ।ক্যান্সেল করে দেই।
লিমা: সেটা আপনার ইচ্ছা।
আমি: হুম।আচ্ছা তোমার বয়ফ্রেন্ডকে কি তুমি এখনও চাও।
লিমা: হুম অবশ্যই।কিন্তু দুদিন ধরে ফোনে পাচ্ছি না।
আমি: ওহ্ তাহলে সেই দুপর থেকে রাগের কারন বুঝতে পারলাম।তো এখন কি করবে..?
লিমা: একটা অনুরোধ করবো রাখবেন?
আমি: বলো যদি আমি সেটা পারি তো অবশ্যই রাখবো।
লিমা: রোহানকে এনে দিতে পারবেন.?
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।আমার বউ আমার কাছে অনুরোধ করতেছে তার বয়ফ্রেন্ডকে এনে দিতে।বাহ্ কি চমৎকার আবদার মুগ্ধ হয়ে গেলাম হাহাহাহা।
আমি: ও কি তোমাকে মেনে নেবে.?
লিমা: হুম অবশ্যই কেন মেনে নেবে না।যেহেতু ভালোবাসে সেহেতু মেনে নেবে।
আমি: রোহান এর ঠিকানা জানো.??
লিমা: হুম এই নিন।
আমাকে রোহান এর নাম্বার ঠিকানা দিলো।রোহান এর নাম্বার বন্ধ তাই কাস্টমার কেয়ার এ ফোন করলাম।ওরা বলছে যে নাম্বারটা তিন দিন ধরে ইউজ হচ্ছে না।
লিমাকে তবুও আশ্বাস দিলাম যে খুঁজে বের করবোই।
আজকে খুব কষ্ট হচ্ছে।তাই বাসা থেকে বের হয়ে এক প্যাকেট সিগারেট কিনলাম।কোনোদিন সিগারেট খাই নি।কিন্তু আজ বুঝতে পারছি কেন মানুষ সিগারেট খায়।
সিগারেট নিয়ে বাসার ছাদে আসলাম।প্রথমে সিগারেট টান দিতেই মনে হলো ভিতরটা জ্বলে গেলো তাই রাগ হয়ে সিগারেট ফেলে দিলাম।আজকের রাতটাও কেমন যেন নিস্তব্ধ।শুধু তারা গুলো মিট মিট করে জলছে।
সারা রাত ছাদেই কাটিয়ে দিলাম।ঘুম যেন কোথায় হারিয়ে গেছিলো।
সকালে লিমার আব্বু আম্মুকে কোনো রকম বুঝিয়ে বললাম যে হানিমুনে যেতে চাই না আমরা।অবশ্য ওনারা একটু মন খারাপ করেন।কিন্তু আমার কিছু করার ছিলো না মেনে নিতেই হবে।
তারপর ভাবলাম রোহানকে তো ঠিকই খুঁজে বের করবো।কিন্তু লিমার আর আমার মাঝে সম্পর্ক রেখে কি লাভ।উকিলের কাছে যেতে হবে।

তারপর ভাবলাম রোহানকে তো ঠিকই খুঁজে বের করবো।কিন্তু লিমার আর আমার মাঝে সম্পর্ক রেখে কি লাভ।উকিলের কাছে যেতে হবে।
উকিলের কাছে গেলাম।
আমি: স্যার আমি আমার বউকে ডিভোর্স দিতে চাই।
উকিল: বিয়ে হওয়ার কতদিন হলো.??
আমি: ৩ দিন।
উকিল: What,,, বিয়ে হওয়ার মাত্র তিন দিন তাতেই ডিভোর্স।আপনি কি আমার সাথে মজা করতেছেন..??
আমি: What the hell sir… এসব বিষয় নিয়ে কি কেউ মজা করে।
উকিল: হুম বুঝলাম।আপনি যে আপনার বউকে ডিভোর্স দিতে চান ঠিক আছে কিন্তু এতে তো সময় লাগবে।
আমি: কতদিন..??
উকিল: ধরুন পাঁচ ছয় মাস।
আমি: ওহ নো।ওকে আপনি যত তারাতাড়ি পারেন সবকিছু ঠিকঠাক করুন।
উকিল: আচ্ছা ঠিক আছে।
তারপর উকিলের কাছ চলে আসলাম। এসে রোহান এর ঠিকানায় গেলাম।কিন্তু রোহান বাসায় নেই।ওর বাবা মাকে বললম কিন্তু ওনারা রোহান এর কোনো খবে জানেন না।ওনাদের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ হয় না।
একরাশ হতাশা আর নিরাশ হয়ে বাসায় ফিরে আসলাম।
লিমা: কোনো খবর পেলেন রোহানের..??
আমি: সরি।কিন্তু তুমি টেনশন নিওনা ওকে ঠিক পেয়ে যাবো।
লিমা: হুম বুঝেছি।😥😥😥
পাগলি কাঁন্না করছিস কার জন্য।যে কি না তোমার কোনো খোজ খবর নিচ্ছে না।নিজেই হারিয়ে গেছে তার জন্য।পাগলি আমার যে কতটা রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে বুকের ভিতর।সেটা যদি দেখাতে পারতাম তাহলে অন্যের জন্য কাঁদতি না।ইচ্ছে হচ্ছে রে খুব তোকে বুকে জড়িয়ে আলতো করে চোখের পানি মুছে দিয়ে বলি বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছি।কিন্তু তোর মনটা তো পড়ে আছে রোহান এর কাছে।ভাবতেই অবাক লাগছে আমার।জীবনে একটাও প্রেম করলাম না।আর বউ পেলাম অন্যের গার্লফ্রেন্ড।আজব পৃথিবী।
এসব ভাবছি আর বাথরুমে ঝরনায় ভিজছি।নিজের কষ্টগুলোকে ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করতেছি।
আচ্ছা আমি কেন কষ্ট পাচ্ছি।কার জন্য কষ্ট পাচ্ছি।যার জন্য কষ্ট পাচ্ছি সে তো আমার জন্য কষ্ট পায় না।বরং তার ভালোবাসার মানুষকে চায়।আমাকে স্বাভাবিক হতেই হবে।আর নিজেকে কষ্ট দেব না।লিমাকেই সুখি করে চলে যাব কোনো এক অজানার উদ্দেশ্যে।যেখান থেকে চাইলেও আর ফেরত আসতে পারবো।
ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসলাম।টিভি দেখে সময় পার করছি।কারন অফিস যাচ্ছি না।না গেলেও সমস্যা নেই।যেহেতু শশুড় এর কোম্পানি।জান্নাত এর সাথে ঝগড়া শুরু হয়ে গেলো,,কারন জান্নাত এর কাছ থেকে রিমোট কেরে নিয়ে হলিউড মুভির চ্যানেল দিছি।
জান্নাত: ভাইয়া এইটা কিন্তু ঠিক করছো না।
আমি: কেন? আমি আবার কি করলাম।
জান্নাত: ওহ এখন ঢং করছিস।ভালোয় ভালোয় বলছি সিরিয়াল দে।
আমি: পারবো না।
জান্নাত: পারবি না তাইতো।
আমি: হুম তো..??
জান্নাত: ভাইয়া দেখি তোমার চুল পেকে গেছে।
আমি: বলিস কি।দেখতো।
জান্নাত: দাড়াও।
আমি: আহ্হহহহহহহহহহহহ।
জান্নাত: চুপ একদম চিল্লাবি তো সব চুল ছিড়ে ফেলবো।রিমোট দে।
আমি: নে রিমোট ধর।প্লিজ চুল ছাড়।
জান্নাত: গুড।
আমিও কি কম।চ্যানেল চেঞ্জ করার সাথে সাথে ও যেটা করেছে সেটাই করলাম।কিন্ত জান্নাত এমন জোরে চিল্লানি দিছে বাড়ির সবাই এসে পড়েছে।সেখানে আমি অনাথ শিশু হয়ে গেলাম।কারন সবাই আমাকে কথা শুনাতে শুনাতে অজ্ঞান বানিয়ে দিচ্ছে।
হঠাৎ আমার ফোন বেঁজে উঠলো।তাকিয়ে দেখি আমার অফিসের বস ফোন করেছেন।
আমি: আসসালামু আলাইকুম স্যার।
বস: ওয়ালাইকুম সালাম।
আমি: স্যার কোনো সমস্যা..??
বস: না আসলে কি জানেন।আপনাতে অফিসের কাজের জন্য কক্সবাজার যেতে হবে।ওইখানে আমাদের বিদেশি ক্লায়েন্ট টুরিষ্ট হয়ে আসবেন।আর ওইখানেই মিটিং হবে।আর সেখানে আপনাকে যেতে হবে।
আমি: ওকে স্যার।আমি কালকে অফিসে যাই তারপর নাহয় সব কিছু ভালোভাবে বলেন।
বস: ওকে।
তারপর আবার আগের মতই।রাত হলো।আর আমাকে সোফায় ঘুমাতে হলো।সকালে অফিস গেলাম।আমাকে ওইখানে এক সপ্তাহ থাকতে হবে।অফিস থেকেই সব ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
বাসায় এসে সব গুছিয়ে রাখলাম।এদিকে আমার হাতও ভালো হয়ে গেছে।সকাল এগারোটায় অফিস পৌঁছাতে হবে।
তাই তারাতারি ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়ি।
সকালে ঘুম থেকে উঠে সব কিছু প্যাক করলাম।
খাওয়া দাওয়া সেরে সবার কাছে থেকে বিদায় নিলাম।কিন্তু লিমাকে কিছুই বলি না।বলেই বা কি লাভ।

খাওয়া দাওয়া সেরে সবার কাছে থেকে বিদায় নিলাম।কিন্তু লিমাকে কিছুই বলি না।আর বলেই বা কি লাভ।সে তো আর আমাকে চায় না।
তারপর চলে গেলাম অফিসে।অফিসে যাওয়ার পর সবাই মিলে এয়ারপোর্ট এর দিকে রহনা দিলাম।আমার অবশ্য ভালোই হচ্ছে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য।প্রথমে লিমাকে ভুলার চেষ্টা করবো।অফিসের কাজ, আর রোহান কেও খুঁজবো।যদি পেয়ে যাই।
অবশেষে এয়ারপোর্ট পৌছালাম।সব কিছু ঠিক করে প্লেনে যে যার জায়গায় সবাই বসে পড়লাম।কিছুক্ষণপর প্লেন উড়তে শুরু করলো।
আস্তে আস্তে দেখতেছি আমাদের শহরটা ছোট হয়ে যাচ্ছে।এক সময় আর আমাদের দেশটাকেই চেনা যাচ্ছে না।জানালা দিয়ে সাদা সাদা মেঘ দেখা যাচ্ছে।খুব ভালো লাগতেছে।
আমি ছোট বেলায় ভাবতাম যদি মেঘ গুলোর কাছে যেতে পারতাম।আজ সেই আশাটা পূর্ণ হয়ে গেলো।
কিন্তু মন খারাপ হচ্ছে লিমার কথা ভেবে।
এ রকম মুহুর্তে যদি লিমা থাকতো?কতই না ভালো হতো। যাকগে ওসব ভেবে আর কি লাভ আমাকে তো ওর রোহানকে এনে দিতে হবে।
ভাবতে ভাবতে এ্যানাউন্স হয়ে গেলো।প্লেন কক্সবাজার এ ল্যান্ড করবে কিছুক্ষণপর।
কক্সবাজার এ প্লেন ল্যান্ড করার পর আমাদের রিসিভ করতে কয়েকটা গাড়ি এসেছে।আমাদের অফিস থেকেই সব কিছু ঠিক করা।হোটেল খাওয়ার ব্যাবস্থা এক কথায় সব।
হোটেল এ পৌছানোর পর যাকে যে রুম দেওয়া হলো সে রুমেই গেলাম।অবশ্য আমার রুমটা ভালো জায়গাতেই।এখান থেকে জানালা খুললে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে ওয়াও। সব মিলিয়ে দারুন একটা পরি বেশ।
ফ্রেশ হয়ে দুপুরের লান্স করার পর সবাই একসাথে গেলাম যেখানে মিট করার কথা।আমরা অফিস থেকে এসেছি ৭ জন।
মিটিং হলো প্রায় এক ঘন্টার মতো বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে।আর কিছু ফাইল দেওয়া হলো। প্রতিদিন ফাইল জমা দিয়ে আবার নতুন ফাইল নেওয়া লাগবে।এটার জন্য ঢাকা থেকে আসলাম কক্সবাজার।এগুলো তো অফিসে দিলেই হতো।আজব সব।
সন্ধ্যার আগে সবাইকে বললাম যে সাগরের কাছে যাবো।সূর্যাস্ত দেখবো।
সবাই মিলে গেলাম।অনেক সুন্দর একটা মূহূর্ত।কিন্তু আমি লিমাকেই মিচ করতেছি।
মেয়েটা আমাকে মাত্র চার দিনেই তার পাগল বানিয়ে দিলো।সত্তিকারের ভালোবাসা যে এভাবে বালুচরে আটকা পড়া ঝিনুকের মতো ধুঁকে ধুঁকে মরবে ভাবতে পারছি না।ভাবনায় ছেদ পরলো আমার কলিগের ডাকে।ওকে বললাম নাহ কিছু না।
সবাই হোটেলে গেলাম।কিছুক্ষণ পর ডিনার করে আরেকটু আড্ডা দিলাম।রাত প্রায় আটটা।যে যার রুমে চলে গেলো।আমিও আসলাম আর আমাকে যে ফাইল দেওয়া হয়েছিলো ওটা নিয়ে বসে পড়লাম। প্রায় ঘন্টা খানেক সময় লাগলো ফাইলটা শেষ করতে।ক্লান্ত হয়ে গেলাম।
বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুম।
সকালে ঘুম ভাঙ্গার পর আম্ম আর জান্নতের সাথে কথা বললাম।কিন্তু লিমার সাথে কথা বললাম না। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে আমার সমুদ্র তীরে আসলাম।
এসে একটা ছেলেকে চেনা চেনা লাগছে।ফোন বের করে রোহান এর ছবি দেখলাম।লিমার কাছ থেকে নিয়েছি।
দেখছি ছবির সাথে হুবহু মিল।তাই ওর দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম।আর ফোনে ভয়েস রেকর্ড চালু করে রাখলাম।
আমি: hey you are Rohan. Am i right…??
রোহান: Yeah…. but who are you..??
আমি: আমি লিমার হাসবেন্ড।
রোহান: ওহ তো আমার কাছে কি..??
আমি: আসলে লিমা তোমাকে এখনও চায়।
রোহান: হাহা হাউ ফানি।বিয়ের আজ পাঁচদিন হয়ে গেলো এখনও চায় আমাকে।নাইস জোক্স ব্রো।
আমি: আরে আমি সত্তিই বলছি ওকে ফোন করে দেখো।
তারপর রোহান লিমাকে ফোন করলো।দূরে গিয়ে কথা বলতে থাকলো।দূর থেকে কি বলছে শোনা যাচ্ছে না কিন্তু এটা বোঝা যাচ্ছে যে ওদের ঝগড়া চলছে।কথা শেষ হওয়ার পর।
আমি: কি হলো বিশ্বাস হলো তো..??
রোহান: হুম।কিন্তু আমি তো ওকে চাই না।
আমি: হোয়াট,,, কেন.??
রোহান: আসলে কি জানেন আমি ওকে ব্যাবহার করতাম।মানে ওর কাছ থেকে শুধু টাকা নিতাম আর টাইম পাচ করতাম।
আমি: তোমাদের মধ্যে সম্পর্কটা কতদূর গরিয়েছিলো..??
রোহান: জাস্ট হাত ধরা ধরিতেই সিমাবদ্ধ ছিলো।
আমি: ওহ্।
রোহান: ওই যে দেখুন ওটা আমার লিমার মতো নিউ জান।হায় বেবি।(একটা মেয়েকে উদ্যেশ্য করে।)
আমার প্রচন্ড রাগ হলো।কারন লিমা একটা প্লে বয় এর জন্য আমাকে এভাবে কষ্ট দিলো।আমিও তোকে কষ্টের আগুনে পুড়বো।কারন বিয়েটা আমিও আমার অমতেই করেছি।
আমি কক্সবাজারে রোহান এর সাথে আরো দুইটা মেয়েকে ঘুরতে দেখলাম।আর রোহানের এই কুকির্তিকে ক্যামেরা বন্ধি করলা।
যেমন কিস করার সময় ভিডিও।আর তাছাড়া বিভিন্ন পজিশনে পিকচার তুলে নিয়েছি।
এখন এই পিকচার ও ভয়েস রেকর্ড লিমা দেখলে শুনলে নিশ্চই রোহানকে ঘৃণা করবে।আর আমাকে ভালোবাসতে শুরু করবে।খেলা তো তখনই হবে।যখন লিমা আমার প্রেমে পড়বে।
উকিলকে ফোন করলাম,,,,,
আমি: পরিচয় দিলাম।
উকিল: বুঝেছি কেন ফোন করেছেন।আপনার ঝগড়া মিটে গেছে তাইতো।
আমি: হুম।
উকিল: আমি জানতাম।তাই আপনার বিষয়টা নিয়ে কোনো কিছু ভাবিনি।কাজও করি নি।বাই দ্য ওয়ে।সুখে শান্তিতে দিন কাটান।
আমি: ওকে।
আজকে আমাকে আবার ঢাকায় ফিরে আসতে হবে।তাই সবার জন্য শপিং করলাম।লিমার জন্য কিছু নিলাম না।এখন থেকে তো শুরু হবে আমার খেলা।
মাইয়া অনেক জ্বলাইছোস।সব ঝুট ঝামেলা ছেড়ে বাসায় এসে সব কিছু সবাইকে বুঝিয়ে দিলাম।
লিমা এসে জিগ্যেস করলো রোহান কই.??
ও আসে নি..??
আমি: নাহ্।আর তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে।
লিমা খুশি হয়ে গেল।যত পারো খুশি হও সমস্যা নেই।

লিমা খুশি হয়ে গেল।যত পারো খুশি হও সমস্যা নেই।এই খুশির মাথায় পানি ঢালতেছি ওয়েট করো বাবু।
ক্লান্ত লাগছে খুব।তাই ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেলাম।এবং রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ি।একটা লম্বা ঘুম একেবারে সন্ধ্যায় ঘুম ভাংলো।আসলে আমি ঘুম পাগলা।
ফ্রেশ হয়ে বাসার বাইরে বের হয়ে আমার ফ্রেন্ড মেহেরাজকে কল করলাম।ছোট করে রাজ বলি।
রাজ: হ্যাঁ দোস্ত বল।হালা বিয়া করলি দাওয়াতও দিলি না।তোর বউয়ের কি ভাগ নিতাম।
আমি: আরে দোস্ত রাগ করিস না।তুই মোড়ে চা ওয়ালা মামার দোকানে আয় সব কিছু বলবো তোকে।
রাজ: বিয়ের ট্রিট দিবি আজকে।টাকা নিয়ে আয়।নইলে তোকে আজ পুঁতে দেব একদম।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে। দোস্ত তারাতারি আয়।
রাজ: হুম আসতেছি।
রাজ এর সাথে বসে বসে চা খাচ্ছি।আর রাজকে সব কিছু বললাম।
রাজ: আচ্ছা ভাবিকে কি কষ্ট দেওয়া ঠিক হবে..?
আমি: হুম সেটাই।আমিও তো কষ্ট পাব তাহলে। দোস্ত আমাকে কিছু বুদ্ধি দে মাথা কাজ করছে না।
রাজ: এক কাজ কর।ভাবিকে বুঝিয়ে বল তুইই ওকে ছাড়া থাকতে পারবি না।
আমি: ধুর এজন্য নিলা তোর সাথে বার বার ব্রেকআপ করে।মাথা মোটা একটা।
রাজ: ইনসাল্ট করছিস আমাকে..??
আমি: না তোকে মাথায় তুলে নাচতেছি হারামি।
রাজ: তুই কি করতে চাস বলতো এখন.??
আমি: আচ্ছা যদি লিমাকে মিথ্যে কষ্ট দেই তাহলে কেমন হয়.??
রাজ: আমি বুঝি নাই আবার বুঝিয়ে বল।
আমি: মাথা মোটা কি এমনি বলি তোকে।শোন লিমার সাথে এমনিতে খারাপ আচরণ করবো।তারপর ওকে সরি বলে সব কিছু গুছিয়ে নেব।
রাজ: কিন্তু পরে যদি সে চলে যায় তোর কাছ থেকে।
আমি: আরে সমস্যা নেই।আমার শশুর মশাই আমাকে পছন্দ করে খুব।ওনাকে বললে লিমাকে বাসায় দিয়ে যাবো একদম।
রাজ: ওকে যেটা ভালো বুঝিস সেটাই কর।
আমি: হুম।আচ্ছা আজকে উঠি।কালকে তো শুক্রবার।সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্ট এ আসিস ট্রিট দেব।
রাজ: ওকে।
সন্ধ্যা ৭:০০ টায় বসায় আসলাম।কলিং বেল বাজালাম লিমা এসে দরজা খুলে দিলো।
লিমা: এতক্ষণ কোথায় ছিলেন.??
আমি: কেন..??
লিমা: কি যেন সারপ্রাইজ এর কথা বলেছিলেন।
আমি: ওহ ভুলে গিয়েছিলাম
লিমা: এখন কি বলা যাবে..??
আমি: তুমি কি খুবই এক্সাইটেড..?
লিমা: সামান্য একটু।
আমি: ডিনার এর পর পেয়ে যাবে।
আব্বু, আম্মু, জান্নাত, লিমা, আমি এক সাথে ডিনার করতেছি।জান্নাত আমার এক পাশে।আর আরেক পাশে লিমা।
জান্নাত: ভাইয়া…………….
আমি: তোর আবার কি হলো…??
আম্মু+আব্বুু: কি হলো রে মা..??
জান্নাত: ভ্যাঁএএএ।আম্মুউউউ ভাইয়া আমার প্লেট থেকে মাংস নিয়ে হাড্ডি রেখে দিছে।
আমি: হোয়াট।পাগলি হলি না কি..??
আমি মাংস নেব তোর প্লেট থেকে।তুই যে পেত্নি ওয়াক থু।গোসল করিস না এক সপ্তাহ ছিঁ ছিঁ
জান্নাত: আম্মু আব্বু ভাবি তোমরা কি কিছু বলবা না আমি কিছু করবো…..??
আমি: আজব তো।আমি আবার তোর কি ক্ষতি করলাম..??
জান্নাত: কি ক্ষতি দাড়া।দেখাচ্ছি মজা।
আমি: জান্নাত বোন আমার প্লিজ চুল ছাড়।সোনা বুবু আমার, ছাড় প্লিজ।এই নে তোকে দুটো মাংসের টুকরা দিলাম তবুও ছাড় প্লিজ।
জান্নাত: আমি তো পেত্নি তোর বোন নই।আমি গোসল করি না।তাই তোর বোন নই।
আমি: আচ্ছা তোকে একটা আইফোন দশ কিনে দেব তবুও ছাড়।
জান্নাত: জ্বি নাহ্।এক বছর ধরে অনেক আইফোন দশ নিয়ে দিছিস আর লাগবে না।
আমি: ওরে আমার আপু।তোর পায়ে পড়ি প্লিজ চুল ছেড়ে দে।
লিমা: ছেড়ে দাও জান্নাত।বেচারা এত করে যেহেতু বলছে।
জান্নাত: হুহ্। যা ভাবি বললো তাই ছেড়ে দিলাম।নইলে তোর সমস্ত চুল আজকে ছিড়ে পুড়িয়ে ফেলতাম।
আমি: মাঝে মাঝে আমি কনফিউজড হয়ে যাই।তুই কি আমার মতো নিরীহ ছেলের বোন।
জান্নাত: হুহ্ 😒😒😏
ডিনার সেরে আমাি আর লিমা এক সাথে রুমে আসলাম।আমি বিছানায় গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ি।
আমি: এই নেও দেখো, এটাই তোমার সারপ্রাইজ।(ফোন বের করে ভিডিও অন করে দিলাম।)
দেখার পর,,,
লিমা: না এটা মিথ্যা আমি বিশ্বাস করি না।
আস্তে আস্তে সব কিছু দেখালাম।লিমা রেগে আমার কলার্ট চেপে ধরল।
দিলেম কসে এক থাপ্পড়,,,,
আমি: তোর সাহস হয় কি করে আমার কলার চেপে ধরার।
লিমা শুধু গালে হাত দিয়ে বসে রইলো বিছানায়।আমি ঘুমিয়ে পড়ি বিছানাতে।

লিমা শুধু গালে হাত দিয়ে বসে রইলো বিছানায়। আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছিলো তাই আমি ঘুমিয়ে পড়ি বিছানাতে।
সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখি লিমা ওই রকম ভাবেই বসে আছে।সারা রাত ঘুমায় নি।বুকের বাম পাশে চিন চিন ব্যাথা শুরু হয়ে গেলো।
আমি: লিমা কি ব্যাপার এইভাবে বসে আছ কেন.?
লিমা: আমার ইচ্ছা তাতে তোর কি..??
আমি: আবারও তুই করে বলতেছো।এবার মেরে একদম হসপিটালে ভর্তি করে দিয়ে আসবো।
লিমা আমার কথা শুনে চমকে যায়।ভয়ও পাচ্ছে।লিমার মুখে স্পস্ট রাগ দেখতে পাচ্ছি।
আমি: সারা রাত তো মনে হয় ঘুমাও নি।যাও ঘুমিয়ে পড়ো।
লিমা কিছু না বলে চুপচাপ শুয়ে পড়ে।আমি বাথরুমে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি লিমা ঘুমিয়ে পড়েছে।দেখতে একদম মায়াবি পড়ির মতো লাগতেছে।কতক্ষণ যে তাকিয়ে ছিলাম জানি না।জান্নাতের ডাকে বাস্তবে ফিরলাম।আমাদেরকে নিচে গিয়ে ব্রেকফাস্ট করতে বলে গেলো।কিন্তু লিমাকে তো ডাকা যাবে না।মাত্রই তো ঘুমালো।তাই আমি একাই নিচে গেলাম।
আম্মু: কি রে বউ মা কোথায়..??
আমি: ঘুমাচ্ছে।
আম্মু: কেন.? এত সকাল পর্যন্ত ঘুমাচ্ছে কোনো সমস্যা হলো না কি.??
আমি: না আম্মু আসলে ও রাতে থুমাতে পারে নি।ডেকেছিলাম ওকে। বললো যে একটু দেরি করে উঠবে।
আম্মু: আচ্ছা ঠিক আছে।
জান্নাত: ভাইয়া আজকে বলতো কত তারিখ..??
আমি: আজকে তো ১৩ই এপ্রিল কেন..??
জান্নাত: আর কিছু জানিস না..??(রাগ)
আমি: ওও বুঝেছি।কালকে তো আমার এই ছোট্ট আপুটার জন্মদিন তাই না।
জান্নাত: হুহ্।
আমি: আচ্ছা সরি।এরপর আর ভুলে যাব না ওকে।চল আজকে তোকে শপিং করিয়ে দেই।
জান্নাত: ভাবিকেও নিয়ে যাই।আর রাতে কিন্তু পার্টি দিতে হবে।আমি আমার সব ফ্রেন্ডদের বলে দিয়েছি।আব্বুকেও বলেছি।আব্বু সব কিছু ঠিক করতেছে।
আমি: তাহলে তো ভালোই।যা তোর ভাবিতে নিয়ে রেডি হ।
তারপর তিনজন মিলে শপিং করতে গেলাম।মেয়েদের সাথে শপিং এ গেলে যে এত প্যারায় পড়তে হয় আমার জানা ছিলো না। জানলে আসতামই না।
তারপর দীর্ঘ তিন ঘন্টা মার্কেট এ ঘুরলাম।লিমা আর জান্নাত আমাকে রেখে কিসের একটা দোকানে যায়। তাই আমি ভাবলাম আমার আর লিমার জন্য কিছু নেওয়া দরকার।দুজন দুজনের জন্য পছন্দ করে নিয়েছে। দুজনই হলুদ শাড়ি কিনেছে। তবুও আমি একটা নীল শাড়ি কিনলাম।আমার জন্য নীল পাঞ্জাবী। জানি না লিমা আমার পছন্দে শাড়ি পড়বে কি না।তারপর শপিং শেষে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে দেখি আব্বু কিছু ছেলেদের নিয়ে আমাদের পুড়ো বাড়িটাই সাজাচ্ছেন।একমাত্র মেয়ের জন্মদিন বলে কথা।কোনো কি ত্রুটি রাখাতে চায়।
ভিতরে এসে আমার কেনা শাড়ি পাঞ্জাবী গুলো রেখে দিলাম।কারন ওরা যেহেতু ম্যাচিং করেই কিনেছে তাই ওদের ইচ্ছাটাকেই প্রধান্য দিলাম।লিমা আর জান্নাত রুমে আসলো।আর এসে আমার হাতে একটা প্যাকেট ধরিয়ে দিলো।আসলে আমি ওদের টাকা দিয়েছিলাম।যা ইচ্ছে কিনতে।প্যাকেট খুলে দেখি একটা হলুদ পাঞ্জাবী।
জান্নাত: দেখতো ভাইয়া পছন্দ হয়েছে কি না।
আমি: হুম অবশ্যই।আমার কিউট বোনটা যেহেতু পছন্দ করেছে।
জান্নাত: ওটা আমার পছন্দ না ভাবি পছন্দ করে তোর জন্য নিয়েছে।
আমি: তাই? হুম সুন্দর চয়েজ।
তারপর সবাই সবার কাজে ব্যাস্ত হয়ে গেলাম।কারন রাত ১২ টায় কেক কাটা হবে।তাই তারাতারি সব কিছুর আয়োজন করতেছি।এরি মাঝে দেখলাম লিমা আর জান্নাত বাইরে কোথায় যেন গেল।কোথায় যেতে পারে? যাক গে কোনো হয়তো কাজ আছে।কাজ করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো।প্রচন্ড খিদা লেগেছে।তাই রুমে এসে বাথরুমে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে বাথরুম থেকে বের হয়ে দেখি লিমা খাবার নিয়ে বসে আছে।ওরে বাচ এত কেয়ার কোথা থেকে এলো।কিছুই তো বুঝতে পারলাম না।
লিমা: খেয়ে নিন।আপনার জন্য।
আমি: ওকে।
একা একা খাচ্ছি।আর লিমা চোখ গরম করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি ওর দিকে তাকাতেই একটা মুচকি হাসি দিলো।তখনই শোনা গেল আমার শশুড় শাশুড়ি এসেছেন। প্রচন্ড রাগ উঠে গেল।কারন এখন আমাকে খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে যেতে হবে ওনাদের কাছে। ধুর আসার আর সময় পেলো না।
হাত ধুয়ে দরজা খুলে বাইরে বের হতেই লিমার বোন জুঁই এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আমি: কেন আছো আপু.??
জুঁই: ভালো না….
আমি: কেন আপু..??
জুঁই: তুমি আমার সাথে কথা বলো না কেন..??
আমি: তুমি তো থাকো তোমার আম্মুর কাছে আর আমি থাকি এখানে কিভাবে কথা বলবো..??
জুঁই: ফোনে কথা বলতে পারতে।
আমি: ওরে বুড়ি।এত বেশি কথা শিখে গেছো।
জুঁই: আমাকে বুড়ি বলবা না।তুমি জান সবাই আমাকে কত কিউট বলে।
আমি: ওহ সরি সরি।ভুলে গিয়েছিলাম।
জুঁই: ঠিক আছে।
তারপর নিচে ড্রয়িংরুম এ আসলাম।ওইখানে লিমার আব্বু আম্মু।
শশুড়: হাই ইয়াংম্যান।কেমন আছ.??
আমি: এই ভালো আপনি,,??আর মা আপনি কেমন আছেন..?
শশুড়+শাশুড়ি: হুম আমরা ভালো।তোমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো..??
আমি: না কোনো সমস্যা নেই আমরা ভালো আছি।
তারপর ওনাদেরকে ব্যাস্ততা দেখিয়ে চলে আসলাম নয়তো রাত ১২ টার আগে ছাড়ত না।
সব আয়োজন শেষ এবং আত্মীয় স্বজন সবাই চলে এসেছেন।এবার শুধু কেক কাটা বাকি।লিমা জান্নাতকে সাঁজিয়ে দিচ্ছে।জান্নাতকে খুব সুন্দর দেখা যাচ্ছে।
আমি রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ভাবলাম আমিও হলুদ পাঞ্জাবীটাই পড়ি।যেহেতু লিমা পছন্দ করে নিয়েছে।
পাঞ্জাবী পড়ে রুমেই বসে আছি।লিমা আসলো রুমে।তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে আমার সামনেই চেঞ্জ করা শুরু করলো। ছিঁ ছিঁ আমারই লজ্জা লাগতেছে।
আমি: এই ওয়েট ওয়েট।
লিমা: কেন..??
আমি: এভাবে এখানে চেঞ্জ করতেছো কেন.??যাও বাথরুমে গিয়ে করো।
লিমা: না পারবো না।
আমি: মাইরালা।আচ্ছা আমিই বাইরে যাচ্ছি।
বাইরে বের হয়ে আসলাম।আরে ধুর আমি মেয়েদের মতো লজ্জা পাচ্ছি কেন.? মাথা গোলমাল হয়ে গেছে মনে হয়।
লিমা আধা ঘন্টা পর বের হয়ে আসলো।ওকে দেখে একদম চোখ ফেরাতে পারছি না। যেন একটা হলুদ পরী আমাদের বাসায়। কিন্তু না আমাকে তো শক্ত হতে হবে।এত সহজে ক্রাশ খেলে তো চলবে না।
তারপর কেক কাটা হলো।সবাই মিলে অনেক আনন্দ করলাম।জান্নাত আর লিমা আমাকে কেকের ক্রিম দিয়ে ভুত বানিয়ে ফেলেছে। কিন্তু আমি ওদেরকে বেশি দিতেই পারি নি।কারন এক সাথে দুজন কাকে ধরি আর কাকে দেই। অতঃপর ক্রিম পর্ব শেষ করে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।
ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হতেই জান্নাত আমাকে ছাদে যেতে বললো।লিমা না কি ডাকতেছে।কিন্তু কেন ডাকতেছে সেটা বললো না।লিমা কি আমাকে ভালোবাসার কথা বলবে।না কি অন্যকিছু।আবার ডিভোর্স নিতে চাবে না কি কিছুই তো বুঝতে পারছি না।
অনেক ভাবনা চিন্তার পর ছাদে উঠলাম।লিমা এক কোণে দাড়িয়ে আছে।

অনেক ভাবনা চিন্তার পর ছাদে উঠলাম।লিমা এক কোণে দাড়িয়ে আছে।
আমি এসেছি সেটা টের পেয়েছে।তাই একটু নড়েচড়ে আমার দিকে ঘুড়ে তাকালো।কিন্তু চুপ করে আছে। লিমার মুখে স্পস্ট ভয়ের ছাপ।নাক ঘেমে যাচ্ছে।হাল্কা চাদের আলোয় চিক চিক করছে।রাতের বেলা এভাবে দেখে আমাকে কাছে টানছে কোনো এক অদৃশ্য মায়া।কিন্তু আমি যেতে পারছি না।কিছু একটা আমাকে বাঁধা দিচ্ছে।আমার ভাবনার ছেদ পরলো লিমার কথা শুনে।
লিমা: আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই,,,
আমি: হ্যাঁ অবশ্যই।
লিমা: সরি”
আমি: সরি কেন..?
লিমা: মানে আপনাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য সরি। আমি জানতাম না যে রোহান এতটা জঘন্য হবে।আমার ভাবতেই ঘৃণা হচ্ছে।
আমি: তো এখন আমাকে কি করতে হবে শুনি..??
লিমা: কিছুই না, যাষ্ট আমাকে ভালোবাসতে হবে।
আমি: সরি,,,,
লিমা: সরি কেন..??
আমি: আমি তোমাকে আর ভালোবাসতে পারবো না।
লিমা: কেন? আমার দোষটা কোথায়.??
আমি: দোষ তোমার নয় দোষ আমার।তোমাকে আমার অমতেই বিয়ে দেওয়া হয়েছিলো।প্রথম রাতেই তুমি আমার সাথে যে ব্যাবহার করেছিলে ওইদিনই আমি ধরে নিয়েছি তোমার সাথে আমার চলবে না।
লিমা: আচ্ছা আবারও সরি,, প্লিজ আমাকে দূরে ঠেলে দিও না।
আমি: আমি তোমাকে দূরে ঠেলে দেই নি।তুমি নিজেই আমাদে দূরে ঠেলে দিয়েছো।আমি জাস্ট আর ফিরতে চাই না।
লিমা: অন্তত একটা সুযোগ দাও,,
আমি: সেটা অনেকবার পেয়েছো।আর পাবে না,,,,
লিমা: আমি তো আমার ভূল বুঝতে পেরেছি।তার জন্য সরিও বললাম।
আমি: তো কি হয়েছে।আমি তোমাকে স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবো না।
লিমা: সত্তিই মানতে পারবে না..??
আমি: কখনই না
লিমা: ওকে ভালো,,,
লিমা কেঁদে কেঁদে ছাদ থেকে নেমে গেলো।আমি কিছুক্ষণ পর ছাদ থেকে নেমে আসলাম,,
তারপর রুমে গেলাম।লিমা সোফায় বসে আছে।আমি টয়লেটে গেলাম।ওখান থেকে ফিরে ফেশ হয়ে বিছানায় গেলাম।অনেক রাত হয়েছে প্রায় ৩ টা বাজে।তাই বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।লিমা বিছানার কাছে আসতেই,,,,
আমি: এই তোমার বিছানায় কি..??
লিমা: কেন ঘুমাবো…..
আমি: না এখানে ঘুমাতে পারবা না,,,,
লিমা: কেন..?(চোখ গরম করে)
আমি: যেটা বলছি সেটাই।সোফায় গিয়ে ঘুমাবি।নয়ত একেবারে রুমের বাইরে ফেলে দিয়ে আসবো।
লিমা: আমি বিছনাতেই ঘুমাবো দেখি কি করতে পরিস।
আমি: আবারো তুই তোকারি করছিস দাড়া,,,,,
লিমা: কি করবি তুই আমাকে হ্যাঁ.? তোকে তুই কেন সব কিছু বলবো,,,
আমি: আর একটা কথা বললে মুখ ভেঙ্গে দেব,,,
লিমা: সাহস থাকলে আমমাকে টাচ করে দেখ।
আমি বিছানা থেকে উঠে এসে ঠাস ঠাস করে দিলাম দুইটা দুই গালে।গাল লাল হয়ে গেছে।
অনুশোচনা হচ্ছে আমার নিজেরই।না ওকে মারা আমার একদমই উচিত হয় নি।
যাই হোক আমি শুয়ে পড়লাম।লিমা সোফাই কিছুক্ষণ বসে বসে ফুপিয়ে কাঁদার পর ঘুমিয়ে পরলো,,,,
আমি বিছানা থেকে উঠে এসে লিমা কাছে আসলাম।কাঁদার ফলে চোখ ফুলে গেছে।ফর্সা গালে আঙুলের দাগ স্পস্ট বোঝা যাচ্ছে।ইচ্ছে করছে আলতো করে ছুয়ে দেই।ইচ্ছে করছে আলতো করে কপালে চুমু দিয়ে বুকের মাঝে আগলে রাখি।কিন্তু আমি এত নিষ্ঠুর হলাম কবে।যাকে ভালোবাসি তাকেই কষ্ট দিচ্ছি।তার গায়ে হাত তুলতেছি।না আর সহ্য হচ্ছে না।
তাই ছাদে চলে আসলাম।কতক্ষন ছাদে ছিলাম জানি না।কিন্তু যখন ফজরের আজান হয় তখন রুমে এসে শুয়ে পড়ি।ঘুমানোর কিছুক্ষণ পরই লিমা ডাকতেছে।
লিমা: এই কি হলো উঠবেন না..??
আমি: আরে ধুর এত তারাতারি ডাকার কি দরকার।যা তো যা এখান থেক।
লিমা: যাব মানে,,,,
আমি অত মানে মানে না করে এখান থেকে কেটে পর।তর্কবাজদের আমার একদম সহ্য হয় না,,,
লিমা কিছু না বলে ওখান খেকে চলে গেলো।হয়ত কষ্টও পেয়েছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি অফিসের টাইম হয়ে গেছে।তাই তারাতারি রেডি হয়ে অফিসে গেলাম।সারাদিন কোনো কাজ করি নি।ঘুমিয়ে কাটিয়েছি।অফিসটা তো আমার শশুরের তাই।কিন্তু তবুও এটা উচিত না।যাক গে আগে ঘুম তারপর অন্যকিছু।
অফিস শেষে রাজকে ফোন করলাম।তারপর একটা রেস্টুরেন্ট এ গেলাম দুজনে অনেক আড্ডা দিলাম।এবং রাতের খাবারটাও খেয়ে নিলাম।বাসায় আসতে আসতে প্রায় ১১ টা বাঁজবে নিশ্চিত।
অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন,,,
আমি: আসসালামু আলাইকুম।
অপরিচিতা : ওয়ালাইকুম সালাম।
কন্ঠ শুনে বুঝতে বাকি রইলো না কে এটা।লিমা ফোন করেছে।কিন্তু নাম্বার পেলো কোথায় হয়তো জান্নাতের কাছ থেকে নিয়েছে।
আমি: কে আপনি..??
লিমা: বাসায় আসবেন কখন..??আর এত রাতে বাইরে কি করেন..??
আমি: আমি কি করি না করি সেটা আমার ব্যাপার ফোন রাখ।
কিছু বলার আগেই কেটে দিলাম।কয়েকবার ফোন করলো কেটে দিয়েছি শুধু।
ইচ্ছা করে আরো দেরি করে বাসায় আসলাম।তখন রাত ১২ টা ছুই ছুই।কলিং বেল বাজালাম।সাথে সাথে দরজা খুলে গেলো।লিমা মনে হয় দরজার সাথেই ছিলো।
লিমা: এতক্ষণ কোথায় ছিলেন.? আপনার জন্য আমার কত চিন্তা হচ্ছিলো জানেন,,,
আমি: তোকে অত চিন্তা করতে বলেছে কে.??
লিমা: আপনি আমার স্বামী সে হিসেবে তো চিন্তা হতেই পারে।
আমি: দরকার নেই।আমার জন্য কাউকে চিন্তা করতে হবে না,,,
লিমা: আচ্ছা ঠিক আছে।টেবিলে আসুন খাবার দিচ্ছি।
আমি: বাইরে খেয়ে এসেছি।
আর কিছু না বলে বিছানায় ধপ করে শুয়ে পরলাম। বুকের উপর ভারি কিছু অনুভব করলাম।দেখি লিমা।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ২ টা বাজে। কিছু বললাম না।যেহেতু লিমা ঘুমিয়ে পড়েছে ঘুমাক না সমস্যা কোথায়.?

আর কিছু না বলে বিছানায় ধপ করে শুয়ে পরলাম।ঘুম ভাঙার পর বুকের উপর ভারি কিছু অনুভব করলাম।দেখি লিমা।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ২ টা বাজে। কিছু বললাম না।যেহেতু লিমা ঘুমিয়ে পড়েছে ঘুমাক না সমস্যা কোথায়.?
সকালে লিমার ডাকে ঘুম ভাঙলো।কিন্তু আমি হাত পা নাড়াতে পারছি না।কি হলো প্যারালাইজড হয়ে গেলাম না কি।ওহ শিট।
ওহ নো আমার হাত পা তো দড়ি দিয়ে বাঁধা।লিমার দিকে তাকিয়ে দেখি হাতে লাঠি নিয়ে দাড়িয়ে আছে।আমি ওর দিকে তাকাতেই দিলো একটা মাইর।
আমি: আহ্হ্ লিমা করছো কি এসব.?
লিমা: তোর ঢং আমি ছুটাবো।
আমি: এই এই ঢং মানে কি হ্যাঁ। কি ঢং করলাম।
লিমা: কী করিস নি সেটা বল।আমাকে কত্তগুলো চড় মেরেছিস।আবার কষ্ট দিয়েছিস।সোফায় ঘুমাতে দিয়েছিস।
আমি: এই মেয়ে তুই বুঝি কম করেছিস..?
লিমা: আমার সাথে তুই তোকারি।দারা।
আমি: লিমা প্লিজ আর মেরো না।সরি। সরি।এক বস্তা সরি প্লিজ মেরো না।আমি তোমার হাজবেন্ড আর এভাবে আমাকে মারতে পারছো।
লিমা: হ্যাঁ আমি সব পারি।কি ভেবেছিলি হ্যাঁ। তোর কাছ থেকে ভালোবাসা চেয়েছিলাম আর নরম ব্যাবহার করেছি বলে আমার আগের ক্যারেক্টার ভুলে যাব।কলেজ লাইফে কতগুলো ছেলেকে যে এ রকম পিটাইছি তার কোনো হিসাব নেই।ওদের তুলনায় তুই তো বাচ্ছা ছেলে।
আমি: আচ্ছা ওইসব বাদ দাও। আমাকে তো মারলে।এখন বাঁধন খুলে দাও।
লিমা: বাঁধন খুলবো এক শর্তে।।
আমি: কী শর্ত..?
লিমা: আমাকে এই মুহূর্তে খুব সুন্দর করে প্রোফোজ করবি।
আমি: পারবো না।
লিমা: এইটা কি দেখেছিস..?(লাঠি দেখিয়ে)
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে করবো।কিন্তু কোনো তো গিফ্ট লাগবে প্রোফোজ করতে গেলে।তো এখন গিফ্ট পাব কোথায়.??
লিমা: গিফ্ট লাগবে না।এমনিতেই প্রোফোজ কর।(শুধু হাতের বাঁধন খুলে দিলো)
আমি: আচ্ছা।হাত বাড়াও।
লিমা: হুম বাড়ালাম।
আমি লিমার হাতে টাচ করে বললাম “আই লাভ ইউ”
লিমা: এইটা প্রোফোজ করলি..??
আমি: তো কী,,,.??
লিমা: মাইর……….
আমি: হইছে থাক আর বলা লাগবে না।
এবার লিমার হাত ধরে বললাম “আমি তোমাকে ভালোবাসি”
লিমা: এইটা প্রোফোজ..??
আমি: তো কি.??
লিমা: হারামি সিনেমা দেখিস না।সেই সিনেমার নায়কের মতো প্রফোজ কর।
আমি: ওই রকম পারি না তো,,,,
লিমা: করবি না কি খুন করে ফেলবো। (গলা চেপে ধরে)
আমি: আচ্ছা করছি মেরে ফেলবে না কি।
লিমা: প্রোয়োজন হলে তাই করবো।নে তাড়াতাড়ি প্রোফোজ কর,,,
আমি লিমার শাড়ির আঁচল টান দিয়ে কিছুটা হাতে নিয়ে বললাম,,
আমি: নেও আগে আমার হাতটা এই শাড়ির আঁচলে বেঁধে দাও।
লিমা হাতটা বাঁধলো।আমি হাটু গেরে হাতে হাত রেখে বললাম,,
“সারাজীবন তোর এই শাড়ির আঁচলে আমার হাতটা বেঁধে রাখবি..? যদি কোথাও হারিয়ে যাই তাহলে তোর এই বাঁধনের টানে চলে আসবো তোর কাছে। আর তুই যদি কোথাও হারিয়ে যাস তাহলে আমিও ঠিক একই কাজ করবো।মানে টান দেব আর এভাবে কাছে চলে আসবি”
শাড়ির আঁচল দিলাম টান।আর লিমা সরাসরি আমার বুকে।অতঃপর আমি ইচ্ছা করেই ওকে নিয়ে বিছানায় পড়ে গেলাম।
আমি: কি হলো কিছু বললে না যে..?
লিমা: কি বলবো..??(বুকে মাথা রেখে)
আমি: এতক্ষণ প্রোফোজ করতে বললে এখন তো করলাম তার উত্তর কই..??
লিমা: খুঁজে নাও.?
আমি: পারি না,,,
লিমা: তাহলে মুড়ি খা।ওঠ অনেক বেলা হয়েছে,,,,
আমি: নাহ্।এখন উঠবো না।এখন এই রাগি বউটার সাথে রোমান্স করবো।
লিমা: তোর রোমান্স ছুটাচ্ছি।
লিমা উঠে যাচ্ছিলো।কিন্তু আমি আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।তাই লিমা উঠতে না পেরে আমার বুকে মারতে থাকলো।কিন্তু আমার মাথায় শুধু দুষ্টামি বুদ্ধিই ঘুরছিলো।তাই লিমাকে আমার নিচে ফেলে দিলাম।
আমি: এখন ছুটাছুটি করো তো কেমন পারো..??
লিমা: আহ্হ ব্যাথা পাচ্ছি তো।
আমি: নো এখন তো ছাড়বো না।আজকে বাসর করেই ছিড়বো,,,, বাসর তো করতে পারি নি।
লিমা: হুহ্ সখ কত।একবার শুধু ছেড়ে দে।একেবারে সাত জনম আর কাউকে চিনতে পারবি না।
আমি: তাহলে তো আমার ইচ্ছাটা এখনই পূর্ন করে নিতে হবে।
লিমা কিছু বলার আগেই।লিমার ঠোটে আমার ঠোট মিলিয়ে দিলাম।মনের ভিতর অন্য রকম একটা অনুভূতি হচ্ছে যেটা আগে কখনই হয় নি।আমি যেন লিমার মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি।
হঠাৎ দরজায় জান্নাত এসে ডাকতে লাগলো,,, মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো।ধুর এসময়ই কি তোকে আসা লাগে পেত্নি কোথাকার।একটু রোমান্স করেও শান্তি নাই।আর এ দিকে লিমা মিট মিট করে হাসছে।
আমি: যাও লিমা গিয়ে দরজা খুলে দাও।
লিমা: পারবো না।তুমিই যাও।
আমি শুধু একটা রাগী দৃষ্টিতে তাকালাম।কিন্তু লিমা ভেংচি কেটে দিলো।ইচ্ছে করছে আবারো কিস করে দেই।কিন্তু জান্নাত দরজায় তাই কিছু বললাম না।
দরজা খুলে দিলাম.
জান্নাত: ভাইয়া তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো।ভাবিকেও নিয়ে এসো।কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
আমি: ওকে।
তারপর লিমা আর আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলাম।আব্বু আম্ম সবাই এক সাথে নাস্তা করতেছি।
আম্মু: জীবন?
আমি: হ্যাঁ আম্মু বলো…..
আম্মু: তোর মামাতো ভাই রাইয়ান এর বিয়ে।আগামী শুক্রবার।
আমি: তো…??
আম্মু: তো মানে আমাদের সবাইকে যেতে বলেছে।
আমি: তাহলে চলো যাই।
আম্মু: কিন্তু তিন দিন আগেই যেতে বলেছে।
আমি: আরো ভালো।
আম্মু: কিন্তু তোর চাকরী আর তোর আব্বুর ব্যাবসার কি হবে।
আমি: আমার চাকরীর কথা বাদ দাও।কারনটা বলা লাগবে না।আর আমি জান্নাত আর লিমা নাহয় আগে যাব।তারপর তোমরা এসো।
আম্মু: আচ্ছা ঠিক আছে।
আমি: হুম।
তারপর খাওয়া দাওয়া সেরে রুমে আসলাম।তারপর লিমা আর জান্নাত আসলো।লিমা আর জান্নাত আমার সাথে একটা প্ল্যানিং করলো বিয়েতে কে কি করবে আর পড়বে।আর আমি শুধু বললাম বিয়েরদিন আমি যেটা পছন্দ করবো ওটাই পড়তে হবে।কারন আমি তো লিমার জন্য একটা নীল শাড়ি কিনে রেখেছি।কিন্তু জান্নাত ওকেও তো দেয়া লাগবে তিনজনই একই কালার পোষাক পড়বো।
তারপর কিছুক্ষণ পর মার্কেট এ গিয়ে জান্নাত এর জন্যও একটা শাড়ি কিনে লুকিয়ে রাখলাম।
আজকে অফিস না গিয়ে আমার শশুর মশাইকে ফোন করে বললাম যে কয়েকদিন যেতে পারবো না।দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র জামাই আমি।আমার কথা কি ফেলতে পারে।
রুমে একা একা বসে আছি।লিমার অপেক্ষায়।কিন্তু আসছে না।তাই জান্নাতের রুমে গেলাম ওখানেও নেই।তাই ছাদে গেলাম।কি যেন গল্প করছে আমাকে দেখে দুজনই রেগে গেলো।তাই ভয়ে চলে আসলাম।কারন ওইখানে থাকা আর মৌমাছির বাসায় ঢিল ছুড়া একই কথা।
তাই ছাদ থেকে নেমে আসলাম।নেমে এসে বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে আসলাম।
ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট করে জানান,

ছাদ থেকে নেমে আসলাম।নেমে এসে বাইরে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে আসলাম।
আড্ডা দিতে দিতে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলো।তবুও আড্ডা দেওয়া শেষই হচ্ছে না।তখনই মিস রাগী বউ এর ফোন।
লিমা: হ্যালো বাবু কোথায় তুমি?
মাইরালা।এ আবার এত সুন্দর করে বলতেছে কেন।ডাল মে কুচ কালা হে।
আমি: এইতো জান আড্ডা দিচ্ছি ফ্রেন্ডদের সাথে।
লিমা: তাই বাবু.?
আমি: হুম।
লিমা: কখন আসবা বাবু..??
আমি: এইতো বাবুনি এখনই,,,
লিমা: ওহ তাই,, চলে এসো বাবু।আজকে না তোমার মামার বাসায় যাওয়ার কথা।
আমি: ওহ তাইতো আসছি।
লিমা: কুত্তা আয় তারাতারি নয়তো তোর নাম ভুলিয়ে দেব।
আমি: ওরে বাপরে।মারডালা।আসছি।
বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসার দিকে আসছি।বাসার দরজায় আসার সাথে সাথেই উপড় থেকে ফ্রিজের পানি গায়ে পড়লো।
আমি: ওয়ে কোন শালায় পানি দিলি রে..??
লিমা: কিহ্ আমি তোর শালা।দাড়া ভেতরে আয় দেখাচ্ছি মজা।
ভয়ে দৌড় দিতে যাব।কিন্তু আমি তো কাক ভেজা।কিভাবে পালাবো।লোকে দেখলে তো পাগলা ভাববে।
লিমা দরজা খুলার পর আমার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে গেলো।
লিমা: আমি তোর শালা।আর তুই আমার দুলাভাই তাই না.?
আমি: আরে দুর এইটা কি বলো।আমাকে যে পানি দিছে তাকে বলেছি।
লিমা: পানি আমি দিছি।যদি অন্য কোনো ছেলে দিত তাও শালা বলতে।তার মানে তুমি একটা লুইচ্ছা।শালা বলো সব সময়।মেয়েদের বউ ভাবো।(ভ্যাএ্যাএ্যা ন্যাকা কাঁন্না)
আমি: ধুর এইসব ঢং বাদ দেও।আর আমি কোনো লুইচ্ছা নই বুঝছো।
লিমা: কি বললি? আমি ঢং করি।তবে রে।
লিমা এসে মারতে থাকলো।মাইরের ঠ্যালায় পড়ে গেলাম লিমার উপর।অঃতপর দুজনই সোফায় পড়ে গেলাম।
আমি লিমার দিকে অপলকভাবে তাকিয়ে আছি।কি মায়াবি চেহারা।চোখ তার টানা টানা।গাল দুটো বাচ্ছাদের মতো।ঠোট তো ওহ নো যেন ফুটন্ত গোলাপ।ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।কিন্তু পারছি না।কারন ছুঁয়ে দিলে আর দেখতে পারবো না।
লিমা টের পায় যে আমি ওর দিকে তাকিয়ে আছি।তাই মারা বন্ধ করে ও নিজেও আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আর আমি যে ভেজা কাপড়ে আছি তা দুজনের কারই মনে নেই।
এই সময় আমাদের দুজনের মাঝে স্বপ্নরা এসে ভিড় জমাচ্ছে।যেন স্বপ্নঘুড়ি উড়াচ্ছি দুজন দুজনার আকাশে।চোখে চোখে কথা হচ্ছে মুখে শব্দ নেই।এখানে শুধু নিরবতা আর আমরা দুজন দুজনের ভাবনায় হারিয়ে গেছি।আমি ভাবছি লিমার সৌন্দর্য নিয়ে।কিন্তু লিমা কি ভাবছে সেটা জানি না।কিন্তু দিনের আলোয় আমাকে একটা কাছে থেকে দেখে অনেকটাই অবাক হয়েছে।
এভাবে আরো দশ মিনিট কেটে যায়।
ঠিক তখনই আমাদের ভাবনায় ছেদ পড়লো পানি পড়ে।উপড় নিচ সবখানে তাকাচ্ছি।হঠাৎ চোখ পড়লো দরজার দিকে।জান্নাত মিট মিট করে হাসতেছে।
আমি: এদিকে আয়তো আপু।
জান্নাত: না যাবনা।জানি তুমি আমাকে মারবা যদি তোমার কাছে যাই।
আমি: যদি না আসিস সারপ্রাইজ পাবি না।আর আসলে সারপ্রাইজ পাবি।
জান্নাত: হুহ লাগবে না তোর সারপ্রাইজ(ভেংচি কেটে চলে গেলো।)
পেত্নি তোকে কাছে পেলে কি যে করতাম তার কোনো ঠিক নেই।
এদিকে লিমার দিকে তাকিয়ে দেখি লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।আমি আবারও ওর ভাবনায় ডুবে যাচ্ছি।
লিমা: ও হ্যালো।এই ভেজা কাপড়ে কতক্ষন থাকবে।যাও ফ্রেশ হয়ে এসো।
আমি: তুমি যাও আগে তারপর আমি যাচ্ছি।
লিমা: আমি যেতে বলছি যাবা ব্যাস।
আমি: না তা তো হবে না।চলো এক কাজ করি দুজনই একসাথে যাই।
লিমা: হোয়াট পাগল হলে না কি.?
আমি: হুম অবশ্যই চলো চলো।
লিমা: না যাব না।
আমি: ওকে।
অতঃপর লিমাকে কোলে তুলে নিয়ে গেলাম বাথরুমে।সাথে সাথে পানি ছেড়ে দিলাম।দুজনই ভিজে একাকার।
লিমাকে ভেজা কাপড়ে দেখতে Awesome লাগতেছে।
তাই নিজেকে কন্ট্রল করতে পারছি না।আমি আস্তে আস্তে লিমার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।লিমা পেছনে যেতেই দেওয়ালের সাথে ধাঁক্কা খায়। লিমা লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।ঠোট গুলো কাপতেছে।
আমি যতই কাছে যাচ্ছি ততই আমারও হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে।লিমা হাত দিয়ে আমাকে বাঁধা দিচ্ছিলো।আমি লিমার হাত দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলাম।
লিমার কপালে আমার কপাল রাখলাম।নাকে নাক ঘষা দিলাম।দুজনেরই নিশ্বাস ঘন হয়ে আসছে।আলতো করে লিমার ঠোটে কিস করে দিলাম। তারপর একদম দশ মিনিট পর লিমা ধাঁক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো দুজনই হাপাচ্ছি।
লিমা: এরকম কেউ..??
আমি: কেউ না করলেও আমি করি।
লিমা: হয়েছে এবার ফ্রেশ হও তারাতারি।অনেকদিন কারো বিয়ে খেতে যাই নি।
আমি: ওকে জান।
তারপর ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হলাম।লিমা শার্ট প্যান্ট গুলো পরিষ্কার করলো।ওয়াশিং মেশিন আছে বাট তবুও ও হাত দিয়েই পরিষ্কার করবে।
আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফেসবুকে আড্ডা দিচ্ছিলাম।আর লিমা আয়নার সামনে বসে সাঁজছিলো।আমি চোখ ফেরাতেই পারছি না।হাল্কা মেকাপ।ভেজা খোলা চুল।হাল্কা লিপ স্টিক।আমি তো পাগল হয়ে যাচ্ছি।
তাই লিমার কাছে গিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে আলতো চুমু দিলাম।
সাথে সাথেই ঝাড়ি।
লিমা: আবার আসছো।
আমি: হুম।তোমার টানে চলে আসলাম।কি নেশা ছাড়ালে।কি মায়ায় জড়ালে।একা যে থাকতেই পারছি না।
লিমা: এবার কিন্তু ভালো হবে না বলে দিলাম।এখনও সব কিছু গোছানো বাকি আছে।
আমি: থাকুক সমস্যা কোথায়.?
লিমা: সমস্যা কোথায় মানে দাড়া।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে তোমার কিছু করা লাগবে না।আমিই যাচ্ছি।
কি বউ পাইলাম।একটু আদরও করতে পারি না।ধুর।

কি বউ পাইলাম।একটু আদরও করতে পারি না।ধুর।
রাগ হয়ে রুম থেকে বের হয়ে সোজা ছাদে চলে গেলাম। ছাদে দাড়িয়ে আছি।পেছন থেকে জান্নাত বললো,,,,
জান্নাত: ভাইয়া এখানে কি করতেছো?ভাবি তোমাকে ডাকতেছে যাও।
আমি: কেন.??
জান্নাত: আমাকে বললো না কি..??
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে।
অনেক বিরক্তি নিয়ে রুমে আসলাম।,,
লিমা: কোথায় গিয়েছিলে..??
আমি: চাঁদে গেছিলাম।
লিমা: ফাইজলামি বাদ দেও।আর তোমার কি কি লাগবে বলো আমি গুছিয়ে নিচ্ছি।জান্নাত আর আমার সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছি।
আমি: আমার সব কিছু আলাদাভাবে তোমার আগেই গুছিয়ে রেখেছি।
লিমা: তাই না কি,,, গুড বয়।
আমি: হুহ্।আচ্ছা এই সন্ধ্যায় যাব কিভাবে.??
লিমা: আব্বুকে ফোন করে গাড়ি আনতে বলি।
আমি: ওকে।শশুড়ের গাড়িতে জামাই চড়বে না তো কে চড়বে..??
গাড়ি নিয়ে আসতে আরো ১ ঘন্টা চলে গেলো।এখন বাঁজে ৬ টা ৩০ মিনিট।মামার বাসায় যেতে ৩ ঘন্টা তো নিশ্চিত লাগবে।লিমাদের ড্রাইভারকে নামিয়ে দিয়ে আমি ড্রাইভ করতে লাগলাম।লিমা সামনে বসলো জান্নাতকে আমার ফোন দিলাম।ইচ্ছা মতো গেম খেলতেছে।
লিমা: তুমি ড্রাইভও শিখেছো..??
আমি: হুম।আগে আমি রেসিং এ জোগ করতাম।অনেকবার ফার্স্টও হয়েছি।
লিমা: ও তাই..?
আমি: হুম।দেখবা ওভার স্পিডে ড্রাইভ করবো..??
লিমা: না না দরকার নেই।
আমি: না দরকার আছে।আমি যেসব বললাম তোমার বিশ্বাস হয় নি।ওয়েট।
তারাপর ওভার স্পিডে ড্রাইভ করলাম প্রায় আধা ঘন্টার মতো।লিমা আর জান্নাত তো প্রায় কাঁদার অবস্থা।কারন অত স্পিডে চলা গাড়িতে কোনোদিন কোথাও যায় নি ওরা।
লিমা: কুত্তা গাড়ি থামা।
জান্নাত: হ্যাঁ এখনই গাড়ি দাড় করা।
আমি: কেন.?
লিমা: দরকার আছে।
আমি: অকারনে গাড়ি থামাবো না।
লিমা: আমার দরকার আছে গাড়ি থামা বলতেছি।
আমি: ওকে।
আমি যখনই গাড়ি থামালাম ঠিক তখনই হান্নাত চুল ছিড়তেছে।আর লিমা মারতেছে।কেমন ডা লাগে।
অনেক কষ্টে ওদের থামালাম।
তারপর আবার গাড়ি চালাতে শুরু করলাম।গরুর গাড়ির মতো।
তিন ঘন্টার রাস্তা ৪ ঘন্টা লাগলো।
মামার বাসায় আসার পর মামা মামি আমাদের দেখে প্রচন্ড খুশি হয়োছেন রেষ্ট নেওয়ার জন্য আমাদের একটা রুম দেখিয়ে দিলেন। জান্নাত মামাতো বোনদের কাছে চলে গেলো।আর ও ওদের সাথেই থাকবে। দুইটা মামা এক সাথেই থাকে।তাই বাড়িটাও বেশ বড়।লিমা রুমে গেলো।আমি আরো কিছুক্ষণ গল্প করে রুমে চলে আসলাম।
এসে দেখি লিমা শুয়ে আছে।একটু মজা করা দরকার ওর সাথে,,,,
তাই আমিও বিছানায় একদম লিমার উপর শুয়ে পড়লাম।
লিমা: আহ্হ্ কি করছো কি।আরে কেউ দেখে ফেলবে তো,,
আমি: নো নো এইখানে কেউই আসবে না।
লিমা: আমি কিন্তু চিৎকার করবো।
আমি: হাহা করো না চিৎকার।আরো বেশি করে চিৎকার করো সমস্যা নেই।আর এইখানে এসে যদি চিৎকার করো তাইলে বাইরে বের হবে কি করে।
লিমা: তোকে যে কি করবো।ছাড় বলছি।
লিমা আমাকে ধাঁক্কা দেওয়ার চেষ্টা করতেছে।কিন্তু ততক্ষণে আমি ওর হাত বিছানার সাথে চেপে ধরেছি।কিন্তু হঠাৎ লিমা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে দিলো।আমি তো ব্লাশিং হচ্ছি।
লিমা ই আমাকে জড়িয়ে ধরে কিস করতে থাকলো।বুঝলাম না।দুই তিন মিনিট পর লিমা আমাকে ধাঁক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে চলে গেল।তাই তো বলি হঠাৎ ওই রকম করলো কেন।
আমি: তুমি এইটা ঠিক করলানা লিমা।
লিমা: বেশ করেছি।
আমি: ওকে ফাইন দেখিও এই বিয়ে বাড়িতে কি কি করি।
লিমা: কি কি মানে.??
আমি: এইখানে দু চারটা মেয়ে পটাবো রোমান্স করার জন্য।
লিমা: এহ যেইনা চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা।উনি মেয়ে পটাবেন হুহ্।
আমি: ওহ আচ্ছা তাহলে চলো মামাতো বোন গুলার কাছে যাই তাহলেই বুঝতে পারবা।
লিমা: ওকে আমি বুঝতেই চাই চল।
আমি: জ্বলতেছো কেন.??
লিমা: হোয়াট আমার ঠ্যাকা পরছে।যত্তসব।
আমি: ওকে ফাইন।চলো এবার।
যেখানে জান্নাতেরা গল্প করতেছে ওইখানে গেলাম।কারন ওইখানে চারটা মামাতো বোনের মধ্যে তিনটাই ক্রাশ খাইছিলো।তাই আমি আসতাম না এইখানে।আসলেই আমাকে নিয়ে কেলোর কির্তি করে ফেলতো।আর ওদের চারজনের সবার বড়টা তো জান ছাড়া কথাই বলে না।(বিদ্র জাস্ট গল্পে এইসব প্রসংশা।বাস্তব জীবনের সাথে মিলাবেন না প্লিজ)
ওদের কাছে যাওয়ার পর।মামাতো বোন তিথি বললো,,,
তিথি: জানু তুমি বিয়ে করে নিলে ছিঁ ছিঁ। আমার এতদিনের ভালোবাসা বুঝলে না তুমি।আমি আর বাঁচতে চাইনা।
আরেকটা: তোর ভালোবাসা কেন বুঝতে যাবে।ও তো আমার সাথে তিন বছর রিলেশন করলো।এভাবে ঠকালে তুমি আমাকে জীবন।
আরেকটা তো সরাসরি বললো যে আমাদের না কি অনেক কিছুই হয়ে গেছিলো।
এইসব শুনে লিমা ইজ ফায়ার।মানে আগুন। চোখ লাল করে আমার দিকে তাকালো।তারপর রুমে চলে গেলো। আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম।এই মেয়ে যে কি করবে আমাকে তার কোনো ঠিক নাই।তবে নিশ্চই কপালে দুঃখ আছে।
তারপর আমিও রুমে চলে আসলাম লিমার কাছে।
রুমে গিয়ে দেখি লিমা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।
আমি: কি হলো লিমা ওভাবে চলে এসে আবার এ রকম ভাবে বসে আছ কেন।
লিমা:…….(নিশ্চুপ)
আমি: ও হ্যালো কালা হলে না কি..??
লিমা:…….(নিশ্চুপ)
আমি ওর কাঁধে হাত রেখে বললাম।
আমি: আরে ওরা তো আমার সাথে মজা করছিলো।তুমি ওভার রিয়েক্ট করছো কেন..??
লিমা: ওভার রিয়েক্ট না।আমি বুঝতে পেরেছি সব ছেলেরাই এক।ঘুমাবো সর।
আমি: আহা রাগ করে থাকলে হবে..? মামা মামি কি বলবে বলো।
লিমা: কি বলবে বলুক তাতে আমার কি।
আমি: আর সব ছেলেরা এক মানে.??
লিমা: অত মানে বুঝতে হবে না।
মেয়ে মানুষ বড়ই অদ্ভুত।ওকে কি বোঝাতে চাইলাম আর ও উল্টো বুঝে এখন মন খারাপ করে আছে।

মেয়ে মানুষ বড়ই অদ্ভুত।ওকে কি বোঝাতে চাইলাম আর ও উল্টো বুঝে এখন মন খারাপ করে আছে।
জান্নাত এসে ডিনার করার জন্য বলে গেলো।তাই লিমা আর আমি দুজনই খেতে চলে গেলাম।লিমা আমার পাশে।তাই চুপি চুপি কিছু মাংস আমার প্লেট থেকে ওর প্লেটে দিচ্ছি।লিমা আছে গল্পের ধান্দায় তাই বু্ঝতেছে না।কিন্তু জান্নাতের দিকে তাকিয়ে দেখি ও মুচকি মুচকি হাসতেছে।তারমমানে এই পেত্নি সব দেখে ফেলেছে।একটা অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম।
তাই তারাতারি খেয়ে রুমে এসে শুয়ে রইলাম।ফোন চার্জ দেওয়ার ব্যাবস্থা দেখি মাথার কাছেই।ফোনে চার্জ ছিলো না।ফোন চার্জে দিয়ে ফেসবুকে ঘুরাঘুরি করছি।
লিমা রুমে আসলো,, এসেই শুয়ে পড়লো অন্যদিকে মুখ করে।আর ও ফোনে ফেসবুকই চালাচ্ছে মনে হয়। ওর ফোনের দিকে তাকিয়ে ওর প্রোফাইল নাম দেখার চেষ্টা করতেছি। তখন ও নিজেই প্রোফাইলে যায়।নাম প্রোফাইল পিকচার সবই দেখে ফেলি।তারপর আগে আমি মেসেঞ্জারে গেলাম যদি ফ্রেন্ডলিস্ট এ থাকে অবশ্যই এ্যাক্টিভ দেখাবে।নয়তো সার্চ করবো।
মেসেঞ্জারে গিয়ে দেখি নামটা সবার উপরে।মেসেজ দিলাম,,,,
আমি: ওই তোমার তো সাহস কম না।এত রাতে ফেবুতে কি..??
লিমা: কেন? আপনাকে বলতে হবে না কি.??আর এখানে সাহসের কি দেখলেন.?
আমি: না মানে এমনি।তোমার কি ভুতের ভয় করছে না..??
লিমা: হিহিহিহি” আমি কি এখনো ছোট না কি..??
আমি: ওমা তাই।আপনি তাহলে বড় হয়ে গেছেন।
লিমা: হুম।
আমি: ওকে গুড নাইট।
আর কোনো মেসেজ দিলাম না।লিমা ফোন রেখে দিছে তাই।কিছুক্ষণ পর লিমাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
কিন্তু লিমা বিদ্যুৎ গতিতে লাফিয়ে উঠে পড়েছে।
আমি: কি হলো তোমার।আমি ধরেছি তোমাকে।
লিমা: এই ভুল দ্বিতীয় বার করলে ভুলে যাব যে আমরা আত্মীয়ের বাসায় আছি।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে ঘুমিয়ে পড়ো।আর কিছু করবো না।
লিমা: মনে থাকে যেন,,,,,
সকালে জান্নাতের ডাকে ঘুম ভাংলো।ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে আছি।লিমা চা নিয়ে আসলো।হলুদ শাড়ি পড়েছে। লিমার মেকাপ প্রয়োজন হয় না।তবুও হাল্কা মেকাপ সাথে হাল্কা লিপস্টিক। ওয়াও আমি তো ক্রাশ খাচ্ছি।আসলেই অপরুপ লাগছে লিমাকে।লিমা চা রেখে চলে যাচ্ছিলো হাত টেনে ধরলাম।
আমি: চা কে বানিয়েছে.??
লিমা: তোর জন্য আমি বানিয়েছি।
আমি: সত্তিই..??
লিমা: হুম।
আমি: তাহলে তুমি আগে চুমুক দেও চায়ে তারপর আমি।
লিমা: কেন…??
আমি: এটা আমার একটা ইচ্ছা।প্রতিদিন বউয়ের সাথে চা শেয়ার করে খাব।
লিমা: ধুর এইসব ঢং ভালো লাগে না,,,
আমি লিমাকে টান দিয়ে বিছানায় আমার উপর ফেলে দিলাম।
আমি: চা খাবা না কি তোমার লিপস্টিক খেয়ে ফেলবো..??
লিমা: তুমি এত নির্লজ্জ কেন..??
আমি: লজ্জা কবে ছিলো আমার..??
লিমা: ধুর তোকে চা দিতে আসাটাই ভুল হয়েছে আমার।
আমি: ওকে তাহলে আরেকটা ভুল করো।চায়ে চুমুক দাও।
লিমা: ওকে।
লিমা চোখ বন্ধ করে চায়ে চুমুক দিচ্ছে। চুমুক দেওয়ার সাথে সাথেই ওয়াক থু করে চায়ের কাপ সহ ফেলে দিলো।আমি জানতাম এটাই করবে।
লিমা আমাকে মারতে থাকলো।কারন ওর নিম পাতার চা ওকেই খাওয়ালাম হাহাহা।
লিমা: ভ্যাঁএ্যাঁএ্যাঁ তোর জন্য আমি নিম পাতা খাইলাম।
আমি: আমাকে খাওয়াতে গেলে এমনই হবে।চায়ে যে নিম পাতার টুকরা ছিলো সেটা সরাওনি কেন.?
লিমা: ধুর থাকবো না আর তোর সামনে।
আমি: হাহাহাহাহাহা
লিমা: ওই একদম হাসবি না।খুন করে ফেলবো।
আমি: ওকে ওকে।
গায়ে হলুদ অনুষ্টান চলতেছে।আর আমি মেয়েদের দিকে তাকিয়ে আছে।একটা মেয়েকে দেখে খুবই সুন্দর লাগলো।ভাবলাম ওর কাছে গিয়ে কথা বলি।পা বাড়ালাম কিন্তু আমার শার্ট পেছন থেকে টেনে ধরে আছে কেউ। পেছনে ঘুরে দেখি লিমা।
আমাকে তো শেষ করে দেবে।এখন কি করি হুম বুদ্ধি পেয়েছি।লিমা আমাকে রুমে নিয়ে গেলো।
রুমে যাওয়ার পর বুকের বাম পাশে হাত দিয়ে বিছানায় পড়ে গেলাম।যাতে মনে করে হার্ট এ্যাটাক।আর আমি দম বন্ধ করে রাখলাম।
লিমা আমার নাকে হাত দিয়ে দেখে শ্বাস চলছে না।তাই বুকে চাপ দিতে থাকে। কারন বাইরে অনুষ্টান চলতেছে।চাপ দেওয়ার সময় আস্তে করে একটা শ্বাস নিয়ে আবার বন্ধ করে রাখলাম।লিমা আমার মুখে যখন ফু দেয় তখন আর ধরে রাখতে পারলাম না।ওর গালে আমার নিশ্বাস পড়লো।লিমা ঠোটে ঠোট রেখেই আমার দিকে তাকালো।দেখি ওর চোখ লাল হয়ে গেছে চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।সাথে প্রচন্ড রাগ।
লিমা সরতে যাবে তখন ওকে জড়িয়ে ধরে গভির চুম্মনে হারিয়ে গেলাম।লিমা আমার বুকে মাথা রাখলো।
লিমা: আমাকে কষ্ট দাও কেন..??
আমি: ভালোবাসি তাই,,,
লিমা: ভালোবাসিস না ছাই।ছাড় আমাকে কেউ এসে পড়বে।
আমি: কেউ আসবে না আরেকটু থাকো না।
লিমা: নাহ্।
লিমা জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে বাইরে চলে গেলো।আমি শুধু তাকিয়ে আছি।
লিমা অদ্ভুত একটা মেয়ে।কখনও রাগ।কখনও অভিমান।কখনও ভালোবাসা।আমি যতই দেখছি মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি।
প্রচন্ড টান অনুভব করছি লিমার দিকে।যেন ও চুম্বক আমি লোহা।দুর থেকেই আকর্ষিত হচ্ছি।
লিমা দুরে দাড়িয়ে আছে রুমের দরজা দিয়েই লিমাকে দেখা যাচ্ছে।ফ্লায়িং কিচ দিচ্ছি আর ও রেগে লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।

লিমা দুরে দাড়িয়ে আছে রুমের দরজা দিয়েই লিমাকে দেখা যাচ্ছে। ফ্লায়িং কিস দিচ্ছি আর ও রেগে লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে।
ইশারায় মারতেছে খুবই মজা পাচ্ছি।মাঝে মাঝে চোখ বড় বড় করে তাকাচ্ছে।তখন দেখতে যা সুন্দর লাগতেছে না বলে বোঝাতে পারবো না।
এভাবে প্রায় বিশ মিনিট চলে গেলো।তারপর লিমা আমার কাছে আসলো,,
লিমা: সমস্যাটা কি তোমার.??
আমি: কেন কই কোনো সমস্যা নেই তো আমার।তোমার কিছু হলো না কি..??
লিমা: তুমি কি আমাকে শান্তিতে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানটাও উপভোগ করতে দিবে না, না কি কিছুই তো বুঝতে পারছি না।
আমি: যাও উপভোগ করো তাতে আমার কি।(চোখ মেরে)
লিমা: 😠😠😠 এবার কিন্তু ভালো হবে না।যদি আরেকবার বিরক্ত করিস।
আমি: হেহেহে কিছুই করতে পারবা না।
লিমা: আরেকবার বিরক্ত করে দেখিস তারপর কি করি তোকে।(গলা চেপে ধরে।)
আমি: আরে মেরে ফেলবে না কি.??
ছেড়ে দিয়ে চোখ গরম করে চলে গেলো।কি বউ মাইরি একটু রোমান্সও বুঝে না।সামান্য একটু ইয়ে করলাম দেখে এতগুলো বললো।😭😭😭
লিমাকে আর রুমের ভিতর থেকে দেখা যাচ্ছে না।তাই বাইরে বের হলাম।দেখি লিমা আর জান্নাত আমার মামাতো ভাইদের সাথে গল্প করতেছে।ওরে বাচ আমি মেয়েদের সাথে কথা বললে জ্বলে আর উনি গল্প করতেছে।দাড়া মাইয়া বুঝাচ্ছি।তাই তিথির কাছে গেলাম।কারন তিথি আমাকে মনে প্রাণে চাইতো।বাট পাত্তা দেই নাই কখনও।
আমি: হায় তিথি।কি করোস.??
তিথি: এই তো তোমার অপেক্ষায় করছিলাম।
আমি: ওও তাই না কি..??
তিথি: হুম।
অনেক হেসে হেসে কথা বলতেছি।বিভিন্ন ভঙ্গিতে।যাতে লিমা দেখে জেলাস ফিল করে।জান্নাত দেখলো আমাকে।আর ও লিমাকে ইশারায় বুঝিয়ে দিলো।লিমা আমাকে দেখে অনেক অবাক হয়েছে।আবার মুখটা মলিন করে ফেললো।লিমা কি বেশি কষ্ট পেলো না কি.???
না আমার উচিত হয় নি এসব করা।লিমা ওখান থেকে রুমে চলে গেলো।জান্নাত আমার কাছে আসলো,,,
জান্নাত: ভাইয়া, একটু এদিকে আসবা.??
আমি: হুম বল,,
জান্নাত: ভাবি কাঁন্না করতেছে মনে হয়।
আমি: কেন.? কি হলো ওর.??
জান্নাত: আমি কি জানি।যাও গিয়ে দেখো।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে দেখতেছি।
রুমে গিয়ে দেখি লিমা বালিশে মুখ গুঁজে আছে।
আমি: লিমা তুমি এভাবে শুয়ে আছো কেন..??
লিমা:…………..
আমি: কি হলো কিছু বলছো না যে,.??
লিমা:………..
লিমা কাঁধে হাত দিয়ে বললাম,,
আমি: এই লিমা কি হলো কিছু তো বলো,,,
লিমা হাত ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিলো।রাগটা হয়ত বেশিই করে ফেলেছে।তাই ওর পাশে চুপ করে বসে রইলাম। আমার ফোনের রিং বাজতেছে।স্ক্রিনে দেখি আম্মুর নাম্বার।
আমি: হ্যাঁ আম্মু বলো।আর তোমরা কবে আসবে।কালকে তো বিয়ে।
আম্মু: হ্যাঁ আমরা এখনই বের হচ্ছি তাই তোকে ফোন করলাম।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে,, সাবধানে এসো।
আম্মু: আমরা তো সাবধানে আসবো ঠিকই।কিন্তু তুই সাবধান থাকিস।আসতেছি আমি।
আমি: মানে.??হ্যালো হ্যালো,,,
আরে দুর ফোন কেটে দিলো।আম্মু কি বললো কিছুই তো বুঝতে পারছি না।আমাকে সাবধান থাকতে বললো কেন.??
লিমাও মন খারাপ করে আছে। কথা বলতে গিয়ে ঝাড়ি খেয়েছি কয়েকবার। দুপুরের খাবার শেষে আম্মু আর আব্বু আসলো।লিমা ওনাদেরকে দেখে দৌড়ে গিয়ে আম্মুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
আম্মু আমাকে লিমাকে রুমে ডেকে নিয়ে গেলো…
আম্মু: কি রে বউমা যা যা বলছে তা কি সব সত্তি..??
আমি: মানে কি কথা.? আর কি বলছে তোমাকে..??
লিমা: এখন ঢং করা হচ্ছে মনে হয় ভাঁজা মাছ উল্টে খেতে জানে না।
আম্মু: এত মিথ্যা কথা শিখলি কবে থেকে বল.?(আমার কান টেনে ধরে)
আমি: আহহহহহহ আম্মু প্লিজ ছাড়ো লাগতেছে।প্লিজ।
আম্মু: তাহলে বল বউমা যা বলছে সব সত্তি কী.??
আমি: তোমাকে কি বলছে সেটাই তো জানি না আমি।
আম্মু: তুই না কি মেয়েদের সাথে লুচ্ছামি করে বেড়াচ্ছিস।
আমি: হোয়াট।সত্তি আমি এসব করি নি।
লিমা: একদম ওর কথা বিশ্বাস করবেন না আম্মু।
আম্মু: মিথ্যেবাদী শয়তান ছেলে।
(কান মলে দিলো)
আমি: আম্মুউউউ পাগল হলে না কি।লাগতেছে তো।
লিমা: আচ্ছা তাহলে বউমাকে সরি বল।
আমি: আচ্ছা সরি।এবারতো ছাড়ো।
আম্মু: বউমা তুমি কি একে মাফ করে দিছো…??
লিমা: হ্যাঁ কিন্তু আরো দুবার কান মলে দিন।
অতঃপর আবারও কান মলা খেয়ে বিছানায় ধপ করে বসে রইলাম।আম্মু চলে গেলো রুম থেকে।
লিমা মিট মিট করে হাসতেছে।ধুর ভাল্লাগে না।বাইরে চলে আসতেছিলাম।লিমা আমার হাত টেনে ধরলো।আমার হাত ওর কোমড়ে রাখলো।
লিমা: কেমন দিলাম তোমাকে বাঁশ।
আমি: এইটা কিন্তু ঠিক করলে না লিমা।
লিমা: মেয়েদের দিকে তাকালে এ রকমই হবে।
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে তাকাবো না।কিন্তু এখন আর তোমাকে ছাড়ছি না।(চোখ মেরে)
লিমা: মামামানে.?
আমি: হাহা বুঝে নাও।
লিমা: কি বুঝবো..??
আমি: আচ্ছা আমি যদি তোমাকে একটা গিফ্ট দেই তাহলে তুমি আমাকে কি দিবা.??
লিমা: তুমি যা চাইবে তাই দেব।কিন্তু সেটা আমার কাছে থাকতে হবে।
আমি: তোমার কাছে তো অবশ্যই আছে।আর তোমার কাছ থেকে ছাড়া অন্য কারো কাছে নিব না।
লিমা: ওহ ওকে তাহলে আমার গিফ্ট দেও।
আমি: না আগে তোমার কাছ থেকে গিফ্ট নেব তারপর।
লিমাকে কিছু বলতে না দিয়ে আলতো করে কপালে।তারপর ঠোটে কিস করলাম।
তারপর জান্নাতকে ডাকলাম।ওদের দুজনকে নীল শাড়ি দুটো দিলাম। দুজনই আমাকে জড়িয়ে ধরলো।নিজেকে ছাড়িয়ে:
আমি: কালকে বিয়ের অনুষ্ঠানে তোমরা দুজন এই শাড়ি পরবা।
লিমা: হ্যাঁ আমরা তো অবশ্যই পরবো।কিন্তু তুমি কি পরবা..??
জান্নাত: হ্যাঁ তাইতো তুমি কি পরবা ভাইয়া..??
আমি আমার নীল পাঞ্জাবীটা বের করে দেখালাম।ওরা দুজনই অবাক হয়েছে।খুশিও হয়েছে কারন তিনজনই এক কালারের পোষাক পড়বো।
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

আমি আমার নীল পাঞ্জাবীটা বের করে দেখালাম।ওরা দুজনই অবাক হয়েছে।খুশিও হয়েছে কারন তিনজনই এক কালারের পোষাক পড়বো।
জান্নাত: ভাইয়া তুমি নিশ্চই আগে থেকেই প্ল্যান করে রাখছো।
আমি: হুম।
জান্নাত: বুঝেছি।
রুমের বাইরে এসে সবার সাথে বসে বসে আড্ডা দিলাম।একেবারে রাত পর্যন্ত।ডিনার করে যে যার রুমে চলে গেলাম। লিমা ফ্রেশ হতে আবার বাইরে গেল।আমি শুয়ে পড়লাম কিছুক্ষণপর রুমে আসলো।এবং আমার পাশেই শুয়ে পড়লো।
লিমাকে আস্তে করে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম।
লিমা: কি হচ্ছে এসব হুম…?
আমি: কেন কি হচ্ছে…??
লিমা: তোর কি কান্ডজ্ঞান বলতে কিছু নাই..?
আমি: কেন কি করলাম..??
লিমা: আমরা যে আত্মীয়ের বাসায় আছি সেটা কি জানিস না।
আমি: হুম জানি তো..??
লিমা: তাহলে সব সময় এসব নোংরামি করোস কেন..??
আমি: হোয়াট.? আমি আমার বউয়ের সাথে এসব করি অন্যকারো সাথে তো নয়।
লিমা: ছাড় বলছি আমাকে,,,
আমি: না ছাড়বো না।আমি আমার বউকে জড়িয়ে ধরেছি তাতে তোমার কি..??
লিমা: ও আচ্ছা তাই না দাড়া।
লিমা আমার সোজা গলা চেপে ধরলো,,,, আমার গলা দিয়ে আওয়াজই বের হচ্ছে না।দম বন্ধ হয়ে গেছিলো একদম।কোনো রকম নিজেকে ছাড়িয়ে নিলাম।
আমি: এটা তুমি কি করলে লিমা..??জানো কত ব্যাথা পাইলাম।
লিমা: তো তাতে তোমার কি? আমি আমার শ্বামীর গলা চেপে ধরেছিলাম।
আমি: আমার কথা দিয়ে আমাকেই এখন বাঁশ দিলা।ভালো।
লিমাকে কিছু না বলে অন্যদিকে মুখ করে শুয়ে রইলাম।ভালো লাগছে না তাই নির্ঘুম।শুধু চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি।লিমার দিকে তাকালাম ও খুব সুন্দর করে ঘুমিয়ে পড়েছে।ঘুমন্ত মুখটা দেখতে খুব সুন্দর লাগতেছে।অপলক তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করতেছে।ইচ্ছা করতেছে আলতো করে গাল ছুঁয়ে দেই।ঠোট ছুঁয়ে দেই।কিন্তু পারছি না।কারন যদি ঘুম ভেঙ্গে যায় আর আমাকে ওভাবে দেখে তাহলে রেগে যেতে পারে।কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়ালই নেই।
সকালে ঘুম ভাংলো ফোনের রিংটনে।দেখি লিমার ফোন বাঁজতেছে। ফোন নাম্বারটা তো আমারই।দেখি আমার ফোন নাই।তারমানে লিমা আমার ফোন দিয়ে ওর নাম্বার এ কল করেছে।রিসিভ না করে কেটে দিলাম।আবার মেসেজ দিলো,,,
””’আমার ফোন নিয়ে ফেসবুকে যাও তো, লগ ইন করাই আছে””
স্ক্রিন লক পাচওয়ার্ড ও দিছে।পাচওয়ার্ড মেসেজ এ দিলো।তারপর গেলাম ফেবুতে।
প্রথমে একটা পোষ্ট দেখতে পেলাম।আমার আর লিমার বিয়ের স্ট্যাটাস। প্রায় একশ মেয়ে স্যাড রিয়েক্ট দিছে।কিন্তু আমার ফেবু পাচওয়ার্ড পেলো কিভাবে.?
ফেসবুকে মেসেজ দিলো।
মেসেজ ওপেন করে দেখি একটা পিকচার সেন্ড করেছে। আমি ঘুমিয়ে আছি আর লিমা সেল্ফি তুলেছে। আমি এ্যাংরি ইমুজি দিলাম।
কিছুক্ষণপর লিমা আবারও একটা পিকচার সেন্ড করলো।
ওটাতে দেখি লিমা আমার দেওয়া নীল শাড়িটা পড়েছে।আমি তো চমকে গেলাম।মেসেজ দিলাম।
আমি: ওয়াও একদম পরীর মত লাগতেছে তোমাকে।
লিমা: ও তাই..?
আমি: হুম।একবার আমার সামনে আসবা প্লিজ।
লিমা: কেন..?
আমি: না মানে একটু দেখতাম আর কি।
লিমা: পিকচার তো দিলাম।
আমি: নাহ্ সামনা সামনিই দেখতে চাই,,,,
লিমা: আচ্ছা আসতেছি ওয়েট।
আমি: ওকে।
কিছুক্ষণপর লিমা আসলো কিন্তু নীল শাড়ি পড়া নাই।
আমি: কি হলো লিমা তুমি শাড়িটা খুললে কেন..??
লিমা: মানুষ দেখবে তাই….
আমি: কিন্তু আমি যে দেখতে চাইলাম।
লিমা: পড়ে দেইখো যখন শাড়িটা পড়ে বউ আনতে যাব।
আমি: ওকে😥😥
লিমা: মন খারাপ করেছো বুঝি..??
আমি: নাহ্।
লিমা: তাহলে ওই রকম করে আছে কেন মুখটা..??
আমি: কই কি করে রাখছি।
লিমা: তুমি কি নিজের মুখটা দেখেছো আজকে আয়নায়..??
আমি: দেখতে হবে কেন..??
লিমা: যাও দেখো তারপর বলো,,,,
আয়নার সামনে গিয়ে তো চমকে উঠলাম।নিজেকেই চিনতে পারছি না।কারন দেখি আমার সারা মুখে লিপ স্টিক এর দাগ।তারমানে লিমা রিতে ঠোটে লিপস্টিক দিয়ে আমার এই হাল করেছে।দাড়াও দেখাচ্ছি মজা আমিও।
লিমার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকালাম।লিমা ভেংচি কেটে চলে যাচ্ছে।তাই ওর কাছে গিয়ে হাত টেনে ধরলাম।এবং এক টানে বুকে।
লিমা: কি হলো আমাকে ধরে রাখলে কেন…??
আমি: তোমার ঠোটের লিপস্টিক খেতে ইচ্ছে করতেছে।
লিমা: মামামানে..???
আমি: মানে বোঝাচ্ছি।
লিমাকে কিছু বলার সুজোগ না দিয়ে ওর ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দিলাম।লিমা শুধু আমার বুকে মারতে থাকলো।আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছিলো।উঠে আবারও দেওয়ালের সাথে চেপে ধরলাম।কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আবারও ডাবল কিস।
হঠাৎ জান্নাত রুমে এসে পড়ে।জান্নাতকে দেখে তো আমি আর লিমা দুজনেই লজ্জায় শেষ।আমি ওখান থেকে তারাতারি বের হয়ে বাথরুমে চলে গেলাম।

আমি ওখান থেকে তারাতারি বের হয়ে বাথরুমে চলে গেলাম।
আজকে তো আমার মামাতো ভাইয়ের বিয়ে।তাই তারাতারি ফ্রেশ হয়ে নিলাম।রুমে আসলাম।লিমা রেগে আছে, কেন আবার কিছু ভুল করলাম না কি..??কই না তো..?? মনে পড়ছে না।
আমি: এই যে মহারাণী এভাবে মুখ গোমড়া করে বসে আছ কেন..?(গাল টেনে)
লিমা কোনো কথা না বলে আবারও রাগী দৃষ্টিতে তাকালো,,
আমি লিমাকে বুকে জড়িয়ে নিলাম,,,
আমি: রাগ করে না বাবু, আমার জান, সোনা পাখি উম্মাহ,,,
লিমা: কুত্তা তোকে আজ আমি খুন করে ফেলবো।(গলা চেপে)
আমি: আহ্হ্ লিমা ছাড়ো বলছি,,,
লিমা: না ছাড়লে কি করবি..??
আমি: আমার অপরাধ টা কি সেটা তো বলো,,,,
লিমা: তোরে বলেছিলাম সবসময় আমার সাথে ইয়ে করবি না।তখন জান্নাত আমাকে কি কি বলে গেল জানিস।
আমি: দাড়াও পেত্নির খবর করছি,,,
লিমা: ওই ওকে কিছু বললে একেবারে মুখ সেলাই করে দেব।
আমি:…………. (কিছু না বলে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।)
লিমা: শোন যদি আজকে আমার সাথে কোনো দুষ্টামি করিস তোকে যে কি করবো আমি নিজেও জানি না।আর বিয়ে বাড়িতে গিয়ে যদি কোনো মেয়ের সাথে কথা বলিস তোর শরীর কেটে লবন মরিচ ঢুকিয়ে দেব।
আমি: ধুর তুমি নিজেই দেইখো আমার কাছে মেয়েরাই আসে নাম্বার নিতে সেল্ফি নিতে।
লিমা: যে আসবে তার তো চুল ছিঁড়বো সাথে তোরও।
মাথার চুল দুহাতে ধরে ইচ্ছে মত টানাটানি করে চলে গেল।
জান্নাত আর লিমা এরা দুজন একই গোয়ালের গরু।কিছু করলেই আমার চুলের ১৩:০০ টা বাজায় দিবে।আজব।
সবাই নাস্তা করলাম।করার পর আমরা গল্প করতেছি।আর মামা মামিরা সবাই বিভিন্ন আয়োজন করতেছে।
আস্তে আস্তে দুপুর হয়ে গেলো।তাই সবাই ফ্রেশ হয়ে লান্স করলাম।আমাদের ৩ টার সময় এখান থেকে রহনা দিতে হবে।যেতে না কি প্রায় ১ ঘন্টা লাগবে।
আমি রুমে বিছানায় শুয়ে আছি।লিমা আসলো।
লিমা: এই যে একটু বাইরে যাওনা প্লিজ।
আমি: কেন..??
লিমা: আমি চেঞ্জ করবো,,
আমি: তো করো,, আমার সাথে কি..??
লিমা: তোমার সামনে চেঞ্জ করতে পারবো না।বাইরে যাও।
আমি: কেউ চাইলে বাইরে গয়ে চেঞ্জ করতে পারে।
লিমা: হোয়াট পাগল হলে না কি..?? আমি বাইরে গিয়ে চেঞ্জ করবো।
আমি: তুমি এখানেই চেঞ্জ করলে তোমাকে শাড়ি ঠিক করে দিতে পারি।
লিমা: হুহ লাগবে না।চোখ বন্ধ করে রাখবি।
আমি: ওকে,,,
আমি চোখ বন্ধ করে রাখলাম।লিমা চেঞ্জ করতেছে তাই।কিন্তু মাঝে মাঝে তাকাচ্ছি চোখ খুলে।
লিমা: ওই তোর চোখ তুলে ফেলবো কিন্তু।
আমি: ওও আচ্ছা সরি।আর তাকাব না।
কিছুক্ষণ পর,,,,
লিমা: এই যে চোখ খোল,,,,
আমি: হাহাহাহাহাহা
লিমা: ওই ওই হাসছো কেন..??
আমি: আরে পাগলি তুমি যে শাড়ি ঠিক করে পড়তে পারো না আগে বলতে পারতে।
লিমা: তোর জন্যই এমন হয়েছে।কতবার বললাম বাইরে যা।
আমি: ওকে তাহলে আমিই ঠিক করে দেই।
লিমা না না করছে।তবুও জোর করে ওকে শাড়ি ঠিক করে দিতে লাগলাম।ও আমার ছোঁয়াতে কেঁপে উঠতেছে।যখন শাড়ির কুচি ঠিক করে দিলাম তখন লিমা আউ করে উঠলো,,,,
আমি: ওয়ে কি হলো এভাবে চমকে উঠলে কেন..??
লিমা: মামামানে না না কিছু না।
আমি: ভালো,তোমার পেট টা কিন্তু Awesome ।
লিমা লজ্জা পেয়ে মুখ লাল করে ফেললো।
আমি: হুহ লজ্জা পেতে হবে না।তারাতারি আটা ময়দা মাখো নাহলে দেরি হয়ে যাবে।
লিমা: আমি তোমার বোনের মত আটা ময়দা মাখি না বুঝছো।আমি এমনিতেই সুন্দর।
আমি আর কিছু বললাম না।কারন লিমা মেকাপ ছাড়াই সুন্দর বেশি,, সেটা আগেও বলেছি।
লিমা সাঁজতেছে আয়নার সামনে।আমি শুধু অপলক তাকিয়ে আছি।দেখতে তো একদম নীল পরী লাগতেছে।কিন্তু রেগে গেলে তো লাল পরী হয়ে যায়।
আমিও ফ্রেশ হয়ে পাঞ্জাবী পড়লাম। লিমা আমাকে দিয়ে ছবি উঠাচ্ছে।বিভিন্ন পোজ নিয়ে।এজন্যই তো ভালো লাগে না।
লিমা আমাকে নিয়েও এক গদা সেল্ফি তুললো।
তারপর সবাই মিলে রহনা দিলাম বিয়ে বাড়ির উদ্যেশ্যে।আর আরেক মামাতো ভাইকে বললাম কয়েক প্রকার কলম নিয়ে আসতে।
দীর্ঘ এক ঘন্টা পর পৌছালাম বিয়ে বাড়িতে।
বিয়ে বাড়িতে পৌছানোর পর ময়দা সুন্দরির তো অভাব নেই।কিন্তু লিমা পাশে আছে তাই নিরীহ প্রাণীর মতো আছি।
মামাতো ভাই রাইয়ানের শালিকাগুলো আরো অনেকেই গেট আটকে ধরে আছে।ওদের দাবি ২০ হাজার টাকা।গেটেও লিখে দেওয়া আছে। মেজাজতো আমার গরম হয়ে গেলো।এতগুলো টাকা নিয়ে কি করবে..??
যে মামাতো ভাইকে কলম নিয়ে আসতে বলেছিলাম ও আমার সাথেই ছিলো।ওর কাছে থেকে কলম আর সাইন পেন নিলাম।দেখি গেটে সাইনপেন দিয়ে লাল রং এর লেখা ২০০০০ টাকা।আস্তে আস্তে ২০ এর ডান দিকে একটা দশমিক বসে দিলাম।এইবার হবে খেলা।

আস্তে আস্তে ২০ এর ডান দিকে একটা দশমিক বসে দিলাম।এইবার হবে খেলা।
আমাদের কাছ থেকে বিশ হাজার টাকা নেওয়া বের করছি।রাইয়ানের শালিকাদের উদ্দেশ্যে বললাম,,
আমি: আমরা আপনাদের ২০০ টাকা দেব নিবেন?
রাইয়ানের শালিকা: হোয়াট গেটের ওইখানেই তো লেখা আছে বিশ হাজার।আপনি আবার মাত্র দুইশত টাকা দিতে চাচ্ছেন।
আমি: ও আচ্ছা।আপনাদের গেটে তো মাত্র বিশ টাকা লেখা।আর আপনাদের ২শত টাকা দিতে চাইলাম খুশি হয়ে।
রাইঃ শালিকা: কিইই বিশ টাকা লেখা আছে।ওই নিলা দেখতো কি বলে?
তারপর নিলা দেখলো সবই ঠিক আছে।কিন্তু দশমিকটা খেয়াল করে নাই।তাই আমি দেখিয়ে দিলাম।ওরা শরবত এনেছিলো।জানি ওইগুলো নিম পাতা লবণ মরিচে ভরা। তাই ওগুলো ওদের মাথায় ঢেলে দিয়ে প্রবেশ করলাম।
বিয়ে পড়ানো হচ্ছে।আমি চেয়ারে বসে আছি।সামনে দিয়ে হাজারও সুন্দরি যাচ্ছে।কিন্তু লিমা আমার পাশে।তাই বাধ্য হয়ে বসে আছি।জান্নাতও মামাতো বোনদের সাথে ঘুরতেছে।
আমি: লিমা চলো একটু চারিদিকে ঘুরে দেখি।
লিমা: কেন.? এখান থেকে বুঝি মেয়েদের দেখা ভালো হচ্ছে না।
আমি: ধ্যাত তুমি নেগেটিভ ভাবছো কেন।বিয়ের অনুষ্ঠানে কি কেউ এইভাবে বসে থাকে।
লিমা: আমি থাকি।এবং তোমাকেও থাকতে হবে।
আমি: আহা চলো না।তোমাকে দেখে মেয়েরা একটু জলুক।চলো তো চলো।
লিমাকে জোর করে উঠিয়ে ঘুরতেছি। লিমা আমার হাত ধরে আছে।সিঙ্গেল পোলাপাইন ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে।আর সাথে মেয়েরা রাগী দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে।
হঠাৎ পেছন থেকে কেউ একজন বললো,,,,
অচেনা ছেলে: এক্সকিউজ মি ভাইয়া।
আমি আর লিমা দুজনই পেছনে ফিরে তাকালাম।ছেলেটার হাতে ডি,এস,এল,আর ক্যামেরা।
আমার কাছে এসে বললো,,,,,,
অচেনা ছেলে: ভাইয়া দেখুন তো চিনতে পারেন কি না.?? (ক্যামেরা এগিয়ে দিয়ে)
আমি তাকিয়ে দেখি লিমা আর আমার কাপল ছবি।পিকটা খুবই সুন্দর হয়েছে।আমরা লিমা আর আমি দুজনই অবাক হয়ে গেছি।
তারপর ছেলেটাকে দিয়ে অনেকগুলো পিকচার তুললাম।খুব ভালোই পিকচার তুলতে পারে।ও ল্যাপটপ নিয়ে এসেছিলো।পিকচার গুলো আমার মেমোরি কার্ড এ নিলাম।তারপর ওকে ৫০০ টাকার একটা নোট গিফ্ট আর বড় ভাইয়া হিসেবে দিলাম।প্রথমে না না করেছিলো কিন্তু রাগ দেখানোর পর নিয়েছে।
এদিকে বিয়ের কাজ শেষ।খাওয়া দাওয়া করলাম।করার পর রাইয়ানের শালিকাগুলোকে সরি বললাম।ওরা দেখি হেব্বি রেগে আছে আমার উপর।
বাসায় আসার সময় যখন সবাই গাড়িতে উঠতেছে তখন রাইয়ানের বউ কাঁদতেছে।তখন আমি লিমাকে খোঁচা মেরে বললাম,,,,,
আমি: তুমি কি এভাবে কাঁদছো।
লিমা: কেন তুমি দেখ নাই..??
আমি: কই না তো।
লিমা: হুম দেখবিই বা কি করে।বিয়ে করতে যেয়েও মেয়েদের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকায় ছিলি।
আমি: হুর কে বললো..??
লিমা: যাকে লাইন মেরেছো।বিয়ে বাড়ি থেকে পালানোর কথা বলেছো সেই বলেছে আমাকে।
আমি কিছু না বলে চুপচাপ গাড়িতে উঠলাম।লিমার সাথে তর্ক করা যাবে না।কারন ও যা যা বলছে সবই ঠিক।
গাড়িতে বসার কয়েক মিনিট পর গাড়ি ছাড়লো।লিমা কিছুক্ষণ পর আমার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।বাইরে থেকে হাল্কা চাঁদের আলো আসতেছে।লিমার মুখটা খুবই মায়াবি লাগছিলো।আলতো করে গাল ছুয়ে দিলাম।দেখি ওর ঘুম ভেঙ্গে গেছে।কাঁধ থেকে মাথা উঠাতে যাবে তখনই আবারও কাঁধে মাথা রাখতে বলি।লিমা আমাকে খুব সুন্দর করে জড়িয়ে ধরে আছে।একদম বাচ্ছা মেয়ের মতো।
কিন্তু আবছোস হচ্ছে বেচারা রোহান এর জন্য।ও এই রকম একটা মেয়ের সাথে টাইম পাচ করেছিলো শুধু টাকার জন্য।
প্রায় ১ ঘন্টা পর আবার মামার বাসায় চলে আসলাম। আগের মতো আমরা আমাদের রুমে চলে গেলাম।ফ্রেশ হয়ে এসে লিমা আর আমি পাশা পাশি শুয়ে আছি।
আমি: আচ্ছা লিমা।চলো না আমরা হানিমুনে যাই।
লিমা: ধ্যাত আমার এসব ভালো লাগে না।
আমি: তুমি প্রথমেও গেলে না আমার সাথে।এবার আর তোমাকে ছাড়ছি না।তোমাকে যেতেই হবে।
লিমা আমার বুকে মাথা রাখলো..
লিমা: কোথায় যাবা..??
আমি: কক্সবাজার যাবা..??
লিমা: তুমি যেখানে যাবা ওখানেই যাবো।
আমি: ওকে তাহলে পরশুদিন যাব।কক্সবাজার।
লিমা: পরশুদিনই যাবা..??
আমি: হুম কেন কোনো সমস্যা আছে না কি তোমার.??
লিমা: না ঠিক আছে।কোনো সমস্যা নেই।
আমি: ওকে আমার জান,,,,
লিমা কাপলে আলতো করে চুমু দিলাম।লিমা আমার বুকেই ঘুমিয়ে পড়লো।আমি যে ওর দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম আর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়ালই নেই।
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো লিমা আমার বুকেই নড়তেছে।কারন ওর ঘুম ভেঙ্গেছে।দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলাম।
লিমার হাসি দেখে আবারও ক্রাশ খাচ্ছি।…….?

লিমার মুচকি হাসি দেখে ক্রাশ খাচ্ছি।হাসিতে যেন মুক্ত ঝড়ছে।আমি অপলক তাকিয়ে আছি।
লিমা উঠতে যাবে আবারও জড়িয়ে ধরলাম।
লিমা: এই কি হলো ছাড়ো অনেক বেলা হয়েছে।
আমি: তো কি হয়েছে..??
লিমা: কি হয়েছে মানে.?? কতক্ষণ এভাবে থাকবে?
আমি: আমার যতক্ষণ ইচ্ছা।
লিমা: এই শোনো ফাইজলামি বাদ দাও,, তারাতারি ছাড়ো, আজকে তুমি আর আমি বাসায় চলে যাব।এখানে আর ভালো লাগছে না।
আমি: কেন? এখানে তো সবাই আছে তবুও ভালো লাগছে না..??
লিমা: হুম ভালো লাগছে না।ছাড় এখন।
আমি: ধ্যাত ভাল্লাগে না,,,,
লিমা: এখন তুই ছাড়বি কি না বল..??
আমি: হু ছাড়ছি।দেমাগ দেখলে বাঁচিই না।একদিন তোমার এই দেমাগ ঠিকই ভেঙ্গে দেব।
লিমা: 😡😡😡😡😡
আমি: সরি ভুল হয়ে গেছে,,,,,🏃🏃
লিমাকে ছেড়ে দিয়ে বাথরুমের দিকে দৌড়। কারন রুমে থাকলে আমার উপড় দিয়ে একটা ঝড় বয়ে যেত।সাথে আপনারা সব দেখে প্রেষ্টিজ এর বারোটা বাজায় দিতেন।
ফ্রেশ হয়ে রুমে আসলাম।লিমা ফ্রেশ হতে চলে গেল।লিমা ফ্রেশ হয়ে আসার পর আব্বু আম্মুর কাছে গেলাম।
আমি: আম্মু একটু এদিকে আসবা..??
আম্মু: হ্যাঁ বল,,
আমি: লিমা বাসায় যেতে চাচ্ছে।
আম্মু: কি বউমা আজকেই যাবে..??
লিমা: হ্যাঁ আম্মু আসলে আর ভালো লাগতেছে না এখানে,,,,,,
আমি: আম্মু যদি ওর এখানে ভালো না লাগে তাহলে নিয়ে যাই বাসায়।
আম্মু: আচ্ছা ঠিক আছে তোর মামা মামিকে বলে দেখছি কি করা যায়।
আমি: ওকে,,,,
সবাই একসাথে নাস্তা করলাম।নাস্তা করার সময় আম্মু মামা মামিকে বললো।ওনারা বললো দুপুরের খাবার খেয়ে যেতে।
এখন বাঁজে ৯ টা আর দুপুর হতে তো অনেক দেরি।
লিমাদের যে গাড়িটা নিয়ে এসেছিলাম সেটা এখনোও এখানেই রয়েছে।আব্বু আম্মুকে বলে গাড়িটা নিয়ে বের হলাম।সাথে একটা মামাত ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম কাছে কোনো পার্ক আছে কি না।
ও বললো ৩ থেকে চার কিঃমিঃ হবে।পথ দেখিয়ে দিলো তাই বেড়িয়ে পড়লাম।আমি আর লিমা গাড়িতে।গাড়ি খুব একটা স্পিডে চালাচ্ছি না।
হাল্কা বাতাস আসতেছে জানালা দিয়ে।সাথে লিমার চুল গুলো উড়তেছে। সেই সাথে আমার মনের পাখিও নীল আকাশে উড়াল দিতে চাচ্ছে।
লিমা: আরে আরে তুমি করছোটা কি এ্যাকসিডেন্ট করবে তো,,,,,
আমি: কি কি কই,,,,
লিমা: কোথায় হারিয়ে গেছিলে হুম..??
আমি: আসলে তোমাকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে।তাই তোমার ভাবনায় হারিয়ে গেছিলাম।
লিমা: গাড়ি চালানোর সময় এত ভাবনায় হারিয়ে যাওয়া উচিত না।নাহলে জীবনই ভাবনা হয়ে যাবে।
আমি: হুম।
আর কোনো কথা না বলে গাড়ি চালাতে থাকলাম। অবশেষে পৌছালাম সেই পার্কে।গাড়ি পার্ক করে ভিতরে ঢুকলাম। ওখানকার পরিবেশ খুব একটা ভালো না,,, কারন জোড়ায় জোড়ায় দেখা যাচ্ছে।থাক ওসব না বলি,,,,,
আমি আর লিমা একটা নিরব যায়গায় বেঞ্চে বসলাম।
আমি: পরিবেশটা খুব মনোরম লাগছে তাই না লিমা…??
লিমা: হুম আসলেই খুব ভালো লাগতেছে।
আমি: কোনো কিছু খাবা..??
লিমা: আচ্ছা বাদাম নাও।দুজনে মিলে বাদাম চিবোতে চিবোতে সময় কাটাই,,,,,,
আমি: তুমি বাদাম পছন্দ করো..??
লিমা: হুম সিওর।কেন তোমার ভালো লাগে না….?
আমি: আরে আমি তো বাদাম পাগলা।
লিমা: হিহিহিহি,,,,
আমি: এখন থেকে তুমি বাদাম পাগলি।
লিমা: নাহ্।
আমি: কেন..??
লিমা: বাদাম পাগলি কেন হব.? আমি তো তোমার পাগলি হতে চাই..??
আমি: পাগলি তুমি তো আমারই,,,,(গাল টেনে দিলাম)
লিমা: হুম।
বাদাম চিবোতে চিবোতে কখন যে দুপুর হয়ে গেছে টেরই পাইনি। তাই আবার মামার বাসায় চলে আসলাম।
আসার পর ফ্রেশ হয়ে লান্স করে লিমা আর আমি সবার কাছে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।গাড়ি চালাচ্ছি আপন মনে।হঠাৎ লিমার দিকে তাকাতেই দেখি মনমরা হয়ে আছে।
আমি: লিমা..? মন খারাপ..??
লিমা: কই না তো,,,,
আমি: তাহলে ওভাবে বসে আছ কেন..??
লিমা: না মানে এমনিই।
আমি: আচ্ছা আমার কাছে আসো।
লিমা আমার কাছে এসে কাঁধে মাথা রাখলো।প্রচন্ড ভালো লাগা অনুভব করতেছি।প্রিয় মানুষ পাশে থাকলে হয়ত আপনা আপনিই মন ফ্রেশ হয়ে যায়।

লিমা আমার কাছে এসে কাঁধে মাথা রাখলো।প্রচন্ড ভালো লাগা অনুভব করতেছি।প্রিয় মানুষ পাশে থাকলে হয়ত আপনা আপনিই মন ফ্রেশ হয়ে যায়।
লিমা ঘুমিয়ে পড়েছে। দেখতে খুবই মায়াবি লাগতেছে।ইচ্ছা করতেছে গাড়ি চালানো বাদ দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকি,,,
আলতো করে গাল ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।না থাক।লিমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে আর ঘুমন্ত মুখটা দেখতে পারব না।
আনমনে গাড়ি চালাচ্ছি।প্রায় ২ ঘন্টা পর লিমার ঘুম ভাংলো।আমি লিমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলাম।লিমা আমার হাসির হয়ত কারন খুঁজে পায় নি।তাই কাঁধেই মাথা রেখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আমি ওর দিকে তাকাতেই চোখ সরিয়ে নিচ্ছে।আমি সামনের দিকে তাকালে আবারও তাকিয়ে আছে।আর মনে মনে কি যেন ভেবে মুচকি মুচকি হাসছে।আবার লজ্জাও পাচ্ছে।
লিমার কান্ড দেখে আমার হাসি চেপে রাখতে কষ্ট হচ্ছে।তবুও চুপ করেই আছি,,,
প্রায় ৩ ঘন্টা জার্নি করার পর পৌছালাম আমাদের বাসায়।
বাসায় ঢুকে লিমা আমি দুজনই এক সাথে আমাদের রুমে গেলাম।প্রচুর ক্লান্ত লাগছে।ফ্রেশ হতে বাথরুমের দিকে যেতেই,,,,,
লিমা: এই এই দাড়াও আগে আমি যাব বাথরুমে।
আমি: আমি যাচ্ছি পারলে আটকাও,,,,
লিমা আমার হাত টেনে ধরলো।আমি ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
আমি: হাত ছাড়ো।নইলে তোমার লিপস্টিক খেয়ে ফেলবো।
লিমা: 😠😡😠😡😡😠
আমি: সত্তিই বলছি।হাত ছেড়ে দাও নয়ত লিপস্টিক খাওয়াও।কোনটা করবা..??
লিমা: একটাও না।
আমি: ওকে তাহলে চলো দুজনই এক সাথে ফ্রেশ হই।
লিমা: না………! কোনো ভাবেই সম্ভব না,,,,
আমি: সম্ভব করছি দাড়াও,,,,,
লিমাকে কোলে তুলে নিয়ে বাথরুমে গেলাম।অঃপত লিমার শত শত মাইর খাইলাম।আর গালাগাল ফ্রি,,,,,
লিমা: কুত্তা শয়তান ছাড় আমাকে,,,,
আমি: কোনোভাবেই না,,,,
লিমা: খরুচ, খবিশ, খাটাশ, বান্দর,,
আমি: আরো কিছু,,
লিমা: তেলাপোকা, দাঁত ভাঙ্গা বিলাই, লেজ কাঁটা শেয়াল।সব তুই।টিকিটিকি একটা।ছাড় আমাকে,,,
আমি: হাহাহা দাড়াও ছাড়ছি,,,,,,
অতঃপর……….
বাথরুমে আর দেখা লাগবে না আপনাদের।
বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হওয়ার পর,,,,
লিমা: এ্যাঁএ্যাঁ এ্যাঁ থাকবো না আর এখানে,,,,,
আমি: কেন কি হলো..??
লিমা: তুই আমাকে জোর করে কি করেছিস।ওয়াক থু মুখে কি গন্ধ ছিঁ ছিঁ।
আমি: তোমার মুখেই গন্ধ ছিলো হুহ্।দাঁত ব্রাশ করো না তিন মাস থেকে মনে হয়।
লিমা: কি বললি কুত্তা আমি ব্রাশ করি না।
আমি: হুম অবশ্যই।
লিমা: তবে রে তোকে আজ কি করবো নিজেই জানি না।
লিমা আমাকে ধরার জন্য ছুটতেছে।আমি দৌড়াচ্ছি।লিমা রুমের অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে।বালিশের তুলা সারা রুমে।
এক সময় লিমা ক্লান্ত।
আমি: সরি,,,,
লিমা: হুহ্।কেন.??
আমি: তোমাকে অনেক জালালাম তাই,,,,
লিমা: লাগবে না,,,,,
আমি: আচ্ছা ঠিক আছে।রান্না করবা আজকে না কি বাইরে থেকে খাবার আনবো।
লিমা: আমি খাবো না।তোর ইচ্ছা হলে গিলে আয়।
আমি: আচ্ছা চলো দুজনই বাইরে গিয়ে খেয়ে আসি,,,
লিমা: বললাম তো খাব না,,,,
আমি: তোমাকে খেতেই হবে,,, চলো,,
লিমা: রাগ উঠাবি না বললাম।
আমি: তোমার রাগই দেখতে চাই,,, চলো চলো,,,
লিমাকে জোর করে টেনে টেনে বাইরে বের হলাম।একটা রিকশা ডাকলাম।
আমি: এই উঠো,
লিমা: তুই ওঠ আমি উঠবো না,,,
আমি: ওকে ফাইন,,,,,
লিমাকে ঠেলে ঠুলে রিকশায় উঠিয়ে রেষ্টুরেন্ট এ গেলাম।খাবার অর্ডার করলাম।লিমা তবুও গাল ফুলিয়ে বসে আছে।আমার পেছনে দেখি কয়েকটা মেয়ে টেবিলে বসে কফি খাচ্ছে। সবচেয়ে ময়দা সুন্দরি মেয়েটাকে বললাম,,,,
আমি: এক্সকিউজ মি,,,
সুন্দরি: হুম বলুন।
আমি: ইয়ে মানে আপনার নামটা জানতে পারি,,,,
সুন্দরি: কেন.?
আমি: বলেন সমস্যা নেই ফোন নাম্বার চাইবো না।ধরুন আমরা আজকের দিনের জন্য ফ্রেন্ড।
সুন্দরি: ওহ আচ্ছা।আমার নাম নিশি।
আমি: Wow nice name..
নিশি: আপনার নাম কি.??
আমি: আমার নাম জীবন।
নিশি: আপনারও তো সুন্দর নাম।
আমি: হুম।আচ্ছা ফোন নাম্বার পেতে পারি।না মানে ফ্রেন্ড হিসেবে,,,,
লিমা: ওই অনেক্ষণ ধরে তোর লুচ্ছামি সহ্য করেছি।আর না।তুই যদি এখনই আমার পাশে না আসিস খুন করে ফেলব কিন্তু,,,,,,
আমি: তুমি তো আমার সাথে কথাই বলছো না,,,,
লিমা: আসবি কি না বল..??
আমি: ওকে ওকে,,,,
লিমার পাশে গিয়ে বসলাম।আগে সামনা সামনি ছিলাম।লিমা আমার কানে কানে বললো,,,,,
“মেয়েদের সাথে লুচ্ছামি করতে ভালো লাগে তাই না..??”
আর জোরে জোরে চিমটি কাটছে।চিল্লাতেও পারছি না ওকে আটকাতেও পারছি না।কি করার সম্মান বাঁচাতে চুপ করে খাচ্ছি আর চিমটি সহ্য করতেছি।
তারাতারি খাওয়া শেষ করে বিল মিটিয়ে রিকশা করে বাসায় চলে আসলাম।
লিমা আমার শার্ট এর কলার ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।চাবি দিয়ে বাসার তালা খুলে ভিতরে ঢুকলাম।
লিমা তবুও কলার ধরে টেনে নিয়ে একদম উপরে আমাদের রুমে চলে আসলাম।
আমি: এবার তো আমাকে ছাড়ো।
লিমা: কেন ছাড়বো…??
আমি: মানে সারারাত এভাবেই ধরে রাখবে না কি.??
লিমা: প্রয়োজনে বেঁধে রাখবো।
আমি: কেন.??
লিমা: সব প্রশ্নের দিতে হবে কেন..??
আমি: উত্তর না দিলে কিভাবে বুঝবো..??
লিমা: এত বুঝতে হবে না।যাও গিয়ে ফ্রেশ হও।
আমি: ওকে।
ফ্রেশ হয়ে আসলাম, লিমা ফ্রেশ হয়ে নাইট ড্রেস পড়ে আসলো।
লিমা: ওই হা করে কি দেখো..??
আমি: কই কিছু না তো,,,,
লিমা: হুম ভালো।নাও শুয়ে পড়ো।
আমি আর লিমা এক সাথে শুয়ে পড়লাম।লিমা ওর ফোন দিয়ে ফেসবুকে লগ ইন করলো,,,, আমিও লগ ইন করলাম।
আমি: হ্যালো ফেসবুকে আসলে কেন এত রাতে,,??
লিমা: তুমি কি করো ফেবুতে? নিশ্চই মেয়েদের সাথে লুচুগিরি করতে,,,,,
আমি: তাহলে তুমিও নিশ্চই ছেলেদের পটাতে ফেবুতে আসছো,,,,
লিমা: কি বললি কুত্তা..??
আমি: কেন তুমি যেটা বললে তার পরিপ্রেক্ষিতে বললাম।
লিমা: তোকে মজা বুঝাচ্ছি,,,,,,
লিমা ফোন রেখে আমার উপর ঝাপিয়ে পড়লো।গলা চেপে ধরে,,,,
লিমা: ওই বল তুই ফেবুতে আসিস লুচ্ছামি করতে,,,,
আমি: কখনই না,,,,,
লিমা: সব মিথ্যা।আমি তোকে চিনে ফেলেছি তুই কেমন।
আমি: ওহ আচ্ছা দাড়াও তাহলে।তোমাকেও আমার ক্যারেক্টার দেখাতে হবে,,,,
লিমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে ওকে কিস করতে থাকলাম।লিমা নিজেকে ছাড়ানোর খুব চেষ্টা করতেছে।কিন্তু পারছে না।এক সময় আমিই ছেড়ে দিলাম।লিমা আমার ঠোটে আঙ্গুল দিয়ে আছে। লিমাকে আমার বুকের উপরে নিলাম।
লিমা: এই চলো না আজকে ছাদে যাই।
আমি: কেন ছাদে গিয়ে কি করবা..?
লিমা: চাঁদের জোঁৎস্না গায়ে মাখবো।হারিয়ে যাব আজকে অজানা রহস্যে।
আমি: খুব শখ.?
লিমা: হুম প্রচুর।আর অনেক আগে থেকে।
আমি: ওকে চলো।
লিমা আর আমি ছাদে চলে গেলাম।লিমা ছাদের এক কোণে দাড়িয়ে আছে চাঁদের দিকে মুখ করে।হাত দুটো দুদিকে ছড়িয়ে।আর আমি পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আছি।
আমি: আচ্ছা লিমা।তুমি মাঝে মাঝে আমার সাথে অন্যরকম আচরণ করো কেন..??
লিমা: কেমন আচরণ.?
আমি: এই যে, হুট করে রেগে যাও।আবার অনেক ইচ্ছা প্রকাশ করো,,,,,,
লিমা: তোমার সাথে এ রকম করি কেন বুঝো না.??
আমি: নাহ্।বুঝিয়ে দাও।
লিমা: হুম।রাগ অভিমান কার উপর করা যায় জানো..??
আমি: কার উপর..??
লিমা: যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা যায়।কিংবা ভালোবাসে,,,,,কার কাছে নিজের ইচ্ছা প্রকাশ করতে হয় জানো…??
আমি: কার কাছে….??
লিমা: যে তোমার ইচ্ছার মুল্য দিবে।এবং নিজের সবটুকু দিয়ে ইচ্ছাটা পূর্ন করার চেষ্টা করবে।
আমি: হুম বুঝেছি।দাড়াও এক মিনিট আসছি।
লিমা: এই কোথায় যাবা…?? আমার ভয় লাগবে তো,,,,
আমি: কোনো ভয় নেই শুধু এক মিনিট অপেক্ষা করো কেমন,,,,, শুধু এক মিনিট।
আমি একটা রিং কিনে রেখেছিলাম।যে বাসর রাতে বউকে গিফ্ট করবো।কিন্তু বাসর রাতে তো গাল লাল করা চড় খেয়েছি।আজকেই সময় গিফ্ট দেওয়ার,,,,
রুমে এসে রিংটা বের করলাম।করে আবারও ছাদে চলে গেলাম।
লিমার কাছে গেলাম।লিমা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
লিমা: আমি তোমাকে বললাম যে ভয় পাবো।তারপরেও তুমি গেলে।খাটাশ একটা।
আমি: আচ্ছা সরি।তোমাকে একটা গিফ্ট দিতে চেয়েছিলাম বাসর রাতেই।কিন্তু সেদিন তো তুমিই আমাকে যে চড় মেরেছো।মাথা ভন ভন করেছিলো।
লিমা: হিহিহিহি সরি।আসলে আমি সেদিন মনে হয় সেন্সলেস ছিলাম। এখন আমার গিফ্ট দাও দেখি।
আমি: যদি তোমার পছন্দ না হয়….??
লিমা: তোমার দেওয়া সব কিছুই আমার পছন্দ হবে।
আমি: যদি তেলাপোকা দেই তবুও পছন্দ হবে..??
লিমা: রাগাইতে চাচ্ছো আমাকে তাই না……??
আমি: ওওও আচ্ছা ঠিক আছে রাগাবো না।
ওর সামনে হাটু গেরে,,,,,,
আমি: তোমার বাম হাতটা দাও তো,,,,,
লিমা: কেন…?
আমি: আমার ইচ্ছা।
লিমা: ওকে,,,,,,,
লিমার আঙ্গুলে রিংটা পড়িয়ে দিলাম।আর হাতের উল্টো পিঠে একটা চুমু দিলাম।
“”পাগলি তুমি কি আমার সারা জীবনের রাগী বউ হয়ে থাকবে..? কথা দিচ্ছি তোমার শত রাগ অভিমান সব ভাঙ্গাবো।আর প্রচন্ড ভালোবাসবো।সাগরের বুকে যেমন ঝিঁনুকের বাস।তেমনি তুমি আমার সাগর আর আমি ঝিঁনুক।সাগরের বুকে ঝিনুকের বাস হলেও সাগরের প্রচন্ড ঢেউয়ে ঝিনুক বালুচরে আটকা পড়ে ধুকে ধুকে মারা যায়।সেরকম তুমি যদি আমাকে বালুচরে আটকা ফেলে দিয়ে চলে যাও, আমিও ঝিনুকের মতই ধুকে ধুকে মারা পরবো।কথা দাও কখনও যাবে না আমাকে ছেড়ে। তুমি আমার হাত সারা জীবনের জন্য ধরে থাকলে আমি মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত ভালোবেসে যাব।””
লিমা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।কাঁদুক না।মেয়ে মানুষ বড়ই অদ্ভুত সুখেও কাঁদে আবার কষ্টেও কাঁদে।
লিমা: এত ভালোবাসো আমাকে..??
আমি: হুম।কোনো সন্দেহ আছে না কি…??
লিমা: সন্দেহ থাকবে কেন..?
আমি: না থাকাই ভালো।রিংটা কি তোমার পছন্দ হয়েছে..??
লিমা: হুম অবশ্যই।খুব সুন্দর। তোমার পছন্দের প্রশংসা করতেই হয়।
আমি: দেখতে হবে না।নিজের বউয়ের জন্য কিনেছি।ভালো তো অবশ্যই হতে হবে।
লিমা আমাকে জড়িয়ে ধরলো।বুকে মাথা রাখলো,,,,,
আমি: আমার প্রফোজ এর উত্তরটা দিলে না কিন্তু।
লিমা: উত্তর দিতে পারব না।
আমি: কেন..??
লিমা: সব উত্তর মুখ দিয়ে হয় না।কিছু উত্তর হৃদয় দিয়েও হয়।
আমি: তাই…??
লিমা: হুম।আমা হৃদয় কি বলে তুমি কি শুনতে পাও..??
আমি: হুম।
লিমা: কি বলছে…?
আমি: বলতেছে তুমি আমাকে একটু্ও ভালোবাসো না।
লিমা: ধ্যাত পাগল একটা। তোমারা সাথে কোনো কথা নাই।ব্রেক আপ।
আমি: হাহাহা পাগলি।আমি তোর পাগল।
সারা রাত দুজন ছাদের উপরই কাটিয়ে দিলাম নির্ঘুম। একটা রোমান্সোকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিলো। আর চাঁদটা হলো নির্বাক দর্শক।