Heart from a book page against a beautiful sunset.

কখন থেকে অপেক্ষা করছি এখনো আসছে না। কি যে করি। পাশেই ফুচকার দোকান। সেখানে অনেক মেয়ে। বার বার সেইদিকে চোখ যাচ্ছে। ও আপনাদের তো পরিচয় দেওয়া হয় নি। আমি সজিব। বর্তমানে লেখাপড়া করছি। কিসে পড়ছি সেটা না হয় নাই বললাম। পরে জানবেন। আর যার জন্য অপেক্ষা করছি সে হলো নাদিয়া। আমার ক্রাশ। গত ছয় মাস ধরে নাদিয়া আপু থুক্কু নাদিয়ার পেছনে ঘুরছি। কিন্তুু কি করবো আজও ক্রাশ থেকে তার প্রেমিক হতে পারলাম না। এসব ভাবতে ভাবতে দেখি নাদিয়া আসছে। তাই আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম,,কেমন আছো নাদিয়া। আর আজ এত দেরি করে আসলে যে। আমার কথায় নাদিয়া বলে উঠলো,,, নাদিয়া কিসের। নাদিয়া আপু বল। আমি তোর সিনিয়র। আর তুমি না বলে আপনি করে বল। আমি তখন রবি সিমের মতো জ্বলে উঠলাম আর বললাম,,
,,,নিজের প্রেমিকারে কেউ কি আপু বলে।
,, তোরে না বলছি আমার পিছে ঘুরবি না। আমি তোর এক বছরের সিনিয়র।
,, সিনিয়র তো কি হয়েছে। আমি তোমাকে ভালোবাসি।
,,,তোর ভালোবাসার গুষ্ঠি খিলাই। আমাকে যেতে দে। তুই যদি আমার বান্ধবির ভাই না হইতি তাহলে তোরে জুতোপিটা করতাম।
কথাটা বলেই নাদিয়া চলে যেতে লাগলো। আমি বলে উঠলাম,,
আমার ভালোবাসার সাড়া তোমাকে দিতেই হবে নাদিয়া। আমার কথায় নাদিয়া এবার থেমে গেলো। আমার কাছে এসে বলতে লাগলো,,,
,, আচ্ছা সজিব তুই যে আমাকে ভালোবাসোস।
তুই কি মুসলমানি করছোস????
আমি এবার নাদিয়ার কথায় কি বলবো ভেবে পাচ্ছি না । আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি। আপনারাই বলেন আমি কি এখনো মুসলমানি না করে থাকবো। আমি বললাম,,
,, কি যে বলো তুমি। নিজের হবু জামাইকে কেউ এভাবে লজ্জা দেয়। আমার লজ্জা লাগে তো।
,,,, কে আমার হবু জামাই।
,,,কেনো আমি।
দাড়া তোর হবু জামাই হওয়া ছুটাচ্ছি। বলেই নাদিয়া ফুচকা দোকানের দিকে যেতে লাগলো। আমি আর কি করবো। দৌড় দেওয়ার জন্য রেডি হয়ে নিলাম। নাদিয়া একটা চাকু নিয়ে আসছে। পরিস্থিতি বেশি ভালো না। তাই দিলাম দৌড়। পেছন থেকে নাদিয়া বলে উঠলো পালিয়ে কোথায় যাবি।
বাসায় না গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম। অনেক্ষন পর বাসার দিকে হাটা দরলাম। বাসায় গিয়ে রুমে ডুকতেই যেনো বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। কি ব্যাপার নাদিয়া এখানে কেনো। এখানে তো থাকার কথা না। নাদিয়ার হাতে চাকুটা আছেই। আমি যেই দৌড় দিবো তখনি নাদিয়া আমার কলার দরে ফেললো। চাকুটা আমার গলায় দরে বলতে লাগলো,,
,,, কিরে হারামি আমাকে ভালোবাসোস। আমাকে বিয়ে করবি তাইনা???
,,,, ভুল হয়ে গেছে নাদিয়া আপু। তুমি আমার বড়।
,,, এখন আপু বলোছোস কেনো??
,,, তুমি আমার বড় তাই।
এবার নাদিয়া আমার কলার দরেই বলতে লাগলো,,, শোন আমাকে আর আপু বলবি না। প্রতিদিন চকলেট এনে দিবি। আর অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবি না।
,, তার মানে তুমি কি আমাকে ভালোবেসে ফেলেছো।
,,, কে বললো তোরে ভালোবাসি। আমি বলছি অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবি না।
,,,, যদি অন্য মেয়ের দিকে তাকাই তাহলে কি করবে??
এবার আমার কথায় নাদিয়া অগ্নিমূর্তি হয়ে আমার গলায় চাকু ঠেকিয়ে বলতে লাগলো,অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকালে কিছু বলবো না। এই যে চাকুটা দেখছোস,এইটা দিয়ে তোর নিচের টা কেটে সমান করে দিবো। তখন অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকালেও লাভ হবে না।
নাদিয়ার কথা শুনে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেলো। ছোটবেলা ফুটবল খেলতে গিয়ে নাদিয়া যেটা কেটে দিতে চাইলো সেইটাতে অনেক ব্যাথা পেয়েছিলাম। যদি নাদিয়া আমার এই সর্বনাশ করে তাহলে তো,,,,,,,,,,,,,,,
ভাবতেই গা শিহরিত হয়ে গেলো। তাই ভয়ে ভয়ে বললাম, না অন্য কোনো মেয়ের দিকে তাকাবো না। নাদিয়া বলে উঠলো,,,
ভালো ছেলে মনে যেনো থাকে কথাটা।
কথাটা বলেই চলে যেতে লাগলো।
আমি বলে উঠলাম, তাহলে তো এই পিচ্চি ছেলেটার প্রেমে পড়েই গেলে। নাদিয়া পেছন দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো। আমিও হেসে দিলাম। আমার হাসিটা ছিলো একটা বিজয়ের হাসি।