সামনে পরীক্ষা। হলে আমাদের রুমে বিছানায় পা ছড়িয়ে দিয়ে বই দেখছিলাম। নয়টা নাগাদ নিচের ক্যান্টিনের ছেলেটা নাশতা দিয়ে গেল, সাথে একটা নিউজ।আপনার জন্য নিচে কেউ অপেক্ষা করছে,মেয়ে মানুষ।
কিছুটা অবাক হয়ে নিচে এসে দেখি শাড়ি পরিহিতা সুশ্রী এক রমণী। এগিয়ে এসে সহাস্যমুখে জিজ্ঞেস করলেন, আপনিই দীপ্ত?
-জ্বী।
এরপর তিনি তার ব্যাগ থেকে জীবনানন্দ দাশের কাব্যগ্রন্থ, ধূসর পাণ্ডুলিপি বের করে দিলেন।
বইয়ের প্রথম পাতা উল্টিয়েই মনটা খুশিতে ভরে উঠলো, বইটা যে আমারই। গত পরশু বাড়ি থেকে আসার সময় ট্রেন থেকে নেমে রেলস্টেশনে ভুলে কোথাও ফেলে এসেছিলাম।
এরপর মুখে কৃতজ্ঞতার হাসি টেনে মেয়েটির দিকে তাকালাম, একে ঠিক মেয়েও বলা যায় না আবার মহিলাও নয়।
বরং একে নবোঢ়া বললেই যথার্থ হয়। অর্থাৎ যেসব মেয়েদের সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে, চোখে মুখে লাবণ্য যেন ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে। বললাম
– অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব কষ্ট করলেন আমার জন্য। সত্যিই আমরা বদলাচ্ছি, আমাদের দেশটাও।
-এতটা বলবেন না। আমার বাসা কাছেই। আর আমার নিজেরও কিন্তু ছোট্ট একটা স্বার্থ আছে।
-জ্বী, বলুন।
-বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠাটা খুলুন।
বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠার সাদা কাগজের মাঝখানে নীল কালিতে আমার হাতে লিখা,
যদি গাহন করিতে চাহ এসো নেমে এসো হেথা
গহনতলে।
নীলাম্বরে কিবা কাজ, তীরে ফেলে এসো আজ,
ঢেকে দিবে সব লাজ সুনীল জলে।
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
পৃষ্ঠার ওপরের দিকে ডানপাশে ছোট্ট করে লিখা
দীপ্ত
জিয়া হল
কক্ষ নং ৩০৫।
বললাম, স্বার্থটা বলুন?
-কবিগুরুর লাইন কয়েকটি খুব মনে ধরেছে। জানতে চাচ্ছি কোন কবিতার লাইন?
-অ! এটা উনার হৃদয় যমুনা কবিতা থেকে নেয়া।এ কবিতায় তিনি মূলত মেটাফিজিকাল ব্যাপারটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। সে যাই হোক, যদিও আমাদের এখানে সুবিধে তেমন নেই তবু এক কাপ চা খেতে নিশ্চয় আপনার অসুবিধে হবে না?
-আজ নয়। আজ খুব তাড়া আছে আমার।তবে শুধু এক কাপ চা তে চলবে না, টা টাও লাগবে।
-বিলক্ষণ। কিন্তু আপনাকে পাব কোথায়?
-ফোন নাম্বার দিয়ে যাচ্ছি, নিয়েও যাচ্ছি।
নাম্বার নেয়ার সময় জানতে পারলাম, উনার নাম মায়া।
তারপর মায়া চলে গেল, মায়া কি সত্যি চলে যায়?
জর্জ বানার্ড’শ এর ম্যান এন্ড সুপার ম্যান পড়ছিলাম, পড়ার ফাঁকেফাঁকে সেই মায়াময় মুখ, মায়া!
হয়তো মায়া আমার চেয়ে বয়সে এক দু বছরের বড় হবে তবু এই ব্যাচেলর জীবনে ছেলেদের একটি হলের মধ্যে এসে এমন রুপসী এক নারী, হারিয়ে যাওয়া একটি কবিতার বই দিতে এল, সত্যিই এ যেন স্বপ্নের মত!
এক্ষেত্রে কিছুটা রোমাঞ্চ অনুভব করলে, নিজেকে দোষ দেয়া যায় কি?
পড়াশুনায় কিছুতেই আর মন বসছিল না। অনেকদিন বাদে ফেসবুকে লগ ইন করলাম। আমার ফোনে মায়ার নাম্বার থাকার কারনেই হবে হয়তো, সাঁঝের মায়া নামে একটা আইডি খুঁজে পেলাম পিপল ইউ মে নো তে।
হ্যাঁ, মায়াই। হাতে গোনা কয়েকটি পিক দেয়া আছে মাত্র।রিলেশনশিপ স্ট্যাটাসে দেয়া আছে ইটস কম্পলিকেটেড! বাদ বাকি প্রাইভেসিতে আটকে দেয়া হয়েছে।
এরপর ফেসবুকেই কথা শুরু হলো, সে অনেক কথা।
সাহিত্য প্রেমীদের আলাপ জমে যায় সহজেই, বন্ধুত্বও হয় ক্ষেত্র বিশেষে। মায়ার মায়া এড়িয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আমার ছিল না, এতটুকু। কাজেই পরীক্ষার দিনগুলোতেও কেবল মায়ার মায়াতেই আচ্ছন্ন হয়ে ছিলাম।
সম্পর্ক ততদিনে তুমিতে নেমে এসেছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যাপারে মায়া আমার কাছে জানতে চায়নি কিছুই।
হয়তো ভদ্রতার খাতিরে আমিও জানতে চায়নি কিছু।
কিন্তু বার বার আমার মাথায় শুধু ইটস কম্পলিকেটেড শব্দ দুটোই ঘুরপাক খাচ্ছিল।
সেদিন ফোনে জানতে চাইলাম এ ব্যাপারে।
মায়া কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে জবাব দিল, বেশ কাল দেখা করে বলব তোমাকে। তোমার কাছে এক কাপ চা তো আমার পাওনা আছেই।
একটা কফি শপে বসে আছি আমি এবং মায়া,মুখোমুখি।
হঠাৎ মায়া মুখ নিচু করে বলল, আমি ডিভোর্সি।
আমি যেন কেমন একটা ধাক্কা খেলাম!
কফি শপের প্রবেশদ্বারের দিকে কিছুটা সময় তাকিয়ে থাকার পর মায়া নিরবতা ভাঙ্গল।
-তোমার মনে হয় ভাল লাগছে না। চল উঠি।
মায়া চলে যাবার পর সিগারেট ধরিয়ে রাস্তার ফুটপাত ধরে হাটছি আমি, উদ্দেশ্যহীন পথে।
একটা মেয়ে ডিভোর্সি, ছেলেদের একটা হলে এসে কুঁড়িয়ে পাওয়া বই ফেরত দিয়ে গেল। কি ভাবব মেয়েটাকে?
আমার মাথা গুলিয়ে যাচ্ছিল, কোথা থেকে কিভাবে কোথায় হেটে আসলাম বলতে পারব না।
শুধু ভেবেছি মায়াকে দোষ দেয়া যায় না, যতটা মিশেছি, দুজনের ইচ্ছাতেই, দুজনের চাওয়াতেই।
অভ্যাসবশত মনের মধ্যে প্রত্যাশা জমে উঠেছিল, প্রতিদিন ঘুমুতে যাওয়ার আগে মায়ার সাথে কথা হত।
সেদিন হল না।
বুকের মধ্যে এক ধরণের কষ্ট অনুভূত হলো।
তারপর দুটো দিন কোথায় কিভাবে কাটালাম, বলতে পারব না। আমার ধারণা ছিল হয়তো মায়ার রিলেশন ছিল, সেটাই ব্রেক আপ হয়ে গেছে। কিন্তু ডিভোর্সি? ভাবিনি কখনোই এমনটা।
মায়ার প্রতি ভেতরে ভেতরে এতটাই দুর্বল হয়ে গিয়েছিলাম, আমার জীবনে অই দুটো দিন না এলে বুঝতাম না। যখন বুঝলাম, তখন আর নিজেকে ফেরাতে পারলাম না। ভালবেসে ফেলেছি!
রুদ্রের মতো আমারও বলতে ইচ্ছে হলো, এত সহজেই ভালবেসে ফেলি কেন?
সেদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুকে গিয়েছি, ইনবক্স চেক করতে যেয়ে প্রথমেই মায়ার মেসেজ।
“ডিভোর্সিদের স্বপ্ন দেখা অপরাধ জানতাম কিন্তু যে প্রচলিত বিশ্বাসের উর্ধ্বে মনে প্রাণে একজন আধুনিক মানুষ তার কাছেও যে অপরাধ সেটা জানতাম না।”
একটি মাত্র বাক্য! আমাকে, আমার ভেতরটা ভেঙে তছনছ করে দিয়ে দিয়ে গেল। উদার মনের মানুষ হিসেবে আমার যে অহংকার ছিল,এক নিমিষেই গুঁড়িয়ে দিয়ে গেল।
সারাদিন ভেবেও মায়ার কথার কি জবাব দিব,ভেবে পেলাম না কিছুই। রাতে কথা হলো ফেসবুকেই। বললাম,
– শুধু এইটুকুই বলতে পারি, ভালবেসে ফেলেছি। আগে পিছে আর কিছু জিজ্ঞেস করো না।
-করব না। শুধু বলব তোমার ভালবাসাটা ঠুনকো।
-কেন?
-বিয়ে করতে বললে তখন খুঁজে পাওয়া যাবে না,পালিয়ে যাবে। বন্ধু হিসেবেও তোমাকে হারাতে হবে তখন।
-কে বলেছে হারাতে হবে? তোমাকে বিয়ে করব আমি।
-কুমারী নই আমি, তুমি অবিবাহিত ছেলে। ভেবে বলছ তো ?
-কোন পুরুষই চিরদন কুমারী নারী ভোগ করে যেতে পারে না। সে নিয়ে আমার দুঃখ নেই।
-মানে?
– বিবাহিত নারী প্রথমবার নিজেকে সপে দেয়ার পর, আর কুমারী থাকে না নিশ্চয়। তারপর সেই নারীকে নিয়েই সংসার করে যেতে হয়, দিনের পর দিন ভোগ করতে হয়। আমি জানব, প্রথম রাতের দেহের ক্ষণস্থায়ী সুখের পরিবর্তে পেয়েছি, এক অপার আনন্দ, এক নারীর হৃদয় জয়ের আনন্দ, নিজেকে নতুন মানুষ হিসেবে খুঁজে পাবার আনন্দ। সে তুমি বুঝবে না।
-তোমার ফেমিলি?
-সময় নিচ্ছি তোমার কাছে মাত্র কয়েকটা দিন।
-অ! আচ্ছা।
পরদিন ট্রেনে বাড়ি চলে গেলাম। মা ছাড়া কেউ নেই আমার। আমার লক্ষ্ণী মা টা বাবা মারা যাওয়ার পর মফস্বলের একটা কলেজে পড়িয়ে যা মাইনে পেতেন তাই দিয়েই সংসার চালাতেন, আমাকে বড় করেছেন।
আর আমার সেই মাকে চিরকালই একজন আধুনিক মানুষ হিসেবে দেখে এসেছি।
তবু হাটু গেড়ে মায়ের কোলে মাথা রেখে যখন বললাম, মা তোমার ছেলে এক ডিভোর্সি নারীর প্রেমে পরেছে, তোমার অনুমতি চাচ্ছে।
স্পষ্ট অনুভব করলাম মা যেন কেঁপে উঠলেন!
সজল চোখে মা আমার মুখের দিকে তাকালেন, আমিও মায়ের মুখের দিকে।
কিন্তু সেদিন আমি নাছোড়বান্দা! কোন ভাবেই মায়ের যুক্তির কাছে হারতে রাজি নই। মা কে বললাম, মা তবে কি আমরা নামে মাত্র আধুনিক শুধু? বিদ্যাসাগর ১৮২০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মেছিলেন, আজ থেকে প্রায় দু শ বছর আগে। অথচ নিজের ছেলেকে বিয়ে দিয়ে গেলেন এক বিধবার সাথে। আমরা তো রোজ বডি স্প্রে মেখে বাসা থেক বের হই, কিন্তু বিদ্যাসাগরের মতো আধুনিক হতে পেরেছি কি, এ শতাব্দীতে এসেও?
মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, একেবারেই তোর বাবার মত যুক্তি দিস। আমার সাধ্য নেই খন্ডনের। মায়ের আশির্বাদ তোর সাথেই আছে, সকল কাজে। যদি সুখী হতে পারিস, আমার আর আপত্তি কি?
ঢাকায় ফিরে এসে মনে হলো এবার যা হোক একটা চাকুরী চাই। কয়েকদিন ঘুরাঘুরি করে একটা পত্রিকা অফিসে একটা কাজও জুটিয়ে নিলাম। এতগুলো সুসংবাদ একসাথে মায়াকে দিব, সেই সাথে এতদিন বাদে আবার কথা হবে ভাবতেই ভাল লাগার এক শিহরণ অনুভব করছিলাম।
বিকেল গড়িয়ে এসেছিল, আমি হাটছিলাম তিন নেতার মাজারের সামনে দিয়ে। হঠাৎ হোচট খেলাম। না!ইট,কাঠ,পাথর কিংবা কংক্রিটের সাথে নয়। সামনে মায়া, দোয়েল চত্বরের পাশেই। সাথে একজন ভদ্রলোক যিনি মায়ার নরম হাত আলতো করে ধরে আছেন,আঙুল নিয়ে খেলছেন।
মায়ার চোখে চোখ পড়ল, চোখ নামিয়ে চলে এলাম।
দুটো ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে ঘুমিয়েছিলাম, তবু শেষ রাতের দিকে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ইচ্ছে করছিল হাউ মাউ করে কাঁদি কিছুক্ষণ, নিজেকে সংযত করলাম। আশেপাশে রুমমেট আছে, গাদাগাদি করি থাকি আমরা।
বুকের মধ্যে চাপা কিছু কষ্ট নিয়ে ফেসবুকে লগ ইন করলাম, প্রথমেই ভেসে এলো মায়া এবং সেই ভদ্রলোকের হাস্যেজ্জ্বল চেহারার একটি প্রোফাইল পিকচার। ইনবএক্সে পেলাম মায়ার মেসেজ। মায়া লিখেছে,
” আমাকে কি ভাবছ তুমি সে আমি এত দূরে থেকেও ঠিক বুঝতে পারছি কিন্তু তোমাকে আমি কতটা বুঝাতে পারব জানি না। আমি এবং অর্নব দুজনেই প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম। দুই বছরের মধ্যে আমাদের সম্পর্ক তিক্ততার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে। আমাদের নয়াবাস ছেড়ে অর্নব চলে যায় ওর বাবা মায়ের ফ্ল্যাটে।আমি মুখ বুজে পরে রই এখানেই। একসময় সিদ্ধান্ত নেই ডিভোর্সের, দুজনেই। আর তাই মানসিকভাবে প্রস্তুত হচ্ছিলাম সেভাবেই, কেউ জিজ্ঞেস করলে অসংকোচে বলে দিতাম ডিভোর্সি। ফেসবুক থেকে অর্নবের যেসব স্মৃতি ছিল একে একে মুছে দেই, সব। এমনি অবস্থায় তুমি জানতে চাইলে, আমিও দ্বিধা না রেখে বলে দিলাম ডিভোর্সি কারন পারিবারিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই ডিভোর্স প্রায় চূড়ান্ত তখন।
তুমি বাড়ি গেলে, মায়ের মতামত জানতে। বিশ্বাস করো, আমি সেদিন শুধু তোমার অপেক্ষাতেই ছিলাম। হঠাৎ কলিং বেলের শব্দ। দরজা খুলে দিলাম, অর্নব।
মুখে ধেনো মদের গন্ধ, আমি এড়িয়ে যেতে চাইলাম।
ও সামনে এসে দাঁড়াল, শক্ত হাতে বুকে টেনে নিতে চাইল।
আমি নিজেও পারলাম না আর নিজেকে সামলে রাখতে। বিবাহিত নারী, অনেক দিনের অভুক্ত শরীর, পরিচিত সেই ঘ্রাণ!
এক নিমিষের ঝড় শেষে, দু চোখের জল গড়িয়ে পড়ল।
অনেক দিনের বিরহ শেষে অর্নবের ভালবাসাকে উপেক্ষা করতে পারলাম না, আমার সে শক্তি ছিল না।আমাকে ক্ষমা করো তুমি, স্বার্থপরের মতন অর্নবকে নিয়ে নতুন করে ভাবছি আবার।”
অন্ধকারে সজল চোখ, আমার অল্প দামি ফোনের ডিসপ্লেতে লেখাগুলো কেমন ঝাপসা করে দিচ্ছিল।কাঁপা কাঁপা হাতে টাইপ করলাম,
হয়তো আজকের পর থেকে আমার এই আইডি আর দেখবেন না কখনোই, আমাকেও। জীবনে অনেকটা হারিয়েও ঠিক শিখে নিয়েছি, মেনে নেওয়া। সুনীলের কবিতাটা মনে পড়ছে খুব,
প্রতিটি ব্যর্থ প্রেমই আমাকে নতুন অহঙ্কার দেয়
আমি মানুষ হিসেবে একটু লম্বা হয়ে উঠি
দুঃখ আমার মাথার চুল থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত
ছড়িয়ে যায়
আমি সমস্ত মানুষের থেকে আলাদা হয়ে এক
অচেনা রাস্তা দিয়ে ধীর পায়ে
হেঁটে যাই।
আমাকে নিয়ে আর ভাবনা কি আপনার?
বরং আপনাকে, নতুন দিনের শুভ কামনা।
পুনশ্চ: নিশ্চয় অন্যের স্ত্রীকে তুমি সম্বোধনের অধিকার নেই আমার।
গল্প: সাঁঝের মায়া
বিভ্রান্ত বাউন্ডুলে।