পার্ট ১
বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী
হিসাবে আল্লাহ পাক আদম (আলাইহিস
সালাম)-কে নিজ দু’হাত দ্বারা সরাসরি সৃষ্টি
করেন (ছোয়াদ ৩৮/৭৫)। মাটির সকল
উপাদানের সার-নির্যাস একত্রিত করে
আঠালো ও পোড়ামাটির ন্যায় শুষ্ক মাটির
তৈরী সুন্দরতম অবয়বে রূহ ফুঁকে দিয়ে আল্লাহ
আদমকে সৃষ্টি করেছেন।[1]
অতঃপর আদমের পাঁজর থেকে তাঁর স্ত্রী
হাওয়াকে সৃষ্টি করেন।[2] আর এ কারণেই
স্ত্রী জাতি স্বভাবগত ভাবেই পুরুষ জাতির
অনুগামী ও পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট। অতঃপর
স্বামী-স্ত্রীর মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে একই
নিয়মে মানববংশ বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত
রয়েছে। কুরআন-এর বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম দিন
থেকেই মানুষ পূর্ণ চেতনা ও জ্ঞান সম্পন্ন
সভ্য মানুষ হিসাবেই যাত্রারম্ভ করেছে এবং
আজও সেভাবেই তা অব্যাহত রয়েছে। অতএব
গুহামানব, বন্যমানব, আদিম মানব ইত্যাদি
বলে অসভ্য যুগ থেকে সভ্য যুগে মানুষের
উত্তরণ ঘটেছে বলে কিছু কিছু ঐতিহাসিক
যেসব কথা শুনিয়ে থাকেন, তা অলীক কল্পনা
ব্যতীত কিছুই নয়। সূচনা থেকে এযাবত এই
দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় মানুষ কখনোই মানুষ
ব্যতীত অন্য কিছু ছিল না। মানুষ বানর বা
উল্লুকের উদ্বর্তিত রূপ বলে ঊনবিংশ
শতাব্দীতে এসে চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২)
যে ‘বিবর্তনবাদ’ (Theory of Evolution) পেশ
করেছেন, তা বর্তমানে একটি মৃত মতবাদ
মাত্র এবং তা প্রায় সকল বিজ্ঞানী কর্তৃক
প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
প্রথম মানুষ আদি পিতা আদম (আঃ)-কে
আল্লাহ সর্ব বিষয়ের জ্ঞান ও যোগ্যতা দান
করেন এবং বিশ্বে আল্লাহর খেলাফত
পরিচালনার মর্যাদায় অভিষিক্ত করেন।
সাথে সাথে সকল সৃষ্ট বস্ত্তকে করে দেন
মানুষের অনুগত (লোকমান ৩১/২০) ও সবকিছুর
উপরে দেন মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব (ইসরা ১৭/৭০)।
আর সেকারণেই জিন-ফিরিশতা সবাইকে
মানুষের মর্যাদার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের
জন্য আদমকে সিজদা করার আদেশ দেন। সবাই
সে নির্দেশ মেনে নিয়েছিল। কিন্তু ইবলীস
অহংকার বশে সে নির্দেশ অমান্য করায়
চিরকালের মত অভিশপ্ত হয়ে যায় (বাক্বারাহ
২/৩৪)। অথচ সে ছিল বড় আলেম ও ইবাদতগুযার।
সেকারণ জিন জাতির হওয়া সত্ত্বেও সে
ফিরিশতাদের সঙ্গে বসবাস করার অনুমতি
পেয়েছিল ও তাদের নেতা হয়েছিল।[3] কিন্তু
আদমের উচ্চ মর্যাদা দেখে সে ঈর্ষাকাতর
হয়ে পড়ে। ফলে অহংকার বশে আদমকে
সিজদা না করায় এবং আল্লাহ ভীতি না
থাকায় সে আল্লাহর গযবে পতিত হয়। এজন্য
জনৈক আরবী কবি বলেন,