: আমায় নিয়ে একটা গল্প লিখবেন? (মেয়ে আইডি)

: না।(আমি)

: কেনো।

: সব কিছুর কি কারন থাকতে হয়।

: হ্যা থাকতে হয়। কারণ না বললে কিন্তু

: কিন্তু কি?

: সবাইকে বলে দিবো আমাদের রিলেশন ছিলো , কিন্তু এখন সেলিব্রেটি হয়ে অন্য ৫-৭ টা মেয়ের সাথে ডেটিং মারছেন আপনি। এবং আমাকে আর টাইম দেন না। তারপর সব ভাব একদম ফুস করে বেরিয়ে যাবে হুহ।

: কিন্তু আমি তো তেমন টা করি নাই।

: সেটা তো শুধু আপনি আর আমি জানি সবাইতো আর জানে না।

: আপনি বললেন আর সবাই বিশ্বাস করলো।

: হাহাহা প্রমাণ দিলে কেনো বিশ্বাস করবে না।

: কিসের প্রমাণ।

: হিহিহি, আপনার নামে একটা আইডি খুলে, সেটা থেকে আমার আইডিতে ইচ্ছে মত মেসেজ দিয়ে স্কিন শর্ট নিয়ে রাখবো,,,, তখন বুঝবেন কত ধানে কত চাল।

: কি ডেন্জারাস, ক্রিমিনাল মেয়েরে বাবা।

: এখনো তো কিছুই শুরু করিনি আর হ্যা আপনার পিক দেন এখুনি

: পিক দিয়ে কি করবেন।

: না দিলে কিন্তু কালকেই স্কিন শর্ট বের করবো।

: আপনি আমাকে এভাবে ব্লাক মেল করছেন কেনো।

: ১০০ বার করবো। এত ভাব কেন আপনার

: উফফ্,,,,, এখন আপনাকে ব্লক দিবো, বায়।

: সেই ভুলটা করবেন না ভুলেও। তাহলে তো সবাইকে বলবো, আপনি আমায় ঠকিয়েছেন,,,, আমার সাথে ফিজিক্যাল রিলেশন করতে চাইছিলেন। আমি রাজি না হওয়ায় ব্রেকআপ করে আমায় ব্লক দিয়েছেন।

:

: নাইস পাকা টমেটো

: আমি টমেটো নই

: আপনাকে কে বলছে।

: তাহলে কাকে বলছেন।

: ওই লাল ইমো গুলারে বলছি

: ওহহহ

: এখন বলেন লিখবেন কিনা।

: ওকে বলেন আপনার গল্প।

: অনেক কথা, এত কথা লিখতে পারবো না।

: তাহলে আমি কেমনে জানবো,আপনার গল্প।

: আপনার নাম্বার টা দেন।

: নো ওয়ে

: কি

: ওকে দিচ্ছি ০১৫২১******

: কি জঙ্গলী নাম্বার দিলেন।

: ছিঃ, তুমি জানো এটা আমাদের গর্ব, একমাত্র বাংলাদেশী সিম।

: এহ, দেশ প্রেমিক হয়ে আসছেরে

: তার চেয়ে বড় কথা, এটা A+ পাওয়ায়, গিফট পাইছি, টেলিটক আগামী।

: এহহ, ……… এর A+ পাইছে, তায় সবাইরে শোনায়। এবাউটে তো বড় বড় করে লিখছে, এখন আবার মেসেজেও বলছে,,, মনে হয় আর কেউ কোন দিন A+ পায় নাই।

: (আমিতো বেকুব হয়ে গেলাম) আপনি এভাবে আমাকে বলতে পারলেন, খুব কষ্ট পেলাম।

: ঢং কত ঢং বাদ দিয়ে গ্রামীণ নাম্বার দেন। আমার ফোনে ১১৭ মিনিট আছে, রাত ১২ টার পর মেয়াদ শেষ হবে।

: ০১৭৯৬৭***** এটা

: কল দিচ্ছি, যদি ভুল রঙ নাম্বার দিয়ে থাকেন তবে আপনার ১২ টা বাজাবো।

: আপনি শুধু ডেন্জারাসেই নন, সন্দেহবাদীও।

: হুহ আমি যা খুশি তাই, আপনাকে কি বলতে বলছি।

:  খাচ্চর

: কি বললেন

: না মানে বললাম, আপনি খুব ভালো মেয়ে।

: আমি ভালো না খারাপ আপনাকে কে বলতে বলছে।

: [সালার, আগে পিছে দুদিকেই মরণ]

: ওকে ভালো থাকেন, আমি আপনাকে রাত ১০ টার পর কল দিবো,,,, কল রিসিভ না করলে কিন্তু

: না না, করবো, বায়

: বায়

উফফ্ বাচলাম। সালার এটা কোন মেয়েরে বাবা এর সাথে যে প্রেম করবে তারতো মনে হয় ১২ টা বাজিয়েই ছারবে এই মেয়ে। তবে এরকম মেয়েরা একটু আবেগী হয়, যেমন রাগ তেমন একটু কিছু না হতেই কেদে ফেলে। যাই হোক দেখা যাক ১০ টার পর কল দিয়ে কোন কাহিনী করে, আর তার জীবনের কি গল্প বলে

রাত ১০:১২ এসাইনমেন্ট রেডি করছি। সোমবার জমা দিতে হবে। মেজাজ টা একটু গরমি বলা চলে। জীবনের ১২ টা বছর বাংলা মিডিয়াম পড়ে এসে হঠাৎ ইংলিশ মিডিয়ামের সাথে কোন ভাবেই পেরে উঠতে পারছি না।

তার উপর পুরো এসাইনমেন্ট ইংলিশে লিখতে হবে। মনে মনে অর্থনীতি ডিপার্টমেন্ট এর গুষ্টি উদ্ধার করছি আর লেখার চেষ্টা করছি। হঠাৎ টেবিলকে কাপিয়ে ঘর ঘর শব্দে ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠলো। আননোন নাম্বারের কল। মুখটা অন্ধকার করে। কলটা রিসিভ করলাম। একটা মেয়ে কন্ঠ সালাম দিলো…..

: আসসালামু আলাইকুম

: অয়ালাইকুম আসসালাম।

: চিনতে পারছেন?

: জ্বী

: কে আমি বলুনতো।

: ডেন্জারাস মেয়ে।

: কি বললেন?

: না মানে সেই ভদ্র মেয়ে টা। যাকে আমি বিকালে নাম্বার দিয়ে ছিলাম।

: কেমনে বুঝলেন?

: আমার ফোনে আননোন নাম্বার থেকে তেমন একটা কল আসে না।

: পার্ট নিচ্ছেন নাকি।

: পার্ট নিবো কেনো?

: এই যে বলছেন আননোন নাম্বার থেকে কল আসে না। এটা বলে বুঝাতে চাচ্ছেন আপনি খুব ভদ্র মানুষ, কারো সাথে ফোনে কথা বলেন না।

: আমি তো তেমন কাউকে আমার নাম্বার দেই না, আর এটাই সত্য।

: এহহহহ মিচকা শয়তান।

: আমি আবার কি করলাম?

: এসব বলে লাভ নাই। আপনাদের মত কম কথা বলে বোকা সাজার চেষ্টা করা ছেলেদের আমি হারে হারে চিনি। এরা মেয়েদের ইমপ্রেজ করার জন্য একদম নিরীহ সাজে। কিন্তু আমি ইমম্প্রেজ হচ্ছি না।

: মারডালা।

: এই সব ইনোসেন্ট সাজার চেষ্টা করা ছেলেরা সুযোগ পেলে যাতা করে ফেলে। এই টাইপের ছেলেরা লোকাল বাসে মেযেদের গায়ে হাত দেয়। এদের বিশ্বাস করা যায় না।

: আপনি এত বেশি বুঝেন কেন?

: আমি বেশি বুঝবো না কম বুঝবো সেটা আমার ব্যাপার আপনাকে নাক গলাতে বলছি নাকি। এহহ আসছে একবারে, আজাইরা লেখক।

: দেখুন আপনি কিন্তু রিতিমত আমাকে অপমান করছেন। আর আমার লেখা আপনার কি সমস্যা করছে হ্যা।

: ওরে বাবা, আপনার সাহস কি বেশি হয়ে গেলো নাকি?

: আপনি আমাকে নিয়ে যা ইচ্ছা বলুন। কিন্তু আমার লেখা কে নিয়ে কিছু বলবেন না। আর আমি কি আপনাকে পড়তে বলছি নাকি। ভালো না লাগলে পড়বেন না।

: ওই এত ভাব দেখান কেন আপনি। আমি ১০০ বার বলবো। পারলে ঠেকান।

: উফফ্ আপনার সাথে আর কথাই বলবো না। যত সব আজাইরা। বায়

: ওই ওই ফোন কাটবেন না বলে দিচ্ছি।

: ফোন কাটলে কি করবেন?

: রাজশাহিতে গিয়ে আপনাকে পিটিয়ে আসবো।

: ওকে তাই করুন। আমি দেখতে চাই আপনি কত বড় মাস্তান।

: আপনিতো আচ্ছা ঝগড়ুটে দেখছি এর জন্যই আপনার গার্লফ্রেন্ড আপনাকে ছেকা দিছে।

: আমি ঝগড়ুটে?

: তা নয়তো কি সেই প্রথম থেকে পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করে যাচ্ছেন।

: আমি শুরু করছি না, আপনি?

: আপনিই শুরু করছেন।। আপনি একটা ঝগড়ুটে।

: মারডালা ওকে আমি যখন শুরু করছি তখন আমি সরি বলছি। এবার হ্যাপি

: আমি কি আপনাকে সরি বলতে বলছি নাকি।

: আজবতো

: ওই আজবের কি দেখলেন, হুম আজবের কি দেখলেন। একদম মেরে হারগোর ভেঙ্গে দিবো। সরি বলে নিজেকে মহান আর উদার সাজানোর চেষ্টা করছেন না।

: কি মেয়েরে বাপ আগে পিছে যেদিকে যাবো, সেদিকেই দোষ।

: আপনাকে আগে পিছে যেতে বলিনি। যেটার জন্য কল দিছি সেটা শুনুন।

: ওকে বলে আমায় উদ্ধার করুন।

: কি বললেন?

: হাহাহা, বলুন কি বলবেন।

: শুনুন আপনাকে আমার জীবনের গল্পটা বলবো। আপনি সাজিয়ে সুন্দর করে লিখবেন। না হলে আপার ভার্সিটিতে গিয়ে ডিপার্টমেন্ট থেকে খুজে বের করে, পিটিয়ে, হাত পা ভেঙ্গে দিবো।

: ওকে চেষ্টা করবো।

: চেষ্টা না। মনোযোগ দিয়ে সুন্দর করে লিখবেন।

: আপনিতো একটু আগে বললেন আমি লিখতে পারি না। তাহলে এখন সুন্দর করে লিখতে বলছেন কেনো।

: ওই ওই ঝগড়ার কথা টানা কি আপনার স্বভাব নাকি।

: আপনিতো যত অপবাদ প্রথম দিনেই দিলেন। এটা আর বাকি রাখবেন কেনো বলে নিন।

: হিহিহি, ১০০ বার দিবো। আর শুনুন, একদম ছোট বেলা থেকে বলি, নাকি

: হুম বলেন।

জানেন হাসান ভাইয়া। আমারা দু বোন, আর আমি ছোট। আমার বাবার খুব ইচ্ছা ছিলো আমি ছেলে হবো। কিন্তু আমি মেয়ে হয়েই জন্মেছি। তবে আব্বু আমাকে ছেলের মত করেই মানুষ করেছে। এক কথায় যেটাকে বলে টম বয়। কিন্তু আমার আম্মু এটা মোটেও পছন্দ করতেন না।

ক্লাশ ৪ থেকে গাছে চরতাম। সাতার কাটতাম। আর ক্লাশ ৫ এ থেকে সাইকেল চালাতাম। সাইকেল চালিয়েই মূলত তখন স্কুলে যাইতাম। আর ক্লাশ নাইন থেকে বাইক চালাতাম।

আর ইন্টার ১ম বর্ষ থেকে সিগারেট খাইতাম।

: সিগারেট খাইতেন আপনি ?

: এত অবাক হওয়ার কি আছে। মেয়ে বলে কি সিগারেট খেতে পারবে না।

: না না পারবেন পারবেন। আপনি তো টম বয়।

: চুপ!! কথার মধ্য আরেক বার আঙ্গুল চালালে এক দম হাত পা ভেঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করে দিবো।

: ওকে আর বলবো না।

: আমি বেন্ডে গান করতাম। সব কিছুই ছিলো ছেলে মানুষের মত। এমনকি আমি ছেলে মানুষের চেয়ে মেয়ে মানুষের প্রতি বেশি ক্রাশ খাইতাম। কিন্তু একটা ঝড় এসে আমায় বদলে দিলো বদলে দিলো আমার জীবন ধারাকে।

: কি সেই ঝর?

: ভালোবাসা।

: কোন মেয়েকে ভালোবেসে কি নিজেকে বদলে ফেলছেন।

: চুপ। আমি কি ছেলে নাকি যে মেয়েকে ভালোবাসবো।

: আপনিতো বললেন আপনি মেয়েদের উপর ক্রাশ খান। তাই ভাবলাম…….

: যাই করি না কেনো অভার অল আমি একটা মেয়েই তো।

: বাহ এত তারা তারি বুঝতে পারলেন?

: এটা এত তারাতারি ছিলো না। এই একটা জিনিস বুঝতে আমার সময় লেগেছে ১২ টা বছর।

: তাই। তাহলে তো প্রথম থেকে শুনতে হয়। বলুন একদম শুরু থেকে।

: যখন ক্লাশ টুতে পরতাম। তখন আমার একটা দোস্ত ছিলো। ওর নাম ছিলো সাগর। আমাদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকতো। ওই ছিলো আমার জীবনের প্রথম ক্রাশ।

: মারডালা। আমিতে টুতে পড়ার সময় পেন্টটাও ঠিক ভাবে পরতে পারতাম না। আর আপনি কিনা ক্রাশ…….. মাই গড।

: আসলে আমি একটু বেশি পাকনা ছিলাম। সেই সময় সবাই যখন জিজ্ঞেস করতো মা মনি বড় হয়ে কি হবা। আমি কি বলতাম জানেন?

: কি?

: সাগর কে বিয়ে করবো। সবাই তখন হাহা করে হাসতো। আমার খুব রাগ লাগতো এটা নিয়ে। মাঝে সাগরের আম্মুকেও বলতাম আন্টি আমি কিন্তু সাগরকে বিয়ে করে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যাবো। আন্টিও সবার মত হাসতো।

: তারপর?

: কিন্তু ক্লাশ থ্রীতে উঠতেই সাগররা খাগড়াছড়ি চলে গেলো। ওর বাবার বদলি হয়ে ছিলো। সেদিন খুব কষ্ট হয়ে ছিলো। কারণ সাগর ছিলো আমার অন্যতম খেলার সাথি।

: তারপর।

: এরপর থেকে দীর্ঘদিন আমি ব্যস্ত ছিলাম আমার ছেলেমানুষিকতা নিয়ে। আমি ছিলাম আমার পাড়ার মধ্যে অন্যতম হাইলাইট মেয়ে। সুন্দর যে কম ছিলাম তাও না। অলটাইম ছেলেদের ড্রেস পরে ঘুরতাম বলে অনেকে উল্টাপাল্টা কথা বলতো কিন্তু আমি তার কেয়ার করতাম না।

ক্লাশ ৮ এ উঠতে উঠতে এলাকার বেশির ভাগ ছেলেই আমায় প্রপোজ করা শেষ করে ফেলেছিলো। এরি মধ্যে ৫ টা ছেলেকে রাস্তায় থাপ্পড় মেরেছিলাম।

: বলেন কি? কি করছিলো সেই সব ছেলে?

: ৩ টা ছেলেরে বাজে কমেন্ট করার জন্য আর দুইটারে প্রপোজ করার জন্য।

: আপনিতো ভয়ানক মেয়ে। যদি ওই ছেলেরা আপনার কিছু করে ফেলতো।

: এত বড় সাহস আমার পাড়া এবং এর আসে পাশের কারো নাই। কারণ আমার বাবা মোটামুটি প্রভাবশালী ছিলেন আমাদের এলাকায়।

: ওহহ আচ্ছা।

: আপনাকে ক্লাশ সেভেনের একটা মজার ঘটনা বলি। ওই ছেলেরে তো আমি আমাদের বাসার সামনে সেই মাইর দিসিলাম। পরে ছেলের মা আব্বুর কাছে বিচার নিয়ে আসছিলো।

: কেনো কেনো, কি হইছিলো……..

: একদিন সকালে স্কুল বন্ধ ছিলো। আম্মু আমাকে পাশের দোকান থেকে মসুর ডাল আনতে দিছিলো।

: তারপর।

: আমার যেতে ইচ্ছা করছিলোনা। তাই বাসা থেকে বাহিরে বের হয়ে কাউকে খুজছিলাম। হঠাৎ কাওছারের দেখা পেলাম। আমাদের বাসা থেকে একটু দূরেই ওদের বাসা। আমাদের সাথে পড়তো। একটু বোকা টাইপের। তাই আমি ওকে বললাম দোকান থেকে ডাল নিয়ে আসতে। ও টাকা না নিয়েই গেলো ডাল আনতে।

: তারপর

: যখন ডাল আনলো, আমি টাকা দিচ্ছিলাম, কিন্তু ও নিচ্ছিলো না। আমি কারণ জিজ্ঞেস করলাম। আর ও অমনি বললো ও নাকি আমাকে ভালোবাসে মেজাজ টা এমন খারাপ হয়ে গেছিলো যে ধরে সেই মাইর দিছিলাম।

: হাহাহা বখাটে মেয়ে। তারপর কি হইছিলো।

: কাউছার কাদতে কাদতে বাসায় গেছিলো। বিকালে ওর নাকি জ্বর আসছিলো। পরে ওর আম্মু, আব্বুর কাছে বিচার নিয়ে আসছিলো।

: আপনার আব্বু কি বললো।

: আমাকে অন্য ঘরে আটকিয়ে রেখে আব্বু কথা বলছে ওনাদের সাথে। না হলে আবার মাইর খাইতো আমার হাতে।

: পরে শুনি কাউছারের মা নাকি বলছে আপনার মেয়ে এমন গুন্ডা কেন। আমার ছেলেটাকে মেরে কি করছে দেখছেন।

: হাহাহা।

: আর একটা মজার ঘটনা ঘটতো ক্লাশ ৮ এর মাঝামাঝি সময়।

: কি রকম।

: মে কি জুন মাসের কথা। আমি আর আপু যখন বিকালে ছাদে বসতাম তখন একটা ছেলে ঢিল দিতো।

: কি সাংঘাতিক।

: মাঝে মাঝে ঢিলের সাথে চিঠিও থাকতো।

: চিঠিতে কি লেখা থাকতো।

: কি করছো। কিন্তু কোন নাম লিখা থাকতো না। তারপর একদিন দেখি ছেলেটা ঢিল দিয়ে ওয়ালের পাশে দাড়িয়ে আছে।

: তারপর।

: আমি ঢিলটা কুরিয়ে নিয়ে একদম ছেলেটার মাথায় সোজা ফেলে দিছি। কিন্তু ঢিলটা গিয়ে ছেলেটার কাধে লাগছে। আর ছেলে ওমাগো বলো, নেড়ি কুত্তা গুলো যেমন মাইর খাওযার পর দৌড়ায় আর পিছনে তাকায় সেই ভাবে পিছনে দেখছিলো আর দৌড়াচ্ছিলো।

: হাহাহা।

: এরপর আর কোন দিন ওই ছেলেরে আমাদের বাড়ির আশে পাশে দেখি নাই। এমনকি যদি বাইরে কোথায় দেখা হতো ছেলেটা মুখ লুকিয়ে পালাতো।

: আপনি তো আসলেই আমার কল্পনার বাহিরে কোন ক্যারেক্টার। খুব মজাই লাগছে আপনার গল্পটা।

: ওই চুপ আমি কি আপনাকে মজা নিতে বলছি।

: হাহাহা।

: এক ঘুষি দিয়ে সব দাঁত ফেলে দিবো আর একবার হাসলে।

: ওকে আর হাসবো না। তারপর কি হলো বলেন।

: পারার প্রায় সব ছেলেই আমায় প্রপোজ করছিলো। শুধু একটা ছেলে ছাড়া। ছেলেটা বেশ স্মার্ট আর খুব ভালো ছাত্র ছিলো। আমি যখন ৮ম শ্রেনীতে পরতাম তখন ছেলেটা ১০ম শ্রেনীতে পরতো। ছেলেটা খুব ভদ্র ছিলো। কারো সাথেই মিশতো না। খুব কম কথা বলতো, আর ভাব নিয়ে থাকতো।

আমার মত
: এহহহ ফালতু কোথাকার চান্স পাইলেই নিজেকে নিয়ে লাফালাফি করে।

: কি বললেন।

: ওই চুপ। তো আমার আবার এটা নিয়ে খুব ইগোতে লাগতো, কেনো এই ছেলের এত ভাব। তাই আমি আর আমার ভাগনী মিলে ছেলেটাকে প্রতিদিন টিজ করা শুরু করি।

: কি সিরিয়াস মেয়েরে বাপ।

: আমার ভাগনি বলতো, আন্টি দেখো তোমার জানু যাচ্ছে। আর আমি একটা ফ্লাইং কিস দিয়ে বলতাম- আজকের ড্রেসটা অনেক সুন্দর হইছে….. হেব্বি লাগছে….ইত্যাদি।

: তারপর কি হলো……

: প্রথম প্রথম ছেলেটা পাত্তা দিতো না।

: তারপর

: এর কিছুদিন পর দেখি ছেলেটা মুচকি মুচকি হাসে আমায় দেখে।

: তারপর

: ছেলেটার ssc পরীক্ষার পর আমায় প্রপোজ করে।

: আমার সেইদিন খুব ভালো লাগছিলো। কারণ আমি ছেলেটার মুড ভাঙ্গাতে পেরেছিলাম।

: তারপর আপনি রাজি হয়ে গেলেন। আর আপনার প্রেম শুরু হলো। দেন অনেক রোমান্টিক স্মৃতি। দেন ব্রেকআপ।

: চুপ এত বেশি বুঝেন কেন। নিজে ছেকা খেয়েছেনতো তাই সবাইকে একই ভাবেন।

: হুহ

: আমি ছেলেটাকে রিজেক্ট করে দিলাম।

: কি খারাপ

: কারণ আমার তো ছেলেদের ভালই লাগতো না। আমিতো মেয়েদের উপর ক্রাশ খাইতাম।

: কয় কিরে এই মেয়ে।

: আমার মেন্টালিটি ছিলো পুরো ছেলেদের মত। যদিও বা মেয়েদের মত বডি স্টাকচার ছিলো।

: হুহ

: যাই হোক অনেক চরাই উতরাই পার করে SSC পাস করলাম। তারপর রাজশাহি মহিলা কলেজে ভর্তি হলাম। পরিবারের চাপে আমার ছেলেমানুষিকতার উপর কন্ট্রোল আসতে শুরু করলো। টি-শার্ট ছেড়ে বোরকা পরতে হলো। বোরকা দিয়ে নিজের বাহিরের আবরণটা ভদ্র মেয়ের মত বানাতে পারলেও মনটা যেমন তেমনি রয়ে গেলো।

: কুকুরের লেজ হাজার ঘি মাখলেও সোজা হয় না।

: কি এত্ত বড় সাহস। আপনাকে আমি একদম গুলি করে মেরে ফেলবো।

: উচিৎ কথা বললে দোস্ত বেজার

: ওই ওই আপনাকে আমি কি উচিৎ কথা বলতে বলছি। একদম পানিতে চুবাবো।

: সাতার পারি।

: আপনার সাতারের আমি নিকুচি করি।

: আচ্ছা সরি তারপর কি হলো বলেন।

: গান গাবার সখ ছোট থেকেই ছিলো। আর সেই সুযোগটা পেয়ে গেলাম কোচিংয়ের ফাংশনের কারনে। আর যুক্ত হয়ে গেলাম একটা ব্যান্ডের সাথে। পুরো ব্যান্ড দলে আমিই একমাত্র মেয়েছিলাম।

: তারপর

: ব্যান্ডের সবাই সিগারেট খাইতো প্রাক্টিসের সময়। আর আমি তাদের দেখা দেখি সিগারেট টানতে শুরু করি। একটা সময় আমি ফুল সিগারেটে আসক্ত হয়ে গেলাম। দিনে ৮-১০ টা সিগারেট লাগতো।

: মারডালা।

: আমার জীবনের মোরটা এভাবে বদলে যাবে তা কখনো ভাবিনি। কিন্তু এমন কিছুই ঘটলো আমার সাথে। ঝড়ের মত বিজয় আমার জীবনে আসলো আর সব কিছু লন্ড ভন্ড করে দিলো আমার জীবন।

: কি রকম।

: বিজয় এর সাথে আমার প্রথম দেখা রাজশাহী থেকে জামালপুর যেতে বাসে।

: তারপর প্রেম শুরু?

: আরে ধুর না।

: তাহলে

: প্রথম দিনতো বিজয় আমার আব্বুকে ভাই বলছিলো।

: মানে

: বিজয় আব্বুকে বলছিলো ভাই একটু সরেন ওটা আমার সিট। আমার আব্বু কে দেখলে মনেই হয়না ওনার ছোট মেয়েও কলেজে পরে। একদমি বয়স বোঝা যায় না।

: তারপর কি হলো…..

: ওকে প্রথম থেকেই বলছি। আমার আন্টির বাসা জামালপুরে।

: হুম

: কলেজে ২ বর্ষে উঠার পর, একদিন আব্বু আর আমি জামালপুর যাচ্ছিলাম আন্টির বাসায়।

: তারপর

: বাসে আমাদের সিটের পাশের সিটেই বসেছিলো একটা ছেলে, দেখতে বেস স্মার্ট। কানে এয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনছিলো।

: তারপর

: তো ছেলেটার হেয়ার কাটটা আমার খুব ভাল লাগছিলো। তাই সেটা মনোযোগ দিয়ে দেখছিলাম। কিন্তু হঠাৎ ছেলেটা আমার দিকে তাকাতেই ধরা খেয়ে গেলাম।

: তারপর

: জীবনে প্রথম বারের মত বিব্রতকর পরিস্থিতির স্বীকার হলাম আমি কেমন যেনো লজ্জা লজ্জা লাগছিলো। যদিওবা আমার লজ্জা বলতে কিছু নাই। কারণ লজ্জা থাকে মেয়েদের

: তার মানে আপনি কি মেয়ে না।

: না আমি ছেলে।

: কি

: না মেয়ে আসলে আমি কনফিউস আমি কি। আমার দেহের গঠন মেয়েদের মত। কিন্তু মনমানুষিকতা একদম ছেলেদের মত।

: OMG এটা আবার কি রকম ব্যাপার।

: আমি জানি না।

: যাই হোক তারপর কি হলো বলেন।

: সেই দিন থেকেই আমার জীবনে একের পর এক কো-এক্সিডেন্ট ঘটা শুরু হলো।

: কি রকম?

: ব্যপারগুলো ম্যাজিকের মত হতে লাগলো।

: বুঝলাম না।

: জামালপুরে আমরা যেই পাড়াতে গেছিলাম ছেলেটাও সেই পাড়াতেই গেছিলো। আমরা তিনদিন ছিলাম সেখানে এবং তিন দিনই ছেলেটার সাথে আমার দেখা হইছে।

: এটা হতেই পারে।

: আরে শুনুন না। তিনদিন পর আমরা যেই গাড়িতে করে বাসায় ফিরছিলাম সেই গাড়িতে আবার ছেলেটার সাথে দেখা হয়ে গেলো। কেনো জানি এই ছোট ছোট ব্যপারগুলা আমায় খুব ভাবাতে লাগলো। আর আমি অবাক হতে শুরু করলাম।

: আর এটা থেকে আপনি ছেলেটার প্রতি দূর্বল হয়ে পরলেন?

: আরে না। রাজশাহীতে আমাদের বাসাছিলো পদ্মা আবাসিকে। আর সেই পাড়াতেই ছিলো ছেলেটার বাসা। অথচ সেই বাস জার্নি আগে কোন দিন আমি ছেলেটাকে দেখি নাই।

: তারপর

: তো বাসায় আসার পরদিন থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে একবার হলেও ছেলেটার সাথে আমার দেখা হতে লাগলো। হয় কলেজে যেতে-আসতে না হয় কোচিং এ যেতে-আসতে। একদিন আমি বানিজ্য মেলায় যাবো বলে কলেজ কোচিং কোথাও যাই নাই।

: তারপর

: আমি ভেছিলাম আজ হযত দেখা হবে না। কিন্তু আজব ব্যপার আমি মেলায় ঢুকার সময় ছেলেটার সাথে দেখা হয়ে গেলো ছেলেটা মেলা থেকে বের হচ্ছিলো। আমি সেইদিন এতটাই শক খেয়েছিলাম যা বলে বোঝাতে পারবো না। আর এভাবে ছেলেটার সম্পর্কে জানার আগ্রহটা বেড়ে যায় আমার। এভাবে আরো কিছু দিন যাবার পর একদিন রাতে দেখি ছেলেটা আমায় ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিয়েছে ফেসবুকে। আর সেদিনি ওর নামটা জানা হলো। ছেলেটার নাম বিজয়।

: হুম বুঝছি তারপর প্রেম হয়ে গেলো তাই না।

: ধুর আপনি কথার মধ্যে এভাবে হেন্ডেল মারবেন না। এমন করলে কিন্তু আপনার হাত পা ভেঙ্গে পাউডার বানিয়ে দিবো।

: হুহ তারপর কি হলো বলুন।

: তারপর আবার কি কথা হতে শুরু হলো আমাদের। আমি তো ওর প্রতি আগে থেকে কৌতুহলী ছিলাম। তাই খুব বেশিদিন সময় লাগেনি ওর আমাকে কনভেন্স করতে। আমাদের রিলেশনটা শুরু হয়ে গেলো।

: তারপর

: প্রথম প্রথম নিজের কাছেই কেমন যেন লাগতে ছিলো। মনে হচ্ছিলো আমি কি মেয়ে হয়ে গেলাম নাকি। আর একটা ছেলের সাথে রিলেশন করছি আমি ব্যপারটা নিজের কাছেই অদ্ভুত লাগতে শুরু করলো।

তারপর

: বিজয় ধীরে ধীরে কি ভাবে যেনো আমার সব কিছু বদলে দিতে লাগলো।

: কি রকম।

: প্রথমে ও আমার সিগারেট খাওয়া টা বন্ধ করে দিলো।

: তারপর

: তারপর ধীরে ধীরে আমার মাথায় মেয়ের ভুত চাপাতে শুরু করলো। আমি ধীরে ধীরে আম্মুকে রান্নার কাজে হেল্প করতে শুরু করলাম এবং কিছুদিনেই মুটামুটি রান্না সহ মেয়েদের অনেক কাজই শিখে গেলাম। আসতে আসতে নিজের ভেতরের সুপ্তনারী সত্বা জাগ্রত হতে লাগলো। জানেন এখনো না আমার এসব ভাবলেই অবাক লাগে। আগে কখনো ভাবিনি আমার দ্বারা সাংসারিক কাজ হবে। কিন্তু সেই সময়গুলোতে আমি সংসারের স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম।

: বাহ ভালোই করছে বিজয় ভাইয়া।

: ভালো না ছাই। আমাদের রিলেশনের কয়েক মাস পর আমি জানতে পারলাম বিজয় ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত। তাও আবার ছোট মোট কেউ না বলা যায় পাড়ার ক্যাডার। অনেক মারামারি নাকি করেছে ও। সব সময় নাকি সাথে অস্ত্র নিয়ে ঘোরে।

: তারপর।

: প্রথম দিকে আমি এটা বিশ্বাস করতাম না। তাই একদিন সাহস করে ওকে জিজ্ঞেস করলাম,,,,

: তো কি বললো বিজয় ভাইয়া….

: বিজয়ের সততা দেখে আমি অবাক হলাম। আমার কাছে কিছু না লুকিয়েই সব কিছু শেয়ার করলো। ও হয়তো চাইলে আমার কাছে ব্যপারটা লুকাতে পারতো। কিন্তু তা করলো না ও।

: তারপর

: ও আমাকে এটাও বললো দেখো আমি যদি আজকে তোমাকে সত্য কথা গুলো না বলি তবে তুমি অন্য কারো কাছে কথা গুলো কখনো জানলে আমাকে আর হয়ত বিশ্বাস করতে পারতা না।

: তো আপনি কিছু বললেন না।

: কি আর বলবো? আর বললেও বা কতটুকু মানতো ও।

: মানে কি?

: মানে কিছুই না। ও ওর মত আমি আমার মত।

: তার মানে ব্রেক আপ।

: ব্রেক আপ কেনো হবে। আপনার মাথায় কি ব্রেকআপ ছারা আর কিছু আসে না।

: হাহাহা

: ছেকা খোর কোথাকার। ঘুসি মেরে দাত ভেঙ্গে ফেলবো। নিজের ব্রেকআপ হইছে জন্য এখন সবারি ব্রেকআপ হবে এটা ভাবেন কেন। সবাইকে নিজের মত ভাবেন তাই না।

: আল্লাহ এত বড় অপবাদ।

: আমি ওকে মারামারি করতে নিষেধ করলাম। তবে ও বললো ধীরে ধীরে ছেড়ে দিবে। সব থেকে অবাক করার মত বিষয় কি ছিলো জানেন?

: কি?

: বিজয় আমার থেকে এক ক্লাশ জুনিয়র ছিলেন।

: মারডালা।

: তো ওর খুব ইচ্ছা ছিলো ডিফেন্সের চাকুরী করবে। ওদের পরিবারের অনেকেই নৌ-বাহিনীতে চাকুরী করে। ওরো তাই করার ইচ্ছা।

: তারপর

: আমি HSC পাস করলাম । ততদিনে ওর বাবা মা সহ সবাই আমাদের রিলেশনের ব্যপারটা জেনে গেছিলো। তবে আমার পরিবারের কেউই জানতো না আমাদের রিলেশনের ব্যাপারটা।

: তারপর।

: ২০১৬ সালটা আমার জীবনের সব থেকে ভালো বছর ছিলো।

: কি রকম?

: সেই বছরেই বিজয়ের নৌবাহিনীতে চাকুরী হয়, মানে ওর স্বপ্ন পুরন হয়। আমার HSC এর রেজাল্ট টাও ভালো হয়। আর আমি ভার্সিটিতেও চান্স পাই।

: ওহহহ আচ্ছা।

: সেই সাথে ২০১৬ সাল থেকে আমার কষ্টও শুরু হয়। কারণ বিজয়ের সাথে আমার যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

: মানে ব্রেকআপ?

: ধুর বিজয় ট্রেনিং এ যায়। আর ট্রেইনিং এর সময় ফোন ব্যবহার করা যায় না। সাপ্তাহে একদিন কল করে তাও ৪-৫ মিনিটের বেশি কথাই বলা হয় না। আমার জীবনটা ওকে মিস করি আর কান্না করতে করতে শেষ হবার উপক্রম।

: আপনি কাদতেও পারেন?

: তো কান্না করা কি শুধু আপনার নামে লেখা আছে?

: তা নেই

: সারাটা দিন নিজেকে বিভিন্ন কাজে, ক্লাশ, ক্যাম্পাস নিয়ে ব্যস্ত রাখি। তবে রাতে যখন রুমে একা থাকি তখন আর নিজেকে সামলাতে পারিনা। ওকে এতটাই মিস করি, যে কখনো কাউকে ভালোবাসেনি তাকে বলে বুঝাতে পারবো না।

: তো এখন কি অবস্থা।

: বিজয়ের ট্রেনিং আরো ৭ মাস হবে। জানি না এই ৭ মাস কি ভাবে যাবে। তবে ওকে মিস করতে করতে আমি শেষ হয়ে যাবো এটা শিওর।

: ব্যাপার না ধৈর্য্য ধরুন সব ঠিক হয়ে যাবে। দেখতে দেখতে এই ৭ মাসও চলে যাবে।

: কারো অপেক্ষায় কখনো পথ চেয়ে থাকেন নাই, তাই এটা এত সহজ ভাবে বলতে পারলেন।

: যাই হোক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি ?

: পড়াশুনা শেষ করা। আর ততদিনে বিজয়ের বিয়ের অনুমতিও হবে। তারপর পারিবারিক ভাবে বিয়ে করা। আর বিয়ের পর আমি একটা চাকুরী নিবো,, বিজয়তো ওর চাকুরী নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। তাই টাইম পাসের জন্য হলেও আমি একটা চাকুরী করবো।

: বাহ সুন্দর পরিকল্পনা। বিয়ের সময় দাওয়াত দিয়েন।

: ওকে দিবো। আর আমার জন্য দুআ করিয়েন যেনো আল্লাহ আমাকে এই ৭ মাস ধৈর্য্য ধারন করার সুযোগ দেয়।

: আমার জন্যই বা কে দুআ করে। নিজের চরকায় তেল দিতে পারি না আবার আপনার।

: কি বললেন?

: না মানে বললাম আমার কাছে দুআ না চেয়ে কোন পীর বাবার কাছে দুআ চান হয়ত আপনার ধৈর্য্য আল্লাহ বাড়িয়েও দিতে পারে।

: হুহ মিনিট প্রায় শেষ না হলে আজ আপনাকে সোজা করে ছেরে দিতাম। যাই হোক ভালো থাকুন আর মাঝে মাঝে আপনাকে বিরক্ত করবো। কিন্তু যদি বিরক্ত হন বা বিরক্তি প্রকাশ করেন তবে ক্যাম্পাসে আপনাকে খুজে বের করে নাক ফাটিয়ে দিবো।

: হুহ যাই হোক আপনার নামটা যেন কি?

: আমি…… (টুট টুট টুট)

ধুর মনে হয় কলটা কেটে গেলো। তার মানে মেয়ে মিনিট শেষ। আমি কল ব্যাক করতে ধরলাম নাম্বার টাতে, আর তখনি একজন ভদ্র মহিলা বেশ সুন্দর ভাবে বলে উঠলো  আপনার একাউন্টে যথেষ্ট পরিমাণ টাকা জমা নেই……..