ঈদ-এ মীলাদুন নবী১২ই রবিউল আ্উয়াল সৃষ্টিকুলের শিরোমনি ইমামে কেবলাতাঈন, রাহমাতাল্লিল আলামিন, সিরাজাম-মুনিরা হযরত মুহম্মদ মোস্তফা আহাম্মদ মুজতবা (আ.) অজ্ঞানতার সকল অন্ধকার ভেদ করে ধরাধামে আবির্ভূত হন। তাঁহার আগমনে সৃষ্টির সকলই আনন্দে নাচিয়া উঠিল শুধুমাত্র #মহাজ্ঞানী_ইবলিশ ব্যতীত। সেদিন সে চিৎকার করে কেঁদেছিল, যা আজো তার অনুসারীরা কাঁদে সিরাতুন্নবী পালনের মাধ্যমে। অথচ মিলাদুন্নবী পালন করা আল্লাহর সুন্নত। আল্লাহ নিজেই মিলাদুন্নবী পালন করেছেন সুরা আলে ইমরান আয়াত ৮১-৮২ দ্রষ্টব্য। তাছাড়াও কোরানে আরও বহু দলিল আছে। মিলাদুন্নবী (সঃ) এর অর্থ হচ্ছে নবীগণের জীবন বৃত্তান্ত বর্ণনা করা। যেমন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরানুল কারিমে হযরত ঈশা ইবনে মরিয়ম (আঃ)-র জীবন বৃত্তান্ত বর্ণনা করেছেন। যেমন আল্লাহ বলেন–
“তাঁহার প্রতি শান্তি যেদিন সে জন্মগ্রহণ করে এবং যেদিন মৃত্যুবরণ করবে এবং যেদিন জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থিত হবে।”- (সুরা মরিয়ম, আয়াত-১৫ নং আয়াত)।

সুতরাং প্রতিটি মহামানবের আবির্ভাব ও পর্দা গ্রহন উভয় দিনই দুনিয়াবাসীর জন্য পরম শান্তির।

মহানবী হযরত মুহম্মদ (সঃ)-র বেলাদত শরীফ উপলক্ষে সমাবেশ ও খুশি তথা ঈদ পালন করা কোরান সম্মত। ইবলিশের ওয়াওয়াসা যাদের অন্তরে প্রবল তারাই কেবল এর বিরোধিতা করে থাকে।

আসুন সূরা ইউনুস এর ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াত দুটি দেখিঃ–

يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ

“হে লোক সকল (মানবজাতি)! অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের রবের (প্রতিপালকের) পক্ষ হইতে (যাহাদের অন্তরে ব্যধি রহিয়াছে) তাহাদের জন্য উপদেশ বাণী (নসিহতকারী বাণী) আসিয়া পৌছিয়াছে।”
#ইয়া_আইয়ুহান্নাসু_কাদ_জায়াকুম_মাওয়েজাতুন_মিররাব্বিকুম #ওয়া_শিফাউন_লিমা_ফিস-সুদূরে)।”
#এবং অন্তর সমূহের বিশুদ্ধতা, হিদায়েত এবং রহমত (দয়া) তো একমাত্র মোমিনদের (ঈমানদার বা বিশ্বাসীদের) জন্যই।
#ওয়াহুদান_ওয়া_রাহমাতুল_লীল_মুমিনীন।”

আয়াত (১০)৫৮.
বল, (হে মুহম্মদ)! অনুগ্রহ ও রহমত তো আল্লাহরই। সুতরাং উহাদের এই বিষয়ে আনন্দিত হওয়া উচিত। তাহারা যাহা সঞ্চয় করে তাহা হইতে উত্তম|
#কুল#বেফাদলীল্লাহে_ওয়া_বেরাহমাতিহী_ফাবেজালিকা_ফাল ইয়াফরাহু, #হুওয়া_খাইরুম-মিম্মা ইয়াজমাউনা)।”

সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াতে বোঝা যাচ্ছে, মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ যে বিষয়টি এসেছে, তার জন্য খুশি প্রকাশ করতে বলা হচ্ছে। সেই বিষয়টির হচ্ছে-
১) নসিহতকারী,
২) অন্তরের পরিশুদ্ধতাদানকারী,
৩) হেদায়েত দানকারী ও
৪) রহমতদানকারী

->>আল্লাহ সোবহান তা’লা কুরআন পাকের সূরা আলে ইমরানের ১৬৪ নং আয়াতে আরও ঘোষনা করেছেন–

لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍنٍ

“নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের (ঈমানদার বা বিশ্বাসীদের) উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের নিজেদের মধ্য থেকে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন। যিনি তাদের উপর তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দান করেন এবং তারা নিশ্চয় এর পূর্বে স্পষ্ঠ গোমরাহিতে (পথভ্রষ্ট) ছিল।– (সুরা আলে ইমরান ১৬৪)
____এ আয়াত শরীফ অনুসারে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই হচ্ছেন নসিহতকারী, আমাদের অন্তরের পরিশোধকারী এবং হেদায়েতদানকারী বুঝানো হয়েছে।

আবার সূরা আল আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে বলা হচ্ছে-

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ

(হে মুহম্মদ !) আমি আপনাকে আমার সমস্ত জগৎ সমূহের জন্য রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি।
#ওয়ামা_আরসালনাকা_ইল্লা_রাহমাতাল্লিল_আলামিন)” –( সুরা আল আম্বিয়া, ১০৭) অর্থাৎ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছে সমগ্র কুল-কায়েনাতের অর্থাৎ স্রষ্টার সৃষ্টিতে যাহা কিছু আছে সব কিছুর জন্যই নবী মুহম্মদুর রসুলুল্লাহ (সঃ) রহমত। জাহেরে, বাতেনে, আওয়ালে আখেরে।

=>সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াত, সূরা আল ইহরানের ১৬৪ নং আয়াত এবং সূরা আম্বিয়ার ১০৭ আয়াত গুলো থেকে পাওয়া যায়—
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন (১). নসিহতকারী, (২). হেদায়েতদানকারী, (৩). অন্তরের পরিশুদ্ধতাদানকারী এবং (৪). রহমত। যার প্রশংসা আল্লাহ নিজেই করেছেন #রাহমাতাল্লিল_আলামিন” কেবল মানব জাতির জন্যই নয় বরং আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের যতগুলি জগৎ আছে তথা ফেরেশতা জগৎ, রুহের জগৎ, নক্ষত্র জগৎ, জ্বীন জগৎ ইত্যাদি আকাশ ও জমিনে যা কিছু সৃষ্টিতে বিকাশমান সকল জগতের জন্যই তিনি রহমত। তাই উনাকে পাওয়ার জন্য খুশি প্রকাশ করাটা মহান আল্লাহ তা’লার নির্দেশ এবং সব চাইতে ফজিলত পূর্ণ আমল| — (সুবহানাল্লাহ”)

**আর যারা খুশি তথা ঈদ তথা ঈদ-এ মিলাদুন্নবী পালন করতে চায়না বা মানে না তারা #ফাসেক তথা সত্যত্যাগী কওম সুরা আলে ইমরান ৮২ নং আয়াত দ্রষ্টব্য
জাযাকাল্লাহুল খায়ের*♡*