সকালে ঘুমিয়ে আছি, তখন প্রায় সাড়ে আট টা বাজে।তখন আমার বউয়ের আওয়াজে আমার ঘুমটা ভাঙ্গলো। আমি কিন্তু বিবাহিত না তবে আমার মা বলে আমার মোবাইল নাকি আমার বউ। যাই হোক, মোবাইলের আওয়াজে আমার আরামের ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। ঘুম ঘুম চোখে মোবাইলটা হাতে নিতেই দেখি রিজু ফোন দিছে। প্রথম ফোনটা কেটে দিলাম কারন ফোনটা ধরলেই বলবে ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য।
কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রী কি এটা বুঝে না যে আমার মত শিশু গুলো এতো সকালে কেমন করে ঘুম থেকে উঠবে। কথা হলো কথা তা না, যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তাম তখন তো কত নিয়ম মেনে সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে স্কুলে চলে যেতাম। তারপর হাই স্কুলে উঠে সকালে প্রাইভেটে যেতাম এবং তারপর স্কুল। এরপর কলেজের কত কষ্ট করছি। পরিশেষে ভার্সিটি ভর্তি পরীক্ষায় গাধার মত খেটে পরীক্ষা দিয়ে পাবলিক ভার্সিটি চান্স পেলাম। তারপর তিনটা বছর অনেক পড়লাম। এরপর ট্রেনিং করলাম আরো ৩ মাস। আর এখন আমার হাতে শেষ ৬ মাস আছে ভার্সিটির ফাইনাল পরীক্ষার। এখন যদি ঠিক মত ঘুমাতে না দেয় তাহলে এই ছাত্র জীবনে আর ঘুমাবো কবে?
আমাদের মত শিশুদের প্রতি একটু নজর নেওয়ার সময় নাই শিক্ষা মন্ত্রীর। ওনি মনে হয় চায়, সাড়া দিন রাত লেখা পড়া করতে করতে আমাদের মাথার চুল গুলোও পড়ে যাক আর মাথাটা একটা স্টেডিয়াম হয়ে যাক।
যাই হোক, রিজুর প্রথম ফোন কেটে দেওয়ার পর রিজু আবার ফোন দিলো। তাই এবার বাধ্য হয়ে ফোনটা ধরলাম…
— কিরে পাপন কোথায় তুই? ফোন দিলে ফোন কেটে দেস কেন?
— কেন কি হইছে?
— আরে তোর সাথে আমার জরুরী দরকার আছে দোস্ত।
— ফোনে বল কি হইছে?
— ফোনে বলা যাবে না। দরকারটা আমার হলেও তোর নিজের এখানে লাভ আছে।
— কি রকম?
— আজ সকালে যখন আমি জীমে যাচ্ছিলাম তখন আমার সাথে ঐশির দেখা হয় আর ও তোর কথা জিজ্ঞেস করছিল।
— কি কথা?
— বেশি কিছু না। বলছে আজ ওর সাথে দেখা করতে।
— কোথায়?
— সাড়ে ৯টায় ভার্সিটির সিভিল ভবনের সামনে।
— কি বলস? আমাদের ভবনের সামনে কেন? আমার থেকে কি প্রতিশোধ নিবো নাকি?
— দোস্ত আমি কিছু বলতে পারি না। যদি চড় মারে তাহলে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে সহ্য করে নিস কারন জানিস তো আমি ঐশির কাজিনকে লাভ করি।
— কী বললি?
— না মানে ওইখানে সহ্য করে নিস। তারপর আড়ালে আমারে ২টা চড় মেরে দিস।
— আচ্ছা ওইটা বাদ দে। ভার্সিটি আসলেই বুঝা যাবে কেন দেখা করতে বলছে? আগে থেকে এতো কিছু ভাবলে চলবে না। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে।
— হুমম তোর গাল গুলো রেডি রাখিস।
— ওই চুপ, তুই ফোন রাখ।
— পাপন তুই না আমার ভাই লাগস।
— তেল কম মারবি। আমি কোন ইঞ্জিন না যে তেল দিলে চলবো।
— দোস্ত একটা চড়েরই তো ব্যাপার…..
রিজুরে আর কিছু বলতে না দিয়ে আমি ফোনটা কেটে দিলাম। ফোনটা দিয়েই বলতাছে চড় খাওয়ার জন্য।
.
ঐশি হলো কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের ২য় বর্ষের ছাত্রী। ওর সাথে আমার পরিচয় রিজুর কারনে। কারন, রিজু ঐশির কাজিন দিয়ার সাথে প্রেম করে। একদিন রিজু বলছিল ওর গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করাবে তাই আমাকে নিয়ে গেল। আর ওই দিকে রিজুর গার্লফ্রেন্ড দিয়া ঐশিকে নিয়ে আসলো। ভার্সিটির পাশের পার্কে আমরা সবাই দেখা করি। কিন্তু ঐশি এসে এমন একটা ভাব নেয় যেন মহারানী ভিক্টোরিয়া। হঠাৎ রিজু বলে…..
— পাপন ভাই আমার, তুই আর ঐশি মিলে কথা বল। আমি আর দিয়া একটু ওইদিক থেকে আসছি।
— কিন্তু তারাতারি আয়।
ওরা দুইজন চলে গেল আর পার্কের বেঞ্চে আমি আর ঐশি বসে আছি। আমাদের বসার মাঝে মনে হয় ৩ জন বসার জায়গা খালি। মানে চেয়ারের শেষ দুই প্রান্তে আমরা দুইজন দুই দিকে বসে আছি।
আমি ভাবলাম ও হয়ত লজ্জায় আমার সাথে কথা বলছে না তাই আমি ওর পাশে গিয়ে বসলাম তবে দশ আঙ্গুল ফাকাঁ আছে। এতেই ও মারাত্মক রাগ নিয়ে আমার দিকে তাকালো….
— আরে এভাবে তাকাচ্ছো কেন?আমি কি তোমার গায়েঁ উপর উঠে বসছি নাকি।
— ( ও চুপ করে আছে)
— হায় হায় তুমি বোবা নাকি। আচ্ছা মনে কষ্ট পেয়ো না। তুমিও দেখো তোমারও একটা প্রেম করার মানুষ হবে। আমি এটা প্রার্থনা করি।
— ওই আমি বোবা তোমায় কে বলল?
— তাহলে যে কথা বলছো না? যাক বাবা বাচাঁ গেল, আমি তো ভাবলাম মেয়ে এতো সুন্দর কিন্তু গলায় কি সমস্যা?
— ওই এতো কথা বলছো কেন? চুপচাপ থাকতে পারো না। বান্দর একটা।
— কী বললে?
— বললাম বান্দর। ও সরি তুমি তো আবার কলা গাছের বান্দর।
— তোমাকে এই নাম কে বলল?
— তোমার বন্ধু রিজুই তো আমার কাজিন দিয়াকে বলছে এটা তোমার ডাক নাম।
— কী? আজ ওই হারামী একদিন কি আমার যতদিন লাগে।
— ( আবার চুপ হয়ে রইলো)
— কি হলো তুমি চুপ করে আছো কেন? নিজেকে কি মহারানী ভিক্টোরিয়া ভাবো।
— হুমম ভাবি তাতে তোমার কি?
— ভালো। তুমি তো ভিক্টোরিয়া না বরং মহারানী ব্যাকটেরিয়া।
— ওই কি বললে….
আমি কিছু বলতে যাবো তখনই দিয়া আর রিজু চলে আসলো। তাই আর কিছু বললাম না। শুধু রিজুর কাধেঁ হাত দিয়ে বললাম, ” চলো চান্দু, আজ তোমার হচ্ছে। ” এরপর ওদের বিদায় দিয়ে চলে আসি এবং আমার রিজু ভাইকে উত্তম মধ্যম দিয়ে বাসায় পাঠাই দেই।
ওদের সাথে দেখা করার কিছু দিন পর শুধু ঐশির কথা মনে পরতে থাকে তাই রিজুর থেকে ঐশির আইডিটা নেই আর ওরে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাই। কিন্তু ও আমাকে ঝুলিয়ে রাখে। তাই নিজের রাগটাকে কন্ট্রোল করে ওরে একটা ম্যাসেজ পাঠাই, “আমি ওই পাপন এখন সরি বলতে এড দিছি”।
ও হয়ত ম্যাসেজটা দেখেই আমার ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট টা কনফার্ম করে। কিন্তু আমার ম্যাসেজের রিপ্লাই দেয় না। তাই আমি মজা করতে ওর টাইম লাইলে গিয়ে লেখি ” কেমন আছো গো আমার বান্দরনী মিস. ব্যাকটেরিয়া। ”
ও অন লাইনে না থাকার কারনে এই পোস্ট টা করি আর ওর অনেক ফ্রেন্ড এটা দেখে কমেন্ট করে। তাই পরে যখন নেটে আসে তখন এটা সাথে সাথে ডিলেট করে দেয় আর আমারে একটা ম্যাসেজ দেয় ” আজ বুঝলাম তোমার নাম কেন কলা গাছের বান্দর। ” ওর এই ম্যাসেজ দেখে যখন আমি রিপ্লাই দিতে যাই তখন দেখি ম্যাসেজ যাচ্ছে না তবে ও আমার ফ্রেন্ড। মানে আমাকে ম্যাসেজ ব্লক করে রাখছে।
.
আর এই কারনেই হয়ত রিজুকে বলল, আমি যেন ওর সাথে আজ সাড়ে নয়টায় আমাদের সিভিল ভবনে দেখা করি। আমি যাবো তবে দেখা করবো না বরং দূর থেকে দেখবো।
তাই বিছানা ছেড়ে তারাতারি ফ্রেশ হয়ে তারাতারি বের হয়ে পরলাম। বাসা থেকে বের হয়েই রিজুকে বলে দিলাম যে আমি আসছি।
১৫ মিনিট পর ভার্সিটি গিয়ে রিজুকে সাথে নিয়ে একটা গাছের আড়ালে চলে গেলাম। রিজু যখন জানতে চাইলে আড়ালে আসলাম কেন তখন ওরে বুঝিয়ে বললাম, আসলে ওরে আমি দেখতে চাই আমার সাথে দেখা না হলে কি করে আর আমার নাম্বারও ওর কাছে নেই।
রিজুর সাথে কথা বলতে বলতে ঐশি আমাদের ভবনের সামনে এসে হাজির আর ও বার বার ওর ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। এবার দেখি কন্যা তুমি কি করো?
এভাবে প্রায় ১৫ মিনিট পার হলো। তখন ও ওর মোবাইল টা বের করে কাকে যেন ফোন দিলো। আর কি বলল কিছুই শুনতে পেলাম না। তারপর ফোনটা রেখে দিল আর কি যেন লেখলো আবার ওয়েট করতে লাগলো। প্রথমে ভাবলাম হয়ত আমাকে ফোন দিচ্ছে কিন্তু আমাকে ফোন দিলো না তাহলে কাকে ফোন দিলো। কথাটা ভাবতে একটু লেট হলো কিন্তু আমার মোবাইলটা বেজেঁ উঠতে লেট করলো না। মোবাইল টা হাতে নিতে আরো অবাক হয়ে গেলাম কারন এই ভার্সিটির রাজনীতির এক বড় ফোন দিছে। বড় ভাইয়ের নাম্বারটা দরকারে সেভ করে রেখে দিছিলাম। যদি কোন দরকার হয় তাহলে ফোন দিতাম। কিন্তু বড় ভাই আমার নাম্বার পাইলো কেমনে?
ফোনটা রিসিভ করতে প্রশ্ন আসলো আমার দিকে…..
— পাপন বলছো তো?
— জ্বি ভাইয়া বলেন।
— মনে হয় আমাকে চিনতে পারছো। তুমি যেখানেই থাকো, ৫ মিনিটের মাঝে সিভিল ভবনের সামনে এসে দাড়াঁও।
— ওকে ভাইয়া।
দ্বিতীয় বার ভাববার মত কোন কিছু রইলো না বরং চুপচাপ গাছের আড়াল থেকে বেড়িয়ে ওর সামনে হাজির হলাম। আর ও আমার দিকে কেমন যেন একটা আপসোস দেখানো লুকে তাকিয়ে আছে। আমাকে কিছু বলতে না দিয়ে ঐশি নিজেই এমন এক কথা বলল যা শুনে আমার চোখ পুরো সপ্তমে চলে গেল….
— আহারে আমার বাবুটা ২৫ মিনিট লেট করে আসলে যে, কোন কাজে মনে হয় আটকে গিয়ে ছিলে বুঝি।
— তু….. তুমি..
— আরে কি হলো বাবু? কথা বলতে এতো তুতলাচ্ছো কেন?
— এই বড় ভাইটা তোমার কে হয়?
— কেউ হয় না তবে আমাকে প্রপোজ করতে আসছিল আর আমি এর আগেই ওরে ভাই ডেকে ফেলি। তারপর ওর নাম্বারটা নিয়ে রাখি। যদি ভার্সিটির কোন বান্দর আমায় ডিস্টার্ব করে তাহলে ভাইয়ের কাছে সোজা বিচার।
— এটা না বুঝলাম কিন্তু আমার নাম্বার তোমার কাছে আছিল নাকি।
— হুমম তাই তো আমি লেখে টাইপ করে ভাইকে পাঠালাম।
— আমার নাম্বার যদি তোমার কাছে ছিলই তাহলে আমাকে ফোন দিতে পারতে।
— তোমাকে ফোন দিলে তুমি বলতে তুমি নানা জায়গায় আছো। আর উল্টা আমায় ভার্সিটি টা ঘুরাতে।
— বাহ্ তোমার বুদ্ধির তো তুলনা নেই। তা আমায় দেখা করতে কেন বললে?
— আসলে তোমায় দেখতে শখ হচ্ছিল যে তুমি কত বড় বাদর যে আমার টাইম লাইনে গিয়ে আমায় ভালবাসা দেখাও। তাই আমিই আসলাম তোমায় ভালবাসা দেখাতাম। তা আমায় লুকিয়ে লুকিয়ে গাছের আড়াল থেকে না দেখে সামনে আসলেও পারতে।
— আমি গাছের আড়ালে ছিলাম এটা তোমায় কে বলল?( খুব অবাক হয়ে জানতে চাইলাম)
— এই তো আমার একটা মাত্র দুলাভাই মিস্টার রিজু।ও আমাকে ম্যাসেজে বলছে।তাই তো বড় ভাই কে ফোনটা দিতে হলো।
— তুই আসলে একটা ঘর শত্রু বিভীষণ। ( কথাটা রিজুর দিকে তাকিয়ে বললাম)
— আরে ওরে বকো না। তোমাকে আমার একটা কাজ করে দিতে হবে।
— কি কাজ?
— আমার বিয়ে ঠিক করা হইছে বাসা থেকে। এটা ভেঙ্গে দিতে হবে আর যদি পারো তাহলে আমার বাবার কাছে বলবে তুমি আমায় ভালবাসো।
— ওই মিস ভিক্টোরিয়া। না মানে ব্যাকটেরিয়া নিজেরে কি ভাবো? অনেক হইছে আমি পারবো না।
— তুমি পারবে না বরং তোমার ঘাড় পারবো। যদি তুমি আমার কাজটা না করো তাহলে আমি তোমার বাসায় গিয়ে বলবো তুমি আমায় ১ বছর আগে বিয়ে করছো কিন্তু এখন মানছো না।
— ওই তুমি মেয়ে নাকি ডাকাত।
— হুমমম আমি মেয়ে ডাকাতনী। এবার বলো আমার বিয়ে আটকাবে নাকি নিজে কেস খাবে।
— আচ্ছা আমি কেন তোমার বাবা কে বলবো যে আমি তোমায় ভালবাসি।
— হয়ত এই কথাটা বলায় সবাই বলবে আমার আর তোমার লেখা পড়া শেষে আমাদের বিয়ে দিবে। এতে আমি পড়াশুনা করার আরো কয়েকটা বছর পারো। আর ফ্রীতে তোমার মত একটা বান্দর বয়ফ্রেন্ড পাবো যার সব বাদরামী আমাকে হাসি খুশি রাখবে।
— হুমমম আজ বুঝলাম।
— কি বুঝলে?
— বুঝলাম যে কারো মাথায় কাঠালঁ রেখে কাঠালঁ খেলে সেই মানুষটার কেমন লাগে?
— হুমমম। এবার যা করো তারাতারি করো কারন বিকালে আমাকে ফাইনাল দেখতে আসবে আর পছন্দ হলে আংটি বদল
— ওকে তোমার হবু না হওয়া জামাইয়ের নাম্বার আছে।
— হুমম। কয়দিন ধরেই রাতে ফোন দিয়ে আমার ঘুমটা হারাম করে দিছে।
— দাও।
তারপর ঐশির থেকে ওর হবু না হওয়া জামাইয়ের নাম্বারটা নিয়ে ঐশির মোবাইল দিয়েই ফোন দিলাম। ফোনটা বাজতেঁ দেরি হলেও ওই বেটার ফোনটা রিসিভ করতে লেট হয় নি। আর ঐশির থেকে জেনে নিলাম ওই ছেলের নাম নয়ন। তাই প্রথমে আমিই বললাম….
— হ্যালো নয়ন বলছেন।
— হুমম কিন্তু ঐশির ফোনে আপনি কে?
— এটা বুঝতে পারছেন না আমি কে? ও তাহলে বলেই দেই, আমি হলাম ঐশির বয়ফ্রেন্ড। যদি আমার ফোন থেকে কল দিয়ে বললাম এটা তাহলে মানতেন না তাই ঐশির নাম্বার থেকেই ফোন দিলাম। এবার কথা হলো কথা তা না, আপনি ভাই এই বিয়েটা কইরেন না তাহলে এই ফাজিল মেয়েটা আপনেরে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিবে। আমাকে তো গত ৫ বছর ধরে জ্বালাচ্ছে। আমরা ৫ বার বিয়ে করছি গত ৫ বছরে। আগামী বছর তো ৫ টা বেবি নেওয়ার প্লেনিং চলছে।
— ৫টা?
— হুমম আরে না না। কথাটা হবে ১ টা। সব ৫ আর ৫ বলতে বলতে সব ভুল হয়ে যাচ্ছে। এবার আমাদের মত শিশুদের দিকে তাকিয়ে একটু বিয়েটা আটকে দিন।
— আপনেরা শিশু হে। আবার শিশু নেওয়ার প্লেন করছেন।
— আরে ভুল হয়ে গেছো তো ভাই।
— আমি আপনার কথা মানি না আমি ঐশিকে বিয়ে করবো।
— ওই বেটা এতখন মিষ্টি সুরে কথা বললাম তুই বুঝস না। আরেকবার যদি বিয়ের কথা বলিস তাহলে ওদের বাড়ি আসার আগেই তোর গাড়ির উপর বোমা মারবো। মনে রাখিস আমি কিন্তু ভার্সিটির ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র।
আমার কথা শেষ না হতেই আমার থেকে মোবাইলটা নিয়ে ঐশি বলতে লাগলো….
— ওই ফকিন্নি আমার মোবাইলে কি তোর বাপে টাকা পাঠায়। এতো বকবক করছিস কেন? চুপচাপ আমার বাসায় ফোন করে বলে দে আমাকে তোর পছন্দ না। আর যদি এর বাইরে একটা কথা বলছিস তাহলে তোরে আমি টু টু টু….
ঐশি কথা শেষ না করতে ফোনটা কেটে দিলো। হা হা হা এতো মেয়ে নয় বরং ধানি লঙ্কা। তাই আমি ওরে বললাম..
— তুমি নিজেই তো ছেলেকে বুঝাতে পারতে কিন্তু আমাকে ডাকলে কেন?
— এবার আমার সাথে আমার বাসায় যাবে আর বলবে আমায় ভালবাসো।
— আমি এটা পারবো না।
— কেন?
— মিথ্যা বলতে বলতে যদি সত্যি তোমায় ভালবেসে ফেলি।
— পরের টা পরে দেখা যাবে। এখন আমার বাসায় চলো।
— ওকে।
.
আমি আপাতত ঐশির বাসায় বসে আছি। আর ও গেছে ওর বাবা কে ডেকে আনতে। ও বাসায় আসার সময় আমাকে নানা রকম কথা বলতে বলতে নিয়ে আসে যেন আমি ওর সত্যিকারের বয়ফ্রেন্ড। আরে দুইদিন পর তো সবই শেষ এতো কিছুর দরকার কি? একটু হালকা রূপে ঝাপসা দিয়ে দিলেই তো হয়। আমি নিজেকে অনেক বড় বান্দর মনে করতাম কিন্তু এই মেয়ে তো আমার থেকে বড় মাপের।
হঠাৎ ঐশি এসে আমার পাশে দাড়ালো আর ওর বাবাও আসলো। আমি তো কথা বলার সাহসটাই যেন পাচ্ছি না। আমি ওর বাবাকে দেখে উঠে দাড়ালাম আর ওর বাবা বলল…
— বসো?
— জ্বী ধন্যবাদ।
— তোমরা দুইজনে এখনো লেখাপড়া করছো কিন্তু লেখাপড়ার মাঝে এইসব করাটা কি ঠিক হয়েছে?
— ( কিছু বললাম না শুধু ঐশির মুখের দিকে তাকিয়ে ইশারা করলাম আমি কি করছি ও আমায় ইশারা করলো মাথা নাড়াতে আর আমিও তাই করলাম।)
— পাপন তোমরা দুইজনেই কাজটা ঠিক করো নি। এখন আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলতে চাই। শত হলেও তো আমি মেয়ের বাবা।
— আচ্ছা তাহলে চলেন আমাদের বাসায়। ( আমি)
— ওকে। তুমি এখন বাসায় যাও আর তোমার বাসার ঠিকানাটা দিয়ে যাও। আমি বিকালে যাবো আর তোমার বাবাকে বাসায় থাকতে বলো।
— আচ্ছা ।
.
আমি এইটা কি করলাম? নিজের পিছনে বাশঁ নিজেই নিয়ে নিলাম আর ঐশি ওর বাবাকে কি বলল যে আমিও মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললাম। ঐশির কাছেই জানতে হবে। ঐশির বাবার মুখটা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে।
আমাকে বাসায় যাওয়ার জন্য এগিয়ে দিতে ঐশি রাস্তায় আসলো।
— ওই তুমি তোমার বাবাকে কি বললে?আর আমায় মাথা নাড়াতে বললে কেন?
— তেমন কিছু বলি নি। বললাম আমরা ১ বছর হলো বিয়ে করে নিছি।
— কী?
— তোমার কি হলো?
— কী আর হবে? যখন মাথার ইশারা করলে তখনই বুঝলাম আমার সাথে চেন্নাই এক্সপ্রেস মুভি হতে যাচ্ছে না তো।
— হা হা হা হলেই ভালো। যাও এখন বাসায় গিয়ে তোমার বাবা মাকে আমাদের কথা বলো। আমরা বাসার সবাই বিকেলে আসবো।
— তুমি কেন আসবে?
— আরে বলো কি? হবু শশুর বাড়ি দেখতে আসবো না।
— হুমম আসো আসো আর কিছু বাশঁও নিয়ে আসো।
— ওকে।
.
আর কোন কথা না বলে একটা রিকশা নিয়ে আমার বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। আজ ভার্সিটি আসছিলাম আমি বাশঁ দিতে কিন্তু উল্টা বাশঁ খেয়ে গেলাম। আমি দোয়া করি, এমন মেয়ে যেন আমার কোন শত্রুর কপালেও না জুটে।
বাসায় এসে রুমে ডুকেই দেখি মা টেবিলে খাবার সাজাঁচ্ছে আর বাবা ওয়াশরুম থেকে এসে হাত পা পরিষ্কার করছে।
— কিরে পাপন আজ ভার্সিটি থেকে আসতে এতো লেট হলো। আজ কি সব ক্লাস করে আসলি নাকি? ( মা)
— না একটু কাজ ছিল।
— ওকে ফ্রেশ হয়ে আয়, আমি খেতে দিচ্ছি।
— আচ্ছা।
আমি আমার রুমে চলে গেলাম। বাবার মুখের দিকে তাকাতেই সাহস হচ্ছে না। তারাতারি রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে আসলাম। দেখি বাবা বসে আছে, আমার সাথে এক সাথে খাবে বলে। আর মাও বসে আছে। এখনই তাহলে বলে দেই নাকি খাওয়া শেষে বলবো। যদি পরে না খেতে দেয়। ধ্যত যা আছে কপালে….
— বাবা তোমাদের সাথে আমার কিছু কথা ছিল?
— বলো?
— আসলে কথাটা খুব গুরুত্বপূর্ন। যদি তোমরা একটু শুনতে।
— এমন কি কথা যে মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে।
— বাবা আমি এক মেয়েকে ভালবাসি।( চোখ বন্ধ করে বলে ফেললাম)
— ও এটা তো খুব ভাল কথা। নাম কি মেয়েটার আর ওর বাবার নাম কি?
— ও নাম ঐশি।আর ওর বাবার নামটা জানি না। (বাবার কথায় পুরু চমকে উঠলাম কারন আমি আশা করি নি বাবা এতো নরম ভাবে কথা বলবে)
— ও আচ্ছা। ওদের একদিন আমাদের বাসায় আসতে বলো।
— ওরা আজই আসবে বাবা।
— মানে? কখন?
— আজ বিকালে। ঐশির বাবা আমায় ডেকে ছিল।
— ওকে। এখন মন দিয়ে খাও। ওরা আসলে পরে দেখা যাবে।
আমি বাবা কথা চুপচাপ খেতে লাগলাম কিন্তু সমস্যা হলো বড় কোন ঝড় আসার আগে পরিবেশটা একটু ঠান্ডাই থাকে।আমি ছোট থেকেই বাবাকে ভয় পাই আর আজ বাবার সামনে এইসব কথা বললাম।
.
বিকেলে রুমে শুয়ে একটা বই পরছিলাম আর তখনই কলিং বেলটা বেজেঁ উঠলো। আসলে তখন বিকেল বললেও ভুল হবে তবে সন্ধ্যা বলা যায়। বাবা বাইরের ঘরে টিভি দেখছে আর মাও আছে। আর আমি শিউর আমার বাশঁ চলে আসছে।
যা ভাবলাম তাই দরজা দিয়ে উকিঁ দিয়ে দেখি ঐশি, ওর বাবা ওর মা আর সাথে এক মুরুব্বি আসছে। মনে হয়, আজই আমার পাক্কা বিয়ে হবে। বাইরের ঘর থেকে বাবা আমায় ডাক দিলেন। আমিও ভদ্র ছেলের মত সামনে গেলাম। গিয়ে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম।
.
— পাপন তুমি ঐশিকে নিয়ে পাশের রুমে যাও। আমি ওনাদের সাথে কথা বলছি।
— হুমম।
তারপর আমি ঐশিকে আমার রুমে নিয়ে আসি আর বাইরের কথা শুনার জন্য বাইরের ঘরে খেয়াল রাখি কিন্তু ঐশির কথা শুনে আমি অবাক হই।কারন ওর মাঝে কোন সিরিয়াস দেখছি না।
— বাহ্ রুমটা তো খুব সুন্দর। একটু অগোছালো তবে মানিয়ে নিতে পারবো।
— ওই তুমি কি বলছো এইসব।
— কিছুই না। বললাম ঘরটা ভালো।মনে হয় আমার শাশুড়ি মা নিজের হাতে ঘুছিয়েছে।
— আচ্ছা উপরওয়ালা তোমারে কি দিয়ে বানাইছে একটু বলবে। নিজের মাঝে কোন সিরিয়াস দেখছি না।
— আমার এত্তো ভাল একটা জামাই থাকতে আমি কেন এইসব টেনশন নিবো। তুমি তো আছোই তো বাবু।
— ওরে ভিক্টোরিয়া। না মানে ব্যাকটেরিয়া তুমি আসলেই একটা পেইন।আমার একটু মজায় জন্য এত্তো বড় বাশঁ।
— হুমম এই তো মাত্র শুরু। বউটা হতে দাও পরে মজা বুঝাবো।আমাকে না ভালবাসার শখ,এইতো দেখবো নমুনা।
— কী?
আমার প্রশ্নের আর উত্তর হলো না বরং বাইরে থেকে ডাক আসলো। আমি আর ঐশি গেলাম আর চুপচাপ দাড়িয়ে রইলাম। তখন আমার বাবা আমায় বলল…….
— পাপন তুই বিয়ে করে নিলি আর আমাদের বললি না।
–( আমি চুপ)
— তা বিয়ে যে করছো সেই প্রমান পত্র কোথায়?
— উকিলের কাছেই বাবা। ( ঐশি)
— ও আচ্ছা।
এই মেয়ে তো মহা ডাকাত। এত্তো মিথ্যা কি করে বলে আর আমার বাবাকে নিজের বাবা বলে ডাকে। হুহ যেন শশুর হয়ে গেছে। তখন বাবা আবার বলল…
— পাপন আর ঐশি তোমাদের ব্যবহারে আমরা সবাই কষ্ট পাইছি তবে তোমাদের মুখের দিকে চেয়ে মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু শর্ত স্বরূপ পাপন যখন চাকরী পাবে তখন তোমাদের বিয়ে আত্মীয়স্বজন নিয়ে হবে। এখন এমন করেই চলবে।
— ওকে। ( ঐশি)
আমি কথা বলছি না কিন্তু ঐশি জবাব দিচ্ছে। মনে হচ্ছে ওর বিয়ে করার শখ জাগছে। আমি মনে মনে বলছি বাবা আমি বিয়ে করবো না এই মেয়েরে। আমারে তেজপাতা করে ছাড়বো। ওই রিজুর কারনে এইসব হলো। যদি ওর সাথে দেখাই না করতাম তাহলে তো এতো কাহিনী হয় না।
তারপর রাতে একবারে খাওয়া দাওয়া করে ঐশি আর ওর পরিবার বিদায় নিলো। আজ বুঝলাম সুন্দরী দেখে কখনো মজা নেওয়া ঠিক না, আড়ালে তার রিনাখান হাসে।
.
কয়েকদিন কেটে গেল কিন্তু আমি ভার্সিটি যাচ্ছি না। কারন আমি এখন ভয়ে ভয়ে আছি ওই মেয়ে যদি আবার কোন বাশঁ দিয়ে বসে। হঠাৎ আমার মোবাইলটা বেজেঁ উঠলো আর তাকিয়ে দেখি একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসলো তাই রিসিভ করলাম। ঐশি হলে ভুলেও রিসিভ করতাম না। ফোনটা রিসিভ হওয়ার সাথে সাথে খেলাম আরেক ঝাটকা….
— হ্যালো দুলা ভাই কেমন আছেন?
— ভাল কিন্তু তুমি কে?
— আমি ঐশির কাজিন দিশা তবে ছোট।আর আপনার এক মাত্র শালি।
— আচ্ছা বুঝলাম।
— দুলাভাই আপনি এখন কোথায়?
— বাসায় আছি কেন?
— আমি আপনাদের এলাকার পার্কে আমার ফ্রেন্ডদের নিয়ে আসতাছি আপনি তারাতারি আসেন।
— কিন্তু কেন?
— আজ আমার জন্মদিন আর আমি সবাইকে বলছি আপনি আজ ট্রিট দিবেন।
— কী?
— হুমম তারাতারি আসেন আর একটু সেজেঁ আইসেন। তাহলে সেলফি ভাল আসবে।
— আচ্ছা আসছি।
ফোনটা কেটেঁ দিলাম ঐশিকে ফোন। রিং হতে দেরি হলেও ফোনটা ধরলো তারাতারি…
— ওই ঐশি তোমার কাজিন দিশা তো আসতাছে ওর জন্মদিন পালন করতে।
— ও আচ্ছা। একটা কাজ করো। ভাল একটা কেক কিনো আর আমার জন্য পাঠিয়ে দিয়ো।
বলেই ফোনটা কেটেঁ দিলো। আরে এই মেয়ে আমারে পাইলো কি? যখনই কথা হয় তখনই বাশঁ দেয়। আগে মনে মনে বলতাম আমি প্রেম করতে পারি না কেন তবে আজ হাড়ে হাড়ে প্রেমের মজা বুঝতেছি, যদিও প্রেম করি না।
তারপর ফ্রেশ হয়ে পার্কে গেলাম আর আমার টাকার শ্রাদ্ধ করে আসলাম। মোট ৬ জন আসছিল আর কেক সহ ফুসকার বিল মিলেয়ে মোট ২ হাজার টাকা গেল। এখন যে পরিমানে রাগ হচ্ছে আর পারছি না।
যতই রাগ করি, এখন বাসায় কিছু বললে আমার মা ঐশির ভয় দেখায়। আর ওই মেয়ে আমায় দিনে একটা ফোন দেয় না তবে মায়ের কাছে তিন বেলা ফোন দিয়ে খবর নেয় ওনি কেমন আছে।
.
এভাবে দিন গুলো বেশ খারাপই কাটতে লাগলো তবে আমার পরীক্ষাও চলে আসছে। এবার মনটা খুব খারাপ।
রাত প্রায় ১১ টা বাজে তখন ঐশির ফোন আসলো। যদিও খুব রেগে আছি তবু ঠান্ডা মাথায় কথা বললাম….
— হুমম ঐশি বলো।
— বাবু আমার না ফুসকা খেতে মন চাচ্ছে। এক প্লেট ফুসকা নিয়ে আমার বাসায় আসো না।
— রাত কয়টা বাজে খেয়াল আছে।
— জানি না তবুও তোমাকে আসতেই হবে।
— ওই দেখো অনেক জ্বলিয়েছো আমায়। অনেক সহ্য করেছি আর না। আমি কি তোমার চাকর নাকি। যখন যা ইচ্ছা অর্ডার করবে তাই আমাকে করতে হবে নাকি। আর কখনো এমন করবে না। আমি কাল সকাল সব সত্যি বলে দিবো।
বলেই ফোনটা রেখে দিলাম। আমারও কিছু করার ছিল না কারন মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছে। আর নিতে পারছিলাম না।কিন্তু এখন খুব খারাপ লাগছে ওরে বকে।
.
রাত প্রায় ১২টার উপর বাজে আর আমি এখন ফুসকা নিয়ে ওর বাসার বাইরে দাড়িয়ে আছি। কি করবো যখন ওরে বকলাম তখন নিজের কাছেই কেন জানি খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল, ও পাগলামি না করলে তো কে করবে পাগলামী। পাগলীটা আমার মনে জায়গা নিয়ে নিছে। ওরে আমি ফোন দিলাম কিন্তু প্রথমে ধরলো না কিন্তু ২ বারে সাথে সাথে রিসিভ…
— কি করা হচ্ছে মিস ব্যাকটেরিয়া?
— এতে আপনার কি হবে শুনে?
— এতো কিছু শুনার আর দরকার নেই। আমি তোমার বাসার বাইরে ফুসকা নিয়ে দাড়িয়ে আছি। মন চাইলে নিয়ে যাও।
আমার কথা শেষ না হতেই ফোনটা কেটে দিলো। এখন ও আসবে কি না জানি না। কিন্তু কেন জানি মনটা বলছিল যে ও আসবে। আর ঠিক তাই ঘটলো। ওদের গেট খুলার আওয়াজ পেলাম আর ও মাথা নিচু করে আমার সামনে এসে দাড়ালো…..
— খুব বুঝি রাগ হয়েছে আমার উপর?
— হুমম
— আচ্ছা এখন ফুসকা খাও।
— কিন্তু এতো রাতে ফুসকা পেলে কোথায়?
— আমাদের এলাকার ফুসকাওয়ালার বাসায় গিয়ে ওনাকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে আসলাম।
— বাহ্। যেহেতু আনলেই তাহলে আমায়য় বকছিলে কেন?
— নয়ত কি করবো? কয়টা দিন ধরে বাশঁই দিচ্ছো।
— ওকে রাত অনেক হইছে এখন বাসায় চলে যাও।
— ওকে।
.
তারপর আমি বাসায় চলে আসলাম। আর দিলাম একটা ঘুম তবে মোবাইলটা অফ করেই।
ভালই একটা ঘুম হলো, মোবাইল অফ থাকার কারনে কেউ বিরক্ত করলো না। ঘুম থেকে উঠে দেখি ১০টার উপর বাজে। কিন্তু আজ মনটা অনেক ভাল লাগছে।
মুখে হাসি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম কিন্তু অবাক হলাম এটা দেখে যে আমার ব্রাশে টুথপেস্ট লাগানো আর রুমের আয়নায় লেখা ” বাব্বা খুব ঘুমকাতোরে তো তুমি “।
লেখাটা পরে মনে হলো আমি কি কোন স্বপ্নে আছি নাকি কোন ভূতের কাজ। তারাতারি ফ্রেশ হয়ে চলে আসলাম নাস্তা করতে। আমিও বসে আছে আর আমার সামনে রুটি আর সবজি রাখা।
— কি মিস্টার এখন কি একটা ডিম বেজেঁ আনবো নাকি?
— হুমম নিয়ে আসো।
হঠাৎ চমকে উঠলাম। আর তাকিয়ে দেখি ঐশি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে….
— আরে তুমি এখানে?
— কাল তো বললে আমি তোমায় শুধু টেনশনই দেই তাই একটু ভালবাসা দিতে আসলাম। ওই গুলো তোমার কাছে টেনশন হলেও সব ছিল আমার পাগলামী। বড্ড বেশি ভালবাসি যে তোমায়। আজ থেকে বাশঁ আর ভালবাসা দুইটায় দিবো। কারন, আমি যে তোমায় খুব ভালবাসি।
— আমি…
আমি বলতে যাবো তখনই মায়ের আগমন হলো আর দুইজন চুপ হয়ে গেলাম। থাক ভালবাসাটা তোলা থাক। এখন মন দিয়ে পরি, তবে ভালবাসার ফাকেঁ ফাকেঁ। আর না হয় অনেক টেনশনের মাঝে দিয়ে শুরু হলো আমাদের ভালবাসার পথ চলা।