রাত প্রায় দেরটা বাজে,,,
হিয়া অর্ধ নগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে,,,
চোখ দিয়ে পানি ঝরছে । তার ইচ্ছে করছে নিজেকে শেষ করে দিতে,,
সাহায্যের জন্য চিল্লাতে চিল্লাতে তার গলায় আর কোনো শক্তি নেই
নিজের পড়ে থাকা কাপড় গুলো দিয়ে নিজের শরীর ঢাকার বৃথা চেষ্টা করছে,,,
বাষনার চোখে তাকিয়ে আছে কিছু নেকড়ে রুপি মানুষ,,,
মামা মালটা কিন্তু জোস,,,
হুম আজ ভালোই মজা হবে,,,
সবাই হিয়ার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো,,,,
আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ,,, আমার জীবনটা এভাবে নষ্ট করবেন না। আমার যে মরা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না,,, (হিয়া))
তার কথায় তাদের কাজে কোনো প্রভাব পড়লো না,,,
এক সময় হিয়া নিজের মৃত্যুকে সামনে দেখতে পেলো,,,
একজন এসে হিয়ার হাতটা ধরলো,,,
তখুনি
পিছন থেকে কেউ হাত তালি দিতে থাকলো,,,
কোন কুত্তার বাচ্চারে,,,
তখন একটা ছোট আগুনের শিক্ষা দেখতে পেলো হিয়া
আগুনের শিক্ষায় মানুষটার মুখটা আছপা দেখা গেলো,,,
তখুনি তার কাছে থাকা ছেলেগুলো,,
তার থেকে দূরে সরে গেলো,,,
মনে হয় তারা কোনো ভূত দেখে ফেলেছ,,,
নিলয় ভাই,, ভাই আমাদের মাফ করে দেন আমাদের ভূল হয়ে গেছে,, আর কখনো এমন হবে না ((ছেলেগুলো))
এই মেয়ে এদিকে চলে আয়,, ((নিলয়))
হিয়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে,,,,
শরীর টা নিস্তেজ হয়ে আছে তার,,,
নিলয় হিয়ার কাছে যায়,,,
হিয়ার কাপড় গুলো ওকে দেয়,,,
চলে যা এখান থেকে,,,, (নিলয়)
হিয়া ওখান থেকে চলে আসে,,,,
নিজের কাপড় গুলো পড়ে নিয়ে হিয়া ব্রিজের ল্যাম্পপোস্ট এর নিচে বসে আছে
চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে তার,,,
তার সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই প্রশ্ন,৷
কি পাপা করেছিলো সে,,,
যার জন্য তাকে এমন দিন দেখতে হলো,,,
প্রচন্ড ঠান্ডায় ল্যাম্পপোস্ট এর নিচে বসে কান্না করছে হিয়া,,,
নিলয় তার কাজ করে ব্রিজের উপরে এসে দেখে মেয়েটা ল্যাম্পপোস্ট এর আলোয় বসে আছে,,,
এই মেয়ে এখানে কি করছিস,, বাসায় চলে যা ((নিলয়))
হিয়া মাথা তুলে দেখে তখনকার লোকটা,,,
তখন অন্ধকারে ভালো ভাবে সে দেখতে পারে নি,,,
নিলয় হিয়ার কাছে আসে,,,
কি হলো কানে কথা যায় নি,,, ((নিলয়))
হিয়া কান্না মাখা চোখে নিলয়ের দিকে তাকায়,৷
নিলয় ভালো ভাবে হিয়ার দিকে তাকালো,,,
নেশার ঘোরে ভালো ভাবে দেখতে পারছে না,,,
ওই কানে কথা যায় না ((ধমক দিয়ে))
নিলয়ের ধমক শুনে হিয়া ভয় পেয়ে যায়,,,
আমার যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই,, (হিয়া))
নিলয় কিছু একটা ভাবলো,,,
এখানে থাকলে সারা রাতে তোকে ভোগ করার মানুষের অভাব হবে না।। আমার সাথে আয় ((নিলয়))
বলে নিলয় একটা সিগারেট ধরিয়ে নিলয় হাটতে থাকে,,,
মানুষ আমাকে ওদের হাত থেকে বাচালো,৷
কিন্তু যদি আমার সাথে কিছু করে,,,
এখানে থাকলেও তো আমার মৃত্যু নিশ্চিত,,,।আর সে চাইলে তো আমাকে তখুনি ওদের সাথে ভোগ করতে পারতো,, ((এসব এসব মনে মনে ভাবতে থাকে হিয়া))
ভয় পেলে আশার দরকার নেই,,, ঠান্ডায় পরে থাক এখানে,,,
দূর থেকে বললো নিলয়,,,
হিয়া আর কিছু না ভেবে নিলয়ের পিছনে পিছনে হাটতে থাকে,,,
কিছুক্ষন পর নিলয় একটা বড় বাড়ির ভিতরে ঢুকলো,,,
হিয়া তার পিছনে পিছনে ভিতরে গেলো,,,
উপরে গিয়ে যেকোনো রুমে শুয়ে পর,,,
বলেই নিলয় সোফায় শুয়ে পড়ে,,,
হিয়া কিচ্ছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকে,,, তার মনে কেমন যেন সংকোচ হচ্ছিল,,
কানে কথা যায় নি,,, ((নিলয়))
হিয়া অন্ধকারে হাটতে হাটতে উপরে আসে,,,
প্রথম রুমের ভিতরে গিয়ে,,,
লাইট চালু করে,,
ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ে,,,
সারাদিনের কথা মনে করে ঘুমাতে পারে না সে,,,
চোখ বন্ধ করলেই মনে।হচ্ছে সেই লোক গুলো তাকে স্পর্শ করছে,,,
কান্না করতে করতে ভোর রাতে ঘুমিয়ে পড়ে হিয়া,,,
সকালে খুব তারাতাড়ি ঘুম ভেংগে যায় হিয়ার,,
নিচে এসে দেখে একটা মানুষ উলটো দিকে মুখ করে।ঘুমিয়ে আছে,,,
নিলয়কে ডাকতে থাকে হিয়া
সকালে বেলা কারো হাতের ডাকে ঘুম ভেংগে যায় নিলয়ের,,,
চলবে
প্রথম পর্ব কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না,,,শুরুতে সারা না পেলে লেখার ইচ্ছে হারিয়ে যায়,,,

সকালে বেলা কারো হাতের ডাকে ঘুম ভেংগে যায় নিলয়ের,,,
চোখ খুলে দেখে কাল রাতের মেয়েটা,,,
রাতে নেশার ঘোরে মেয়েটাকে ভালোভাবে দেখতে পারে নি নিলয়,
মনে হচ্ছে সপ্ন দেখছে নিলয়,তার সামনে মনে হচ্ছে একটা পরী দাড়িয়ে আছে,,
এই মেয়ে কাল রাতে কি করছিলো ওখানে,,
এই যে শুনছেন (হিয়া)
কি হয়েছে টা কি (নিলয়))
করা গলায় কথাটা বলে নিলয়
না কিছু না (হিয়া)
নিলয়ের কথাটা শুনে হিয়া ভয় পেয়ে যায়,,,
চুপচাপ উপরে চলে যেতে থাকে,,,
ক্ষিদে লাগছে ((নিলয়))
নিলয়ের কথা শুনে পিছন ফিরে তাকায় হিয়া,,
কোনো কথা না বলে চুপচাপ থাকে,,,
ফ্রিযে হয়তো কিছু আছে খেয়ে নিন((নিলয়))
হিয়া কোনো কথা না বলে,,
চুপচাপ গিয়ে ফ্রিজ খুলে,,,
ফ্রিজে তেমন কিছু নেই,,
শুধু পাউরুটি ছাড়া
রান্না ঘরে গিয়ে দেখে কয়েকটা ডিম আছে,,,
আর আটাও পায় সেখানে,,,
হিয়া ডিম ভাজি আর রুটি করে,,
তারপর দুটো প্লেটে নিয়ে নিলয়ের কাছে যায়,,,
নিলয় এখনো শুয়েই আছে,,,
হিয়া প্লেট দুটো রেখে নিলয়কে ডাক দেয়৷
এই যে শুনছেন,,, নাস্তা খেয়ে নিন,, ((হিয়া)
আমার জন্য তো করতে বলে নি,, (নিলয়)
হিয়ার মুখটা চুপশে যায়,,,
কিছু না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে,,,
হিয়ার মুখটা দেখে নিলয়ের মায়া হয়,,,
আপনি খেতে থাকুন আমি আসছি,,, (নিলয়))
বলে নিলয় ফ্রেশ হতে চলে যায়,,,
হিয়া টেবিলে চুপচাপ বসে থাকে,,,
নিলয় ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে হিয়া খাবার নিয়ে বসে আছে,,
আপনার কি মাথার সমস্যা আছে,, খেতে বলে গেলাম না,,,
হিয়া কোনো কথা বললো না,,,
হিয়ার মুখে কোনো কথা শুনে নিলয় কি বলবে বুঝতে পারছে না,,,
নিন এবার খেয়ে নিন,,, (নিলয়))
তারপর হিয়া আর নিলয় নিজের মতো খেতে লাগলো,,,
হিয়া মাথা নিচু করে খাচ্ছে,,
নিলয় মাথ তুলে দেখে হিয়া খাচ্ছে আর কি যেন ভাবছে,,
খেয়ে রেডি হয়ে নিন,, আপনাকে বাসায় রেখে আসব,,, ((নিলয়))
নিলয়ের কথা শুনে হিয়া মাথা তুলে তাকায়,,
কি বলবে কিছু ভেবে পারছে না,,,
আমার যাওয়ার মতো কোনো জায়গা নেই,,, ((হিয়া))
হিয়ার কথা শুনে নিলয় হিয়ার দিকে তাকায়,
কি বলছে এই মেয়ে,,,
কিন্তু আপনার উপর বোঝা হবো না, আমি একটু পরেই চলে যাব,,
আমার জন্য আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না,,,
কথাগুলো ঠিক ভাবে বলতে পারছেন না হিয়া,,
চোখ দিয়ে পানি ঝরছে তার, ,
বাইরে কোথায় যাবেন ((নিলয়)
যেখানে ইচ্ছে কিন্তু আপনার বোঝা হবো না ((হিয়া)
চুপ একদম চুপ ((নিলয়))
নিলয়ের ধমকে চমকে উঠে হিয়া,,
কাল তো বেচে গেছেন কিন্তু প্রতিদিন তো আর তা হবে না,,,, এখানে রাতে মানুষ নামের কিছু হিংস্র পশুর অভাব নেই ((নিলয়))
হিয়া কিছু বলছে না,,,
চুপচাপ বসে আছে,,,
বাসায় থাকুন আমি আসছি,,,,
বলে নিলয় বাসা থেকে বেরিয়ে আসে,,,
হিয়া বাসাটা ঘুরে দেখতে লাগল
বাসাটা বেশ বড়ো,,,
সব ঘর খোলা কিন্তু একটা ঘর বন্ধ,,,
হিয়া নিচে এসে টুকিটাকি গোছাতে থাকে,,
তারপর টিভিটা চালু করে আবার গোছগাছ করতে থাকে,,
হঠাৎ টিভির দিকে তাকাতেই চমকে উঠে হিয়া৷,
কাল রাতে তাকে যারা ধর্ষন করার চেষ্টা করেছে তাদের ছবি টিভিতে দেখা যাচ্ছে,৷
টিভিটা বন্ধ করুন, ((নিলয়))
হিয়া পিছনে তাকিয়ে দেখে নিলয়,,,
হিয়া কিছুটা ভয় পেয়ে যায়,,,
কাল রাতে হিয়াকে যারা ধর্ষন করার চেষ্টা করেছে তাদের ছবি টিভিতে দেখা যাচ্ছে,৷
টিভিটা বন্ধ করুন, ((নিলয়))
হিয়া পিছনে তাকিয়ে দেখে নিলয়,,,
হিয়া কিছুটা ভয় পেয়ে যায়,,,
হিয়া টিভিটা বন্ধ করে দেয়,,,
এই নিন এখানে কিছু জামা কাপড় আছে আর কিছু শাকসবজি আছে,, রান্না করে খেয়ে নিবেন,, (নিলয়)
হিয়া মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো,,,
নিলয় বেরিয়ে যেতে লাগলো,,,
আপনি খাবেন না ((হিয়া))
না,, আপনি খেয়ে নিন আর বাইরে একদম বাইর হবেন না৷ ((নিলয়))
কথাটা বলে নিলয় চলে যায়৷৷
হিয়া উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে,৷
নিচে এসে রান্না করলো,,,
,,
হালকা কিছু খেয়ে ছাদে গেলো,৷
ছাদে অনেক ফুলের দেখতে পায় হিয়া কিন্তু গাছগুলোর প্রতি আর যত্ন নেওয়া হয় না,,,
হিয়া গাছগুলোতে পানি দিতে লাগলো,৷
তারপর সবকিছু ঠিকঠাক করতে লাগলো,,,
দেখতে দেখতে সন্ধ্যা এসে পড়লো,,
হিয়া ছাদের রেলিং ধরে দাড়িয়ে আছে,,,
সূর্যটা তখন শেষ আকাশে,,,
হালকা শীত পরছে,,,
আনমনা হয়ে কি যেন ভাবছে হিয়া,৷
চোখের কোনে ফোটা ফোটা জল জমেছে,,,
সূর্যের আলোয় সেগুলো মুক্তার মতো বেয়ে পড়ছে,,,
(সারাদিন মানুষ যতোটাই ভালো থাকুক না কেন। রাত হলে পুরোন কষ্ট গুলো জেগে উঠবেই।))
নিজেকে কিছুটা ঠিক করে নিচে চলে আসে হিয়া,,,
তারপর রান্নার কাজে লেগে পড়ে,,,
রাত ১০ টা বাজে হিয়া খাবার নিয়ে নিলয়ের অপেক্ষায় বসে আছে,,,
কিন্তু নিলয়ের আসার কোনো নাম গন্ধ নেই,,,
রাত ১১ টা বাজে
নিলয় বাসায় আসে,,,
আজ হিয়ার জন্য সে তারাতাড়ি বাসায় ফিরল,,,
না হলে রাত ১ টা ২ টা ছাড়া নিলয় বাসায় ফিরে না,,,
মদ খেয়ে বাসায় আসে নিলয়,,,
কিন্তু সে টা তার জন্য কিছুই না,, নেশাও তার কষ্টের উপর প্রলেপ দিতে পারে না,,,
নিলয় দেখে হিয়া খাবার টেবিলে ঘুমিয়ে আছে,,,
হিয়াকে ডাক দেয়,,,
কিন্তু উঠার নাম নেই,,
হিয়ার শরীরে ধাক্কা দিতে চায় কিন্তু কি যেন ভেবে আর দেয় না,,,
হিয়াকে ডাকতে থাকে,,,।
নিলয়ের ডাকে হিয়ার ঘুম ভেংগে যায়,,,
হিয়া চোখ খুলে দেখে নিলয় তার সামনে দাঁড়িয়ে,,,
হিয়া তারাহুরো করে উঠে পড়ে,,,
আপনি কখন আসলেন,,, ((হিয়া))
এক্ষুনি,,, এটা ঘুমানোর জায়গা((নিলয়))
না,,, আপনার জন্য খাবার নিয়ে বসে ছিলাম, , ((হিয়া))
আমি কি বলছি আমার জন্য খাবার নিয়ে বসে থাকতে,৷ ((নিলয়))
হিয়া চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে,
আপনি খেয়েছেন৷৷ ((নিলয়))
হিয়া মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে,৷
আমার জন্য আপনাকে না খেয়ে থাকতে কে বলেছে,,, খেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন,৷ ((নিলয়))
কথাটা বলে নিলয় ছাদে চলে যায়,,
হিয়া হালকা খেয়ে বাকি খাবার ফ্রিযে রেখে আসে,,,
হিয়া রুমে যেতে লাগলো
তখুনি লাইট চলে যায়,,,
হিয়া ভয় পেয়ে যায়,,,
আর চিৎকার দিয়ে উঠে,,,,
হিয়ার চিৎকার শুনে নিলয় নিচে চলে আসে,,,
হিয়া এক কোনায় চুপ করে দাড়িয়ে আছে,,,
কি হলো এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো (নিলয়)
আমার না অন্ধকারে খুব ভয় লাগে,,, ((হিয়া))
আমার সাথে আশুন,,
নিলয় ছাদের দিকে যেতে লাগলো,,,
হিয়া নিলয়ের পিছন পিছন যেতে লাগলো,,,
নিলয় ছাদে গিয়ে এক কোনায় দাড়িয়ে যায়,,,
আর একটা সিগারেট ধরায়৷
হিয়া চাঁদ দেখতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে,৷
জোসনার আলোয়,,,
ছাদটা আলোকিত হয়ে আছে,,,
নিলয় হিয়ার দিকে লক্ষ্য করে,,,
হিয়াকে যেন রাতের রানী মনে হচ্ছে,,,
হালকা বাতাস বইছে,,,
হিয়ার চুলগুলো সেই বাতাসে উরছে,,,
শীতে হালকা ঠান্ডায় কাপছে হিয়া,,,
আপনার নামটা জানা হলো না ((নিলয়)
নিলয়ের কথায় ঘোর কাটে হিয়ার,,
হিয়া,,
আপনি এভাবে কেনো,,,আপনার বাসা কোথায়,,, ((নিলয়))
নিলয়ের কথায় চুপ হয়ে যায়,, পুরোনো কথা গুল চোখের সামনে ভাসতে থাকে হিয়ার,,,
কি হলো,, বলতে না চাইলে বাদ দেন।। সমস্যা নাই,,) (নিলয়))
আমার সৎ আমাকে বেচে দিয়েছিলো,,,((হিয়া))

পুরোনো কথা গুল চোখের সামনে ভাসতে থাকে হিয়ার,,,
কি হলো,, বলতে না চাইলে বাদ দেন।। সমস্যা নাই,,) (নিলয়))
আমার সৎ আমাকে বেচে দিয়েছিলো,,,((হি
য়া))
হিয়ার কথা শুনে অনেকটা অবাক হয়ে গেলো নিলয়,,,
নেশাটা যেনো তার মুহুর্তে শেষ হয়ে গেলো,,,
কি হলো অবাক হয়ে হলেন ((হিয়া))
আপনার কথার কিছুই বুঝে উঠে পারতিছি না (নিলয়)
ছোট বেলায় আমার মা মারা যায়, আমার জন্য আমার বাবা বিয়ে করেন,,
কিন্তু আমার সৎ মা আমার বাবার সামনেই ভালো ব্যাবহার করতো,,,
বাবা না থাকলে তিনি আমাকে দিয়ে সব কাজ করতো
২ মাস আগে যখন বাবা মারা যায়,
তখন আমার সৎ মা তার ভাইয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে আমার বাবার সব সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে চায়,,
আমি বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তারা
আমাকে পতিতালয়ে জোড় করে বেচে দেন,,,
যেদিন আমাকে তারা রেখে আসেন সারাদিন ঘুমিয়ে ছিলাম,,
রাতে যখন আমার হুস ফেরে আমি ওখান থেকে পালিয়ে আসি,,,
কিন্তু ওই ছেলেরা আমাকে ধরে ফেলে,,
তারপর তো আপনি জানেনি,,
সেদিন যদি আপনি না থাকতেন,,,
তাহলে হয়তো আজ আমার লাশটা কোনো মরগে মরে থাকত,,,
হিয়ার চোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে,,,
নিলয় চুপ চাপ তার কথা শুনতে থাকে,,,
আমি যদি আপনার কোনো ক্ষতি করে দেই ((নিলয়)
চাইলে আপনি সেদিনি আমার ক্ষতি করতে পারতেন কিন্তু আপনি সেটা করেননি,,, তাই আপনার থেকে সেই ভয়টা আর লাগে না ((হিয়া)
আমাকে যতটা ভালো ভাবেন ততটা নই,,, আমার ব্যাপারব জানলে নিজেই আমাকে ঘৃনা করবেন (নিলয়)
কেনো,,, (হিয়া)
সেটা কিছুদিন অজানাই থাক,, যান ঘুমিয়ে পড়ুন লাইট চলে আসছে (নিলয়)
হিয়া লক্ষ্য করে আসলেই লাইট চলে এসেছে,,
আপনি ঘুমাবেন না (হিয়া)
একটু পরে আপনি ঘুমিয়ে পড়েন(নিলয়)
হিয়া নিচে চলে আসে,,
হিয়ার মনে নিলয়ের একটা ভালো ছবি ধিরে ধিরে তৈরি হয়ে যাচ্ছে
হয়তো এটাই সাভাবিক কারন এক সাথে অনেকটা দিন সাথে থাকলে যে কারো মনে আরেকজনের প্রতি ভালো ইমেজ তৈরি হয়ে যায়,,
হিয়া নিজের রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ে,,,
নিলয় ও একটু পড়ে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ে,,,
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নিচে এসে নাস্তা তৈরির কাজে লেগে পড়ে হিয়া,,
বাইরে আজ বেশ শীত পড়ছে,,,
হয়তো বাতাসের কারনে শীত লাগছে। বাইরের আকাশটাও মেঘলা বৃষ্টি আসবে মনে হচ্ছে,,
সকাল ১১ টা নিলয় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসল,,,
হিয়া নাস্তা নিয়ে নিলয়ের জন্য বসে আছে,,
আপনাকে না বলেছি আমার জন্য খাবার নিয়ে বসে থাকবেন না (নিলয়)
হিয়া কিছু না বলে মায়াবী চাহনিতে তাকিয়ে থাকে,,,
এই মায়াবি চাহনির প্রতি ধিরে ধিরে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে নিলয়,,,
অভ্যাস এ পরিনত হয়ে যাচ্ছে তার,,
নিলয় চুপচাপ বসে খেতে লাগলো,,,
খাওয়া শেষে হিয়া প্লেট গুলো নিয়ে যেতে লাগলো,,,
নিলয় বাইরে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছে,,,
শুনুন একটু তারাতাড়ি আসবেন,,, (হিয়া)
কেনো,, কোনো দরকার আছে কি (নিলয়)
না,, বাইরে মনে হয় বৃষ্টি হবে,,(হিয়া)
নিলয় কিছু না বলে বেরিয়ে পড়ে,,,
দুপুরে রান্না করে হিয়া খাওয়া করে ছাদে এসে বসে থাকে,,,
একটু পর বৃষ্টি শুরু হয়,,,
হিয়া নিচে চলে আসে,,,
সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টি চলতে থাকে,,,
রাতে হিয়া রান্না করে নিলয়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে,, নিলয় রাতে ভিজে বাসায় ফিরে,,
হাতে একটা শপিং ব্যাগ ,,,
কি ব্যাপার আপনি তো ভিজে গেছেন (হিয়া)
সমস্যা নেই,, এইটা নিন এখানে কিচ্ছু শীতের কাপড় আছে (নিলয়))
হিয়া শপিং ব্যাগটা নিয়ে রেখে দেন,,
আসুন খেয়ে নিবেন,, (হিয়া)
বাইরে তেমন কিছু খায় নি নিলয় বেশ ক্ষিদে লাগেছে তার,,
তাই কোনো কথা বলে টেবিলে খেতে বসে পড়ে সে,,
খাওয়া শেষে উপরে চলে আসে নিলয়,,
হিয়া প্লেট ধুয়ে সব কিছু গুছিয়ে নিজের রুমে চলে যায়,,,
সকালে ঘুম থেকে উঠে,,
রোজগার মতো নাস্তা রেডি করে বসে আছে হিয়া,,
কিন্তু নিলয়ের কোনো খবর নেই,,
কিছুক্ষন পর গুটিগুটি পায়ে,, নিলয়ের রুমের দিকে যায় হিয়া,,
দরজার ধাক্কা দিতে গিয়ে দেখে দরজা খোলা ভিতরে চলে যায় হিয়া,,,
নিলয়ের কাছে গিয়ে তাকে ডাকতে থাকে,,,
কিন্তু নিলয়ের ঘুম ভাংছে না,,
নিলয়ের মাথায় হাত দিয়ে দেখে জর এসেছে নিলয়ের,,,
হিয়া জল পট্টি দেওয়ার জন্য জল আনতে নিচের দিকে পা বারায়,,,
তখুনি নিলয়ের ফোনটা বেজে উঠে,,,
ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে নাম নেই,,
হিয়া ফোনটা রিসিভ করে,,,
হ্যালো,, কে বলছেন(হিয়া)
আমি নিলয়ের বাবা বলছি,, (ওপাশ থেকে)

হিয়া জল পট্টি দেওয়ার জন্য জল আনতে নিচের দিকে পা বারায়,,,
তখুনি নিলয়ের ফোনটা বেজে উঠে,,,
ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে নাম নেই,,
হিয়া ফোনটা রিসিভ করে,,,
হ্যালো,, কে বলছেন(হিয়া)
আমি নিলয়ের বাবা বলছি,,তুমি নিশ্চয়ই হিয়া (ওপাশ থেকে)
আপনি আমাকে চিনেন (হিয়া)
চিনি না তবে নিলয়ের কাছে তোমার নাম শুনেছি(,নিলয়ের বাবা)
নিলয়কে একটু ফোনটা দেও,, (নিলয়ের বাবা)
উনার ত খুব জর মনে হয় না কথা বলতে পারবেন (হিয়া)
ছেলের অসুস্থতার কথা শুনে নিলয়ের বাবার কেমন যেন খারাপ লাগছে,,,
তুমি ওর একটু দেখাশোনা করো,,, আমি পরশুর মধ্যেই দেশে আসছি (নিলয়ের বাবা)
হিয়া ফোনটা রেখে দিয়ে,,,
জল নিয়ে এসে নিলয়ের মাথায় জল পট্টি দিতে লাগে,,,
তারপর নিচে এসে নিলয়ের জন্য গরম সুপ করে নিয়ে যায়,,,
নিলয়ের জর কিছুটা কমছে,,,
হিয়া নিলয়কে ধরে উঠাতে লাগলো,,,
নিলয় জরের ঘোরে হিয়াকে জড়িয়ে ধরলো,,,
হিয়া নিলয়ের বুকে শুয়ে আছে,,,
নিলয়ের দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আছে,,,
আর নিলয় জরের ঘোরে কি জেনো সব উলটো পালটা বলছে,,,
হিয়া নিজেকে নিলয়ের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেয়,,
তারপর তাকে টেনে তুললো,,
হিয়া আস্তে আস্তে নিলয়কে সুপটা খাইয়ে দিলো,,,
তারপর বাসায় রাখা ওষুধ খাইয়ে দেয় নিলয়কে,,,
সারাদিন হিয়া নিলয়ের পাশে বসে থাকে,,
সারাদিন খাওয়া হয় নি,,,
পরেরদিন সকালে ঘুম ভাংগে নিলয়ের
তাকিয়ে দেখে হিয়া তার বেডের পাশে হেলানি দিয়ে শুয়ে আছে,,,
নিলয় মাথ হাত দিয়ে দেখে জর আছে এখনো তার শরীরে,,,
নিলয় হিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,,,
হিয়ার চুলগুলো মুখের সামনে চলে আসছে,,,
গোলাপি কালারের ঠোঁট গুল ঠান্ডার জন্য শুকিয়ে আছে,,
তারপরেও ঠোঁট গুলো কাছে টানছে নিলয়কে,,,
হিয়ার ঘুম ভেংগে যায়,,
চুলগুলো ঠোঁট মুখের সাথে লেগে আছে তার,,
চুলগুলো ঠিক করে নিলয়ের দিকে তাকায়,,,
তাকিয়ে দেখে নিলয় তার দিকে তাকিয়ে আছে,,,
হিয়া কিছুটা লজ্জা পায়,,, কারনটা সে নিজেও বুঝতে পারে না,,,
কি দেখছেন,, ((লজ্জা মাখা কন্ঠে)
হিয়ার কথায় ঘোর কাটে নিলয়ের,,,
কিছু না ((নিলয়)
জর কমছে আপনার (হিয়া)
হুম,, (নিলয়)
আচ্ছা আপনি উঠে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসুন আমি নাস্তা রেডি করছি,,,
হিয়া নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে গিয়ে নাস্তা রেডি করে,,,
নিলয় ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে,,,
হিয়া নাস্তা রেডি করে নিয়ে এসে টেবিলে বসে,,,
প্রতিদিনের মতো আজ ও দুজনের মধ্যে নিস্তব্ধতা৷,,
হিয়া নিস্তব্ধতা ভেংগে বলে,,,
কালকে আপনার বাবা ফোন করেছিলেন(হিয়া)
কি বলেছে (নিলয়)
কাল উনি আসছেন (হিয়া)
ও ঠিক আছে।। আর কাল রাতে আপনি জেগে ছিলেন (নিলয়)
হুম যদি আপনার কিছু লাগে তাহলে (হিয়া)
আপনাকে ওতো কিছু করতে হবে না আমার জন্য আমি এমনিতেই ঠিক হয়ে যেতাম,,, (নিলয়)
হিয়ার খুব অভিমান হলো,,কারন সারারার জেগে সে
নিলয়ের সেবা করলো কিন্তু ধন্যবাদ দেওয়ার বদলে উলটো রাগ দেখাচ্ছে,,,
কি হলো ওভাবে তাকিয়ে আছেন কেন (নিলয়)
না কিছু না (হিয়া)
নিলয় খেয়ে বেরোতে যাবে,,
তখুনি হিয়া ডাক দেয়,,,
এউ যে শুনছেন,, (হিয়া))
বলুন,, (নিলয়)
কাল আপনার বাবা আসবে,, বাসায় তেমন কিছু নেই যদি একটু বাজার করে আনতেন,, (হিয়া)
হুম(নিলয়)
আর তারাতাড়ি বাসায় আসবেন একটু(হিয়া)
নিলয় কিছু না বলে বেরিয়ে পড়ে,,,
হিয়া রাগ উঠতে থাকে,,
কি মানুষ একটু ভালো ভাবে কথা বলতে পারে না,, এত কিছু করছি তারজন্য একটা ধন্যবাদ ও দিলো না,,,
কিন্তু উনি আমার কে যে আমি রাগ করছি,,, আমি তো ওনার বাসায় একজন আশ্রিত,,,
উনার কাজ গুলো করা আমার কর্তব্য,,,
((আপন মানুষদের প্রতি যে সবার রাগ অভিমান ভালোবাসা গুল প্রকাশ পায়,,, সেটা এখনো বুঝতে পারে নি।।))

আপনি গাড়িতে বসেন আমি আসছি,,
বলেই নিলয় চলে যায়,,,
তখুনি হিয়া একজনকে দেখে ভয় পেয়ে যায়,,,
হিয়া লক্ষ করে তার সৎ মায়ের ভাই যার সাথে তার বিয়ে দিতে চেয়ে ছিলো,,,
সে সামনে দাঁড়িয়ে আছে,,
আপনি এখানে এখানে (হিয়া)
তোকে কত জায়গায় না খুজেছি (সাগর)
সাগর এর হিয়ার হাত টা ধরে,,,
হিয়া হাত ছাড়ার চেষ্টা করে কিন্তু পারে না,,,
তখুনি সাগরকে লাথি দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়,,,
হিয়া তাকিয়ে দেখে নিলয়,,,
সাগর দূরে গিয়ে পড়ে,,,
নিলয়কে মারতে দেখে ফুচকার দোকানের ছেলেগুলো চলে আসে,,,
নিলয় ভাই কি হয়েছে (ছেলেগুলো))
ওটা কে নিয়ে যা,,, কালকের দিনের আলো যেন দেখতে না পারে (নিলয়)
ছেলেগুলো সাগরকে নিয়ে চলে যায়,,,
আপনাকে না বলেছিলাম গাড়ির ভিতরে বসতে,, (নিলয়)
হিয়া কিছু না বলে চুপচাপ থাকে,,,
নিলয় আইসক্রিমটা হিয়ার হাতে ধরিয়ে দেয়,,,
জান গাড়িতে বসুন,,,
হিয়া চুপচাপ গাড়িতে বসে,,,
নিলয় গাড়ি ড্রাইভ করতে লাগল,,
হিয়া আইসক্রিম নিয়ে চুপচাপ বসে আছে,
নিলয় দেখে হিয়ার আইসক্রিম চুপচাপ ধরে আছে,,,
আইসক্রিম টা ত গলে পড়ে যাবে (নিলয়)
হিয়া লক্ষ্য করে আইসক্রিম টা গলে যাচ্ছে,,
খেয়ে নিন (নিলয়)
হিয়া আইসক্রিম টা খেতে লাগলো,,,
রাতে একটা রেস্টুরেন্ট খাওয়া করে দুজনে বাসায় ফিরে,,,
হিয়া নিজের রুমে যায়,,,
আর নিলয় ছাদে এসে একটা সিগারেট ধরায়,,,
নিলয়ের মধ্যে ধিরে ধিরে পরিবর্তন হচ্ছে,,,
সেটা সে নিজেও বুঝতে পারছে না,,,
নিলয় নিজের পরিবর্তনটাকে মেনে নিতে পাচ্ছে না,,
নিলয়ের প্রতিটা দিন হিয়াকে ছাড়া যেন চলছে না,,,
হিয়াও যে নিলয়ের প্রতি দূর্বল হয়ে যাচ্ছে,,,
কিন্তু হিয়ার মন খারাপ হয়ে যায়,,
যখন সে ভাবে সে একটা বিক্রি করা মেয়ে,,, নিলয় তাকে মেনে নিবে না,, আর তাকে তো এই নাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে,,,
মাঝ রাত নিলয় নিজের রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,,,
এখন নিলয় আর হিয়ার সপ্নে শুধু এক অপরের বসবাস,,,
সপ্নে চলছে তাদের ভালোবাসা কিন্তু ঘুম ভেংগে গেলে সব সপ্ন হাওয়ায় মিশে যাচ্ছে,,,
কিছু কিছু সপ্ন তো সত্যি ও হয়
হিয়া সকালে ঘুম থেকে উঠ ফ্রেশ হয়ে নাস্তা রেডি করে,,,
নিলয় ঘুম থেকে উঠে নিচে এসে টেবিলে বসে দুজনে
খাওয়া শুরু করলো,,,
তখুনি কলিং বেলের শব্দ আসল,,,
হিয়া গিয়ে দরজা খুলে দিল,,,
এদিকে নিলয় ভাবছে এই সময়ে কে আসল,,,
হিয়া দরজা খুলে দেখে একটা লোক দাঁড়িয়ে,,,
কাকে চাই (হিয়া)
তোমার নাম হিয়া নিশ্চয়ই (লোকটা)
জি,, কিন্তু আপনি আমাকে চিনেনে কেমন করে (হিয়া)
সেদিন আমার সাথে ফোনে কথা বললা আর এক্ষুনি ভূলে গেলা (লোকটি)
আপনি ওনার আব্বু(হিয়া)
হুম আমি নিলয়ের বাবা (লোকটি))
আসুন আংকেল ভিতরে আসুন,,, (হিয়া))
হিয়া আর নিলয়ের বাবা ভিতরে আসে,,,
কেমম আছিস (নিলয়ের বাবা))
নিলয় তার বাবাকে দেখার সাথে সাথে জড়িয়ে ধরে,,
ভালো তুমি (নিলয়)
ভালো,, তোকে দেখার খুব ইচ্ছে করছিলো তাই চলে আসলাম,, (নিলয়ের বাবা)
ভালো করছ,, আস কিছু খেয়ে নেও(নিলয়)
নিলয়ের বাবা টেবিলে বসে,,
হিয়া তাকে খাবার সার্ভ করে দিলো,,,
হিয়া তোমার হাতে জাদু আছে,,, তোমার রান্না একদম নিলয়ের মায়ের মতো ((নিলয়ের বাবা)
হিয়া কিছু না বলে একটা মুচকি হাসি দেয়,,,
তারপর সবাই খাওয়া করে,,
নিলয় বেরিয়ে যায়,,,
আর হিয়া দুপুরের রান্না করতে যায়,, আর নিলয়ের বাবা ক্লান্ত থাকায় নিজের ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে,,,
দুপুরের খাবারের সময় নিলয় বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে বাবাকে ডাক দেয়,,
নিলয়ের বাবা ফ্রেশ হয়ে নিচে যায়,,,
হিয়া নিলয় আর ওর বাবাকে খাবার সার্ভ করে দেয়,,,
কি হলো মা তুমি খাবে না (নিলয়ের বাবা)
আমি পড়ে খেয়ে নিবো আপনারা খেয়ে নিন,, (হিয়া)
সেটা হয় না তুমি বসো তো (নিলয়ের বাবা)
নিলয়ের বাবার জোরাজুরিতে হিয়া ওদেত সাথে খেয়ে নেয়,,,
খাওয়া শেষে নিলয় বেরিয়ে যায়,,,
হিয়া প্রতিদিনের মতো ছাদে বসে আছে,,,
নিলয়ের বাবা ছাদে আসে,,,
কি করো মা (নিলয়ের বাবা)
কিছু না আংকেল এমনিতেই বসে আছি (হিয়া)
তারপর দুজনে গল্প করতে লাগল,,,
আচ্ছা আংকেল একটা কথা বলবো (হিয়া)
হুম বলো,, তুমি আমার মেয়ের মতো একটা কেনো একশটা বলো(নিলয়ের বাবা)
আপনার ছেলে এমন কেন,, আপনি ওনাকে কিছু বলেন না কেনো (হিয়া)
নিলয়ের বাবা একটা বড় নিশ্যাস নেয়,,
ওর এই অবস্থার জন্য আমি দায়ি(নিলয়ের বাবা)
মানে বুঝলাম না (হিয়া))
ওর যখন ১৪ বছর বয়স,,
তখন ওর মা মারা যায়,, ওর মা মারা যাওয়ায় নিলয় ভেংগে পরে,,
তখন আমি ওর জন্য আরেকটা বিয়ে করি,, যাতে ওর মায়ের অভাব পূরন করতে পারি,,,
কিন্তু ওর সৎ মা আমার সম্পত্তির জন্য আমাকে খুন করতে চায়,,,
নিলয় সেটা বুঝতে পেরে ওর সৎ মাকে খুন করে,,

ওর সৎ মা আমার সম্পত্তির জন্য আমাকে খুন করতে চায়,,,
নিলয় সেটা বুঝতে পেরে ওর সৎ মাকে খুন করে,,
নিলয়ের বাবার কথায় হিয়া একদম চুপ হয়ে যায়,,,
কি হলো চুপচাপ হয়ে গেলে যে
তারপর (হিয়া)
আমি সব কিছু চাপা দিতে পারতাম,,,কিন্তু নিলয় সেটা চায় নি,,,
ও বলেছিল ওটা যেটা করেছে সেটার শাস্তি পাওয়া দরকার,,, আর আমাকেও বিদেশে যাবার জন্য বলে যাতে ওর সৎ মায়ের পরিবারের কেউ আমার ক্ষতি করতে না পারে,,,
কারন তারাও এই সবকিছুর পিছনে ছিলো,,, আমি প্রথমে যেতে চায় নি,, কিন্তু নিলয় আমাকে জড় করে পাঠিয়ে দেয় ,,,
নিলয়ের দুই বছর এর জেল হয়,,,
আমি মাঝে মাঝে এসে নিলয়কে দেখে যেতাম,,
,নিলয় যখন জেল থেকে বেরিয়ে আসে
তখন আমি ওকে নিয়ে যেতে চাই কিন্তু ও আমার সাথে যায় নি,,,
তখন থেকেই নিলয়ের ভিতরে এই পরিবর্তন,,,
কিন্তু আমি নিলয়ের চোখে তোমার জন্য একটা দায়িত্ব,, যত্ন দেখেছি,, ও সব সময় তোমাকে চোখে চোখে রাখে,, হয়তো তোমার জন্য ওর মনে কোনো অনূভুতি আছে,,, (নিলয়ের বাবা)
হিয়া নিলয়ের বাবার কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলো,,,
কি বলবে বুঝে পাচ্ছে না কারন তার বলার মতো কোনো ভাষাই তার নেই তাই সে একদম চুপচাপ হয়ে গেছে,,
কি হলো কিছু বলছ না যে (নিলয়ের বাবা)
কি বলবো ভাষা খুযে পাচ্ছি না (হিয়া)
যাই হোক,, আমি নিলয়ের কাছে তোমার ব্যাপারে সবকিছু শুনেছি,,, তোমার সাথে যেটা হয়েছে সেটা জেনো কারো সাথে না হয়,,,তোমার কাছে আমার একটা অনূরোধ আছে (নিলয়ের বাবা)
জি বলেন, (হিয়া)
তুমি কি এই সংসার আর আমার ছেলেটার দায়িত্ব সারাজীবন নিবে (নিলয়ের বাবা)
হিয়ার নিলয়ের বাবার কথা শুনে জেনো ঝিম ধরে গেলো
কারন তার মুখ থেকে শব্দ বের হচ্ছে না,,,
কি হলো কিছু বলছো না যে,, আসলে আমার এখানে আসার এটাই এক মাত্র কারন,,, (বাবা)
কিন্তু আমি তো একটা নষ্ট মেয়ে উনি কি আমাকে মেনে নিবেন (হিয়া)
সেটা আমার উপর ছেরে দেও,, আর তুমি ভেবে আমাকে জানাইয়ো(নিলয়ের বাবা)
হিয়া মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো,,
হিয়া নিচে চলে আসল,,
রাতে নিলয় তারাতাড়ি বাসায় ফেরে,,,
সবাই একসাথে খাওয়া করে নিলয় ছাদে এসে সিগারেট ধরিয়ে আনমনা হয়ে বসে আছে,,
তুই কিন্তু মেয়েটার জীবন নষ্ট করছিস
নিলয় কথাটা শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখে তার বাবা৷
বাবা তুমি কখন আসলে,,, (নিলয়))
এক্ষুনি
তুই কি একবার ভেবে দেখছিস তুই হিয়ার জীবন নষ্ট করছিস
কেনো তোমার এমন কেনো মনে হচ্ছে (নিলয়)
একটা মেয়ে তোর সাথে একলা আছে। এর ফলে বাইরে তাকে কত কথা শুনতে হতে পারে তুই জানিস (বাবা)
আমি ত ওকে থাকতে দিয়ে ওকে সাহায্য করেছি(নিলয়)
সেটা তুই জানিস কিন্তু বাইরের লোক তো বুঝবে না,, ওকে কি আর কেউ বিয়ে করতে চাইবে না (বাবা)
নিলয় তার বাবার কথায় চিন্তায় পড়ে গেলো,,, কি বলবে বুঝতে পারছে না,,
কি হলো কি ভাবছিস (বাবা)
এখন আমি কি করবো (নিলয়)
একটা উপায় আছে,, (বাবা)
কি উপায়(নিলয়)
তুই ওকে বিয়ে করে নে (বাবা)
কি যত্তসব বলছো (নিলয়)
দেখ নিলয়,, তুই নিজেও বুঝতে পারতিছিস না তোর পরিবর্তন হচ্ছে,, তুই ভেবে দেখ হিয়াকে ছাড়া এখন কি তুই থাকতে পারবি (বাবা)
নিলয় ভাবনায় পড়ে গেলো,,,
কারন তার বাবার প্রতিটা কথা সত্য
তারপর নিলয় ভাবতে লাগল,,,
কারন সে তো একজন খুনি তাকে বিয়ে করে হিয়া পরে নিজেকে ঘৃনা করবে,,,

সে তো একজন খুনিকে বিয়ে করে পরে নিজেকে ঘৃনা করবে,,,
আমার উত্তর টা পেলাম না নিলয়,,, (বাবা)
না বাবা আমি এই বিয়ে করতে পারব না, হিয়া জানে না আমার অতীর সম্পর্কে,, পরে যখন জানতে পারবে তখন আমার সাথে আর থাকতে চাইবে না৷ তাই ওকে বিয়ে করে আমি ওর কষ্ট বাড়াতে চাই না৷ (নিলয়)
হিয়া সব জানে। আমি ওকে সব বলেছি।। ও তোকে বিয়ে করতেও রাজি আছে (বাবা)
নিলয় তার বাবার কথায় অনেকটা চমকে গেলো,,,
কেমন জেনো ভালো লাগা কাজ করছে নিলয়ের মধ্যে, ,
এখন বল তুই কি এই বিয়ে করতে রাজি আছিস,, (বাবা)
নিলয় কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না
কি হলো কিছু ত বল(বাবা)
ঠিক আছে আমি এই বিয়ে করতে রাজি আছি,,, (নিলয়)
তারপর নিলয় নিচে চলে যায়,,
পরের দিন সকালে নিলয় নাস্তা করে বেরিয়ে পড়ে,,,
নিলয়ের বাবা হিয়া কাছে আসে,,,
মা তোমার উত্তরটা পেলাম না (নিলয়ের বাবা)
কোন উত্তর টা আংকেল(হিয়া)
তুমি আমার ছেলের সাথে সারাজীবন থাকতে চাও কি না (নিলয়ের বাবা)
আমার চাওয়াতে কিছু যায় আসে না,, উনি রাজি না থাকলে ত এই বিয়ে সম্ভব না (হিয়া)
নিলয় বিয়েতে রাজি আছে কিন্তু তোমার মতামতটাই আসল এখানে (নিলয়ের বাবা)
হিয়া কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না,, এই কয়েক দিনে নিলয়ের প্রতি যে ভালো লাগা তৈরি হয়েছে,,, তা সে হারিয়ে ফেলতে চায় না,,,
আমিও এই বিয়েতে রাজি আছি (হিয়া)
তারপর হিয়া সেখান থেকে চলে আসে,,,
দুই দিন পর হিয়া আর নিলয়ের বিয়ে,,,
যত দিন এগিয়ে আসছিল,,,হিয়ার মধ্যে কেমন জেনো ভালো লাগা কাজ করছিলো,,,
দেখতে দেখতে বিয়ের দিন চলে আসল,,,
বাড়ি ভড়তি অনেল লোকজন,,, হিয়াকে নিলয়ের পাশে এনে বসানো হলো
নিলয় হিয়ার দিকে আড় চোখে তাকাল,,,
লাল বেনারসিতে হিয়াকে জেনো পরীর মতো লাগছে,,
চোখ ফেরাতে পারছে না নিলয়,,
একভাবে হিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে হিয়ার দিকে,,,
কিছুক্ষন পর তাদের বিয়ের কাজ শেষ হয়,,,
রাত ১২ টা বাজে নিলয় তার বন্ধুদের সাথে ছাদে বসে আছে,,,
নিলয়ের বাবা ছাদে আসে,,,
কি ব্যাপার তুই এখনো এখানে। হিয়া অনেক্ষন ধরে তোর জন্য অপেক্ষা করে আছে (বাবা)
তারপর নিলয়কে তার বন্ধুরা বাসর ঘড়ে ঢুকিয়ে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়,,
হিয়া খাটের উপর বসে আছে,,,
জানালা খোলা থাকায় চাদের আলো হিয়ার উপর এসে পড়ছে,,,
রাতের আলোতে হিয়াকে একদম রাতের রানী মনে হচ্ছে,,,
নিলয় হিয়ার কাছে গিয়ে বসলো৷
আমার মতো কোনো মতো খুনিকে বিয়ে করে কি সুখি হতে পারবেন (নিলয়)
নিলয়ের এই কথা অবাক হয়ে যায় হিয়া,,,
কি বলবে সে তার বলার মতো কোনো ভাষা নেই,,,
কি হলো কিছু বলছেন না যে (নিলয়)
আমার মতো একটা নষ্ট মেয়েকে বিয়ে করে কি আপনি সুখি হতে পারবেন(হিয়া)
হিয়ার পালটা প্রশ্নের উত্তর নেই নিলয়ের কাছে,,,
একটা সত্যি কথা বলবেন (হিয়া)
হুম বলুন (নিলয়)
আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন না।শুধুই কি করুনা করে বিয়ে করলেন আমাকে (হিয়া)
করুন নাকি ভালোবাসা আমি বুঝি না৷ কিন্তু আপনাকে ছাড়া থাকতে পারব না তাই আপনাকে বিয়ে করেছি (নিলয়)
সারাজীবন পাশে থাকবেন তো আমার (হিয়া)
প্রতিটা মূহুর্তে নিজের পাশে পাবেন,,,, (নিলয়),
হিয়ার চোখ দিয়ে জল পড়ছে,,,
কি হলো কান্না করছেন কেনো,, (নিলয়)
নিলয় আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই হিয়া নিলয়কে জড়িয়ে ধরে,,,
অনেকক্ষন জড়িয়ে ধরে থাকার পর হিয়া নিলয়কে ছেড়ে দেয়৷
এখন ঘুমিয়ে পড়ুন৷ (নিলয়)
আজ সারারাত দুজনে গল্প করে কাটিয়ে দেব,,, (হিয়া)
হিয়া নিলয়কে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়ে,,,
হিয়া নিলয়ের বুকে শুয়ে দুজনে গল্প করতে থাকে,,,
এভাবেই চলতে থাকলো,, তাদের গল্পটা,,,

অবপশেষে মিলে গেলো দুটি মন,,, আর শেষ হলো তাদের ভালোবাসার গল্পটা